বুধবার রাত ১১টা। দরজার বেল বাজলো। অহনা দরজা খুলল। লম্বামতন একজন, খোঁচাখোঁচা দাড়ি। অহনা সবিস্ময়ে বলল, "অপু"
"কিরে, অহো "
"এই অসময়ে কেউ ভদ্রলোকের বাসায় আসে?"
"I guess,এটা ভদ্রলোকের বাসা নয়। ভদ্রলোকের বাসার দারোয়ান ঢুকতে দিল যে। ফ্রেন্ডের বাসায় আসার কোন নির্দিষ্ট টাইম আছে নাকি? ভেতরে ঢুকতে দিবি না?"
"আয় ,কিছু খেয়ে এসেছিস নাকি?"
"আমার মত celebrityদের মাঝেমধ্যে একটুআধটু ... বুঝিসই তো"
ড্রইংরুমে সোফায় ধপ করে বসে পড়ল অপু। বলল, "কেমন চলছে তোর সংসার? তোর husband কই?"
"উনার জন্যই তো wait করছি। প্রায়ই দেরী হয়।"
"বেশ মুটিয়ে গেছিস।"
"তিন মাস চলছে।" লাজুক ভঙ্গিতে বলল অহনা ।
"কেন? তোর husbandএর কি তর সইল না?"
"আমার সয় নি,তাই। তোর খবর বল।"
"এই তো আছি বেশ। আমার filmগুলো দেখেছিস? আজকাল টিভি,নিউজপেপারে প্রায়ই-"
"না দেখিনি।"
"Oh,God! কি বলিস? তুই জানিস, আমি আমাদের দেশের film industryতে legend হতে যাচ্ছি। 1st filmটা হিট না হলেও বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে।"
"প্রশংসা!!! ভাল।"
"2ndটা average but জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে best filmএ মনোনয়ন পেয়েছিল।"
"ঐ মনোনয়ন পর্যন্তই, পুরস্কার তো আর পায়নি।"
"পায় নি তো কি হয়েছে? futureএ পাবে। 3rd filmটি বাণিজ্যিক,গত সপ্তাহে মুক্তি পেল,সুপার হিট,producer বেশ happy।"
"শুনলাম, ওটার actressএর সাথে নাকি তোর-"
"হুমম,বুঝতে পেরেছি। celebrityদের নিয়ে গুজব লেগেই থাকে। আজকাল মেয়েরাও filmএ আসার জন্য এত্ত crazy হয়ে ওঠে যে..."
"মেয়েটা দেখতে ভালই,বিয়ে করে ফেললেই পারিস।"
"বাদ দে ওসব। গত দুবছরে তুই আমার ফোন ধরিস নি কেন? কতবার ফোন দিয়েছি। ভেবেছিলাম,নম্বর বদলেছিস। সবাই বলল, বদলাস নি।"
"আমার বিয়ে attend করিস নি কেন?"
"অসুস্থ ছিলাম"
"কি হয়েছিল?"
"জ্বর"
"তা বেশ জানি। প্রেমার খোঁজ খবর রাখিস?"
"interest নেই। তুই তো হুট করেই বিয়ে করে ফেললি ।"
"হুট করেই যে প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম ", বলে মৃদু হাসল অহনা।
অপু বলল, "কিভাবে?"
"রেস্টুরেন্টে দেখা করেছিলাম। উনি আমার details সব শুনলেন, even আমি কি পছন্দ করি না করি। পুরোটা সময় আমাকে observe করলেন। জানিস,অসম্ভব সুন্দর করে কথা বলেন উনি? এতো sense of humor. আমি তো মুগ্ধ। কথা শেষে বললেন,'দ্যাখো, আমি সব কিছুই সরাসরি করি। কোনো লুকোছাপার মধ্যে আমি নেই। affair একটা ছিল। same common story-established হতে পারিনি, বিয়ে হয়ে গেছে। যাই হোক, তোমাকে আমার পছন্দ হয়েছে,directly বলেই ফেললাম। আগে দেখা হলে প্রেমটা তোমার সাথেই করতাম। এখন বলো,আমাকে তোমার কেমন লেগেছে?'
আমি তো চুপ।উনি বললেন, 'আচ্ছা,বুঝতে পেরেছি। আমাকে আপনার অতটা ভাল লাগেনি?' 'না না'আমি বললাম। উনি বললেন, 'আমি কি তাহলে ইয়েস ধরে নিব?' আমি আর না করতে পারিনি। উনি তারপর বললেন,'যাদের ঠোঁটে তিল থাকে,তাদের প্রেম করে বিয়ে হয় শুনেছি। আপনি বললে আপনার সাথে কয়েক মাস চুটিয়ে প্রেম করতে পারি'। উনি স্বেচ্ছায় আমাকে গ্রহণ করতে চেয়েছেন। সবাই সব ক্ষমতা নিয়ে পৃথিবীতে আসে না। কারো ভালবাসাকে অগ্রাহ্য করার ক্ষমতাও ঈশ্বর আমাকে দেন নি।"
"হয়েছে-হয়েছে। আর জামাইএর গুণকীর্তন করতে হবে না। একটা কথা আজো বলিস নি আমায়। তোর ডান ভ্রর ঠিক মাঝখানটাতে কাটল কিভাবে?"
"আগেও বলেছি,পড়ে গিয়ে।"
"১২টা বাজতে চলল। এখনই উঠবো ,নয়ত তোর husband হয়ত আমাকে দেখে ভাববে তুই পরকীয়া করছিস ।"
অহনা বেশ সশব্দে হেসে উঠল ,বলল, "উনি অমন মানুষ নন "
অপু সোফা থেকে উঠে দাঁড়ালো ,বলল, "আমি উঠি, আমার filmগুলো ভাল হয়েছে,দেখিস।"
"খুব বেশি ভাল হয়নি।"
"তার মানে তুই দেখেছিস? মিত্থ্যে বললি কেন?" অপু আবার সোফাতে বসে পড়ল ।
"হুম,আমি তো ভাল থেকে শুরু করে হাবিজাবি সবই দেখি। তোর গুলো হাবিজাবি catagory তেই পড়বে।"
"film directing কত tough-এটা টিভির সামনে থেকে বোঝা কষ্ট।"
"হুম"
"তোর জামাইকে দেখতে চাচ্ছিলাম।"
"দেওয়ালে ছবি তো দেখতেই পাচ্ছিস।"
"কথা ছিল।"
"কি কথা?"
"tips দিতাম। বলতাম ,shakespeareএর Taming of The Shrew পড়তে।"বলেই ফিচেল হাসি দিল অপু ।
"আমি ঝগড়াটে?" ফুঁসতে লাগলো অহনা "আর তুই কি? তিনটা ফিল্ম করেই নিজেকে celebrity ভাবছিস? ভাল ফিল্ম কখনই তোকে দিয়ে হবে না। পারবি তো শুধু brothelএর উপর documentary film বানাতে ।"
"দেখ, প্রথম যেকোনো কিছুই সন্তানের মত। ঐ ফিল্ম নিয়ে খারাপ কিছু বলবি না। ওটা studentlife এর করা ১ম ফিল্ম। আমার সাথে তূর্য, মিঠুও ছিল। এতো narrow-minded তুই...কি দেখে যে তোর জামাই তোকে পছন্দ করেছিল?"
"সবাই তো তোর চোখ দিয়ে দেখে না। উনার আমার simplicity ভাল লেগেছিল।"
"তোর জামাই বেশ চালাক। একটু ঘুরিয়ে তোকে বোকা বলেছে ,আর তুই প্রেমে পড়ে গেছিস? funny."
"বললি যে উঠবি। উঠছিস না কেন?"
"তুই আমাকে তাড়াবি নাকি? থাক আমি নিজেই উঠছি।"
দরজা ধরে দাঁড়িয়ে অপু বলল, "অহো,ভাল আছিস তো?" অহনা মৃদু হেসে বলল,"যাওয়ার বেলায় জিজ্ঞেস করছিস?"
"তোকে খুশি দেখে অনেক ভাল লাগছে। আমাকে মাফ করেছিস,বল?"
"হুম,করেছি।"
অপু অহনার মাথায় হাত ছুঁয়ে বলল, "ভাল থাকিস। ফোন দিলে ধরবি তো?" অহনা মাথা নাড়ল ।
শুক্রবার বিকেলে চায়ের টেবিলে চায়ে চুমুক দিতে দিতে রাজ্য অহনাকে বলল," গতদিন আমার ওখানে অপু এসেছিল, তোমার ফিল্ম ডিরেক্টর ফ্রেন্ড।"
"তাই? কি জন্য গিয়েছিল পাগলটা ?"
"দেখা করতে। অনেক কথা হল। বলল, 'অহোর খেয়াল রাখবেন।' "বলেই রাজ্য অহনার চোখে চোখ রাখল।
"তারপর?"
রাজ্য মৃদু হাসল।
অহনা বলল, "আপনি কি সন্দেহ করেন?"
রাজ্য চা রেখে অহনার হাত চেপে ধরল, বলল," কক্ষনো না। তোমার চোখের স্বচ্ছতাই আমাকে মুগ্ধ করেছিল।"
"তাহলে?"
"one type of fear কাজ করে। আমি তোমার আশ্রিত নই তো?"
"অপু কিছু বলেছে?"
"না। তোমার অনেক গল্প শুনলাম ওর কাছে। বলছিল যে তুমি কখনই কাউকে নিরাশ কর না...তাই..." রাজ্য দীর্ঘনিঃশ্বাস ছাড়ল।
"জানেন,always confused ছিলাম। কি চাই বুঝতাম না। কিন্তু বাবা যখন আপনার ব্যাপারে জানতে চাইল,আমি ভাবার আগেই-"
"হ্যাঁ বলেছিলে,জানি।"
"তারপরও?"
"মানুষের মনের কিছু অংশ আজীবন তালাবদ্ধ থাকাই ভাল।"
"মানে?"
"অহনা, তুমি বড্ড বেখেয়ালি। অপুর ফিল্মগুলো তো আমার সাথে বসেই দেখেছ ।প্রত্যেকটা ফিল্মের actress different,but তাদের সবার ডান ভ্রুতে কাঁটা দাগ।"
" ও, অপু আমাদের batch এর প্রেমা নামের যে মেয়েটাকে পছন্দ করত,তারও ভ্রুর ঠিক ওখানে-"
"প্রেমারও কি উপরের ঠোঁটে তিল আছে ?"