আজকের এই গল্পটা কোন ভালবাসার গল্প না বরং
একটা জীবনের গল্প ।একটা সত্য ঘটনা
অবলম্বনে লেখা এই জীবনের গল্প।।
....
জীবন আর মৃত্যুর মাঝে দাঁড়িয়ে আজ রাহাত ।
যেকোন সময় যেকোন দিখে হেলে
পড়তে পারে সে । কখনও ভাবেনি এমনও সময়
আসতে পারে তাঁর জীবনে । ভালবাসার
মানুষগুলোর প্রিয় মুখগুলো হারিয়ে যাবে
একএক করে তাঁর জীবন থেকে । আসলে
মাঝেমাঝে মানুষের জীবনে সেটাই ঘটে যা
সে চায় না কখনও সে ভাবেনি জীবনে ঘটুক ।
যেমনটা হল রাহাতের জীবনে । বাবার ব্রেইন
স্টোক,পরীক্ষায় খারাপ রেজাল্ট,স্ক্ললারশিপ
এক্সাম না দেওয়া সর্বপরি ছায়ার নামের মেয়েটার
তার জীবন থেকে ঝড়ে পড়া ।
রাহাত আবহমান বাংলার মধ্যবিত্ত ঘরে বেড়ে উঠা
সন্তান । ভাল থাকার জন্য যা যা দরকার সব ছিল
তাঁর
জীবনে,ভার্সিটি লাইফ থেকে মেস কিংবা গীটার
ক্লাস অথবা মাঝেমাঝে বন্ধুদের সাথে আড্ডায়
মজা । তাঁর পরও ভাবত কিছু একটা অপূর্ণ ছিল যেন
তাঁর জীবনে । হ্যাঁ রাহাত ভাবছে এমন একটা
মানুষের কথা যে ভালবাসার আবেশে শাসন
করবে,আবার শাসনের আবেশে ভালবাসবে ।
আর যেমন ভাবা তেমন কাজ,আস্তে আস্তে
ছায়া নামের একটি মেয়ের সাথে ঘনিস্টতা বাড়তে
থাকে তাঁর । মনিষীদের মতে তেমনটাই হল
একটা মেয়ে আর ছেলে কখনও ভাল বন্ধু
থাকতে পারে না,ভালবাসা উকি দিবেই সেখানে ।
ঠিক যেমন হল রাহাত আর ছায়ার মাঝে ।একসময়
ভালবাসা জম্ম নিলো দুটি হ্রদয়ে ।আর...
একে অপরকে একসময় ভালবেসে ফেলে ।
ভালই যাচ্ছিল সবকিছু,শেয়ারিং,কেয়ারিং,আরগুইং ।
হঠাৎ
করে রাহাতের জীবনে প্রথম ঝটকা আসে ।
রাহাতের বাবা ২য় বারের মত ব্রেইন স্টোক
করলেন । ভার্সিটির সিমিস্টার এক্সাম না দিয়েই
গ্রামে ফিরে আসে রাহাত। তাঁর এই কঠিন সময়ে
সামনে ভালবাসার হাত বাড়িয়ে দেয় ছায়াই ।
জীবনের মানেটা আস্তে আস্তে বদলে
যেতে থাকে রাহাতের কাছে । তারপরও সবকিছুই
ভাল যাচ্ছিল রাহাতের । তাঁরউপর সবচেয়ে বড়
ধাক্কা আসে যখন ছায়া হঠাৎ করে বদলে যেতে
থাকে,আর একসময় তাকে ছেরে চলেই যায় ।
অজুহাত হিসেবে দেখায় মা তাদের সম্পকে সব
জেনে গেছেন তাই রাহাতের সাথে তার আর
থাকা সম্ভব না ।
কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই পাল্টে গেলো
সব ।হারিয়ে গেল ছায়া আলো আঁধারের খেলায়
।দিশেহারা রাহাত বুঝে উঠতে পারছে না কি করবে
। প্রিয় মানুষগুলো একএক করে জীবন থেকে
হারিয়ে যাচ্ছে । কষ্টের কষাঘাতে একসময়
নিজেকেই শেষ করে দেওয়ার কথা ভাবে
,চেষ্টাও করে । কিন্তু বিধাতা যখন মধ্যবিত্ত করে
গড়ে পাঠিয়েছেন তখন এতো দুঃসাহস দিয়ে
পাঠাননি ।নিজেকে শেষ করে দেওয়ার জন্যও
যোগ্যতা লাগে যা ছিল না রাহাতের । তাই বেঁচে
আছে ।তবে বেঁচে থেকেও আজ সে মৃত
প্রায় । স্বপ্ন ভেঙ্গে গেলে মানুষ বেঁচে
থাকে ঠিকই ,তবে সেই বেঁচে থাকা শুধু নিজের
অসহায়ত্তকে উপভোগ করার জন্য ।রাহাতও ঠিক
এমনইভাবে বেঁচে আছে । নিজেকে হারিয়ে
খুঁজে যাচ্ছে রাহাত । বেঁচে তাকে থাকতেই
হবে ,নিজের জন্য না হলেও অসুস্থ্য বাবা আর
মা,বোনের জন্য ।স্কলারশিপের এক্সাম,ভার্সিটির
এক্সাম,ছায়া নামের এক্সাম সব এক্সামেই আজ
রাহাত
পরাজিত । এই অবস্থার জন্য কাকে দায়ী বলব জানি
না ,তবে কষ্ট হয় মেনে নিতে পারি না তা দেখে
।
আগেই বলেছি আজকের এই গল্পটা ভালবাসার
গল্প না একটা জীবনের গল্প ।একটা সত্য ঘটনা
অবলম্বনে লেখা এই জীবনের গল্প ।কি করে
আস্তে আস্তে একটা জীবনের মানে বদলে
যায় তাই দেখানোর চেষ্টা করছি ।আর ছায়ার মত
মেয়েদের আর রাহাতের মত ছেলেদের কিছু
বলার জন্য ।
প্রথমেই রাহাতের মত ছেলেদের বলব
যেখানে রাহাত মধ্যবিত্ত ঘরের জন্ম নেয়া
শতহাজার ছেলের প্রতিনিধিত্ত করছে । "কাউকে
ভালবাসা কখনও ভুল না,তবে ভুল করেও ভুল
মানুষকে ভালবাসা ভুল ।ভালবাসা জিনিষটা অদ্ভুদ
,কাছে
এলে দূরে চলে যায়,দুরে গেলে কাছে
আসার চেষ্টা করে । আমাদের কখনও ভালবাসতে
নেই ।তার চেয়ে নিজের ভালবাসা আর ভাললাগার
স্বপ্নগুলোকে রঙ্গিন ফানুসে ভরে উড়িয়ে দাও
আকাশে,যাতে করে স্বপ্নগুলো অনেক জায়গা
নিয়ে উড়ে বেড়াতে পারে ,কিছুটা মেঘের
সাথে,কিছুটা বৃষ্টি সাথে ঝড়ে পরবে মাটিতে ,আর
কিছুটা ভেসে যাবে বাতাসের সাথে । হয়ত তুমি
একদিন শুকিয়ে যাবে,ফুরিয়ে যাবে তুমি আর
তোমার নিঃশ্বাস কিন্তু বেঁচে থাকবে তুমি তোমার
উড়িয়ে দেওয়া রঙ্গিন ফানুসের ভালবাসায় ।
নিজেকে অসহায় ভেবো না ,পারলে দেখিয়ে
দিও তুমিও পার ।নিজেকে গড়ে তোল নিজের
মত করে,দেখবে সব আসবে জীবনে । ''
আর ছায়ার মত মেয়েদের কি বলব ,হুহ !!!শুধু এটাই
বলব "পৃথিবীতে কেঊ কারও যোগ্য থাকে না
যোগ্য করে নিতে হয় ।আর তার জন্য
প্রয়োজন হয় একটা সঠিক টামিং আর কারও
অনুপ্রেরণা ।আমরা মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলেরা
খুবই আবেগপ্রবন হয়ে থাকি,সপ্ন দেখতে
ভালবাসি । আমাদের ভালবাসতে পারনা ?এটা কোন
সমস্যা না । তবে দয়া করে আমাদের স্বপ্ন
ভেঙ্গে দিও না ।কারণ স্বপ্ন ভেঙ্গে গেলে
বেঁচে থাকাটা হয়ে পড়ে অসম্ভব ।আমরা ইচ্ছে
করলেই নিজেকে শেষ করে দিতে পারি না কিংবা
নিতে পারি না কোন অসৎ সঙ্গ ,অথবা হতে পারি না
ঐশীর মত কেউ । তাই বলব হাত ধরতে না চাইলে
হাত ধর না । কারণ কেউ হাত না ধরলে সহজে কষ্ট
নিয়ে বেঁচে থাকা যায় । কিন্তু কারও হাত ধরে
কিছুটা পথ হাটার পর ফিরে এলে বেঁচে থাকাটা
হয়ে যায় অনেকটা দিবাস্বপ্নের মত ।আর কারও
আবেগ নিয়ে খেলা করতে যেও না ,নাহয়
কখনযে পৃথিবী তোমার সাথে খেলতে শুরু
করবে বুঝতেই পারবে না ।''
বি. দ্র. অনেকই অনেকভাবে জিনিষটা গ্রহণ
করতে চাইবেন । কেউ রাহাতের পাশে কেউ
ছায়ার পাশে ।আজকের লেখার পিছনে এটাই কারণ
যদি রাহাতের মত কোন একটা ছেলে বেঁচে
থাকার আশা পায় । নিজেকে শেষ করে দিলেই
সব কিছু শেষ করা যায় না । বেঁচে থাক আর
বেঁচে থেকে দেখ কোথাকার পানি কোথায়
গড়ায় ।তারপরও বলব ভাল থাকুক কিছু ভালবাসা আর
কিছু
ভাললাগা ...।।
...ভুল হলে ক্ষমা করবেন ।