লেখাঃ Riya Ahsan Chowdhury
_ হ্যালো ঈশান...
_ হুম বল..!
_তুই কোথায়...?
_বাসায়,,, কিন্তু কেনো?
_দোস্ত চলনা ঘুরতে যাই,,
_কোথায় যাবি এখন?
_ নদীর পাড়ে যাব। তুই যাবি?
_ আচ্ছা তুই যা আমি আসতেছি দশ
মিনিট এর মধ্যে,,,
_ ওকে বায়
ঈশান আর শোভন ছোট বেলা থেকে
বন্ধু,,, ছোট বেলা থেকে তারা একসাথে
পড়া লেখা করে। বন্ধু বললে ভুল হবে
বলতে গেলে তারা আপন ভাই। একজন
আরেক জনের জন্য জীবন টাও দিয়ে
দিতে পারে।
_শোভন তুই কোথায়? আমি তো চলে
আসছি ...
_ দোস্ত পাঁছ মিনিট,,, আমি এই তো এসে
পড়ছি
_ওকে
.
_এতক্ষনে তোর আসার সময় হল,
_ সরি দোস্ত একটু লেট হয়ে গেছে
_ আচ্ছা ঠিক আছে,, চল কোথাও বসি
_ আচ্ছা চল,,,
_ হুম
_ আচ্ছা ঈশান তোর কি হয়েছে
সারাদিন বাসায় বসে থাকিস কেন?
_ আরে এমনি, কিছু হয়নাই
_সত্যি তো?
_আরে হ্যা সত্যি
_ আচ্ছা চল ফুসকা খাই, অনেক দিন
খাওয়া হয় নাই
_ ওকে
শোভন দোকানে গিয়ে দুই প্লেট ফুসকার
অর্ডার দেয়, কিছুক্ষন পর একটা
পিচ্চি ছেলে এসে ওদের
দুই প্লেট ফুসকা দিল।
ঈশান খেয়াল করলো
দুইটা মেয়ে এসে দোকান দার কে
বললো আচ্চা ঝাল ঝাল করে আমাদের
ফুসকা দেন তো। অনেক ঝাল দিবেন
ঠিক আছে,,,
ঈশান ওই দুই টা মেয়ের মধ্যে
অই মেয়েটার দিকে তাকিয়ে রয়েছে
যে ফুসকা টা অর্ডার দিল।
মেয়েটা হাত নেরে নেরে অনেক
সুন্দর করে কথা বলছে। তাই ঈশান
মেয়েটার দিকে তাকিয়েই রয়েছে
.
শোভন এর কথায় ঈশান এর জ্ঞ্যান
ফিরলো,,
_কিরে ঈশান,,
_ কি কি (চমকে উঠে বললো)
_ খাচ্ছিস না কেন?
_ ও হ্যা খাচ্ছি
_ কি ভাবছিস....?
_কই কিছুনা তো
_ তাহলে খাচ্ছিস না কেন?
শোভনের কথার উত্তর যেই দিতে যাবে
সেই সময় অনেক জোরে একটা মেয়ের
চিল্লানি শুনলো পানি পানি....
ঈশান খেয়াল করল সেই মেয়েটি চিল্লাইতেছে,,, পানি
পানি করে
.
ঈশান একটা পানির বোতল নিয়ে
মেয়েটার কাছে গেল। আর বোকার
মত বললো
পানিটা কি করবো?
মেয়েটা রেগে গিয়ে বললো
আমার মাথায় ঢালুন
ঈশান ও বোকার মত
মেয়েটার মাথায় পানি ঢেলে দিল
.
_ এটা কি করলেন?
_ কেন। আপনিই তো বললেন
আপনার মাথায় পানি ঢালতে..!
_ আমি বললাম আর আপনি আমার
মাথায় পানিটা ঢেলে দিলেন...
_তাহলে আপনি কেন পানিটা
চাইলেন...?
_মানুষ পানি কেন চায়...
_খাওয়ার জন্য
_ আমিও খাওয়ার জন্য চাইছি
যত্তসব পাগলের দল
এই বলে মেয়েটা রেগে হাতের প্লেট টা
পেলে চলে গেল। অন্য মেয়েটা
টাকা দিয়ে চলে গেল
.
_কিরে ঈশান,,, তুই এমন গাধার মত
মেয়েটার মাথায় পানি ঢাললি কেন?
_দোস্ত বিলিব কর,, তখন আমার কি
হইছে আমি নিজেও জানি না
_ আচ্চা ঠিক আছে চল। আশেপাশের
মানুষ গুলো তাকিয়ে আছে।
দুজন দোকানের বিল দিয়ে
বেরিয়ে পড়ল,,, আর অই ব্যাপার টা
নিয়ে শোভহাসতেছে।
_ উফ,, হাসিস না তো, , মেয়েটা আমাকে
কি ভাবলো কে জানে...!
_ আরে চিন্তা করিস না,, বেশি হলে
পাগল ভাববে,,
_হয়তো, , আচ্ছা বাসার কাছে চলে
এসেছি,, বায়
_ওকে বায়
রাতে ঈশান মেয়েটার কথা অনেক ভেবেছে, , কে এই
মেয়ে,এত সুন্দর
করে কি কোন মেয়ে কথা বলতে
পারে, এ কোন মেয়ে হতে পারে নাহ
আরো কত কি......মেয়েটার কথা
ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে
পরছে নিজেই জানে না
.
পরের দিন বিকেলে ঈশান একাই
নদীর পাড়ে গেল,,, সব জায়গায় খুজলো
কিন্তু কোথাও মেয়েটা কে পেলনা
তারপর কালকের সেই ফুসকার দোকানে
গেল, দোকানের পিচ্চি টাকে
ডাক দিল
_এই পিচ্চি
_জি স্যার বলেন
_তুমি আমাকে চিনেচো
_ হুম,, চিনেছি,, আপনিতো কালকে....
_হুম আমিই,
_আচ্চা তুমি আমাকে কিছু কথা
বলতে পারবা?
_কি কথা স্যার?
_কালকে যে মেয়েটার সাথে আমার
ঝামেলা হইছে তুমি
তাকে চিনো?
_ হ্যা স্যার চিনি তো, উনি তো নির্ধা আপু
_অহ,,,তুমি জান ও কোথায় থাকে
_না স্যার অই টা জানিনা
_অহ.... আচ্চা ধন্যবাদ,
ঈশান ছেলেটাকে দুইশ টাকা দিয়ে
চলে আসছে।
এর পর থেকে ঈশান প্রতিদিন
নদীর পাড়ে যেত শুধু মাত্র নির্ধাকে
একবার দেখার জন্য
কিন্তু পুরো একমাস নির্ধা আসে নি....
এক মাস পর যখন নির্ধা আসলো
ঈশান নির্ধার সামনে গিয়ে বলে
ফেলল এতো দিন আসেন নি
কেনো,,,, জানেন আমি প্রতিদিন
আপনার জন্য অপেক্ষা করতাম
ভাবতাম এই বুজি আপনি
আসবেন, আর এসে আমাকে
বকা দিবেন।
_মানে টা কি? কে আপনি, আর আমার
জন্য কেনই বা আপনি অপেক্ষা করতেন
_আমাকে চিনেন নাই?
_নাতো,, কে আপনি
_আমি অই ছেলেটা যে আপনার
মাথায় পানি ঢেলে দিছিলাম
_অহ আপনি,
_হুম
_আপনাকে না একটা কথা বলার ছিল
_ আমাকে? হুম বলেন
_আসলে অইদিনের ব্যাবহারে জন্য সরি
একটু রেগে গেছিলাম তাই আপনার
সাথে অইরকম খারাপ ব্যাবহার করেছি
_আরে না না ভুল টাতো আমারি
ছিল, বোকার মত মাথায় পানি ঢেলে দিলাম।
_আচ্চা ঠিক আছে। চলেন ফুসকা খাই
আজকেও।
_ওকে চলুন
এভাবে নির্ধা আর ঈশানের বন্ধুত্ত
হয়। দুইজন খুব ভাল বন্ধু হয়ে যায়
ফোনে কথা বলা,ফেসবুকে চ্যাট করা
সপ্তাহে একদিন মিট করে ফুসকা খাওয়া
সবই চলতে লাগল। তাদের বন্ধুত্তের
এক বছর ও হয়ে গেল
কিন্তু এখন ঈশান নির্ধা কে তার মনের
কথা বলতে পারে নি,
বললে যদি বন্ধুত্ত টাও নষ্ট হয়ে যায়
এই ভয়ে। কিন্তু সে আর পারলোনা তার মনের কথা
নির্ধা কে না জানিয়ে থাকতে
তাই সে আজকে সাহস করে নির্ধা কে
তার মনের কথা বলবে, এজন্য
সে রাত 02:57am এ নির্ধা কে ফোন
করল। কয়েক বার রিং হয়ে কেটে
গেছে, তারপর ফোন ধরলো
_হ্যালো...কে বলছেন?
_ নির্ধা আমি ঈশান
_অহ ঈশান তুই..! এতো রাতে ফোন
করলি কেন, কোন সমস্যা হয়েছে?
_নাহ। তোকে আমার কিছু কথা
বলার ছিল
_আর তার জন্য তুই এই রাত দুপুরে
ফোন করলি,, কাল কেও তো বলতে
পারতি
_না আজকে এখনি বলতে হবে।
আজকে না পারলে হয়তো আর
কোন দিনই বলা হবে না।
_আচ্চা বল....
_ নির্ধা আমি তোকে যেদিন প্রথম
দেখেছি সেদিনই তোকে ভালবেসে
ফেলেছি। তোর জন্য আমি প্রতিদিন
নদীর পাড়ে গিয়ে বসে থাকতাম।
তোর কন্ঠ শুনার জন্য আমার মন
আকুল হয়ে থাকত, এতো দিন আমি
তোকে এই কথা গুলো বলতে পারিনি এই
কারনে যদি তুই আমাকে ভুল বুজিস
আমাকে ছেড়ে চলে যাস এই ভয়ে।
কিন্তু আর পারছিলাম না নিজের
মনের সাথে যুদ্ধ করতে তাই আজ
বলে দিলাম ।আমি তোকে অনেক
ভালবাসি,অনেক
আর কিছু বলার আগেই ফোন টা
কেটে দিল নির্ধা।
অনেক বার ফোন করছে কিন্তু নির্ধাকে
কিন্তু ফোন বন্ধ। নির্ধার আইডি ডিএক্টিব
একমাস অনেক খুজেছি ওকে
কিন্তু কোথাও পাইনি
হটাৎ একদিন সেই চিরচেনা
নাম্বার থেকে ফোন আসলো
দ্রুত ফোন টা রিচিব করলাম
ওই পাশ থেকে সেই চিরচেনা কন্ঠ
_হ্যালো ঈশান
_ নির্ধা, কোথায় ছিলি তুই
এতো দিন, জানিস কত যায়গায় তোকে
খুজেছি, কিন্তু কোথাও পাইনি
ফোন কেন বন্ধ করে দিয়েছিলি
_ঈশান আমি শুধু দেখতে চেয়েছি
আমি তোকে ছাড়া থাকতে পারি কিনা।
কিন্তু পারলাম না, এই একমাস আমার
কিভাবে গেছে তা আমি ছাড়া কেও
জানে না। তোকে ছাড়া আমি
একমাস ও থাকতে পারলাম না
আমি ও তোকে অনেক ভালবাসি
ঈশান। অনেক..তোকে ছেড়ে আমি
কোথাও যাব না কোন দিন না
_সত্ত্যিই বলছিস? তুই আমাকে আমাকে
ভালবাসিস।
_ নাহ তোকে ভালবাসি না,তোমাকে ভালবাসি,
,অনেক ভালবাসি.........