মেনু

Drop Down MenusCSS Drop Down MenuPure CSS Dropdown Menu

সংকলন ৩১১- শুভ জন্মদিন

লেখা- যাকওয়ান জারিফ আদনান

আজ সকাল থেকেই টিপ টিপ বৃষ্টি
পরছে।কিছুক্ষণ পর পর বৃষ্টি থেমে
যাচ্ছে আবার হচ্ছে।বৃষ্টির কারনে
আজ ক্যাম্পাসে যেতে দেরি হচ্ছে
তানিয়ার।বৃষ্টির কারনে রাস্তার
পাশের একটি ছাউনিতে দাঁড়িয়ে
আসে তানিয়া।ভাগ্য সুপ্রসন্ন না
হওয়ায় বাস ও পাচ্ছে না আজকে।তার
উপর আজকে একটি বিশেষ দিন। আজ
তার জন্মদিন।বৃষ্টি অনেকের মনে
আনন্দের সঞ্চার করলেও তানিয়ার
নিকট তা রীতিমত অস্বস্তিকর।তাই
অনেকটা বিরক্তি নিয়েই সে
দাঁড়িয়ে রইল।তারপর আচমকা একটা
খালি বাস এসে থামল ছাউনির
কাছে।এই সময়ে বাস পাওয়া যায় না
তাই খানিকটা তাড়াহুড়া করেই
বাসে উঠল সে। ক্যাম্পাস এরিয়ার
কাছে বাস আসতেই বাস থেকে
নেমে গেল তানিয়া।আজকে
তানিয়া সবচেয়ে বড় যে ভূল করেছে
তা হল সে আজকে ছাতা আনেনি
তার জন্য অবশ্য যথেষ্ট মূল্য দিতে
হয়েছে তাকে।এ কথা ভাবতেই মুখে
একরাশ বিরক্তি ফুটিয়ে ক্যাম্পাসে
প্রবেশ করল সে।
ক্যাম্পাসে ঢুকতেই কিছু বন্ধুদের কাছ
থেকে উইশ পেল।তানিয়া তাদের
সবাইকে ধন্যবাদ জানাল হাসিমুখে।
কিন্তু যে বিশেষ মানুষটির কাছ
থেকে উইশ পাওয়ার জন্য তার মন
উদগ্রীব হয়ে আছে সে এখন পর্যন্ত উইশ
করেনি তাকে।এ কথা ভেবে মনটা
একটু বিষণ্ণ হয়ে উঠল যদিও তা
লোকচক্ষুর আড়ালে রাখল সে।
শাহেদের উইশ করতে কখন ও তো এত
দেরি হয় না
শাহেদ কি সত্যি সত্যি আজ তাকে
উইশ করতে ভুলে গেল?????
পরোক্ষণেই আবার ভাবল এমন তো
হওয়ার কথা নয়।গত চার বছরে শাহেদ
তো একবার ও তানিয়াকে উইশ করতে
ভোলেনি।তাই খানিকটা অভিমানে
সে শাহেদকে ফোন দিয়েই বসলো।
কিন্তু তানিয়া শাহেদের মোবাইল
বন্ধ পেল।তাছাড়া আজ শাহেদ এখন ও
ক্যাম্পাসে ও আসেনি।মনে মনে
তানিয়া বৃষ্টির দোষ দিয়ে তার
গুষ্টি উদ্ধার করতে লাগল।তানিয়ার
অভিমানী মন মাঝে মাঝে
শাহেদকে ও দোষ দিতে লাগল।
কিছুক্ষণ পর তানিয়ার জল্পনা কল্পনার
অবসান ঘটিয়ে শাহেদ প্রবেশ করল
ক্যাম্পাসে। এতক্ষণ শাহেদের উপর
অভিমান করে থাকলে ও শাহেদের
জন্য তার মনটা ঠিকই ছটফট করছিল।
শাহেদ তানিয়ার কাছাকাছি
আসতেই তানিয়া মুখ ঘুরিয়ে
শাহেদকে বলল,
- তুমি আমাকে ভালইবাস না,যদি
বাসতে তবে আজ এত দেরি করে
আসতে না ।
- কেন ?? আজ দেরি করে আসলে কোন
সমস্যা আছে ?
সত্যি আজ শাহেদ তার জন্মদিনের
কথা ভূলে গেছে এ কথা ভাবতেই
তানিয়ার দুই চোখে দুই বিন্দু পানি
জমল।তানিয়া তার চোখের জল আড়াল
করার জন্য মন ভালো নেই বলে
শাহেদের সামনে থেকে সরে
যেতে ছাইল।কিছুই শাহেদের চোখ
এরালো না।তাই সে পিছন থেকে
তানিয়ার হাত টেনে মুখোমুখি দাড়
করাল।তারপর বলল-
“উইশ করিনি বলে ম্যাডামের এত রাগ”
তানিয়া এবার আর তার চোখের
পানি ধরে রাখতে পারলনা।
শাহেদের বুকে মাথা রেখে ফুঁপিয়ে
কাঁদতে লাগল।হঠাৎ আশেপাশের
লোকজন তাদের দিকে তাকিয়ে
আছে বুঝতে পেরেই শাহেদের বুক
থেকে মাথা সরিয়ে নিল সে।তারপর
তানিয়াকে তার জন্মদিন উপলক্ষে
তাজা ২০টি গোলাপ উপহার দিল।
তানিয়া বলল আর কখন এভাবে কষ্ট
দিবে না আমায়।
হাঁ সূচক মাথা নাড়ল শাহেদ। তারপর
জোরে বৃষ্টি শুরু হল।শাহেদ তার হাতে
থাকা ছাতাটা মেলে ধরল।শাহেদ
আর তানিয়া হাতে হাত ধরে হাটছে।
অস্বস্তিকর বৃষ্টি ই এখন অনেক স্বস্তিকর
লাগছে এখন তানিয়ার।অনুমতির
অপেক্ষা না করেই শাহেদ
তানিয়াকে একদম নিজের কাছে
টেনে আনল।তাদের দুইজনের মুখ
কাছাকাছি আসতেই ছাতার আড়ালে
চোখ বুজে আসলো দুজনের।সিক্ত
চুম্বনে আবিষ্ঠ হল তাদের ওষ্ঠ যুগল।দমকা
হওয়ায় হঠাৎ উড়ে গেল ছাতা।ইস!! কি
লজ্জা !!!!!! আশেপাশের সবাই তাদের
দিকে তাকিয়ে আছে তাদের
দিকে।
ছাতা ওড়ার সাথে সাথে ঘুম
ভেঙ্গে গেল তানিয়ার।ঘুম থেকে
উঠে দেখল শাহেদ হাতে কেক নিয়ে
দাঁড়িয়ে আছে তার সামনে।তারপর
একে একে ৩০টি গোলাপ উৎসর্গ করে
জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাল তাকে।
গত কাল রাতে তানিয়া তার জন্মদিন
নিয়ে চিন্তা করতে করতে কি অদ্ভুত
সপ্নই না দেখে ফেলেছে ।তখন ও তার
পাশে শুয়ে আছে তাদের নিষ্পাপ ৩
বছরের মেয়ে।শাহেদ তানিয়ার
বিয়ে হল আজ প্রায় ৫ বছর।নিস্পাপ
মেয়েটার দিকে চোখ পড়তেই শাহেদ
তানিয়া একসাথে আদর করল তাদের
ঘুমন্ত অপ্সরীকে।
আবার ও শাহেদ কাছে টেনে নিল
তানিয়াকে তবে এবার স্বপ্নে নয়
বাস্তবে।
তারপরের দৃশ্যে আর আমাদের থাকা
ঠিক হবে না ।

(প্রেম বিদ্যমান মানবজাতির প্রতিটি
ক্রোমজমে।সে সর্বদা জানান দেয়
তার অস্তিত্ব আমরা যে অবস্থায়
থাকি না কেন জাগ্রত অথবা ঘুমন্ত)

উৎসর্গঃ আমার পাগলিটাকে