হঠাত নাইম আর মিতু দুইজন
আলাদা আলাদা জায়গায় চলে যায়।
পরে নাইম আর মিতুর দেখা হলেও নাইম
মিতুকে চিনতে পারে না।
.
হঠাত একদিন নাইম মিতুর এক মামার
সাথে মিতুদের বাড়ির
দিকে ঘুরতে যায়। মিতু নাইম
কে দেখে মিতুর মামার কাছে সব কিছু
শোনে।
পরের দিন মিতু নাইম কে বলে
-আপনার নাম নাইম?
-হ্যা।কেন?
-তুই কি সেই নাইম?
-আমি তো সেই নাইম। কোন নাইম এর
কথা বলছেন?
-আরে আমি মিতু। মনে আছে আমার
কথা?
-হ্যা।তাই বল। তাই
তো বলি চেনা চেনা লাগছে।
-কেমন আছিস বল?
-ভাল।তুই আমাকে চিনলি কিভাবে?
-কালকে সবুজ মামার কাছ থেকে তোর
সবকিছু শুনলাম। তারপরেই
তো তোকে চিনলাম।
-ও। আচ্ছা থাক পরে কথা বলবো।
-তুই কি এখনো ছোটবেলার মত
দুষ্টামি করিস?
-কিছুটা। আচ্ছা আসি।পরে কথা হবে।
-আচ্ছা যা।
.
তারপর থেকেই আবার নাইম আর মিতু
ভাল বন্ধু। তবে বেশি ভাল বন্ধু। শুধু বন্ধুই
না।
মিতুদের এলাকার সবাই জানে নাইম আর
মিতুর মধ্যে ভালবাসার সম্পর্ক আছে।
কিন্তু তাদের ধারনা ভুল। তারা শুধুই
ভাল বন্ধু।
আবার শত্রুর মতই।তাদের
মধ্যে ঝগড়া লাগে। আবার মিল
হয়ে যায়। তাদের ঝগড়া বাধে সামান্য
বেপার নিয়েও।
একদিন প্রাইভেট পড়া অবস্থায় নাইম কলম
আনে নি। তো স্যারকে বলল
-স্যার। কলম আনি নি।
-তো কি দিয়ে লিখবে?
-একজনের থেকে কলম নিয়ে দেন।
-এই তোমাদের মধ্যে একজন কলম দাও
তো ওকে।
মিতু নাইম কে বলল
-ওই।কলম নিয়ে আসতে পারিস না?
-তাতে তোর কি?
-কলম চাচ্ছিস কেন?
-আমি কি তোর কাছে চাইছি?
-আমার থেকে চাস নাই।কিন্তু আমাকেই
দিতে হবে। এই নে।
-দে।
নাইম মিতুর কলম দিয়েই লিখলো।
.
পরেরদিন নাইম পড়তে আসলো। স্যার
লিখতে দিল।এমন সময়ে মিতু নাইম
কাছে আগের দিমের কলম টা চাইলো।
নাইম দিল না। তাই মিতু
না লিখে বসে থাকলো। কিন্তু মিতুর
কাছে কলম আছে। মিতু জেদ
করে আছে নাইম এর কাছ থেকে কলম
নিয়ে লিখবে। মিতু বলল
-আমার কলম দে।
-কলম দিয়ে কি করবি?
-লিখবো।
-তোর আরো কলম আছে। সেই কলম
দিয়ে লেখ।
-না আমি ওই কলম দিয়েই লিখবো।
-দিব না তোর কলম
-দিবি না?
বলেই কিল মারা শুরু করলো নাইম কে।
নাইম বলল
-তোর ভাগ্য ভাল।
-কেন?
-তুই মেয়ে। তাই
তোকে মারতে পারছি না।
ছেলে হলে কিলের জবাব দিতাম।
তবুও নাইম ছাড় দেয় না মিতুকে।সেও
কিল দেওয়া শুরু করে নাইম কে।
তাদের ঝগড়া বাধে সামান্য বেপার
নিয়ে।
.
ভালই চলছে মিতু আর নাইম এর বন্ধুত্ত। মিতু
আর নাইম এমনিতে ঝগড়া করে। আবার
ফোনেও তাদের ঝগড়া বাধে।
.
এর মধ্যে মিতুর সেই মামা নাইম আর
মিতুর সম্পর্কে সব জেনেছে। একদিন নাইম
সিগারেট খাচ্ছিল এমন সময়ে মিতুর
মামা একটা ছবি তুললো।
নাইম বলল
-কিরে ছবি তুললি কেন?
-এই ছবি নিয়ে মিতুকে দেখাবো।
-ওকে দেখিয়ে কি করবি।
-ও জানবে তুই সিগারেট খাস।
-বল কোন সমস্যা নাই।
মিতুর মামা মিতুকে ছবিটা দেখায়।
.
পরেরদিন মিতু নাইম কে বলে
-কিরে তুই নাকি সিগারেট খাস?
-হ্যা।খাই তো। তাতে কি?
-তোর মাকে বলে দিব।
-বলিস না প্লিজ।
-তাহলে সিগারেট খাওয়া বাদ দে।
তাহলে বলবো না।
-বাদ দিবো না।
-তাহলে তোর মাকে বলে দিব।
-বল যা।
.
বিকেলে মিতু ফোন করলো। নাইম
মেয়ে মানুষের কন্ঠ বলল
-হ্যালো।
-হ্যালো আপনি কে?
-আমি নাইম এর মা। তুমি কে?
-আমি নাইম এর বন্ধু।
-ও। কি দরকারে ফোন করেছ?
-আন্টি নাইম সিগারেট খায়।
-বলো কি সত্যি?
-হ্যা। সত্যি।আমি নিজে দেখেছি।
-তোমার সামনে খেয়েছ?
-না।একজনের সামনে খেয়েছিল।
সে ছবি তুলে আমাকে দেখিয়েছে।
-ও আসুক আজ ওর খবর
আছে(মনে মনে হেসে।)
-আচ্ছা আন্টি রাখি।এই কারনেই ফোন
করেছিলাম।
-আচ্ছা।
.
নাইম ফোন রেখেই হাসা শুরু করলো।
মায়ের নালিস মাসির কাছে।
নাইমকেই বলছে নাইম এর সিগারেট
খাওয়ার কথা!!!
.
পরেরদিন নাইম এর সাথে মিতুর
দেখা হল।মিতু বলল
-কিরে কালকে কেমন দিয়েছি?
-কি দিয়েছিস?
-তুই সিগারেট খাস এইটা আন্টির
কাছে বলেছি।তোর কি করেছে?
-উরি। মেরে হাত
পা ব্যাথা করে দিছে(মনে হাসছে)
-বলেছিলাম না।আমি বলে দিবো।
দেখছিস বলে দিয়েছি।
-তাতে কি লাভ হয়েছে?
-তুই মাইর খাইছিস।
-আমি মাইর খাবো ক্যান?
ফোনটা আমি ধরেছিলাম।
ধরে মেয়ে মানুষের
কন্ঠে কথা বলেছিলাম।
-কি বললি!!! তুই মাইর খাস নাই?
-না।
-তাহলে আমি এবার তোকে মারবো।
বলেই শুরু করলো নাইম কে মারা।নাইম ও
জবাব দিতে থাকলো।
নাইম মারামারি করলেও মজাও পায়
এতে।নাইম এর মিতুর সাথে বন্ধুত্ত করার
পরে ভালই লাগে। এভাবেই চলছিল
নাইম আর মিতুর বন্ধুত্ত।
.
হঠাত নাইম খেয়াল করলো মিতুর
প্রতি সে ভালবাসা অনুভব করছে।
তবে এটা বন্ধু হিসেবে না।
প্রেমিকা হিসেবে।
ঝগড়া থেকেই নাইম মিতুর
প্রেমে পরে গেছে। কিন্তু
ঝগড়া করতে থেকে কখন মিতুর প্রেমের
পরেছে সেটা নাইম নিজেও
বুঝতে পারে নি।
কিন্তু কিছুতেই সে বলতে পারছে না।
কারন যদি বন্ধুত্ত ভেঙে যায়? এই ভয়ে।
.
একদিন নাইম আর মিতু যাচ্ছিল। মিতু বলল
-কিরে এখন ও সিগারেট খাস?
-হ্যা। তবে একজন কে আমি ভালবাসি।
যদি তার সাথে প্রেম
করতে পারি তাহলে আর সিগারেট
খাবো না।
-সত্যি!! তাহলে তাকে বল ভালবাসার
কথা।
-না।বলতে সাহস পাই না।
-কেন। কে সে?
-আরে তুই তো সে(আস্তে আস্তে)
-কিছু বললি?
-না।
-তাহলে আমি তাকে বলে দেই।
-তুই বলতে পারবি না।
-আচ্ছা তুই বল গিয়ে।
.
নাইম কিছুতেই
মিতুকে ভালবাসি কথাটা বলতে পারছে না।
তার একটাই ভয় যদি বন্ধুত্ত নষ্ট হয়?
তার ইচ্ছা মিতু তার সাথে প্রেম
না করুক বন্ধুত্তটা যেন রাখে। নাইম
না পারছে বলতে না পারছে সইতে।
নাইম এর বন্ধুরা বলেছিল
-তুই মিতুকে বিয়ে করতে চাস?
তিনদিনের মধ্যে তোর
সাথে বিয়ে দিবো।
-আরে না।বিয়ে করলে তো হবে না।
আমি ওকে ভালবেসে বিয়ে করবো।
-তাহলে কি করবি?
-দেখি বলে কি হয়?
.
নাইম এখনো বলতে পারে নি মনের
কথাটা। কিভাবে বলবে? যদি মিতু রাগ
করে বন্ধুত্তটা নষ্ট হয়ে যায়?
মিতুও নাইম এর মনের
কথা বুঝতে পারে নি।
মিতুকি এমনিতেই নাইম এর মনের
কথা বুঝতে পারবে? নাকি শুধু নাইম এর
ভালবাসা নিরব ই থেকে যাবে?
ঝগড়া থেকে শুরু
হওয়া ভালবাসা কি ঝগড়া দিয়েই শেষ
হবে?
নাকি ভালবাসা হাসি খুশি ভাবেই
চলবে?