মেনু

Drop Down MenusCSS Drop Down MenuPure CSS Dropdown Menu

সংকলন ৪৫- টাকা থাকলেই সুখি হয় না

লেখকঃ Rabby Mondol (অস্থির পোলা)

তিন বোনের পরে জন্ম নিল রাহাত
অনেক আদরের ছেলে রাহাত।
বোনেরা তাকে অনেক ভালবাসে। তবে তিন
বোনের ও অনেক আদর। রাহাতের
বাবা মা রাহাতের কোন ইচ্ছাই অপুর্ন
রাখে না। রাহাতের বাবা রাহাত কে নাম
ধরে ডাকে না। রাহাতকে বাবা বলে ডাকে।
রাহাত এর বাবা পেশায় একজন
কাঠমিস্ত্রি।এবং তাদের অল্প জমিও আছে।
জমিতে ফসল ফলিয়ে এবং কাঠমিস্ত্রির কাজ
করে তাদের সংসার ভালই চলে।
.
কিন্তু রাহাতের বাবা বেশিদিন
কাঠমিস্ত্রির কাজ করতে পারে না। তার
কিছু অসুখ এর কারনে কাঠমিস্ত্রির কাজ
বন্ধ হয়ে যায়।তারপরে তাদের জমিতে ফসল
ফলিয়ে মোটামুটি চলে সংসার।রাহাতের
বাবার ইচ্ছা রাহাতকে ডাক্তারি পরাবে।
এবং তার ছেলে মানুষের সেবা করবে।
.
কিছুদিন পরে তাদের সমস্যার কারনে সব
জমি বন্দক রাখতে হয়। তবে কোন রকম
চলে তাদের সংসার। রাহাত আর এখন কোন
কিছু চায় না বাবা মায়ের কাছে।
.
এর মধ্যে একটা মেয়েকে ভাল
লাগে রাহাতের। মেয়েয়ির নাম মিম।
কিন্তু কিভাবে বলবে ভালবাসার কথা।
কারন মেয়েটি তার নিকট আত্বিয়। তাই
বলতে ভয় পাচ্ছে। যদি মেয়েটি তার
মাকে বলে তাহলে রাহাতের অনেক
সমস্যা হবে।
তবুও বলে মেয়েটিকে ভালবাসার কথা।
কিন্তু মেয়েটি কিছু বলে না।কিছুদিন
পরে আবার বলে তখন বলে পরে দেখা যাবে।
.
এর মধ্যে মেয়েটির বাড়ি থেকে বিয়ের
কথা বলে। কিন্তু এটা রাহাত জানে না।
হঠাত বিয়ের দিন রাহাত জানতে পারে।
রাহাত শুনার পরে রাহাতের অনেক খারাপ
লাগে।রাহাতের অনেক ইচ্ছে ছিল তার
ভালবাসার মানুষকে বিয়ে করবে।
তাকে নিয়ে সুখের ঘর বাধবে। কিন্তু
সেটা আর হল না। রাহাত ভাবে "গরিবের
সব ইচ্ছে পুরন হয় না। গরিবের ভালবাসা এ
যুগে কোন দাম নাই।"
যদি রাহাতের বাবার
টাকা থাকতো তাহলে রাহাত তার
ভালবাসার মানুষকে আপন
করে নিতে পারতো। ছেলেটার বয়স মিমের
বয়সের দিগুন। তবুও মিম
বিয়েতে রাজি হয়ে যায়। আর মিমের
বাড়ির লোক ও রাজি হয়ে যায়।
তাদের মেয়ে সুখে থাকবে এই ভেবে।
কারন ছেলেটার টাকা পয়সা আছে।সেই
তুলনায় রাহাত কিছুই না।
.
বিয়ে হয়ে যায় মিমের। কিন্তু রাহাতের
কিছুই করার থাকে না। রাহাত শুনতে পায়
ছেলেটি নাকি ভাল।
বিয়ের কিছুদিন পরে মিমের পরিবার
মিমের স্বামির আসল রুপ দেখতে পায়।
আসলে মিমের স্বামির বাড়ির লোক ছিল
অত্যন্ত লোভি। তাদের টাকা থাকা সত্তেও
টাকার জন্য মিমের বাড়ির লোক কে চাপ
দেয়। যতটা সুখি হওয়ার কথা ছিল
ততটা সুখি মিম হতে পারে না।
রাহাত ভাবে "সুখের জন্য
বিয়ে করলো টাকাওয়ালা কে। কিন্তু
টাকা দিয়ে তো সুখ কিনতে পারলো না।
হায়রে টাকা"
.
মিমের জন্য রাহাত অনেক ভাবে।
এতে রাহাতের লেখাপড়ার
কিছুটা ক্ষতি হয়। তাই পরিবার থেকেও
তেমন ভাল ব্যাবহার পায় না। আর কথায়
আছে অভাবে সভাব নষ্ট। রাহাত তেমন
পরিবার থেকে কোনকিছু আবদার করলে পেত
না। মিমের কথা ভেবে রাহাত
পরে ভাবা বাদ দেয়। কি লাভ মিমের
কথা ভেবে?
.
কিছুদিন পরে রাহেতদের অভাব আর
থাকে না।রাহাতের এখন আবার
টাকা পয়সা ফিরে আসে। যেই টাকার জন্য
মিম তাকে ছেড়েছিল। সেই টাকা আজ
রাহাতের আছে।
.
কিছুদিন পরে রাহাত
পড়ালেখা করতে বিদেশে চলে যায়।
ভালভাবে পড়ালেখা করে রাহাত ডাক্তার
হয়ে দেশে ফিরে আসে। এখন সে তার
বাবা মায়ের ইচ্ছা পুরন করতে পেরেছে।
বিমামুল্ যে মানুষের
মানুষকে সেবা প্রদান করে।এই জন্য মানুষ
তাকে অনেক ভালবাসে। মানুষের
ভালবাসা পেয়েই বেশি সুখি রাহাত। ভালই
চলতে থাকলো রাহাতের দিন।
.
হঠাত একদিন মিমের সাথে দেখা হয়
রাহাতের। এখন আর আগের মত নেই মিম।
রাহাত নিজে থেকেই কথা বলে মিমের
সাথে।
-কেমন আছো মিম?
-ভাল।
-কেমন ভাল?
-যেমন রেখেছে খোদা।
-কেন? ভালই তো থাকার কথা। তোমার
স্বামির তো টাকাপয়সা আছে।
-টাকা থাকলেই কি আর সুখ পাওয়া যায়?
-কেন? সুখ পাওয়া যাবে না? টাকার জন্যই
তো বিয়ে করেছিলে টাকাওয়ালা লোককে।
-সেদিন তো বুঝতে পারি নি টাকা থাকলেই
জিবনে সুখ পাওয়া যায় না।
-ভাল থেকো। আর কোনদিন তোমার খারাপ
চাই নি।আর চাইবো না।
-আমার সবচেয়ে ভুল ছিল তোমাকে ভাল
না বেসে টাকা দেখে অন্যকে বিয়ে করা।
-ভুল তো করেই ফেলেছ।
-না জানি কতদিন ভুলের মাশুল দিতে হবে।
টাকা থাকলেই সুখি হওয়া যায় না।
-বুঝতে পেরেছ?
-হ্যা। সেটা এখন বুঝতে পেরেছি।
.
রাহাত বিয়ে করেছে গরিব ঘরের
একটা মেয়েকে।মেয়েটি অনেক ভাল।
টাকা পয়সার প্রতি রাহাত এর তেমন লোভ
নেই।তাই নিজের বাবার
যা জমিজমা আছে সেটাতেই চলে যাবে তার
জিবন।
তাই রাহাত
বিমামুল্যে মানুষকে চিকিৎসা করে। মানুষ
গুলো রাহাতের জন্য দোয়া করে।আর মানুষ
তাকে অনেক ভালবাসে, শ্রদ্ধা করে,সন্মান
করে।
রাহাত যেই সন্মান,ভালবাসা মানুষের
থেকে পেয়েছে টাকার লোভ
থাকলে হয়তো সেটা পেতনা।
রাহাত অনেক সুখি হয়েছে।কারন এত মানুষ
সব সময় তার ভাল চায়।তার জন্য
দোয়া করে।
[[টাকা দিয়ে সুখ কেনা যায় না। কিন্তু
মানুষকে ভালবাসলে, মানুষের
সেবা করলে,উপকার করলে মানুষের
ভালবাসা পাওয়া যায়।আর এতেই প্রকৃত সুখ]]