মেনু

Drop Down MenusCSS Drop Down MenuPure CSS Dropdown Menu

সংকলন ৮২- নিশিরাতে চাদের নেশা

রনি আধা ঘন্টা ধরে চান্দু মামার হোটেলে বসে আছে।কিন্তু সুহৃদের
দেখা নেই।আজকে হাছানের গ্রামের বাড়িতে চাঁদ দেখতে যাবার কথা।সুহৃদ
হলুদ রঙ্গের একটা পান্জাবী পরে হাসি হাসি মুখে রনির সামনে এসে দাড়াল।সুহৃদ বললঃবন্ধু আজকে পার্টি একদম চরম হবে। টাকা পাবি কোথায়?।
টাকা তো আমার পকেটে? রনি বললঃশালা আবার চুরি করছিস।
না বন্ধু চুরি করি নাই।তুইতো জানিস আমার ফুপা অনেক বড় লোক।তার কাছে গিয়ে বললামঃবাবা অনেক অসুস্থ। বাবাকে হাসপাতালে নেয়া লাগবে।
কিন্তু বাবার কাছে কোন টাকা নেই। তাই মা আপনার কাছে পাঠাল কিছু
টাকার জন্য।ব্যাস দেখি ফুপাজানে একহাজার
টাকা বের করে দিল।তারপর থেকে আর বাসায় যাইনি।রনি বললঃটাকা পাব
কোথায় এটা নিয়ে খুব চিন্তায় ছিলাম।যাক বাচালি।।কিন্তু
তোকে তো কোন সময় হলুদ পান্জাবী পরতে দেখিনি।
এটা পেলি কোথা থেকে?।রনি দেখল সুহৃদ মাথা চুলকাচ্ছে।রনি বুঝে ফেলল
পান্জাবী পেল কিভাবে।সুহৃদ বাবা মায়ের একটাই সন্তান।
পরিবারে কোন অভাব নেই।এককথায় বলা চলে সুখী পরিবার।সুহৃদ মাষ্টার্স
কম্প্লিট করে এখন ও বাবার ঘাড়ে বসে আছে।আর যতই দিন
যাচ্ছে ততই ওর চুরি করার অভ্যাস বেরে যাচ্ছে।কিরে রনি হাছান
কে তো দেখছি না।হাছান তো জানে প্রতিমাসের পুর্নিমার
রাতে আমরা এক হয়ে গ্রামের বাড়ি যাই।হাছান কি মারা গেছে,
নাকি আছে।রনি বললঃগত কয়েকদিন আগে শুনছিলাম ওর নাকি আলসার হইছে।
কিছুই খেতে পারে না।যাই খায় তাই বমি করে ফেলে দেয়।এর মধ্যেই হাসান
একটা চাদর গায়ে মামার দোকানে ঢুকল।রনি আর সুহৃদ
হাসানকে দেখে অবাক হয়ে গেল।শরীর যেন বাতাসে উড়ছে।কথাও কেমন যেন
ফ্যাস ফ্যাস করে বলছে।
রনি বললঃকিরে তোর একই অবস্থা?।আর বলিস নাঃগত পনের দিন
হাসপাতালে পরেছিলাম। আজকে বেরহতে গিয়ে দেখি,
আমাকে বের হতে দেয়না। বলে আমি নাকি আর দুই মাসের মত
বেচে থাকব।আমি ও কম চালাক না। একটা নার্সকে খাটের
সাথে বেঁধে উপরে চাদর দিয়ে ঢেকে রেখে পালিয়ে আসছি।
হাছানের কথা শুনে ওরা দুইজনেই জোরে হাসতে লাগল।হাছান বললঃবন্ধু
আমাদের গ্রামের বাড়ি যাওয়া যাবে না।কারন গতবার
তোরা আমার মামার সামনে লেংটা হয়ে যা করেছিস।এরপর
গেলে মার খেতে হবে।সুহৃদ বললঃআমরাই শুধু লেংটা হইছি।
তুমি হওনাই?।যাক এসব কথা বাদ।এখন চাঁদ দেখার জন্য কোন পার্কে যেতে হবে।
হাছান বললঃসব মিলে কত টাকা হবে আমাদের কাছে।তিন জনেই
পকেট হাতিয়ে মোট পনের শত বিশ টাকার মত বের করল।রনি বললঃচল এখন যাই এই টাকায়ই হয়ে যাবে।হাছান সবাইকে চমকে দিয়ে এক বোতল রেড
লেভেল বের করল চাদরের ভিতর থেকে।আরে এটা পেলি কোথায়। হাছান
একটা রহস্যময়ী হাসি দিয়ে বললঃফার্মগেট
থেকে আসার সময় বাড় থেকে কিনে নিয়ে আসছি।খুব ভাল
করেছিস বন্ধু।এখন চল সবাই জোছনা বিলাস করতে যাই।
তিনজন রমনা পার্কের একটা কোনায় এসে বসল।এর
মধ্যে রনি টাকা দিয়ে দুইটা ফেনসিডিল আর বাকি টাকার সিগারেট
নিয়ে আসছে।হাছান বললঃবন্ধুরা এখন শুরু করা যাক।তবে নেশা করার
আগে একবার চাঁদটাকে দেখে নেই। তিনজনই চাঁদের দিকে তাকিয়ে আছে।
এখন বোতল খোলা যাক।কিন্তু গ্লাসতো নাই।সুহৃদ পকেট
থেকে দুইটা গ্লাস বের করে দিল। শালা তুই আবার চুরি করছিস।তাও
মামার দোকান থেকে।চুরি করলাম কই। খাওয়া শেষ হলে আবার দিয়ে আসব।
হাছান বললঃভাই তোরা থামবি।এখন খাবার সময় কোন ডাকাডাকি করিস
না। তিনজনে খাওয়া শেষ করল।কিন্তু মাঝখানে হাছান বমি করা শুরু করছে।
এখনও বমি করে যাচ্ছে।আজকের এই চাঁদের রাতই হল হাছানের জীবনের
শেষ রাত।তা কেউই জানেনা। রনি বললঃবন্ধু আমি তো চাঁদের নিচেই
আছি ঠিক না।সুহৃদ বললঃহুম তুই চাঁদের নিচেই আছিস। তবে আমার
মনে হচ্ছে আমি চাঁদের উপরে।আর হাছান হল চাঁদের মাঝামাঝি।হাছান
বমি করে ঘাসের উপরেই শুয়ে আছে। রনি বললঃবন্ধু আমি যদি চাঁদের নিচেই
থাকি তাহলে রিংকি ও তো মনেহয় চাঁদের নিচেই আছে।নাহ বন্ধু
রিংকি চাঁদের পাশে এখন।কারন কানাডাতে এখন দিন।তবে বন্ধু তুই
চিন্তা করিসনা।তুই রিংকিকে পাওনাই তাতে কি হইছে।
রিংকি ওতো তোকে পায় নাই।তাই না পাওয়ায় না পাওয়ায় কাটা কাটি।
যেমন ধর মাইনাসে মাইনাসে প্লাস।আর তোর না পাওয়ার প্লাসটা কি হল
জানিস।প্রাসটা হল তোরা এক পৃথিবীতেই আছিস।
তাতে রিংকি যে দেশেই থাকুক।সুহৃদ লক্ষ করলঃরনি চাঁদের
দিকে তাকিয়ে কান্না করছে।ওর চোখের জল গুলো কেমন যেন এক এক
টুকরো হিরের মত জ্বলছে।সুহৃদ ভেবে পেল না।এরকম চাঁদের
দিকে তাকিয়ে কান্না করা লাগবে কিসে প্রতিবার। তাও একটা মেয়ের জন্য।
যে ধনী ছেলে পেয়ে বিয়ে করে কানাডা চলে গেছে। করুক কান্না।যদি ভালোবাসার
মানুষটিকে না পাওয়ার কষ্ট কান্না দিয়ে থামান যায়।
তাতে সমস্যা কি?।তবে সুহৃদের অনেক আগে থেকেই ইচ্ছা রনির
গালবেয়ে যে হিরের টুকরো গুলো পরছে।
সেগুলো চুপি চুপি পকেটে ভরে ফেলতে। কিন্তু শালার রনি চোখই বোঝেনা।
শালা কান্না করবি তো চোখ বুঝে কর। চোখ খোলা রাখার কি দরকার।
আহারে হিরের টুকরো গুলো কিভাবে হারিয়ে যাচ্ছে।