১
.
সোফায় বসে জামাল চারিদিকে
তাকাচ্ছে। ঘরটা কত সুন্দর ভাবে
সাজানো। সোফার পাশে একটা ছবি
রাখা। ছবিটার দিকে জামাল বার
বার তাকাচ্ছে।.....
.
একটু পরে আনিকা সোফায় বসে বলল
-কি খবর তোমার?আগের মতই আছো?
নাকি বদলেছ?
-মানুষ চাইলে কি বদলাতে পারে?
-বারে বারে ওই ছবিটার দিকে
তাকাচ্ছ কেন?
-ছবিটা চেনা চেনা লাগছে।
-ওটা তোমার আকা ছবি। যেটা তুমি
আমার জন্মদিনে দিয়েছিলে।
-তুমি এখন ও ছবিটা রেখে দিয়েছ?
-আমার প্রিয় ছবি।তাই যেখানে যাই
সাথে নিয়ে যাই।
-ও। তোমার ছেলে কোথায়?আমার
কথা বলেছ তাকে?
-শুধু আমার ছেলে কি!!! তুমি তো তার
বাবা।
-কালকে আমি ছেলেকে আমার
বাসায় নিয়ে যাবো।সে কি রাজি
হবে
বাসায় এসে বড় এক কাপ চা নিয়ে
চেয়ারে বসে পরলো। জামালের
এইরকম চা খেতে ভালই লাগে.....
.
২
.
আনিকা শিল্পকালার মেলায় এসে
আকা ছবিগুলো দেকছে। একটা ছবি
দেখে আনিকা দাড়িয়ে আছে।
.
একজন পিছন থেকে বলল
-কোন সমস্যা?
-আচ্ছা এই ছবিটা কে এঁকেছে?
-আমি এঁকেছি।
-আপনি!! কিন্তু দেখতে তো আমার মত।
আপনি কি আমাকে চেনেন?
-এর আগে কখনও দেখিনি। তাহলে
চিনবো কিভাবে?
-এই ছবিটা আকলেন কিভাবে?
আমাকে না দেখেই?
-আমার মনের ভেতরে একজনের ছবি
ভেসে উঠেছিল।আপনার সাথে
মিলে যাবে এটা ভাবি নি।
-আমি কি এই ছবিটা নিতে পারি?
-হ্যা।
-কত টাকা দিতে হবে?
-আপনাকে আমি এই ছবিটা বিনামূল্য
দেব।
-কেন?
-কারন আমার কল্পনার সাথে আপনার
মিল আছে। আর কল্পনার মানুষকে একটা
ছবি উপহার দিতে পারলে ভাল
লাগবে।
.
ছবিটা পাওয়ার পরে আনিকা খুশি
হয়েছে। আরও বেশি খুশি হয়েছে
ছেলেটার সাথে দেখা হয়ে।
ছেলেটা একদম আনিকার মনের মত আর
আনিকাও ছেলেটির মনের মত।
আনিকা তার প্রেমে পরেছে এটা
এখন বলার বাকিমাত্র।
.
এরপরে কেটে গেল দুই বছর....
আজ জামাল আনিকার প্রথম সন্তান জন্ম
নিল। জামাল তার পছন্দের একটি নাম
দিয়েছে স্বাধিন। আনিকা তার
পছন্দের নাম দিয়েছে।
.
আজ আনিকা জামালকে ছেড়ে
যাচ্ছে।সেদিন চিত্রকলায় আকা ছবি
জামাল মনের কল্পনাতে আকে নি।
আনিকার এক চাচাত ভাই জামালের
কাছে ছবি দিয়ে আকতে দিয়েছিল।
আর পরে সেই ছবি নিতে আসে নি।
তাই জামাল ছবিটি চিত্রকলার
অনুষ্ঠানে উপস্থাপন করে।
.
অনেক চেষ্টার পরেও জামাল
আনিকাকে ধরে রাখতে পারলো না।
আনিকা শুধু একটা কথা বলল
-যে মানুষ ভালবাসার মানুষের সাথে
মিথ্যা কথা বলে তার সাথে আমি
থাকবো না।
সেদিনের মিথ্যা কথার কারনে এত
কিছু হবে সেটা জামাল ভাবে নি।
.
আনিকা চলে যাওয়ার কয়েকমাস পরে
এক প্রবাসী প্রফেসর এর সাথে
আনিকার বিয়ে হয়ে যায়। আর
জামালের সন্তান তার কাছেই
থাকে।
.
অতিতের কথাগুলো কখন জামাল
ভাবতে শুরু করেছে সেটা জামাল
বুঝতে পারে নি।
.
৩
.
মিতু আজ অনেক দেরি করে অফিসে
এসেছে। সে জানে আজ তার বস আজ
অনেক কথাই বলবে। বলবে "কি মেডাম
আরেকটু পরে তো লাঞ্চ সেরেই
আসতে পারতেন " অথবা বলবে "কি
মেডাম রাস্তায় কি পানি জমে
গেছে নাকি যে আসতে এত দেরি
হয়?"
.
রুমে ঢুকে চেয়ারে বসে মিতু তার
পাশে বসা শিরিন আপার দিকে
তাকিয়ে হেসে বলল
-কি খবর আপা?
শিরিন আপা মলিন হাসি দিয়ে বলল
-আজকেও দেরি?
-বস ডেকেছে?
-অনেকবার।
.
মিতু বসের রুমে গিয়ে দাড়িয়ে
আছে। বস বলল
-মেডাম যে। বসুন।
-স্যার। মানে।
-নিয়মিত দেরি করে আসতে ভালই
লাগে?
-স্যার আজকে গাড়ি পেতে দেরি
হয়েছিল।
-তাহলে কাল থেকে অফিসের গাড়ি
পাঠিয়ে দেব?
-......
-শুনুন আজ থেকেই অফিসের গাড়ি
পাবেন। কারন আপনার প্রোমোশন
হয়েছে।
-কি বলছেন স্যার?
-যা সত্য তাই বলছি। আপনার রেজাল্ট
ভাল। কাজ ভাল তাহলে প্রোমোশন
পাবেন তো।
.
অফিস থেকে বের হয়ে মিতুর আলাদা
একটা ভাব নিতে ইচ্ছে করছে। কারন
সে এখন একজন সিনিয়র অফিসার।
অফিসের গাড়ি নিয়ে চলে। আবার
অফিসে ঢুকতে বের হরে সবাই সালাম
দিচ্ছে।
.
অফিসের গাড়ি নিয়ে জামালের
বাড়ির সামনে দিয়ে যেতেই
জামালের কথা মনে পরে গেল।
হয়তো জামাল এখানে দাড়িয়ে
থাকতে পারতো।আর মিতু তার কাছে
গিয়ে বলতো "এস আমার গাড়িতে
বসো।" জামাল অবাক হয়ে বলতো
-তোমার গাড়ি মানে?
-আজ প্রোমোশন হয়েছে। অফিস
থেকে আমাকে দিয়েছে।
.
কিন্তু জামাল এখানে নেই। একটা
আধবুড়ো লোকের সাথে মিতু প্রেম
করে। হয়তো মিতুও বুড়ি হয়ে গেছে।
.
যেদিন আনিকার সাথে জামালের
বিয়ে হয় সেদিন মিতু আনিকাকে খুন
করে জামালকে বিয়ে করতে
চেয়েছিল। কারন যেই মানুষটাকে
ছোট বেলা থেকে দেখে আসছে।
ছোট বেলা থেকে ভালবেসে
আসছে। তাকে কিভাবে অন্যের
স্বামি হিসেবে দেখবে?
.
আনিকা চলে যাওয়ার পরে মিতু
জামালের পাশে থাকে। জামাল
পাত্তা না দিলেও আনিকা তার মত
লেগেই ছিল। পরে জামালও
.
৪
.
জামাল তার ছেলেকে নিয়ে
বাসায় নিজের বাসায় আসলো।
প্রথমে ভেবেছিল। জামালের ছেলে
তাকে চিনতে পারবে না। কিন্তু তার
ছেলে তাকে চিনতে পারলো।
মায়ের কাছে ছবি দেখেই নাকি
চিনেছে।
.
বাসায় এসে স্বাধিন বলল
-তুমি আমার একটা ছবি একে দিবে?
-আমি ছবি আকতে পারি। তুমি
কিভাবে জানলে?
-মা বলেছে।
-মা আর কি কি বলেছে?
-তুমি নাকি নাকি কোন কাজ ঠিকমত
করো না।
-হুম।
-এখন আমাকে ছবি একে দিতে
পারবে?
-হ্যা।
-তাহলে আকো।
.
স্বাধিন চেয়ারে বসে আছে। আর
জামাল ছবি আকছে। অনেক চেষ্টা
করেও ছবি আকা হচ্ছে না।আজ
জামালের প্রতিভা নষ্ট হয়ে গেছে।
.
দুইদিন জামাল তার ছেলের সাথে
ভালই ছিল। আজ তার ছেলে চলে
যাচ্ছে। জামাল তার ছেলেকে বলল
-আচ্ছা বাবা। তোমার মায়ের কাছে
থাকতে ভাল লাগে নাকি বাবার
কাছে?
-দুইজনের সাথেই? তুমি আর মা
একসাথে থাকো না কেন?
স্বাধিনের প্রশ্ন শুনে জামাল কিছুই
বলতে পারলো না।
.
৪
.
স্বাধিনকে রেখে আসার পরে
জামালের ঘরটা আক ফাকা ফাকা
লাগছে। চেয়ারে বসে বসে
স্বাধিনের কথা ভাবছে। মিতুর ফোন
পেয়ে জামাল ফোন ধরলো। মিতু বলল
-জামাল ভাই। তুমি আজ বিকেলে
আমাদের বাসায় আসতে পারবে?
মিতুর মুখে ভাই কথা শুনে জামালের
অবাক লাগলো। কারন মিতুর মুখে
জামাল ভাই শোনে নি। মিতুর
ভাইয়ের বন্ধু হওয়ায় তাদের বাড়িতে
যেত। নাম ধরে ডাকার কারনে
অনেকে অনেক কথা বলতো।
জামাল বলল
-কেন?
-কালকে আমাকে দেখে একটা
ছেলে পছন্দ করেছে।
-তোমাকে তো পছন্দ করবেই। অপছন্দ
করার কিছু নেই।
-আজ আমার বিয়ে। ঘরোয়া ভাবেই
আমার বিয়ে হচ্ছে।তুমি ভাইয়ার বন্ধু
হিসেবে আসবেই কিন্তু।
.
জামাল ফোন রেখে দিয়ে
সিগারেট জালিয়ে বসে আছে।ফোন
বেজে যাওয়ায় কারনে জামাল ফোন
ধরলো। ফোনের ওপাশ থেকে বলল
-বাবা। আমরা আজ বিকেলে চলে
যাচ্ছি।
-ও।
-তুমি আমাকে একটা ছবি একে
দেওয়ার কথা ছিল। একে দিবে?
-আচ্ছা আমি একে দিব।
-আচ্ছা।তাহলে একে দিও।
.
ফোন রেখে দিয়ে জামালের চোখ
দিয়ে পানি বের হয়ে গেল।
অনেকদিন পরে জামাল কাঁদছে। শেষ
কেঁদেছিল আনিকা যাওয়ার দিন।আজ
জোড়ে জোরে কাঁদতে ইচ্ছে করছে।
.
জিবন তার গতিতে চলে যাবে।
কারো জিবন কারো জন্য থেমে
থাকবে না।
.
রঙের তুলি হাতে নিয়ে আজ ছবি
আকা হচ্ছে। আজ চোখ দিয়ে পানি
বের হচ্ছে আর রঙের তুলিতে ছবি বের
হচ্ছে.........
.
লেখা--Pabnar Tarcera Balok
.
সোফায় বসে জামাল চারিদিকে
তাকাচ্ছে। ঘরটা কত সুন্দর ভাবে
সাজানো। সোফার পাশে একটা ছবি
রাখা। ছবিটার দিকে জামাল বার
বার তাকাচ্ছে।.....
.
একটু পরে আনিকা সোফায় বসে বলল
-কি খবর তোমার?আগের মতই আছো?
নাকি বদলেছ?
-মানুষ চাইলে কি বদলাতে পারে?
-বারে বারে ওই ছবিটার দিকে
তাকাচ্ছ কেন?
-ছবিটা চেনা চেনা লাগছে।
-ওটা তোমার আকা ছবি। যেটা তুমি
আমার জন্মদিনে দিয়েছিলে।
-তুমি এখন ও ছবিটা রেখে দিয়েছ?
-আমার প্রিয় ছবি।তাই যেখানে যাই
সাথে নিয়ে যাই।
-ও। তোমার ছেলে কোথায়?আমার
কথা বলেছ তাকে?
-শুধু আমার ছেলে কি!!! তুমি তো তার
বাবা।
-কালকে আমি ছেলেকে আমার
বাসায় নিয়ে যাবো।সে কি রাজি
হবে
বাসায় এসে বড় এক কাপ চা নিয়ে
চেয়ারে বসে পরলো। জামালের
এইরকম চা খেতে ভালই লাগে.....
.
২
.
আনিকা শিল্পকালার মেলায় এসে
আকা ছবিগুলো দেকছে। একটা ছবি
দেখে আনিকা দাড়িয়ে আছে।
.
একজন পিছন থেকে বলল
-কোন সমস্যা?
-আচ্ছা এই ছবিটা কে এঁকেছে?
-আমি এঁকেছি।
-আপনি!! কিন্তু দেখতে তো আমার মত।
আপনি কি আমাকে চেনেন?
-এর আগে কখনও দেখিনি। তাহলে
চিনবো কিভাবে?
-এই ছবিটা আকলেন কিভাবে?
আমাকে না দেখেই?
-আমার মনের ভেতরে একজনের ছবি
ভেসে উঠেছিল।আপনার সাথে
মিলে যাবে এটা ভাবি নি।
-আমি কি এই ছবিটা নিতে পারি?
-হ্যা।
-কত টাকা দিতে হবে?
-আপনাকে আমি এই ছবিটা বিনামূল্য
দেব।
-কেন?
-কারন আমার কল্পনার সাথে আপনার
মিল আছে। আর কল্পনার মানুষকে একটা
ছবি উপহার দিতে পারলে ভাল
লাগবে।
.
ছবিটা পাওয়ার পরে আনিকা খুশি
হয়েছে। আরও বেশি খুশি হয়েছে
ছেলেটার সাথে দেখা হয়ে।
ছেলেটা একদম আনিকার মনের মত আর
আনিকাও ছেলেটির মনের মত।
আনিকা তার প্রেমে পরেছে এটা
এখন বলার বাকিমাত্র।
.
এরপরে কেটে গেল দুই বছর....
আজ জামাল আনিকার প্রথম সন্তান জন্ম
নিল। জামাল তার পছন্দের একটি নাম
দিয়েছে স্বাধিন। আনিকা তার
পছন্দের নাম দিয়েছে।
.
আজ আনিকা জামালকে ছেড়ে
যাচ্ছে।সেদিন চিত্রকলায় আকা ছবি
জামাল মনের কল্পনাতে আকে নি।
আনিকার এক চাচাত ভাই জামালের
কাছে ছবি দিয়ে আকতে দিয়েছিল।
আর পরে সেই ছবি নিতে আসে নি।
তাই জামাল ছবিটি চিত্রকলার
অনুষ্ঠানে উপস্থাপন করে।
.
অনেক চেষ্টার পরেও জামাল
আনিকাকে ধরে রাখতে পারলো না।
আনিকা শুধু একটা কথা বলল
-যে মানুষ ভালবাসার মানুষের সাথে
মিথ্যা কথা বলে তার সাথে আমি
থাকবো না।
সেদিনের মিথ্যা কথার কারনে এত
কিছু হবে সেটা জামাল ভাবে নি।
.
আনিকা চলে যাওয়ার কয়েকমাস পরে
এক প্রবাসী প্রফেসর এর সাথে
আনিকার বিয়ে হয়ে যায়। আর
জামালের সন্তান তার কাছেই
থাকে।
.
অতিতের কথাগুলো কখন জামাল
ভাবতে শুরু করেছে সেটা জামাল
বুঝতে পারে নি।
.
৩
.
মিতু আজ অনেক দেরি করে অফিসে
এসেছে। সে জানে আজ তার বস আজ
অনেক কথাই বলবে। বলবে "কি মেডাম
আরেকটু পরে তো লাঞ্চ সেরেই
আসতে পারতেন " অথবা বলবে "কি
মেডাম রাস্তায় কি পানি জমে
গেছে নাকি যে আসতে এত দেরি
হয়?"
.
রুমে ঢুকে চেয়ারে বসে মিতু তার
পাশে বসা শিরিন আপার দিকে
তাকিয়ে হেসে বলল
-কি খবর আপা?
শিরিন আপা মলিন হাসি দিয়ে বলল
-আজকেও দেরি?
-বস ডেকেছে?
-অনেকবার।
.
মিতু বসের রুমে গিয়ে দাড়িয়ে
আছে। বস বলল
-মেডাম যে। বসুন।
-স্যার। মানে।
-নিয়মিত দেরি করে আসতে ভালই
লাগে?
-স্যার আজকে গাড়ি পেতে দেরি
হয়েছিল।
-তাহলে কাল থেকে অফিসের গাড়ি
পাঠিয়ে দেব?
-......
-শুনুন আজ থেকেই অফিসের গাড়ি
পাবেন। কারন আপনার প্রোমোশন
হয়েছে।
-কি বলছেন স্যার?
-যা সত্য তাই বলছি। আপনার রেজাল্ট
ভাল। কাজ ভাল তাহলে প্রোমোশন
পাবেন তো।
.
অফিস থেকে বের হয়ে মিতুর আলাদা
একটা ভাব নিতে ইচ্ছে করছে। কারন
সে এখন একজন সিনিয়র অফিসার।
অফিসের গাড়ি নিয়ে চলে। আবার
অফিসে ঢুকতে বের হরে সবাই সালাম
দিচ্ছে।
.
অফিসের গাড়ি নিয়ে জামালের
বাড়ির সামনে দিয়ে যেতেই
জামালের কথা মনে পরে গেল।
হয়তো জামাল এখানে দাড়িয়ে
থাকতে পারতো।আর মিতু তার কাছে
গিয়ে বলতো "এস আমার গাড়িতে
বসো।" জামাল অবাক হয়ে বলতো
-তোমার গাড়ি মানে?
-আজ প্রোমোশন হয়েছে। অফিস
থেকে আমাকে দিয়েছে।
.
কিন্তু জামাল এখানে নেই। একটা
আধবুড়ো লোকের সাথে মিতু প্রেম
করে। হয়তো মিতুও বুড়ি হয়ে গেছে।
.
যেদিন আনিকার সাথে জামালের
বিয়ে হয় সেদিন মিতু আনিকাকে খুন
করে জামালকে বিয়ে করতে
চেয়েছিল। কারন যেই মানুষটাকে
ছোট বেলা থেকে দেখে আসছে।
ছোট বেলা থেকে ভালবেসে
আসছে। তাকে কিভাবে অন্যের
স্বামি হিসেবে দেখবে?
.
আনিকা চলে যাওয়ার পরে মিতু
জামালের পাশে থাকে। জামাল
পাত্তা না দিলেও আনিকা তার মত
লেগেই ছিল। পরে জামালও
.
৪
.
জামাল তার ছেলেকে নিয়ে
বাসায় নিজের বাসায় আসলো।
প্রথমে ভেবেছিল। জামালের ছেলে
তাকে চিনতে পারবে না। কিন্তু তার
ছেলে তাকে চিনতে পারলো।
মায়ের কাছে ছবি দেখেই নাকি
চিনেছে।
.
বাসায় এসে স্বাধিন বলল
-তুমি আমার একটা ছবি একে দিবে?
-আমি ছবি আকতে পারি। তুমি
কিভাবে জানলে?
-মা বলেছে।
-মা আর কি কি বলেছে?
-তুমি নাকি নাকি কোন কাজ ঠিকমত
করো না।
-হুম।
-এখন আমাকে ছবি একে দিতে
পারবে?
-হ্যা।
-তাহলে আকো।
.
স্বাধিন চেয়ারে বসে আছে। আর
জামাল ছবি আকছে। অনেক চেষ্টা
করেও ছবি আকা হচ্ছে না।আজ
জামালের প্রতিভা নষ্ট হয়ে গেছে।
.
দুইদিন জামাল তার ছেলের সাথে
ভালই ছিল। আজ তার ছেলে চলে
যাচ্ছে। জামাল তার ছেলেকে বলল
-আচ্ছা বাবা। তোমার মায়ের কাছে
থাকতে ভাল লাগে নাকি বাবার
কাছে?
-দুইজনের সাথেই? তুমি আর মা
একসাথে থাকো না কেন?
স্বাধিনের প্রশ্ন শুনে জামাল কিছুই
বলতে পারলো না।
.
৪
.
স্বাধিনকে রেখে আসার পরে
জামালের ঘরটা আক ফাকা ফাকা
লাগছে। চেয়ারে বসে বসে
স্বাধিনের কথা ভাবছে। মিতুর ফোন
পেয়ে জামাল ফোন ধরলো। মিতু বলল
-জামাল ভাই। তুমি আজ বিকেলে
আমাদের বাসায় আসতে পারবে?
মিতুর মুখে ভাই কথা শুনে জামালের
অবাক লাগলো। কারন মিতুর মুখে
জামাল ভাই শোনে নি। মিতুর
ভাইয়ের বন্ধু হওয়ায় তাদের বাড়িতে
যেত। নাম ধরে ডাকার কারনে
অনেকে অনেক কথা বলতো।
জামাল বলল
-কেন?
-কালকে আমাকে দেখে একটা
ছেলে পছন্দ করেছে।
-তোমাকে তো পছন্দ করবেই। অপছন্দ
করার কিছু নেই।
-আজ আমার বিয়ে। ঘরোয়া ভাবেই
আমার বিয়ে হচ্ছে।তুমি ভাইয়ার বন্ধু
হিসেবে আসবেই কিন্তু।
.
জামাল ফোন রেখে দিয়ে
সিগারেট জালিয়ে বসে আছে।ফোন
বেজে যাওয়ায় কারনে জামাল ফোন
ধরলো। ফোনের ওপাশ থেকে বলল
-বাবা। আমরা আজ বিকেলে চলে
যাচ্ছি।
-ও।
-তুমি আমাকে একটা ছবি একে
দেওয়ার কথা ছিল। একে দিবে?
-আচ্ছা আমি একে দিব।
-আচ্ছা।তাহলে একে দিও।
.
ফোন রেখে দিয়ে জামালের চোখ
দিয়ে পানি বের হয়ে গেল।
অনেকদিন পরে জামাল কাঁদছে। শেষ
কেঁদেছিল আনিকা যাওয়ার দিন।আজ
জোড়ে জোরে কাঁদতে ইচ্ছে করছে।
.
জিবন তার গতিতে চলে যাবে।
কারো জিবন কারো জন্য থেমে
থাকবে না।
.
রঙের তুলি হাতে নিয়ে আজ ছবি
আকা হচ্ছে। আজ চোখ দিয়ে পানি
বের হচ্ছে আর রঙের তুলিতে ছবি বের
হচ্ছে.........
.
লেখা--Pabnar Tarcera Balok