মেনু

Drop Down MenusCSS Drop Down MenuPure CSS Dropdown Menu

সংকলন ৩৩৬- পিচ্চি

তানভীন পারে নাই তার পিচ্চি
টাকে ধরে রাখতে,,, তার পিচ্চি
বোনটা তাকে একা রেখে চলে গেল
না ফেরার দেশে,,,, এই কয়দিনে পিচ্চি টা এতো বড় হয়ে
গেলো যে আমাকে একা রেখে নিজে
চলে গেলো।
এই তো সেই দিনের কথা তানভীন
ঘুমাচ্ছিল হটাৎ একটা চিৎকার শুনলো এই তুই ঘুম
থেকে উঠবি নাকি আম্মু কে ডাক
দিব,,, কে শুনে কার কথা তানভীন তো নাক
ডেকে কানে বালিশ দিয়ে
ঘুমাচ্ছে ।। হটাৎ পানির স্পর্শ এ তানভীন
এক চিল্লান দিয়ে বলে উঠলো
_তুই এটা কি করলি...? আমার গায়ে
পানি ঢাললি কেনো....?
_ যা করেছি বেশ করেছি...
কি করবি তুই...?
_ আমি এক্ষনি আম্মুকে বলছি দাড়া
_আম্মু আমার দলে বলে কাজ নেই!!
আম্মুই পানি দিতে বলেছে
_ কি,,, আম্মু বলেছে এটা..?
_ হুম।
_ পেত্নী তুই কি আমাকে একটু
শান্তি থাকতে দিবি না,,,,
তাড়াতারি বড় হয়ে বিদায় হ আমাদের বাড়ি থেকে
_ কি তুই আমাকে এই কথা বললি
থাকবো না আমি এই বাড়িতে,,,
আমি চলে যাবো তখন শান্তিতে
থাকিস। তানভীন তার পিচ্চি বোন টাকে অনেক
ভালবাসে কিন্তু তখন রাগে ওই কথা
গুলো বলে ফেলেছে। সারাদিন
একবারো দেখেনি পিচ্চি টাকে ।রাতে
খাবার টেবিলে আম্মুকে জিজ্ঞেস করলো
_ আম্মু অর্থি কোথায়...? আজকে
সারাদিনে আর দেখলাম না যে। আর
এখনো খেতে আসে নি কেন...?
_ অর্থি নিজের রুমে,,, খাবে না
বললো
_ খাবেনা কেনো?
_ তুই তো জানিস ও তোর সাথে রাগ
করলে কি করে
_ আচ্চা আমি দেখছি
তানভীন খাবার টেবিল থেকে উঠে
বাহিরে গেলো। কিছুক্ষন পর এসে
অর্থির রুমের দিকে গেলো,,,, রুমের দরজা নক করলো
কিন্তু কোন সাড়া শব্দ পেলো না।
_ অর্থি দরজা খোল আপু
_.......
_ এই দেখ আমি তোর জন্য কি এনেছি
_......
_ কিরে খুলবি না দরজা?
_.........
_ তুই যদি দরজা না খুলিশ তাহলে
_ তাহলে কি...?
_ তাহলে এই ক্যাটবেরি টা আমি
একাই খেয়ে ফেলবো
_ আচ্ছা খা, ,, আমি ও দরজা খুলবো
না
_ আচ্চা খাবোনা এবার দরজা খোল
না
এতক্ষন পরে অর্থি দরজা খুললো,,,
_ কি রাগ কমেছে মহারানী
_ ক্যাটবেরি দে...
_ যাহহ,,,বলতেই ভুলে গেছি দোকান
বন্ধ ছিল তাই আনতে পারি নাই,
_ তাহলে যে বললি
_ তোর রাগ কমানোর জন্য বলেছি
_ ঠিক আছে কালকে এনে দিতে হবে
ওকে।
_ হুমম,,, আচ্চা তুই ডিনার কর আমি
আমার রুমে যাই
_ ওকে,
তানভীন নিজের রুমে চলে গেলো
আর
অর্থি ডিনার করতে গেলো,,, ডিনার
করতে যেয়ে শুনলো তানভীন ডিনার
করে নাই
তাই তানভীন এর রুমে খাবার নিয়ে
গেলো অর্থি,,, যেয়ে দেখে
তানভীন ক্যাটবেরি খাচ্চে,,, আর
এটা দেখে
অর্থি বালিশ নিয়ে পিছন থেকে
মারা শুরু
করলো,,, আর বলতে লাগলো চকলেট
দোকানে নেই না,,,, মিথ্যুক,,, আর
তানভীন
হাসতে লাগলো, এভাবেই সবসময় একজন
আরেক জনের পিছনে পড়ে
থাকতো,,,,,,
.
_ এই ভাইয়া তোর মোবাইল টা দে তো
_ আমার মোবাইল তোকে কেন দিব
_ দিতে বলেছি তুই দে,,,না হলে
_ না হলে কি?
_ না হলে এই কাগজ টা আম্মুকে
দিয়ে
দিবো,,,
_ এটা কিসের কাগজ?
_ তোর রেজাল্ট এর কাগজ
_ এই বোন দোহায় লাগি তুই ওইটা
আমাকে দে মোবাইল তুই নিয়ে নে,,
_ হি হি হি
কাগজ টা খুলে তানভীন তো আকাশ
থেকে পড়লো, ,,পুরো কাগজ টা সাদা
আর সে ভুলেই গেছে তার রেজাল্ট
এখনো দেয় নি,, পিচ্চি টা তাকে
বোকা
বানিয়ে মোবাইল টা নিয়ে গেলো,,,
১ ঘন্টা পর পিচ্চিটা তানভীন এর
রুমে এসে বললো
_ এই ভাইয়া,
_ আসেন আসেন,,, আমাকে মিথ্যে
বলে
মোবাইল নেওয়া হয়েছে, , আজকে দেখ
তোর কি হাল করি,,,,,
_ দাড়াও ওহে বৎস
_ কেন,,,
_ মারার আগে ঘুরতে নিয়ে যা
_ আমি তোকে ঘুরতে নিয়ে যাবো
কোন
দুঃখে...?
_ ঘুরতে না নিয়ে গেলে আম্মুকে
এই
মেয়ের ছবি দেখিয়ে ডিবো কিন্তু
_ যা খুশি দেখা,,, আমি আর তোর
মিথ্যা
কথায় ভয় পাচ্চি নাহ
_ সত্ত্যি বলছিস...?
_ হুমম,,
মোবাইল টা তানভীন এর দিকে
ঘুরিয়ে
দেখিয়ে বললো
_ এই মেয়ের ছবি গুলো দেখাচ্ছি
আম্মু কে দাড়া
তানভীন দেখলো এবার আর মিথ্যে
না
সত্ত্যি সিনতিয়ার ছবি,, আর এটা
যদি
আম্মু দেখে তাহলে তানভীন শেষ
_ এইইইই দাড়া
_ কেনো...?
_ যা রেডি হয়ে আয়
_ সত্ত্যি নিয়ে যাবি..?
_ হুম
_ ১০ মিনিট ওয়েট কর আমি
রেডি হয়ে আসছি
_ ওকে.....
১০ মিনিট এর যায়গায় ৩০ মিনিট হয়ে
গেলো এখনো অর্থি আসলো না,,,
আরো অনেক্ষন পর আসলো
_ তোর কি ৪০ মিনিট এ ১০ মিনিট
_সরি রে একটু সাজুগুজু করছিলাম
আমাকে ভাল লাগছে...?
_ পেত্নী রে আবার ভাল
_ এই ভাল হচ্ছে না কিন্তু
_ আচ্চা ঠিক আছে চল
সারাদিন দুই ভাইবোন পুরো সহর
ঘুরলো
দুজন বাজিঁ লেগে ফুসকা খেলো,,,
এবার আসার পালা কিন্তু অর্থি
বায়না
দরলো আইস্ক্রীম খাবে,,,, অর্থির
ঠান্ডা খাওয়া নিষেধ তাই দিতে
চাইলো না প্রথমে তানভীন কিন্ত
বোন এর পাগলামি দেখে পরে কিনে
দিলো,,,
_ নে চল এবার বাসায়
_ হুমম চলো
এভাবে প্রায় তানভীন কে বোকা
বানিয়ে
পিচ্চিটা ঘুরতে আসতো, ,, আসলে
তানভীন ইচ্চে করেই বোকা
সাজতো,,, ও জানে, ,, নিজে বোকা হলে ওর
পিচ্চিটা কত্ত খুশি হয়,,আর তাই নিজে বোকা
হয়ে বোনকে হাসাতো,,, এভাবে ১২
বছর কেটে গেলো। .... আজ তানভীন এর
সেই পিচ্চি বোনটার বিয়ে,,, সবাই
কত্ত
খুশি শুধু তানভীন ছাড়া, ,, সে তার
পিচ্চি কে ছাড়া কিভাবে থাকবে ভেবেই
পাচ্চে না,,,যাই হোক সব দু:খ কে গোপন করে
বোনটাকে অন্যের বাড়ি পাঠিয়ে
দিলো
বেশ সুখেই আছে তার বোন,,,,,
আর এই সুখের বন্যা বয়ে এলো এটা
শুনে যে তানভীন এর সেই পিচ্চি
বোন
যাকে খাইয়ে দিতে হত,,, যার সব কাজ
করে দিতে হতো সেই পিচ্চি বোন
টা কনসিব করেছে,,,,,তার সেই পিচ্চির
মধ্যে এখন বেড়ে উঠছে আরেক
পিচ্চি ভেবেই পাচ্চে না তানভীন।
বোনের অনেক যত্ন অনেক খেয়াল
রাখলো তানভীন, ,,,
১০ মাস ১০ দিন হওয়ার আগেই
অর্থির পেট ব্যাথা শুরু হল
তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া
হয়েছে,,,,,
খুবই খারাপ অবস্থা অর্থির,,,
মা সন্তানের মধ্যে যে কোন
একজনকে বাঁচাতে হবে, ,, সবাই
অর্থিকেই বাঁচাতে বললো, ,,
কিন্তু বিধাতার ইচ্চে ছিল অন্য রকম
তানভীন এর পিচ্চি বোন টা তাদের
ছোট্ট একটা অর্থি উপহার দিয়ে
নিজে চলে গেলো না ফেরার দেশে
ডাক্তাররা অনেক চেষ্টা করলো
কিন্তু তাদের সব চেষ্টা ব্যার্থ হলো
.
অর্থিকে খুব ভাল ভাবে রেখে
এসেছে
তানভীন মাটির নিছে,,,, ঘুম
পাড়িয়ে,,,
যে ঘুম ভাঙার নয়,,,,
তানভীন তার আরেক পিচ্চি কে
নিয়ে
এখন বেঁচে আছে,,, তার ছোট বোনটা
ভাইয়ের বেঁছে থাকার একটা সম্বল
দিয়ে চলে গেল,,,, না ফেরার দেশে
_____________________
সমাপ্ত

লেখাঃ Riya Ahsan Chowdhury