~~ωπιττεη βγ~~ SoHeL YaLmAi JoY (মিঃ
আনস্মার্ট)
~~~~~~~★~~~~~~~~
২০০৫ সাল, আমি ইন্টার ফাস্ট ইয়ারে
পড়ি, বার্ষিক পরিক্ষার পর কলেজ লম্বা
এক মাসের ছুটি দিয়ে দিল। আম্মু বলল
যা এই ছুটিতে তোর নানু বাড়ি
বেড়িয়ে
আয়,আমিও না বললাম না কারণ অনেক
দিন নানি বাড়ি যাওয়া হয় না। আমার
নানুর বাড়ি মাগুরায় (অনেকেই
চিনবেন) । ও হ্যা আর একটা কথা
ওইখানে আমার একটা খালাত ভাই
আছে আল-আমিন (সিরাম জিনিস) ওর
জন্যই যাওয়ার আগ্রহটা অনেক বেড়ে
গেল,যাওয়ার পর ভায়ের সাথে অনেক
মজার হবে ভাবতে ভাবতে রাতটা
কাটালাম।
.
পর দিন ব্যাগে কিছু বই আর কিছু কাপড়
নিলাম,তারপর আব্বু,আম্মুর কাছ থেকে
বিদায় নিয়ে শান্ত ছেলের মত রওনা
দিলাম নানি বাড়ির
উদ্দেশ্যে,গাড়িতে উঠে ভাবছি
ভাইয়ের কথা অনেক মজা করব ভায়ের
সাথে,ছুটিটা দুই ভাই অনেক মজাই
কাটাব।
.
২ ঘন্টার মধ্যেই পৌছলাম
সেখানে,গাড়ী থেকে নামতেই
দেখি আল-আমিন ভাই আমার জন্য
অপেক্ষা করছে,আমি দৌড়ে গেলাম
ভায়ের কাছে, ভাই আমাকে জড়িয়ে
ধরল বুঝতে পারলাম ভাই অনেক খুশি
হয়েছে, তারপর দুজন পৌছলাম নানি
বাড়ি, নানি আমাকে দেখে তো মহা
খুশি, আব্বু,আম্মুর কথা জিজ্ঞাসা করল
সবাই কেমন আছেন,তোর শরীর এতো
খারাপ হয়ে গেছে কেন, ইত্যাদি
ইত্যাদি।
.
আমার নানু বাড়ি গ্রামে, তাই
বিকালে ভাই আর আমি ঘুরতে বের
হলাম,গ্রাম ঘুরতে অনেক ভাল লাগছিল,
রাতে বাড়ি ফিরলাম, এদিকে আমার
একটা মোবাইলেও চার্জ নাই,আম্মুর
সাথে কথা বলার দরকার,,,এখানে
বিদ্যুৎ নেই তাই ভাই বলল চল নাদিম
ভাইদের বাড়ি থেকে মোবাইল চার্জ
করে আনি, তো আর কি গেলাম, ভাই
আমাকে নাদিম ভায়ের সাথে পরিচয়
করিয়ে দিল,কথা বলেই বুঝতে পারলাম
নাদিম ভাই অনেক ফ্রেন্ডলি,ফোন
নাম্বার আদান-প্রদান করল, মোবাইল
চার্জে বসিয়ে, বসলাম নাদিম ভায়ের
ল্যাপটপে,,,,,চার্জ করে বাসায়
আসলাম, এভাবেই প্রতি দিন যেতাম
নাদিম ভায়ের বাসায়
.
একদিন নাদিম ভায়ের বাড়িতে একটা
মেয়েকে দেখতে পেলাম,চোখে
চোখ পড়ল, দেখেই যেন চোখ আটকে
গেল,এ যেন অন্য গ্রহের প্রানী,সৃষ্টিকর
্তা
যেন তাকে আমার জন্যই এই পৃথিবীতে
পাঠাইছেন,প্রথম দেখাতেই মেয়েটির
মায়া জালে বন্দি হয়ে
গেলাম,নিজের ভেতরে যেন অন্য রকম
একটা ফিলিংস কাজ করছে,নিজের
চোখকে বিশ্বাস করতে পারছি না যে
আমি কি সপ্ন দেখছি?,,,,,,
.
ভাই হাত ধরে টান দিল,আমি
বাস্তবে ফিরে আসলাম, আল-আমিন
ভাইকে জিজ্ঞাসা করলাম যে
মেয়েটি কে? ভাই বলল যে মেয়েটি
নাদিম ভায়ের বোন, চলে আসলাম
সেদিন,তার পর থেকে নাদিম ভায়ের
বাসায় গেলেই মেয়েটিকে দেখতাম
প্রতিদিন।
.
ভায়ের থেকে জানতে পারলাম
মেয়েটির নাম আখি,নবম শ্রেণিতে
পড়ে।একদিন গিয়ে দেখি
নাদিম ভাই বাসায় নেই, বাসাই শুধু
আখি আর তার আম্মু, ভাইয়াকে নাদিম
ভায়ের ঘরে বসিয়ে বললাম তুমি একটু বস
আমি আসছি,
.
বাইরে গিয়ে দেখি আখি বারান্দায়
দাড়িয়ে আমার দিকে তাকিয়ে
হাসছে,একটু পার্ট নিয়ে এগিয়ে
গেলাম আখির দিকে
বকুল (আমি):: আপনি হাসছেন কেন?
আখিঃ আপনার চুলের স্টাইল দেখে
বকুলঃ কেন খারাপ নাকি?
আখিঃ জানিনা.....
বকুলঃ বাই দ্যা ওয়ে,কিছু মনে না
করলে আপনার নাম টা জানা যাবে ?
( নাম জানি তারপরও জিজ্ঞাসা
করলাম)
আখিঃ সবার চোখে চোখে থাকি,,,
বকুলঃ মানে ?,,,
আখিঃ মানে আমার নাম আখি!
বকুলঃ আপনি অনেক মজার তো! আর
আপনার নামের মতই আপনি অনেক সুন্দর,,,
আখিঃ ধন্যবাদ! আপনার নাম?
বকুলঃ ফুল বাগানে থাকি,,,,
আখিঃ মানে ?
বকুলঃ আমার নাম বকুল,,,,
আখিঃ কিছু মনে করবেন না,আপনার
নামের সাথে আপনার হেয়ার স্টাইল
যায় না,
বকুলঃ (বুঝলাম মেয়েটা গ্রামে
থাকলেও একটু বেশিই চঞ্চল) হুম,,আমি
জানি,বকুল নামের ছেলেরা একটু ভদ্র
টাইপের হয়, অকে হেয়ার স্টাইল চেঞ্জ
করব,
আখিঃকিসে পড়েন আপনি?
বকুলঃ ইন্টার ফাস্ট ইয়ার & আপনি?
আখিঃ ক্লাস নাইন, আমি আপনার
জুনিয়র তাই আমাকে আপনি না বলে
তুমি বললেই খুশি হব
.
কথা বলতে বলতেই আখির আম্মু ডাক দিল
আখিকে,বাই বলে চলে গেল আখি।
বাসায় এসে ভাই আমাকে বলল
আমাকে নাদিমের ঘরে বসিয়ে তুই
কোথায় গিয়েছিলি? ভাইয়াকে
আমি সব কিছু বুঝিয়ে বললাম, ভাই বলল
দেখ বকুল এমন কিছু করিস না,যার জন্য
নাদিম আর আমার মধ্যে সম্পর্কটা নস্ট
হয়ে যায়।
.
পরদিন আবার গেলাম নাদিম ভায়ের
বাসায়,দেখলাম আখি রান্নাঘরে বসে
আম্মু সাথে কি যেন করছে চোখা
চোখি হল সাথে একটু মিস্টি হাসি,
নাদিম ভাইয়ের ঘরে গিয়ে দেখি
নাদিম ভাই আজ বাসাই, মাথাই টেনশন
ঢুকে গেল,আজ কিভাবে কথা বলব
আখির সাথে, ঘরে বসে আছি কিছুক্ষণ
পর আমার ফোনে অচেনা একটা
নাম্বার থেকে কল আসল, কথা বলে
জানলাম আখি,
বকুলঃ হ্যালো .....
আখিঃ হ্যালো....
বকুলঃ কে বলছেন প্লিজ...
আখিঃ আমি আখি,একটু মুন্সিদের লিচু
বাগানে আসবেন? আপনার সাথে কথা
আছে....
বকুলঃ আচ্ছা থাকেন আসছি.... ( মনে
মনে বললাম কাজ হইছে, মেয়ে দেখি
আমার প্রতি দুর্বল) ফোন রেখে আল-
আমিন ভাইকে বাইরে নিয়ে এসে
শুনলাম যে মুন্সিদের লিচু বাগানটা
কোথায়?
ভাই বুঝতে পারল কাহিনি, আমাকে
জায়গা টার কথা বলল, আর বলে দিল
যাই করিস ভেবে চিন্তে করিস আর
খারাপ কিছু করিস না,আমি বললাম
আচ্ছা,,,
.
ভায়ের দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী
আমি এগোচ্ছি মুন্সিদের লিচু
বাগানে,আমার ভেতরে কেমন যেন
একটা ভয় কাজ করছে,বাগানের মধ্যে
প্রবেশ করি দেখি খুব ভাল একটা
জায়গা,কিন্তু কাউকে দেখতে পাচ্ছি
না,ফোন করলাম আখির কাছে কিন্তু
ফোন বন্ধ, খুব চিন্তাই পড়ে
গেলাম,কিছুক্ষন পর একটা লিচু অনেক
জোরে এসে পড়ল আমার মাথার
উপর,মাথাই হাত দিয়ে তাকালাম
উপরে একি তাকিয়ে আমি অবাক,,,
আখি গাছে,,,
.
বকুলঃ কি ব্যাপার তুমি গাছে কেন?
আখিঃ আমি তো গাছেই থাকি, আমি
পেত্নী
বকুলঃ (রীতিমত ভয় পেয়ে গেলাম)
নিচের নেমে আসো বলছি,,,
আখিঃ কিছু লিচু পেড়ে নিয়ে আসছি
*নেমে আসলো আখি*
বকুলঃআমার ফোন নাম্বার পাইলা কই?
আখিঃভাইয়ার ফোন থেকে চুরি করে
নিয়েছি
বকুলঃ ওও,আচ্ছা,তো পেত্নী এতো
জরুরি তলপ কি কথা বলবে? (ভয়ে ভয়ে
বললাম)
আখিঃ নেন লিচু খান, আমি কিন্তু খুব
মডার্ন মেয়ে,সোজা কথা বলতে পছন্দ
করি,,
বকুলঃ হুম বল....
আখিঃ আমি আপনাকে ভালবাসি....
বকুলঃ হুম,, বুঝলাম,,, (মুচকি হাসছি)
আখিঃ কিছু বলেন.....
বকুলঃ কি বলব??
আখিঃ Do You Love Me?
বকুলঃ ভেবে দেখব, (আমিও অকে পছন্দ
করি বুঝতে দিলাম না,) কাল উত্তর
দিব,আজ যায়,,,,
আখিঃ প্লিজ উত্তরটা আজই
দিন,নাহলে রাতে ঘুমতে পারব না,
বকুলঃ এখন ভাল লাগছে না,কাল
দেখা হলে তোমার উত্তর পেয়ে
যাবে (মেয়েটাকে একটু টেনশনে
রাখলাম, ছেলেরা এটা করে খুব মজা
পায়),,,,
.
পরদিন ইচ্ছা করেই আখিদের বাসায়
গেলাম না,ভাবলাম আখিকে আর একটু
টেনশনে রাখি,ভাই একাই গেল নাদিম
ভায়ের বাসায়, একি কিছুক্ষণ পর আখি
দেখি আমার নানুর বাসায়, নানিকে
আমার কথা জিজ্ঞাসা করলে, নানি
বলল ঘরে
আছে,আখি এবার সোজা আমার রুমে
.
আখিঃ উত্তর কই?
বকুলঃ দেখো তুমি এখন অনেক ছোট,
ইন্টার পাস করে প্রেম করে,কেমন??
আখিঃ আমি রেগে যাচ্ছি কিন্তু, আর
আপনি যদি আমার প্রোপজ এক্সসেপ্ট না
করেন তাহলে আমি কিন্তু কিছু একটা
করে ফেলব,
বকুলঃ (বুঝলাম অনেক ভালবাসে
ফেলেছে
আমাই) আরে পেত্নি আমি তো
তোমার সাথে মজা করছিলাম,আমিও
তোমাকে সেই প্রথম দেখাতেই
ভালবেসে ফেলেছিলাম, I Love You
Too.
.
আখি আমাকে জরিয়ে ধরে কাদতে শুরু
করল,শুরু হল আমাদের ভালবাসা.
এরপর থেকে আমরা প্রতিনিয়ত সেই
লিচু বাগানে দেখা করতাম, ও
আমাকে লিচু পেড়ে পেড়ে খাওয়াত,
আখি লিচু ছুলে দিত আর আমি ওর কলে
শুয়ে লিচু খাইতাম,অনেক মজাই
যাচ্ছিল দিনগুলি নানু বাড়ি থেকে
আমার বাড়ি আসার আগের দিন দেখা
করলাম আখির সাথে
.
বকুলঃ আখি তুমি কি জানো, তুমি কি?
আখিঃ না,আমি কি বল...?
বকুলঃ তুমি একটা পাগলী
আখিঃ আমি তো তোমার জন্য পাগলী
হতেই চাই
বকুলঃ বাই দ্যা ওয়ে,কাল আমি চলে
যাব আমার বাড়ি
আখিঃ মানে কি? আমাকে ছেড়ে
তুমি কোথাও যেতে পারবে না, আমি
তোমাকে না দেখে থাকতে পারব
না।
বকুলঃ দেখ,এমন পাগলামি করে না,এমন
তো না যে আমি আর আসব না,, আর
বাসায় গিয়ে তো ফোনে তোমার
সাথে কথা হবেই, তাহলে সমস্যা
কোথাই?
আখিঃআমাকে ছাড়া তুমি থাকতে
পারবে?
বকুলঃ জানি তোমাকে ছেড়ে
থাকতে আমার অনেক কস্ট হবে,তারপরও
কিছু করার নেই,(ওর চোখে আমি স্পষ্ট
দেখতে পাচ্ছি,আমাকে হারাবার ভয়
ওকে গ্রাস করছে)
এভাবেই কথার এক পর্যায় মন না
চাইলেও আখি আমাকে বিদায়
জানালো।
.
পরদিন সবাইকে বিদায় জানিযে রওনা
দিলাম বাড়ীর উদ্দেশ্যে,,, বাসায়
পৌছিয়ে আগে ফোন দিলাম আখিকে,
খুব কান্না-কাটি করতে শুরু করল,তাকে
আরো বুঝালাম, তারপর শুরু হল ফোনে
আমাদের প্রেম-আলাপ,, জানি এ প্রেম
শেষ হবার নয়, তারপর থেকে কোন ছোট
ছুটি পেয়েও চলে যেতাম আখির
কাছে।
.
★★ এখনো চলছে এই ভালবাসা,
তবে সেটা অন্য রকম ভালবাসা,দুজন এখন
সুখে শান্তিতে সংসার করছে,
ছোট্ট একটা টুনা-টুনির বাসা বেধেছে
তারা......
(সমাপ্ত)