-একুশ.....
.
-হুম বলো !
.
- এই অসময়ে ছাদে কি করো শুনি?
.
- মেঘ দেখি ।
.
- মানে কি !
.
- জানিনা তো !
.
-শীতের আকাশে মেঘ পেলে
কোথায় ?
.
- মেঘ পাইনি তো।
.
- তবে?
.
- মেঘ খুঁজছি।
.
- কেন মেঘ দিয়ে কি হবে ?
.
-ধুলো জমছে মনে, যদি ধুয়ে যায় !
.
- মেঘ বুজি সব ধুয়ে দেবে?
.
- জানিনা তো!
.
-তবে কি করো?
.
- কিছুনা।
.
- ধুলো মুছে গেলে কি হবে?
.
-মন খুঁজতে বের হব॥
.
- আচ্ছা তুমি এমন কেন !
.
-কেমন আমি ?
.
-এইযে তোমার মত ।
.
-তবে হয়তবা তাই হবে !
.
-জানো আজ আমার ভীষণ মন খারাপ!
.
- মা বকেছে বুঝি?
- না । আসার আগে ফোন দিয়েছিলাম। রিসিভ করো নি।
.
- গল্প লিখছিলাম। ফোন নিশ্চুপ ছিলো।
.
- আচ্ছা, আমি তোমার মুখ থেকে শেষ
একটা কথা শুনতে এসেছিলাম।
.
- "শেষ একটা কথা"। বলে দিলাম। শুনেছো তো?
- সিরিয়াসলি নিতে পারো না কোন
কিছু?? তুমি আর কখনোই বদলালে না...
.
- একটু একটু পারি। তবে সবসময় পারি না।
.
- আমাকে কি খুব হাস্যকর মনে হচ্ছে তোমার?
.
- হাস্যকর নয়, তবে তোমার মনটা খুব খারাপ এটা মনে হচ্ছে।
.
- হুম.. আমার মনটা বড্ড খারাপ । কাল সন্ধ্যের সময় আমার বিয়ে।
.
- দাওয়াত দিতে এসেছো?
.
- না... তোমার মুখ থেকে শেষ একটা কথা শুনতে এসেছি।
.
- শেষ একটা কথা। সেটা তো আমার জানা নেই।
.
- আমি কিন্তু এখন কেঁদে ফেলবো!
.
- এখন কান্না করা উচিত হবে না।
.
- তুমি উচিত অনুচিত নিয়ে ভাবতে
শিখলে কবে থেকে?? বাহ!
.
- কালকে তোমার বিয়ে, বাসায় যাও
এখন। খুব সুন্দর করে হাতে মেহেদী দিও ।
.
- আমি ঐ ছেলেকে বিয়ে করবো না।
.
- আমাকে বিয়ে করতে চাচ্ছো?
.
- হুম...
.
- শীতটা আজকে একটু বেশিই পড়েছে,
ভীষণ ঠান্ডা লাগছে, তোমার শালটা একটু দিবে ?
.
- আমাকে বিয়ে করবে তুমি??
.
- জানো? রাতের বেলায় খুব শীত
করছিলো কাল, কিন্তু কম্বলটা ছাড়াতে
ইচ্ছে করছিল না.. দিন দিন বড্ড অলস হয়ে যাচ্ছি..
.
- আমাকে কি বিয়ে করবে না তুমি ??
.
- চাঁদ সমুদ্রের ব্যাপারটা কি তুমি জানো?
.
- নাহ!! কি জিনিস এটা?
.
- যে চাঁদ একবার জোয়ার আনে, কয়েক
প্রহর পরে সে চাঁদ ই আবার ভাটা
টানে!
.
- কি বলতে চাও, পরিষ্কার করে বলো।
.
- তোমায় নিয়ে কবিতা লিখেছিলাম,
তোমাকে নিয়ে গল্প বুনেছিলাম,
তোমাকে ঘিরে ঘোর স্বপ্নের মাঝে ডুব
দিয়েছিলাম। কিন্তু সব গল্প কবিতার
পাতা নষ্ট হয়ে গেছে ।
.
- প্লিইইইজ একুশ, আমি সরি!!
.
- একদিন স্বপ্ন ভেঙ্গে গেলে দেখি
স্মৃতির শূণ্য ম্যাগাজিন পড়ে আছে ,
স্মৃতিগুলো সব নষ্ট হয়ে গেছে।
.
- আমি অজস্রবার সরি!!
.
- হৈম, আমার না এখন আমাদের
ভার্সিটির ক্যাম্পাসের কৃষ্ণচূড়া
গাছের নিচে বসে থাকতে ইচ্ছে করছে...
.
- কিন্তু এখন তো অনেক রাত !!
.
- তবু যাবো, আর সারাটা রাত দূর
আকাশের নিঃসঙ্গ তারার গল্প শুনবো !!
.
- এখনি যাবে?
.
- হুম, এখনি।
.
- আমি কি করবো তাহলে?
.
- কি করতে চাও?
.
- কৃষ্ণচূড়া গাছটার নিচে তোমার কাঁধে মাথা রেখে শেষবারের মতো
কিছুক্ষণ বসে থাকতে চাই। নিয়ে যাবেনা আমায় ?
.
- সত্যি !
.
- হুম..
.
- চলো তাহলে !!
---
---
---
গভীর রাত নেমেছে। প্রিয় ভার্সিটির
চিরচেনা ক্যাম্পাসটার সেই কৃষ্ণচূড়া
গাছটার কাছে গিয়ে বাইক থামালো
একুশ। এই জায়গার স্মৃতি অনেক। তাই
বিস্মৃতির অন্তরালে সবটুকু স্মৃতি আড়াল
হবার আগেই এখানে আর একটাবার
আসার আসলেই দরকার ছিলো খুব।
.
কৃষ্ণচূড়া গাছটা তাদের প্রণয়ের প্রথম
সাক্ষী। অনেক ঝগড়াঝাটির সাক্ষী।
মান অভিমানের সাক্ষী । আনন্দ আর
কষ্ট ভাগাভাগি করে নেবার সাক্ষী।
তাদের শেষবারের মত দেখতে না
পেলে খুব একটা অভিমান মনে পুষে
রাখতে পারে এই লাল সবুজের বৃক্ষটি।
গাছের গায়ে হেলান দিয়ে বসেছে
দুজন। আগের মতই গল্প জমে উঠলো
আবার। সময়ের দিকে নজর নেই, গত দুই
মাসের ব্রেকআপের সময়টুকুর দিকে
কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই, ভালোবাসা
মন্দবাসায় কোন আক্ষেপ নেই, গল্পের
খেয়ায় ক্লান্ত শরীর এলিয়ে এল
হৈমের। একুশের কাঁধে মাথা রেখে
ঘুমিয়ে পড়লো সে। তার উত্তপ্ত
নি:শ্বাসটুকু টের পাচ্ছে একুশ। ভারী
অপার্থিব লাগছে সবকিছু, জেগে
থাকা
মানুষটার কাছে। ঘুমন্ত মানুষটা জেগে
উঠে প্রথম কোন কথাটা বলবে তা তার
জানা নেই। দূরে থেকে একটা গানের
আওয়াজ অল্প
আসছে। কিংবা নিজের মনের মাঝেই
হয়তো সুর তাল লয় মিলিয়ে গানটা
বেজে চলেছে একুশের মনে ।
.
" এটা গল্প হলেও পারতো
পাতা একটা আধটা পড়তাম
খুব লুকিয়ে বাঁচিয়ে রাখতাম তাকে ..
তাকে আটকে রাখার চেষ্টা
আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে তেষ্টা
আমি দাঁড়িয়ে দেখছি শেষটা ..
জানালায়..... "
.
গানটা শুনতে শুনতে অন্যমনা হয়ে
পড়লো একুশ। এই মুহূর্তে দুনিয়ার
সবচেয়ে সুখী কিংবা অসহায় মানুষটার
নাম সে জানে ... শুধু সে ই জানে!!
.
লেখা---Såñðíp Ð Týpíçål
ßøðmåísh (নিশ্চুপ বালক)
.
-হুম বলো !
.
- এই অসময়ে ছাদে কি করো শুনি?
.
- মেঘ দেখি ।
.
- মানে কি !
.
- জানিনা তো !
.
-শীতের আকাশে মেঘ পেলে
কোথায় ?
.
- মেঘ পাইনি তো।
.
- তবে?
.
- মেঘ খুঁজছি।
.
- কেন মেঘ দিয়ে কি হবে ?
.
-ধুলো জমছে মনে, যদি ধুয়ে যায় !
.
- মেঘ বুজি সব ধুয়ে দেবে?
.
- জানিনা তো!
.
-তবে কি করো?
.
- কিছুনা।
.
- ধুলো মুছে গেলে কি হবে?
.
-মন খুঁজতে বের হব॥
.
- আচ্ছা তুমি এমন কেন !
.
-কেমন আমি ?
.
-এইযে তোমার মত ।
.
-তবে হয়তবা তাই হবে !
.
-জানো আজ আমার ভীষণ মন খারাপ!
.
- মা বকেছে বুঝি?
- না । আসার আগে ফোন দিয়েছিলাম। রিসিভ করো নি।
.
- গল্প লিখছিলাম। ফোন নিশ্চুপ ছিলো।
.
- আচ্ছা, আমি তোমার মুখ থেকে শেষ
একটা কথা শুনতে এসেছিলাম।
.
- "শেষ একটা কথা"। বলে দিলাম। শুনেছো তো?
- সিরিয়াসলি নিতে পারো না কোন
কিছু?? তুমি আর কখনোই বদলালে না...
.
- একটু একটু পারি। তবে সবসময় পারি না।
.
- আমাকে কি খুব হাস্যকর মনে হচ্ছে তোমার?
.
- হাস্যকর নয়, তবে তোমার মনটা খুব খারাপ এটা মনে হচ্ছে।
.
- হুম.. আমার মনটা বড্ড খারাপ । কাল সন্ধ্যের সময় আমার বিয়ে।
.
- দাওয়াত দিতে এসেছো?
.
- না... তোমার মুখ থেকে শেষ একটা কথা শুনতে এসেছি।
.
- শেষ একটা কথা। সেটা তো আমার জানা নেই।
.
- আমি কিন্তু এখন কেঁদে ফেলবো!
.
- এখন কান্না করা উচিত হবে না।
.
- তুমি উচিত অনুচিত নিয়ে ভাবতে
শিখলে কবে থেকে?? বাহ!
.
- কালকে তোমার বিয়ে, বাসায় যাও
এখন। খুব সুন্দর করে হাতে মেহেদী দিও ।
.
- আমি ঐ ছেলেকে বিয়ে করবো না।
.
- আমাকে বিয়ে করতে চাচ্ছো?
.
- হুম...
.
- শীতটা আজকে একটু বেশিই পড়েছে,
ভীষণ ঠান্ডা লাগছে, তোমার শালটা একটু দিবে ?
.
- আমাকে বিয়ে করবে তুমি??
.
- জানো? রাতের বেলায় খুব শীত
করছিলো কাল, কিন্তু কম্বলটা ছাড়াতে
ইচ্ছে করছিল না.. দিন দিন বড্ড অলস হয়ে যাচ্ছি..
.
- আমাকে কি বিয়ে করবে না তুমি ??
.
- চাঁদ সমুদ্রের ব্যাপারটা কি তুমি জানো?
.
- নাহ!! কি জিনিস এটা?
.
- যে চাঁদ একবার জোয়ার আনে, কয়েক
প্রহর পরে সে চাঁদ ই আবার ভাটা
টানে!
.
- কি বলতে চাও, পরিষ্কার করে বলো।
.
- তোমায় নিয়ে কবিতা লিখেছিলাম,
তোমাকে নিয়ে গল্প বুনেছিলাম,
তোমাকে ঘিরে ঘোর স্বপ্নের মাঝে ডুব
দিয়েছিলাম। কিন্তু সব গল্প কবিতার
পাতা নষ্ট হয়ে গেছে ।
.
- প্লিইইইজ একুশ, আমি সরি!!
.
- একদিন স্বপ্ন ভেঙ্গে গেলে দেখি
স্মৃতির শূণ্য ম্যাগাজিন পড়ে আছে ,
স্মৃতিগুলো সব নষ্ট হয়ে গেছে।
.
- আমি অজস্রবার সরি!!
.
- হৈম, আমার না এখন আমাদের
ভার্সিটির ক্যাম্পাসের কৃষ্ণচূড়া
গাছের নিচে বসে থাকতে ইচ্ছে করছে...
.
- কিন্তু এখন তো অনেক রাত !!
.
- তবু যাবো, আর সারাটা রাত দূর
আকাশের নিঃসঙ্গ তারার গল্প শুনবো !!
.
- এখনি যাবে?
.
- হুম, এখনি।
.
- আমি কি করবো তাহলে?
.
- কি করতে চাও?
.
- কৃষ্ণচূড়া গাছটার নিচে তোমার কাঁধে মাথা রেখে শেষবারের মতো
কিছুক্ষণ বসে থাকতে চাই। নিয়ে যাবেনা আমায় ?
.
- সত্যি !
.
- হুম..
.
- চলো তাহলে !!
---
---
---
গভীর রাত নেমেছে। প্রিয় ভার্সিটির
চিরচেনা ক্যাম্পাসটার সেই কৃষ্ণচূড়া
গাছটার কাছে গিয়ে বাইক থামালো
একুশ। এই জায়গার স্মৃতি অনেক। তাই
বিস্মৃতির অন্তরালে সবটুকু স্মৃতি আড়াল
হবার আগেই এখানে আর একটাবার
আসার আসলেই দরকার ছিলো খুব।
.
কৃষ্ণচূড়া গাছটা তাদের প্রণয়ের প্রথম
সাক্ষী। অনেক ঝগড়াঝাটির সাক্ষী।
মান অভিমানের সাক্ষী । আনন্দ আর
কষ্ট ভাগাভাগি করে নেবার সাক্ষী।
তাদের শেষবারের মত দেখতে না
পেলে খুব একটা অভিমান মনে পুষে
রাখতে পারে এই লাল সবুজের বৃক্ষটি।
গাছের গায়ে হেলান দিয়ে বসেছে
দুজন। আগের মতই গল্প জমে উঠলো
আবার। সময়ের দিকে নজর নেই, গত দুই
মাসের ব্রেকআপের সময়টুকুর দিকে
কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই, ভালোবাসা
মন্দবাসায় কোন আক্ষেপ নেই, গল্পের
খেয়ায় ক্লান্ত শরীর এলিয়ে এল
হৈমের। একুশের কাঁধে মাথা রেখে
ঘুমিয়ে পড়লো সে। তার উত্তপ্ত
নি:শ্বাসটুকু টের পাচ্ছে একুশ। ভারী
অপার্থিব লাগছে সবকিছু, জেগে
থাকা
মানুষটার কাছে। ঘুমন্ত মানুষটা জেগে
উঠে প্রথম কোন কথাটা বলবে তা তার
জানা নেই। দূরে থেকে একটা গানের
আওয়াজ অল্প
আসছে। কিংবা নিজের মনের মাঝেই
হয়তো সুর তাল লয় মিলিয়ে গানটা
বেজে চলেছে একুশের মনে ।
.
" এটা গল্প হলেও পারতো
পাতা একটা আধটা পড়তাম
খুব লুকিয়ে বাঁচিয়ে রাখতাম তাকে ..
তাকে আটকে রাখার চেষ্টা
আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে তেষ্টা
আমি দাঁড়িয়ে দেখছি শেষটা ..
জানালায়..... "
.
গানটা শুনতে শুনতে অন্যমনা হয়ে
পড়লো একুশ। এই মুহূর্তে দুনিয়ার
সবচেয়ে সুখী কিংবা অসহায় মানুষটার
নাম সে জানে ... শুধু সে ই জানে!!
.
লেখা---Såñðíp Ð Týpíçål
ßøðmåísh (নিশ্চুপ বালক)