লিখাঃ অচেনা বালক
- কালকে দেখা হচ্ছে তাহলে অরি
- হ্যাঁ ৷
- তাহলে স্টার কাবাবে বিকাল ৫টায়
আমি অপেক্ষায় থাকবো ৷
- আচ্ছা কিন্তু তোমাকে চিনব
কিভাবে?
- আমি তোমাকে চিনে নেব
- আচ্ছা ৷ গুড নাইট
- গুড নাইট
অর্নব আর রিসার পরিচয় ২০১০ সালে
ফেবুর মাধ্যমে ৷ পরিচয় থেকেই
ভাললাগা আর ভালবাসা ৷ অর্নব
বর্তমানে আহসানউল্লাহতে
আর্কিটেকচার প্রথম বর্ষে আর রিসা
ক্যামব্রিয়ানে উচ্চমাধ্যমিক প্রথম বর্ষে
আছে ৷
একজন আরেকজনকে ভালবাসলেও এখনো
কেউ কাউকে দেখেনি ৷
আগামীকালই তাদের প্রথম দেখা হবে ৷
অর্নব রিসাকে অরি বলে ডাকে ৷
অর্নবের অ আর রিসার রি মিলে অরি ৷
উত্তেজনায় সারারাত ঘুমুতে পারে না
অর্নব ৷ পরদিন স্বপ্নের পরীর সাথে
দেখা ৷ কিভাবে কি বলবে এসব ভাবতে
ভাবতেই কখন যে সকাল হয়ে যায় তা সে
বুঝতে পারে না ৷
অপরদিকে রিসা তার স্বপ্নের
রাজকুমারে বিভোর হয়ে কাটিয়ে দেয়
সমস্ত রাত ৷
পরদিন বিকাল ৫টা, স্টার কাবাব,
অর্নব আগেই চলে এসেছে ৷ একটা ছোট্ট
লাল গোলাপ নিয়ে এসেছে রিসাকে
দেওয়ার জন্য ৷ রিসা নিশ্চয় অনেক খুশি
হবে এই ভেবে ৷
৫টা ০৩
আকাশী রঙের জামা পড়া এক পরীর
প্রবেশ ৷ হ্যাঁ রিসা ৷
রিসার দিকে তাকিয়ে যেন শ্বাস
নিতে ভুলে যায় অর্নব কিন্তু রিসা
তখনো অর্নবকে দেখতে পায়নি ৷
রিসাকে এদিক-ওদিক তাকাতে দেখে
অর্নব ডাকে, অরি!
চমকে উঠে ঘুরে পেছনে তাকায় রিসা ৷
কর্ণারের টেবিলে ছিমছাম
হুইলচেয়ারে বসা ছেলেটাই তাহলে
অর্নব, ভাবে রিসা ৷
রিসাকে নিজের দিকে তাকাতে
দেখেই গোলাপটা লুকিয়ে ফেলে
অর্নব ৷
চেয়ার টেনে অর্নবের টেবিলে বসে
রিসা ৷ কিছুটা অপ্রস্তুত ভাবে বলে,
- কেমন আছো অর্নব?
- এইতো ভালো ৷
- তুমি?
- ভালো ৷
অর্নবকে হুইলচেয়ারে দেখে ঠিক
মানতে পারে না রিসা ৷ অর্নব হাটতে
পারে না ৷ একথা সে রিসাকে আগেই
জানিয়েছে ৷ রিসাও সবকিছু জেনেই
অর্নবকে ভালবেসেছিল ৷ কিন্তু
সামনাসামনি দেখে তার মন পরিবর্তন
হয়ে যায় ৷ তার স্বপ্নের রাজকুমারের
হুইলচেয়ারে বসে থাকাটা ওর স্বপ্নের
সাথে মিলে না ৷
- ওহহো অর্নব আমার জরুরি একটা কাজ
আছে ৷ ভুলেই গেছিলাম ৷ আমরা
আরেকদিন দেখা করি?
- কিন্তু মাত্রই না এলে? এতো
তাড়াতাড়ি . . .
- সত্যিই সরি ৷ আরেকদিন দেখা করবো ৷
এই বলে কোনোরকমে বেড়িয়ে যায়
রিসা ৷
কি হলো কিছুই বুঝতে পারে না অর্নব ৷
ফুলটা তখনও হাতেই রয়েছে ৷
৫টা ৩৪
অর্নব বেড়িয়ে যায় ৷ বাসায় পৌছানোর
কিছুক্ষন পর একটা এস এম এস আসে
মোবাইলে ৷
''Ami r relation continue korte parbo na Arnob.
I'm sorry. Amr shathe r contact korar try koro
na.''
মাথায় যেনো আকাশ ভেঙ্গে পড়ে
অর্নবের ৷ সাথে সাথেই কল দেয়
রিসাকে কিন্তু অপর পাশ থেকে
যান্ত্রিক কন্ঠে ভেসে আসে আপনার
কাঙ্খিত নাম্বারে এই মূহুর্তে. . .
দিগ্বিদিক শূণ্য হয়ে একটানা কল দিয়েই
যায় অর্নব ৷ একসময় চার্জ শেষ হয়ে
মোবাইলটা বন্ধ হয়ে যায় ৷ ক্লান্ত হয়ে
মোবাইলটা ছুড়ে মারে মাটিতে ৷
রাত ১টা
বাড়ান্দায় খুব শান্তভাবেই বসে আছে
অর্নব ৷
কিছুক্ষন আগে মোবাইলটা চার্জে
দিয়ে চালু করেছে ৷ কিছুক্ষন পর
হুইলচেয়ারটা ঘুড়িয়ে রুমে যায় আর কল
করে রায়হানকে ৷
- হ্যাঁলো দোস্ত
- কিরে এতো রাত্রে? কোনো সমস্যা
হইল না তো?
- দোস্ত কালকে সকালে একটা কাজ
করে দিবি?
- কি কাজ বল?
- রিসাকে আমার একটা চিঠি পৌছো
দিবি?
- সেটাতো তুই নিজেই দিতে পারিস ৷
কিছু হইছে তোদের মাঝে?
- কালকে আমি একটু দূরে যাবো তো
তাই তোকে বললাম ৷
- অহ আচ্ছা তাহলে ক্যাম্পাসে দেখা
কর সকালে আর চিঠিটাও নিয়ে আয় ৷
- দোস্ত তুই সকালে আমার বাসায় চলে
আসিস প্লিজ ৷
- তোর মতিগতি ভাই আমি বুঝলাম না ৷
আচ্ছা সকালে আসতেছি ৷ বাই
- বাই
ফোনটা রেখেই স্মিত একটু হেসে
একটা ডায়রি আর কলম নিয়ে নিয়ে বসে,
"অরি,
চিঠিটা যখন তুমি পড়ছ আমি ততক্ষণে
আকাশের তারা হয়ে গেছি ৷
ভেবেছিলাম তোমাকে নিয়ে
জীবনের সকল অপূর্ণতা দূর করবো যার
স্বপ্ন আমি দেখেছি তোমায় নিয়ে ৷
কিন্তু সব স্বপ্ন কি আর পূরণ হয় বল?
আমি হয়তো তোমার স্বপ্নের রাজপুত্র
হতে পারিনি তবে তুমিই ছিলে আমার
স্বপ্নের রাজকন্যা আর এখনও আছো ৷
বলেছিলাম তোমাকে ছাড়া বাঁচবো
না ৷ যদি বাঁচতে হয় তাহলে তোমার
সাথেই ৷
আজ নিজের কথা নিজেই কি করে
ভাঙ্গি বলো?
তাই আস্তে আস্তে মরার চেয়ে
একবারে মরে যাওয়াটাই বেছে নিলাম
৷
ভালোবেসেছিলাম তোমায় অরি ৷
আজও ঠিক ততটুকুই ভালোবাসি আর
আকাশের তারা হয়েও ভালোবেসে
যাবো ৷
নিজের স্বপ্নের রাজপুত্রকে খুঁজে নিও?
ভালো থেকো
ইতি
12911"
চিঠিটা আর বিকালের কেনা
গোলাপটা একটা নীল খামে ঢুকিয়ে
টেবিলেই রেখে দেয় অর্নব ৷
হাসতে হাসতে ড্রয়ার থেকে ব্লেড
বের করে বাম হাতের কব্জিতে
সজোরে চালিয়ে দেয় ৷ ফিনকি দিয়ে
বেড়োতে থাকে রক্ত তবু মুখ দিয়ে একটু
শব্দ আসে না ৷ কিছুক্ষন পর গলা কাটা
মুরগীর মতো ছটফট করতে করতে
হুইলচেয়ার থেকে পড়ে যায় অর্নব ৷
আরো কিছুক্ষণ ছটফটের পর নিথর হয়ে
যায় দেহটা ৷ রক্তে ভেসে যায় মেঝে ৷
অস্তমিত হয় আরেকটি ভালবাসার সূর্য ৷ শুধু
পেছনে রেখে যায় কিছু স্বপ্ন ভাঙা
কাচের টুকরো. . .
- কালকে দেখা হচ্ছে তাহলে অরি
- হ্যাঁ ৷
- তাহলে স্টার কাবাবে বিকাল ৫টায়
আমি অপেক্ষায় থাকবো ৷
- আচ্ছা কিন্তু তোমাকে চিনব
কিভাবে?
- আমি তোমাকে চিনে নেব
- আচ্ছা ৷ গুড নাইট
- গুড নাইট
অর্নব আর রিসার পরিচয় ২০১০ সালে
ফেবুর মাধ্যমে ৷ পরিচয় থেকেই
ভাললাগা আর ভালবাসা ৷ অর্নব
বর্তমানে আহসানউল্লাহতে
আর্কিটেকচার প্রথম বর্ষে আর রিসা
ক্যামব্রিয়ানে উচ্চমাধ্যমিক প্রথম বর্ষে
আছে ৷
একজন আরেকজনকে ভালবাসলেও এখনো
কেউ কাউকে দেখেনি ৷
আগামীকালই তাদের প্রথম দেখা হবে ৷
অর্নব রিসাকে অরি বলে ডাকে ৷
অর্নবের অ আর রিসার রি মিলে অরি ৷
উত্তেজনায় সারারাত ঘুমুতে পারে না
অর্নব ৷ পরদিন স্বপ্নের পরীর সাথে
দেখা ৷ কিভাবে কি বলবে এসব ভাবতে
ভাবতেই কখন যে সকাল হয়ে যায় তা সে
বুঝতে পারে না ৷
অপরদিকে রিসা তার স্বপ্নের
রাজকুমারে বিভোর হয়ে কাটিয়ে দেয়
সমস্ত রাত ৷
পরদিন বিকাল ৫টা, স্টার কাবাব,
অর্নব আগেই চলে এসেছে ৷ একটা ছোট্ট
লাল গোলাপ নিয়ে এসেছে রিসাকে
দেওয়ার জন্য ৷ রিসা নিশ্চয় অনেক খুশি
হবে এই ভেবে ৷
৫টা ০৩
আকাশী রঙের জামা পড়া এক পরীর
প্রবেশ ৷ হ্যাঁ রিসা ৷
রিসার দিকে তাকিয়ে যেন শ্বাস
নিতে ভুলে যায় অর্নব কিন্তু রিসা
তখনো অর্নবকে দেখতে পায়নি ৷
রিসাকে এদিক-ওদিক তাকাতে দেখে
অর্নব ডাকে, অরি!
চমকে উঠে ঘুরে পেছনে তাকায় রিসা ৷
কর্ণারের টেবিলে ছিমছাম
হুইলচেয়ারে বসা ছেলেটাই তাহলে
অর্নব, ভাবে রিসা ৷
রিসাকে নিজের দিকে তাকাতে
দেখেই গোলাপটা লুকিয়ে ফেলে
অর্নব ৷
চেয়ার টেনে অর্নবের টেবিলে বসে
রিসা ৷ কিছুটা অপ্রস্তুত ভাবে বলে,
- কেমন আছো অর্নব?
- এইতো ভালো ৷
- তুমি?
- ভালো ৷
অর্নবকে হুইলচেয়ারে দেখে ঠিক
মানতে পারে না রিসা ৷ অর্নব হাটতে
পারে না ৷ একথা সে রিসাকে আগেই
জানিয়েছে ৷ রিসাও সবকিছু জেনেই
অর্নবকে ভালবেসেছিল ৷ কিন্তু
সামনাসামনি দেখে তার মন পরিবর্তন
হয়ে যায় ৷ তার স্বপ্নের রাজকুমারের
হুইলচেয়ারে বসে থাকাটা ওর স্বপ্নের
সাথে মিলে না ৷
- ওহহো অর্নব আমার জরুরি একটা কাজ
আছে ৷ ভুলেই গেছিলাম ৷ আমরা
আরেকদিন দেখা করি?
- কিন্তু মাত্রই না এলে? এতো
তাড়াতাড়ি . . .
- সত্যিই সরি ৷ আরেকদিন দেখা করবো ৷
এই বলে কোনোরকমে বেড়িয়ে যায়
রিসা ৷
কি হলো কিছুই বুঝতে পারে না অর্নব ৷
ফুলটা তখনও হাতেই রয়েছে ৷
৫টা ৩৪
অর্নব বেড়িয়ে যায় ৷ বাসায় পৌছানোর
কিছুক্ষন পর একটা এস এম এস আসে
মোবাইলে ৷
''Ami r relation continue korte parbo na Arnob.
I'm sorry. Amr shathe r contact korar try koro
na.''
মাথায় যেনো আকাশ ভেঙ্গে পড়ে
অর্নবের ৷ সাথে সাথেই কল দেয়
রিসাকে কিন্তু অপর পাশ থেকে
যান্ত্রিক কন্ঠে ভেসে আসে আপনার
কাঙ্খিত নাম্বারে এই মূহুর্তে. . .
দিগ্বিদিক শূণ্য হয়ে একটানা কল দিয়েই
যায় অর্নব ৷ একসময় চার্জ শেষ হয়ে
মোবাইলটা বন্ধ হয়ে যায় ৷ ক্লান্ত হয়ে
মোবাইলটা ছুড়ে মারে মাটিতে ৷
রাত ১টা
বাড়ান্দায় খুব শান্তভাবেই বসে আছে
অর্নব ৷
কিছুক্ষন আগে মোবাইলটা চার্জে
দিয়ে চালু করেছে ৷ কিছুক্ষন পর
হুইলচেয়ারটা ঘুড়িয়ে রুমে যায় আর কল
করে রায়হানকে ৷
- হ্যাঁলো দোস্ত
- কিরে এতো রাত্রে? কোনো সমস্যা
হইল না তো?
- দোস্ত কালকে সকালে একটা কাজ
করে দিবি?
- কি কাজ বল?
- রিসাকে আমার একটা চিঠি পৌছো
দিবি?
- সেটাতো তুই নিজেই দিতে পারিস ৷
কিছু হইছে তোদের মাঝে?
- কালকে আমি একটু দূরে যাবো তো
তাই তোকে বললাম ৷
- অহ আচ্ছা তাহলে ক্যাম্পাসে দেখা
কর সকালে আর চিঠিটাও নিয়ে আয় ৷
- দোস্ত তুই সকালে আমার বাসায় চলে
আসিস প্লিজ ৷
- তোর মতিগতি ভাই আমি বুঝলাম না ৷
আচ্ছা সকালে আসতেছি ৷ বাই
- বাই
ফোনটা রেখেই স্মিত একটু হেসে
একটা ডায়রি আর কলম নিয়ে নিয়ে বসে,
"অরি,
চিঠিটা যখন তুমি পড়ছ আমি ততক্ষণে
আকাশের তারা হয়ে গেছি ৷
ভেবেছিলাম তোমাকে নিয়ে
জীবনের সকল অপূর্ণতা দূর করবো যার
স্বপ্ন আমি দেখেছি তোমায় নিয়ে ৷
কিন্তু সব স্বপ্ন কি আর পূরণ হয় বল?
আমি হয়তো তোমার স্বপ্নের রাজপুত্র
হতে পারিনি তবে তুমিই ছিলে আমার
স্বপ্নের রাজকন্যা আর এখনও আছো ৷
বলেছিলাম তোমাকে ছাড়া বাঁচবো
না ৷ যদি বাঁচতে হয় তাহলে তোমার
সাথেই ৷
আজ নিজের কথা নিজেই কি করে
ভাঙ্গি বলো?
তাই আস্তে আস্তে মরার চেয়ে
একবারে মরে যাওয়াটাই বেছে নিলাম
৷
ভালোবেসেছিলাম তোমায় অরি ৷
আজও ঠিক ততটুকুই ভালোবাসি আর
আকাশের তারা হয়েও ভালোবেসে
যাবো ৷
নিজের স্বপ্নের রাজপুত্রকে খুঁজে নিও?
ভালো থেকো
ইতি
12911"
চিঠিটা আর বিকালের কেনা
গোলাপটা একটা নীল খামে ঢুকিয়ে
টেবিলেই রেখে দেয় অর্নব ৷
হাসতে হাসতে ড্রয়ার থেকে ব্লেড
বের করে বাম হাতের কব্জিতে
সজোরে চালিয়ে দেয় ৷ ফিনকি দিয়ে
বেড়োতে থাকে রক্ত তবু মুখ দিয়ে একটু
শব্দ আসে না ৷ কিছুক্ষন পর গলা কাটা
মুরগীর মতো ছটফট করতে করতে
হুইলচেয়ার থেকে পড়ে যায় অর্নব ৷
আরো কিছুক্ষণ ছটফটের পর নিথর হয়ে
যায় দেহটা ৷ রক্তে ভেসে যায় মেঝে ৷
অস্তমিত হয় আরেকটি ভালবাসার সূর্য ৷ শুধু
পেছনে রেখে যায় কিছু স্বপ্ন ভাঙা
কাচের টুকরো. . .