আজ ইংরেজী বছরের ২য় মাস। তারিখ ১০+৪.আজ
নীলাঞ্জনাকে প্রপোজ করব। তাই তাড়াতাড়ি উঠে ফ্রেশ হয়ে
গেলাম।একটা ফুল দোকান থেকে এক গুচ্ছ নীল গোলাপ কিনে
কলেজের দিকে রওনা হলাম।এটা তার প্রিয় ফুল।আমি জানি
সেও আমাকে ভালোবাসে।কিন্তু বলতে পারছেনা।এটার অনেক
প্রমান্ই আমি পেয়েছি।এতোদিন আশায় ছিলাম সেই প্রপোজ
করবে।কিন্তু সেও করছেনা। তাই ভাবলাম আর দেরি করা ঠিক
হবেনা।আজ্ই বলতে হবে।(শুভ কাজে দেরি করতে নেই).
.
কলেজের গেট দিয়ে ঢুকতেই দেখি নীলা দূরে দাঁড়িয়ে আছে।
আমাকে দেখে এগিয়ে আসছে।হাতে ফুল দেখে তার মুখ পুর্ণিমার
আলোর ন্যায় আলোকিত হয়ে উঠল।হঠাৎ এক পিচ্ছি মেয়ে
৫-৬ বছর বয়স হবে। টোকাই।আমাকে বলল,ভাইয়া দুইটা টাকা
দেন।আমি আবার অল্পতেই গলে যাই।পকেট থেকে ৫০ টাকার
নোট বের করে দিলাম তাকে।সে খুশি হয়ে গেলো।ভাবলাম ওর
সাথে একটু মজা করি।ওকে একটা ফুল দিয়ে বললাম I Love
You. আশ্চর্য!!!পিচ্ছিটা আমাকেও তাই বলল।খুশি হয়ে তাকে
সব গুলো ফুল্ই দিয়ে দিলাম।এদিকে নীলার দিকে তাকিয়ে দেখি
তার মুখ কালো হয়ে গেছে,এবং পিছনের দিকে হাঁটতে শুরু
করেছে।বেচারি হয়ত যা চেয়েছিল তা হয়নি।আমি ডাকলাম সে
শুনলনা।দৌড়ে গিয়ে বললাম কিরে কি হয়েছে?চলে আসলি যে?
সে বলল,কিছুনা এবার তার মুডটা পাল্টে গেলো।ভাব নিয়ে
বলল,"জানিস আজকে ৫টা প্রপোজ এসেছে".
আমি বললাম তো?কি হয়েছে?
-না কিছুনা।দেখবি আর্ও ১০-১৫টা আসবে।
-এতো Confident?
- হুম্ম..
- কি ভেবে এতো Confident শুনি?
-কেন আমার চেহেরা কি খারাপ নাকি?
-না তা নয়।যেগুলা আসছে সেগুলা কি পরিচিত না অপরিচিত?
-অপরিচিত।
-এক্সেপ্ট করলি?
-না।
-সামনে যেগুলা আসবে সেগুলা কেমন হবে?পরিচিত আসবে
২-১টা?
-মনে হয় পরিচিত আসবে ১টা।
-(বুঝতাছি হেতি ধইরা নিচে পরিচিতটা আমি)তো তুই কোনটা
এক্সেপ্ট করবি?পরিচিত না অপরিচিত?
-অবশ্যই পরিচিত।
-(ভাবিলাম একটু মজা করি)ওই তুই ঐ ফুচকাওওয়ালা মামারে
চিনস?
-হুম্ম।
-তাইলে তো তার কপাল ভালো। তুই দাঁড়া আমি গিয়ে তারে
সুখবরটা দিয়া আসি।
-কি সুখবর?
-সে তোরে প্রপোজ করলে তুই রাজি ওইটা বইলা আসি।
-ওই ফাজলামো করবিনা(রাগত স্বরে).
.
আমি ভাবলাম আমিও একটা পার্ট নিই। তাই বললাম,আমারেও
একটা মেয়ে প্রপোজ করছে।
-(বড় বড় চোখে)কি এক্সেপ্ট করলি?কোন মেয়ে দেখাতো?
-মোটামুটি ভালো চেহারার একটাকে দেখিয়ে বললাম,ওইযে
দাঁড়িয়ে আছে,ওরে গিয়ে বলবি আমি রাজি।(নিমেষেই তার মুখটা
মলিন হয়ে গেল).
-এটা কোন মেয়ে হইল।ডাইনি মার্কা চেহারা।আর পছন্দ যখন
হইছে নিজে গিয়ে বললেই তো হয়।আমি যাব কেন।আমি যেতে
পারবনা।
-বলতে যে ভয় লাগে। তাই।
-তো কাজটা কি মেয়েগোরেই করতে হবে?
-হুম্ম।মেয়েটারে কিন্তু হেব্বি কিউট লাগে।যা না বল(হঠাৎ তার
মেজাজ High হইয়া গেল).
-আমি পারবনা। তুই বল।আর হ্যা তুই আমার সাথে আর কথা
বলবিনা।
বলেই হনহন করে চলে গেল।
.
আমি বুঝলাম আজ ম্যাম সাহেবার মেজাজ লাল দাগ্ও
অতিক্রম কইরা ফালাইছে।যদিও এর আগে অনেকবার রাগ
করছে,কিন্তু সামনে আসলে নিজে নিজেই কথা বলতে শুরু করে।
কিন্তু আজকের্টা ব্যাতিক্রম।মনে হয়না সহজে ভাংবে। তাই
তাড়াতাড়ি কইরা আবার ফুল কিনতে গেলাম।ফুল নিয়া অনেক্ষন
খোঁজার পর দেখলাম সেও ফুল নিয়া আমার দিকেই আসছে।
তার হাতে ফুল দেইখা ভাবলাম সেই মনে হয় প্রপোজ করবে।
তাই আমি করবনা ভাবলাম।সেকেন্ডেই পরিস্থিতি পাল্টাইয়া
ফেলার সিদ্ধান্ত নিলাম।আমারে আইসাই বলল,কিরে কখন
থেকে খুঁজছি কই ছিলি?আর ফুল কার জন্য?
-দিয়াকে দেব(আমার এক ফ্রেন্ডের নাম).
-কেন?
-প্রপোজ করব!!!
-তুইনা বললি অই মেয়েরে পছন্দ করিস।
-তুই তো বললি ওর চেহেরা ভালোনা।ডাইনি মার্কা।
-তুই আসলে কারে ভালোবাসিস?
-হ্যাঁ পছন্দ করি একজনকে।(তার চোখ ছলছল করছে). তাই
প্রপোজ করতে যাচ্ছি।
-তাই বলে যারে তারে প্রপোজ করবি নাকি?
-ক্যান তুই তো একদিন বললি দিয়া অনেক সুন্দর।
-আমি যারে সুন্দর বলব তারে তুই ভালোবাসবি?
-হ্যাঁ.কারন তোর পছন্দতো আর খারাপ হতে পারেনা।
-আমি যদি বলি আমি সুন্দর!
-হ্যাঁ তুইতো সুন্দর্ই।অনেক সুন্দর।
(এতক্ষন যাবৎ এক রিক্সাওয়ালা অদেরকে পর্যবেক্ষন করছিল।
এবার সে বলে উঠল )-আরে মিয়া ফুলটা দিয়া দেও।কতক্ষন
থেইকা দেখতাছি লাইনে যাইয়াও বাইর হইয়া যাইতাছ।আর
তোমরা একসাথে দাঁড়াও এক কপি পডো তুলি।আইজকা
ফেইসবুকে আপলোড দিতে হইব।
-আরে আপনার্ও ফেইসবুক একাউন্ট আছে....
.
তারপর তিনজন্ই অট্রহাসিতে ফেটে পড়ে....
.
Written By: Shironamhin Athoy Aronyo.
