মেনু

Drop Down MenusCSS Drop Down MenuPure CSS Dropdown Menu

সংকলন ২৯৪- কাব্য আর নীলার অদ্ভুত ভালোবাসার গল্প!

‪#‎গল্পটি‬ একটি মেয়েকে নিয়ে,
যে জীবনে সুখ কি জিনিস,চোখে
দেখেনি।
ছোট বেলায় বাবা মাকে হারায়,
চাচীর অনাদর, অবহেলায়
বেড়ে উঠা মেয়েটার নাম নীলা।

তোমরা সবাই একটু সময় নিয়ে গল্পটা
পড়ো,
সত্যিকার ভালোবাসা কেমন হওয়া
উচিত বুঝতে পারবে।
তবে গল্পটা পড়ে কেউ কাঁদবে না।
‪#‎প্লিজজ‬
____________________________

আমি রেদোয়ান মাহমুদ
ফেসবুকে সবাই কাব্য নামেই চিনে।।।
আর আমার ভালোবাসার মানুষটার নাম
আয়েশা,
ফেসবুকের সবাই নীলা নামে চিনে।।
নীলা নামটা আমিই ওকে দেই।।
আমাদের গল্পে নীলার আসল নামটাই
দেয়া হলো।।

আমি গাজীপুর থাকি।।
অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ছি...
আমাদের ভালোবাসার গল্পটা
ফেসবুকেই।
আমি ফেসবুকের বিভিন্ন পেজে,
লিখা শেয়ার করি..
ফেসবুকে লেখা লেখি করেই
আমার সময় কাটে.!
একদিন আয়েশা নামে একটা মেয়ে
আমায় ফ্রেন্ডরিকোয়েস্ট পাঠায়...
আমি আবার মেয়েদের রিকোয়েস্ট
তেমন একটা এক্সেপ্ট করিনা।
বাট আয়েশা আমার ফ্রেন্ড হওয়ার জন্য
অনেক রিকোয়েস্ট করলো,,।
অনেকটা বাধ্য হয়েই রিকোয়েস্ট টা
এক্সেপ্ট করি..

এভাবে আস্তে আস্তে কথা হলো,
আয়েশা সীলেট থাকে।
এবার (২০১৪) অনার্সে এডমিশন টেষ্ট
দিতো...
ফেসবুকে সারাদিন ই ওর সাথে কথা
হতো...
আমি ওর ফ্যামিলি সম্পর্কে জিজ্ঞেস
করি...
ও বললো,
ও ছোট থাকতে ওর আব্বু আম্মু দুজন ই
গাড়ি এক্সিডেন্টে মারা যায়...

ওর আব্বু আম্মুর মৃত্যু সংবাদ শুনে অনেক কষ্ট
পেয়েছিলাম।।

আয়েশা সেই ছোটবেলা থেকেই
চাচা চাচীর কাছে বড় হয়।।

ওর চাচাতো ভাই বোন সবাই লন্ডন
থাকে..
আয়েশার চাচা আয়েশাকে অনেক
ভালোবাসতো,
কিন্তু ওর চাচী ওকে দু -চোখে দেখতে
পারতো না...
ওকে ওঠতে বসতে বকতো..
আর ও নীরবে শুধু চোখের জ্বল ফেলতো..!
ওর কোন স্বাধীনতা ছিলোনা....
ইচ্ছে করলেই ও কিছু চাইতে পারতো
না...

বাড়ির সমস্ত কাজ ওকে করতে হতো,
কাজের মেয়ের সাথে যেমন ব্যবহার
মানুষ করে,
ওর সাথেও ওরকম ব্যাবহার করা হতো...
ও সেই ছোটবেলা থেকেই এসব করে
আসছে...
ওর ভালো কোন বান্ধবি ও ছিলোনা..
আয়েশা ওর চাচীর ভয়ে,
কোন ক্লাসমেট বান্ধবিকেও বাসায়
আনতো না...

যেখানে ভয় থাকে,
সেখানে তো আর ভালোবাসা
থাকেনা,
তাইনা?

মেয়েটা দিনের পর দিন কাঁদতো,
কেউ ওর খোজ নিতো না....
কেউ একটু ভালোবাসা দিতো না!!
একটু যত্ন করতো না

আয়েশার সাথে কথা বলতে বলতে
আমি ওর খুব ভালো বন্ধু হয়ে যাই..
ওর সব কথা আমার সাথে শেয়ার
করতো...

আয়েশা রান্না করতে গিয়ে
মাঝে মাঝে হাত পুরিয়ে ফেলতো,
আর আমার সাথে এগূলো শেয়ার
করতো...

ওর জন্য সত্যি খুব কষ্ট লাগতো,
ওকে প্রায়ই বলতাম, আমার কাছে চলে
আসো,
তোমাকে একটু ও কাজ করতে হবে না...
তুমি শুধু আমার বাসায় বেড়াবে....

ও হেসে বলতো, সম্ভব হলে ঠিক ই আমার
কাছে চলে আসতো...

বন্ধু থাকা অবস্থায়,
সামান্য বিষয় নিয়েও মাঝে মাঝে
আমাদের ঝগড়া হতো,
আমিও কষ্ট পেতাম,
আবার আয়েশাও কষ্ট পেতো...

আমি কথা বলা বন্ধ করে দিতাম,
আবার ও নিজ থেকেই আমায় সরি
বলতো,
যদিও দোষটা আমার থাকতো!.

এভাবে আমার সাথে কথা হতে
থাকলো....

আয়েশা প্রায়ই অসুস্থ থাকতো,
আমি শুধু ভাবতাম,
ওর এতো অসুখ হয় কেন??.

মাঝে মাঝে এতোই অসুস্থ থাকতো,
কড়া ঘুমের ঔষুধ খেয়ে ওকে ঘুমাতে
হতো...

ওর কাছে একদিন ওর ছবি চাই...
ও বলে দেখাতে পারি...
তবে ডাউন লোড করতে পারবে না...
আমি দুষ্টু হাসি দিয়ে মনে মনে বলি,
তোমার ছবি আমি ডাউনলোড করবো
না,
তবে স্কীনশর্ট করবো
তোমার কথাও রাখলাম,
আমার ও ডাওনলোড করতে হলো না...
তারপর ওর ছবি দেখলাম,
দেখতে খুব সুন্দর ছিলো,
পরক্ষনেই খুব খারাপ লাগলো,
এটা ভেবে,
এতো কিউট একটা মেয়ে,
সেই ছোটবেলা থেকে এভাবে
এতো অবহেলায় মানুষ হলো!!..

একটু যত্ন আর ভালোবাসা পেলে,
এই মেয়েটা কতই না সুখি হতো..!.

আয়েশাকে আস্তে আস্তে
ভালোবাসতে শুরু করলাম,
ওর সব কষ্টগুলো আমার ভালোবাসা
দিয়ে দূর করার চিন্তা করলাম।।
ও প্রায়ই আমায় গান গেয়ে
মেসেন্জারে পাঠাতো....
খুব সুন্দর গাইতে পারতো,
প্রত্যেকটা গান শুনার পর
ওকে লাভ ইমো দিতাম...
আর ও হাসির ইমো দিতো...
ওর হাসির ইমো দেখেই আমি বুঝতাম,
ওর জীবনে ভালোবাসার কত অভাব...
মানুষ সবকিছুর অভাব সহ্য করতে পারে,
কিন্তু ভালোবাসার অভাব সহ্য করতে
পারেনা...!!

একটা সময় ভাবলাম,
ওকে আমার মনের কথাটা বলে দিবো,
তবে আমার কথা ও ফান হিসেবে
নিবে এটা যানতাম,
তারপরেও ওকে জানাই..
ও ফান হিসেবেই উড়িয়ে দেয়,
উড়িয়ে দেওয়াটাই স্বাভাবিক।
কারন ও অন্য একজনের কাছে বড় হয়েছে,
ওর কোনকিছু করার ও অধিকার ওর চাচী
দেয়নি...
তাইতো ও কোন স্বপ্ন দেখতো নাা....
কারন ওর স্বপ্ন, স্বপ্নই থেকে যাবে!!.

আয়েশা যখন অসুস্থ থাকতো,
ওকে রাত জাগতে মানা করতাম,
ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করতে
বলতাম,
বাট ও আমার কথা শুনতো না,
তাই মাঝে মাঝে ওর সাথে এসব
নিয়েও ঝগড়া হতো,

একদিন আয়েশা বললো,
ও খুব অসুস্থ,
ডাক্তারের কাছ থেকে কড়া ঘুমের
ট্যাবলেট এনেছে!..
একটু পরেই ও ঘুমিয়ে পড়বে..
পরদিন সকালে ও পুরোপুরি চেন্জ।
কথায় কথায় বললাম,
তুমি তো আমার কোন কথা শুন না...

তখন আয়েশা বললো,
আজ থেকে ও আমার সব কথা শুনবে...
আমি তো খুব খুশি,
বললাম, আমায় ভালোবাসবে তো??!!!.

তখন আয়েশা ওর সবচেয়ে কষ্টের কথাটা
আমায় বললো,
যেটা আমাদের ফ্রেন্ডশিপ থাকা
কালীন বলেনি!

আয়েশার একটা কীডনি কয়েক অনেক
দিন আগে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল!!!
তাই ও আমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে
পারবেনা!

আমি ওর মনে সাহস জোগালাম...
যদিও আমি ওই সময় খুব কষ্ট পেয়েছিলাম,
বাট তারপরেও সব মেনে নিয়েই ওকে
বলি,
তুমি আমার জন্য স্বপ্ন দেখো..
আমার জন্য নতুন করে বাচার স্বপ্ন
দেখো...


আয়েশা আর আমার নতুন একটা গল্পের
অধ্যায় শুরু হলো.!.


১১/১২/১৪ তারিখে আমাদের রিলেশন
হয়..
আমরা ফেসবুকে একে অপরকে প্রপোজ
করি...
তারপর ও আমার ফোন নাম্বার নেয়....

আমরা আগেই বলে রেখেছি..
দুইজনে একসাথে আই লাভ ইউ বলবো....
আমাদের রিলেশন হওয়ার পর,
নিজেকে অনেক হালকা মনে হচ্ছিল...
আয়েশার মতো একটা মেয়েকে আমি
ভালোবাসতে পেরেছি...

ও তো স্বপ্ন দেখা ভুলে গিয়েছিলো,
নতুন করে ও আমায় নিয়ে স্বপ্ন দেখা শুরু
করলো,
আমি ওকে আমার পছন্দের একটা নাম
দেই...
ওকে এর পর থেকে নীলা নামেই
ডাকতাম।।
আমরা ফোনে তেমন একটা কথা বলতে
পারতাম না,
কারন ওর চাচী যদি ওকে কারো সাথে
কথা বলতে দেখে,
তাহলে ওর অনেক সমস্যা হতো,
তাই যখন ওর চাচী কোন প্রয়োজনে
অথবা গল্প করার জন্য ফ্লাটের অন্য
মানুষদের ঘরে যেতো,
তখনি আমাদের কথা হতো,
আয়েশার সাথে ৪ দিন ঠিকমতো কথা
হয়,
বাট ও এর মাঝেও আমায় বুঝতে দিতে
চায়নি...
যে ও অসুস্থ।।
১৫/ তারিখ রাতে যখন মেসেজিং
হচ্ছিল,
তখন ও বললো,
ওর একটানা ৩ দিন ই গলা দিয়ে রক্ত
বের হয়েছে!
আমি ওকে বলি,
ও যেন ডাক্তার দেখায়
..
বললো পরদিন সকাল ৮ টায় ও চেকআপ
করাবে....

তাই ওইদিন তারাতারি ঘুমিয়ে
পড়লো..

১৬/ তারিখ থেকে ওর সাথে আমার
যোগাযোগ বন্ধ!
.
.
ও আমায় সবসময় ই ফোন /মেসেজ দিতে
মানা করতো...
কারন ওর চাচী,
খুব রাগি মানুষ...
ওকে সবসময় ই বকাঝকা দেয়..
বাট ওর আংকেল ওকে অনেক
ভালোবাসে...
.
ওর চাচীর জন্যই..
আমায় ফোন মেসেজ দিতে মানা করে
দেয়,
যদি ওর চাচী এখনি যেনে যায়,
তবে আমাদের দুইজনের ই সমস্যা হবে....

তাই ওর বিপদের কথা জেনেও ১৬/
তারিখ মেসেজ/ফোন দেইনি...

ভাবছিলাম রাতে হয়তো মেসেজ
দিবে...
বাট রাতে ও মেসেজ দিলোনা...
রাত ১২ টার পর। একটা মেসেজ দেই..
কারন ওই সময় ওর বাসার সবাই ঘুমিয়ে
পড়ে...

কিন্তু কোন রিপ্লে আসলো না।।।

১৭ তারিখ আয়েশা একটা লং মেসেজ
দিলো..
বললো,
ও আর বেশিদিন বাচবে না....
ডাক্তার বলছে,
ও একদম লাস্ট স্টেজে চলে আসছে...!
এখন কীডনি লাগালেও ও বাচবে না!!
তারপর আয়েশা আমার সাথে আবার
যোগাযোগ বন্ধ করে রাখলো...!

১৮/১২/১৪ ===>> রাত (০৯-১০) টা
_____________
_________ নীলা /আয়েশা হসপিটালে,
ভাগ্যক্রমে আমি ওই সময় এফবিতে
ছিলাম।"!
আমার সাথে ফেসবুকে ওর অল্প কিছু
কথা হচ্ছে!
আয়েশার খুব কষ্ট হচ্ছে!!..
আয়েশা আমাকে ছেড়ে যেতে
চায়নি...

১০ টায় নীলা (I.C.O) রুমে যাবে!!
!!
!!
আমি ওর জন্য অনেক কান্না করেছি!!
ফেসবুক পেজে আয়েশার জন্য দোয়া
চাই...
আয়েশার জন্য হাজার হাজার মানুষ
দোয়া করেছে!..
যে মানুষটা সহজে নামায পড়েনা,
সে ও নামায পড়ে আয়েশার জন্য দোয়া
করেছে...!
তারপরেও আয়েশা আমাকে সহ অনেক
গুলি
মানুষকে কাঁদিয়ে
(১০-১১) টায় এই কষ্টের দুনিয়া
থেকে বিদায় নেয়!!
!!
(ইন্না লিল্লাহি উয়া ইন্না ইলাহি
রাজিউন)!
!
দুনিয়ায় তো ও কষ্ট ছাড়া আর কিছুই
পেলো না...
আল্লাহ্ যেন আয়েশা কে আখিরাতে,
সকল নিয়ামত দিয়ে পূর্ন করে দেন..
(আমিন)

নীলার সাথে শেষ মুহুর্তের কথা /
মেসেজগুলো এখানে পোষ্ট করছিঃ-


নীলের নীলা
babu, ami clinic a.
Mone hoy ae sas bar online a duka amar.
Tumar saty kotha bolte parci na.
Jano,babu aj protom ami onk kushi..
Amar jonno aaj amar chachi kadlen,
amar matay hath vulia delan.
Ata amar onek din er chawa silo.
Allah, amar shob wish puron korlen,
tumak amar life a kicu din er jonno diya.
Karon, ami olpai kushi.
Tai,hoito Allah olpo diner jonno
tumak amar lige a patia sei shuk ta dilan.......
Ami aktu por I.C.U te chole jabo.
I love you so much babu
Dec 18, 2014 · Sent from Mobile

নীলার নীল কাব্য
i love u soo much babu..
babu tumi fire aso..plzzzz
Dec 18, 2014
নীলের নীলা babu,Brkfst, lunch, dinner
timely koro.
Tanda pani diya gushol koro na.
Amar babu ta k, amar husband k
tumar maje reke galam.
kuno ojothno jano na hoy.
Amar babu ta jano valo take.
Amar family r sobai k niya.
I love you so much babu.
take care
Dec 18, 2014 · Sent from Mobile
নীলার নীল কাব্য
babu.. plzzz fire aso..
Dec 18, 2014
নীলার নীল কাব্য
ami tumay onreeek valobasi babu..
Dec 18, 2014

নীলের নীলা
Babu,ferar hole kau amak atkate parbe na.
Jaan pakhi,kado na.
Hashi mukh ta ami dakte cai.
Tumar gumra mukh,
kanna kora chuk amar valo lage na.
Amar babu ta jeno always
happy r Allah besasi hoy.
Namaj saro na.
Amar kotha mone hole,
kosto hole,oshanti korle
beshi beshi nofol namaj poro.
Allah tumak santi diban.
Dec 18, 2014 · Sent from Mobile

আরো কিছু মেসেজ ছিলো,
গল্পটা টা অনেক বড় হয়ে গেছে।

তাই তোমরা যদি বিরক্ত হও,
তাই দিলাম না...

আয়েশার সাথে আমি যোগাযোগ
করতে পারিনি,
কারন ও ওর ডিটেইল ঠিকানা আমায়
বলে যেতে পারেনি..
তাই আমি ওকে হাসপাতালে দেখতে
যেকে পারিনি...
আমি ঠিকানা দেওয়ার জন্য
রিকোয়েস্ট ও করেছিলাম,
বাট ওই সময় ও হসপিটালে ভর্তি ছিলো,
(১৭ তারিখে)
আয়েশা তার চোখ দান করে যায়...
আয়েশার মৃত্যুর খবর ওর চাচাতো বোন
দেয়...
মার্চে আমার অনার্স প্রথম বর্ষ ফাইনাল
পরিক্ষা।
পরিক্ষা শেষ হলেই আয়েশার কবর টা
দেখতে যাবো..

এই ছিলো আমাদের অদ্ভুত
ভালোবাসার গল্প!!
.
.
লিখাঃ- Md Redowan Hossen (কাব্য)