মেনু

Drop Down MenusCSS Drop Down MenuPure CSS Dropdown Menu

সংকলন ২৯৭- নিধিদের বাসায় একদিন

লেখাঃ নাহিদ পারভেজ নয়ন

নিধির মায়ের চোখে মনে হয়
কোন সমস্যা আছে,মহিলার চোখ
সব সময় বড় বড়ই থাকে।
যতবার দেখেছি,ততবারই চোখ
এমন ভাব করে থাকেন যেন ওটা
দিয়ে গিলে খাবেন কাওকে।
বুঝিনা, নিধির চোখ এত সুন্দর
কিন্তু ওর মায়ের গুলো এমন কেন।এ
বিষয় টা নিধিকে জিজ্ঞেস
করতে হবে,
এটা পরে জিজ্ঞেস করা যাবে।
এখন এদিক টা নিয়ে ভাবা যাক।।
,
আমি বসে আছি নিধির মায়ের
সামনে,খুব ভয়েও আছি।
নিধির মা বড় বড় চোখে
তাকিয়ে আছে আমার
দিকে,আমি খুব একটা সেদিকে
ভ্রুক্ষেপ করার চেষ্টা করছি না ,
ওই চোখের দিকে বেশি দেখলে
আরো ভয় পাব তাই আমি ঘরটা
দেখছি।খুব সুন্দর করেই সাজানো
ঘর টা, বড় লোক দের শখের ঘর
যাকে বলে।নিধির বাবা
ইঞ্জিনিয়ার মানুষ অনেক টাকা
ইনকাম করেন।তাই বাড়িও
বানিয়েছেন সেই রকম।
,
এসব ভাবতে ভাবতেই,
নিধি এসে এক গ্লাস পানি
দিল,আমি হাতে নিয়ে এক
বারেই পানির গ্লাস শেষ
করলাম।গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে
গিয়েছিল,তার উপর নিধির
মায়ের চোখের ভয়!
পানি খাওয়া শেষে ওর হাতে
গ্লাস দিয়ে,ওকে ধন্যবাদ
দিলাম।
গ্লাস দেওয়ার সাথে সাথে
নিধির মা ওকে নিধির দিকে
তাকিয়ে বলল,
-যাও এখান থেকে!!
,
নিধি আমার দিকে করুণ দৃষ্টিতে
চাইল,তারপর ঘর থেকে চলে গেল।
আমি পানি খেয়ে মনে হয় একটু
সাহস ফিরে পেলাম,
তাই আমি ওনার চোখের দিকে
তাকালাম।
মহিলার চোখ মনে হচ্ছে আস্তে
আস্তে আরো বড় হচ্ছে,কখন যে
ফেটে যায়।
,
নিধির মা মহিলা বেশ সুন্দরী,
ভেবেছিলাম তার গলাটা সেই
রকম সুন্দর হবে কিন্তু না,সেই রকম
শক্ত গলা,সেই মোটা গলায়
আমাকে জিজ্ঞেস করল,
-তুমি ওর ক্লাসমেট?
-জি আন্টি!!
-কি নাম?
-নয়ন!!
-কেন এসেছ?
-কয়েকটা নোট দিতে এসেছি!!
-কিসের নোট?
-পিজিক্স স্যার দিয়েছিল
পরিক্ষার জন্য!"
-তার জন্য বাড়িতে আসতে হল?
-আন্টি খুবই দরকারী,আর ও দুদিন
ধরে কলেজেও যাচ্ছেনা তাই
দিতে আসলাম।
,
মহিলা এমন ভাবে আমাকে
জেরা করা শুরু করল মনে হচ্ছে
আমি ওনার মেয়ের সাথে
হাংকি পাংকি করতে গিয়ে
ধরে পড়েছি।নিধি দুদিন থেকে
কলেজ যাচ্ছেনা তাই ওকে
দেখতে আসলাম।সব কিছু ঠিক ঠাক
ই ছিল,কলিং বেল চাপতেই
নিধি এসে দরজা খুলে দিল,আমি
ভাবলাম কেউ হয়ত বাসায় নেই।ও
আমাকে ভিতরে এসে বসতে
বলল।আমি সোজাসুজি ভিতরে
আসলাম,এসে যেই সোফায় বসলাম
তখনি দেখি সামনে ওর মা বসা।
আমি সালাম দিলাম, কিন্তু ভদ্র
মহিলা কোন উত্তর না দিয়ে
আমার দিকে চেয়ে রইলেন।
ওনেকে দেখে
আমার গলাটা খুব শুকিয়ে
গেল,তাই নিধিকে এক গ্লাস
পানি আনতে বলেছিলাম।
,
মহিলার জেরা শুনে আবার গলা
শুকিয়ে যাচ্ছে।ভাগ্যিস সাথে
একটা ব্যাগ ছিল,নয়ত নোটের
অজুহাত ও দিতে পারতাম না।
ব্যাগ না থাকলে বলত,
-কোথায় নোট,মনে মনে লিখে
আনছ নাকি!"
,
নিধির মা ওদের বুয়াকে নাস্তা
দিতে বলল,আমি অবশ্য ভয়ে
আছি,,আরো কি কি যে
জিজ্ঞেস করবে,কে জানে।
,
নাস্তা দিয়ে গেল বুয়া, আমি
এখনো নিধির মায়ের মুখের
দিকে তাকিয়ে আছি।নিধির
মা আমার দিকে তাকিয়ে চোখ
ছোট করে বলল,
-নাও বাবা, নাস্তা নাও!!
,
নাহ,নিধির মাকে যতটা কঠিন
ভেবেছিলাম ততটা নয়, মহিলার
কথা খুব সুন্দর,এই প্রথম আমাকে
বাবা বলে ডাকলেন,খুব ভালই
লাগল।
আমি একটা বিস্কুট হাতে
নিলাম,কামড় দেয়ার সাথে
সাথে নিধির মা বলতে লাগল,
-নিধির জর, তাই দুদিন কলেজ
যেতে পারেনি।তুমি এক কাজ
কর নোট গুলো আমাকে দাও আমি
ওকে দিয়ে দিব।
,
কথাটা শুনে বিস্কুট টা আমার
গলায় আটকে গেল,আমি এক গ্লাস
পানি খেলাম।ভাবছি যে কি
বলব,দুদিন হয় দেখা হয়না, আজ
দেখা হল কথা না বলে যাই কি
ভাবে!!মোবাইলে কথা বলে
ফিলিংস পাওয়া যায়না।
,
আমি একটু গম্ভীর মুখে বললাম,
-আন্টি,নোট টা একটু বুঝিয়ে
দিতে হবে,অনেক কঠিন।আর কি
থেকে কি পড়তে হবে তাও
জানাতে হত। আপনি এখানে একটু
ওকে ডাকুন আমি দেখিয়ে
দিচ্ছি, অল্প একটু সময়েই হয়ে
যাবে।
,
আমার কথা শুনে কি যেন
ভাবলেন উনি,তারপর ডাকা শুরু
করলেন,
-নিধি,একটু এ ঘরে আস!!
,
এক ডাকেই নিধি হাজির,মনে হল
ও প্রস্তুত হয়েছিল ঘরে আসার জন্য।
নিধির মুখে হাসি,ও হয়ত
আমাদের কথা গুলো শুনেছে।
ওর মা ওকে বলল,
আমাকে ওর ঘরে নিয়ে
যেতে,যেন নোট গুলো বুঝে
নিতে পারে।
,
নিধি হাসতে হাসতেই বলল,
-আসো, আমার সাথে।
-হুম।
,
আমি সোফা থেকে উঠে নিধির
পিছন পিছন হাটা শুরু করলাম।