মেনু

Drop Down MenusCSS Drop Down MenuPure CSS Dropdown Menu

সংকলন ২৮৫- নীল পরী

--কিরে রংহীন কাব্য ভাইয়ার
কালকের গল্পটা পড়েছিস।
পাশ দিয়ে হেটে যাচ্ছিল সুমন।
মেয়েটার কথা শুনে থমকে দাড়ায়।
--নারে কাল পড়ার চাপের কারনে
ফেসবুকে আসতে পারিনি।
--কালকের গল্পটা অনেক সুন্দর ছিল।শুধু
কালকেরটা না ওনার প্রত্যেকটা
গল্পই সুন্দর।আমার খুব ভাললাগে।
--হুম আমারও।
--ইস কত চেষ্টা করেছি ভাইয়ার
ফেসবুক আইডিতে ফ্রেন্ড হবার জন্য
কিন্তু ভাইয়া আমার রিকুয়েস্ট
এক্সচেপ্ট করছেই না।
--কেন ফ্রেন্ড হয়ে কি করবি।
ভালবেসে ফেলিসনিত আবার।
--মেয়েটা এই কথা শুনার পর লজ্জায় মুখ
ডাকার চেষ্টা করে।
.
আরাল থেকে মেয়ে দুইটার সব কথা
শুনে সুমন।তার কারন রংহীন কাব্য
আইডিটা তার আর তারা যার কথা
বলতাছে সেটা এই সুমন।মেয়েদের
কথা শুনে সেখান থেকে চলে আসে
সুমন।
.
আজ কয়েকমাস হল ফেসবুক নামক
ভার্চুয়াল জগতে লেখালেখি করে
সুমন।এই কয়েকমাসে ফেসবুকে অনেক
ফ্যান পেয়েছে সুমন।এর মাঝে অনেক
মেয়ে ছিল কিন্তু মেয়েদের আইডি
ফেক মনে হয় বলে তাদের রিকুয়েস্ট
ঝুলিয়ে রাখে।বিকেলের দিকে
ছাদে যায় সুমন।ছাদে গিয়ে দেখে
সকালের সেই মেয়েটি।কিন্তু এই
মেয়ে এখানে আসল কিভাবে।
মেয়েটাকে ছাদে দেখে সেখান
থেকে চলে আসে সুমন মেয়েটা
ছাদে থাকার কারনে তার কেমন
জানি অসস্থি লাগছে।আর এদিকে
মেয়েটা এখানে কিভাবে আসল সেই
প্রশ্ন এখনও তার মাথায় ঘুর পাক
খাচ্ছে।পরে জানতে পারে তারা
নাকি আজ এই বাসায় নতুন এসেছে।
.
রাত ১০টার দিকে ফেসবুকে ডুকে সুমন।
এসে দেখে অনেক গুলা মেসেজ
এসেছে।মেসেজ গুলা দেখতে
দেখতে একটা সময় "view other message"-
এ যায়।আগে অবশ্য এই মেসেজ
কোনদিন দেখেনি।"view other message"-
এ গিয়ে দেখে অনেক মেসেজ
এখানে জমা।নীল পরী নামক
আইডিটা দেখে তার চোখ আটকে
গেল কারন সেই আইডি থেকে এখন
পর্যন্ত প্রায় ৭৭টা মেসেজ এসেছে।
আর প্রত্যেকটা মেসেজেই বলা
হয়েছে তার রিকুয়েস্ট এক্সচেপ্ট করার
জন্য।মেয়েটাকে তার চিনতে ভুল হল
না কারন এটা সকালে রাস্তার
পাশে এবং বিকেলে ছাদে দেখা
সেই মেয়েটার কারন তার আইডিতে
ছবি ছিল।এতগুলা মেসেজ দেখে
সুমনের অনেক মায়া হয় আর নীল পরী
রিকুয়েস্টা এক্সচেপ্ট করে।একটু পরই
রিকুয়েস্টা এক্সচেপ্ট করার জন্য
ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে।সেদিনের মত
ফেসবুক থেকে চলে আসে সুমন।পরের
দিন থেকে নীল পরী আইডিটা
থেকে প্রতিদিন মেসেজ আসত।সুমন
মাঝে মাঝে মেয়েটার মেসেজের
উওর দিত।অনেক সময় দিত না।
মেসেজের উওর না দিলে আরও বেশি
মেসেজ পাঠাত মেয়েটা।এভাবে
মেয়েটার সাথে কথা হত সুমনের।
মেয়েটার নাম ছিল বন্যা।মেয়েটা
তার একবছরের জুনিয়র।এভাবে বন্যার
সাথে কথা বলার পরিমানটা বেড়ে
যায়।দুজনের মাঝে একটা বন্ধুত্বের
সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
.
বন্যা অনেকবার সুমনকে দেখতে
চেয়েছে।কিন্তু সুমন তার ছবি
বন্যাকে অনেকবার চাওয়ার পরও
দেয়নি।বন্যা যে সুমনকে ভালবাসে
সেটা মেসেজে ইংগিতের মাধ্যমে
বলার চেষ্টা করত।সুমন বুঝেও না বুঝার
চেষ্টা করত।একটা সময় বন্যাঃ-
--আচ্ছা আপনাকে যে আমি
ভালবাসি সেটা বুঝেও না বুঝার
ভান করেন কেন।
--আসলে আপনি আমাকে
সামনাসামনি না দেখেছে।না
দেখেছেন ফেসবুকে।না দেখে
কাউকে ভালবাসা যায় না।
--সত্যি বলছি আপনাকে অনেক
ভালবাসি।আর আপনার মনটাকে
ভালবেসেছি।এখানে চেহারটা
গুরুত্ব না।
.
মেসেজটা সিন করে ফেসবুক থেকে
বের হয়ে আসে সুমন।সুমন সিন্ধান্ত
নিয়েছে বন্যা যেহেতু তাকে
চিনতে পারেনি সেই রংহীন কাব্য।
তাই ফেসবুকের পরিচয়টা গোপন করে
বাস্তবে তাকে ভালবাসার চেষ্টা
করবে।দেখা যাক তার ভালবাসার
পরিমানটা কতটুকু।
পরের দিন থেকে রোজ বিকেলে
ছাদে সুমন বন্যার সাথে কথা বলার
চেষ্টা করত।বন্যা কথা বলার সুযোগ
দিত না।তারপরও সুমন বন্যার পিছু নিত
কথা বলার জন্য। এভাবে কিছুদিন চলার
পর সুমন বন্যাকে সরাসরি তার
ভালবাসার কথা বলে দেয়।সুমন
দেখতে একটু কালো ছিল।বন্যা সুমনের
কাছ থেকে এ কথা শুনার পর বন্যা
সুমনের কালো চেহার নিয়ে বাজে
মন্তব্য করে।যা শুনে সুমন মনে অনেক কষ্ট
পায়।
.
আর অন্যদিকে বন্যা প্রতিদিন
ফেসবুকে সুমনকে ভালবাসার কথা
বলতেছে।সুমন বন্যার একটা মেসেজের
উওর দেয় না।একটা সময় সুমন সহ্য করতে
না পেরে বন্যার সাথে দেখা করার
সিন্ধান্ত নেয়।
.
নির্ধারিত তারিখে,নির্ধারিত
সময়ে পার্কের বঞ্চে বসে আছে
বন্যা।এদিকে সুমনের আসার কোন নাম
নেই।সুমনের ফোন নাম্বারও নেই যে
ফোন করবে।উপায় না পেয়ে ফেসবুকে
মেসেজের পর মেসেজ করতেছে
বন্যা।একটু পর পিছন থেকে একটা ডাক
শুনতে পায় বন্যা।পিছনে ফিরে
দেখে সুমন দাড়িয়ে।
--একি তুমি এখানে?(বন্যা)
--আমিই রংহীন কাব্য (সুমন)
কথাটা শুনার পর বন্যার মাথায় যেন
আকাশ ভেংগে পরল।বন্যা কিছু একটা
বলার চেষ্টা করছিল।সুমন তাকে সুযোগ
না দিয়ে নিজেই বলা শুরু করললঃ-
আসলে তুমি আমাকে ভালবাসনি।
ভালবেসেছ আমাকে গল্পকে।আমি
যখন পরিচয় গোপন করে তোমাকে
ভালবাসার কথা বলেছিলাম।তুমি
যদি সত্যি আমাকে ভালবাসতে
তাহলে তুমি বলতে তুমি অন্য একজনকে
ভালবাসা।তা না করে তুমি আমার
কালো চেহারা নিয়ে বজে মন্তব্য
করলে।
.
কথাগুলো বলেই সুমন সেখান থেকে
চলে আসে।বন্যা তার চলে যাবার
পথটা চেয়ে রইল।
এরপরেও বন্যা সুমনের কাছে
ভালবাসা দাবি করে কিন্তু সুমন
কোনভাবেই রাজি হয় না কারন
তাকে দেখলেই যেদিনের কথা মনে
পড়ে যায়।যেদিন তার কালো
চেহারা নিয়ে বাজে মন্তব্য করে।
.
___একজন কালো মানুষ আপনাকে
ভালবাসার কথাটা বলাতে তার
কালো চেহার নিয়ে বাজে মন্তব্য
করতে হবে।আপনি তাকে ভালবাসতে
পারবেন না সেটা বলে দিলেই
পারেন।চেহার নিয়ে বাজে মন্তব্য
করার কি দরকার কারন আমরা সবাইত
আল্লাহ্ তা'য়ালা সৃষ্টি___

লেখকঃ-আদরের ছোট সন্তান