জানালার পাশে বসে মাথায় হাত
দিয়ে গভীর চিন্তায় মগ্ন হয়ে আছি ৷
অনেক চেষ্টা করলাম একটা কবিতা
লেখার ৷
.
কোনো ভাবেই পেরে উঠলাম না ৷
কোনো কথাই আসছে না ভেতর থেকে ৷
.
ধুর!!! এসব লেখালেখি আমার দ্বারা
সম্ভব না ৷ মনে হয় বোমা মারলেও
ভেতর থেকে কোনো কথাই আসবে না,
যেটা সাজিয়ে রুপ দেয়া যাবে একটা
কবিতায় ৷
.
অনেক প্রচেষ্টা চালিয়ে অবশেষে
একরাশ হতাশা নিয়ে খাতা কলম
ছাড়লাম ৷
.
আসলেই কবিতা লেখা বড্ড কঠিন কাজ ৷
.
মনে মনে ভাবছিলাম নিশ্চয়ই যারা
কবিতা লেখে তারা বোধহয়
খোদাপ্রদত্ত কোনো ক্ষমতা পেয়ে
থাকেন ৷
.
নাহ্, আলো বুঝি আমাকে আর
ভালোবাসবে না, চলে যাবে অন্য
কারো হাত ধরে ৷
.
মেয়েটার হঠাৎ যে, কি হল! কিছুই
বুঝলাম না...
কোনো কথা না বলে হুট করেই বলা শুরু
করলো " আমার জন্য একটা কবিতা
লিখে আনবা আর যদি না পারো তবে
ব্রেক আপ"
.
মেয়েদের মন বোঝা সত্যিই অনেক
কঠিন ব্যাপার ৷ কখন কি চায় তাদের মন
বুঝা মুশকিল!
.
আর কিছু হলেই অশ্লীল একটা শব্দ ইউজ
করবে সেটা হল ব্রেক আপ ৷ কিছু হলেই
ব্রেক আপ ৷
.
ব্রেকআপ বলা যতটা সহজ মেনে নায়া
কিংবা ব্রেক আপ করা ততটা সহজ না ৷
.
মনে মনে ভাবছিলাম.. আচ্ছা আমিতো
কবিতা লিখতে পারলাম না, তাহলে
সত্যিই কি আলো আমার সাথে ব্রেক
আপ করবে??
.
ধুর এসব কি ভাবছি!
.
আর কিছু হোক বা না
হোক,মেয়েটাকে ছেড়ে আমি
থাকতে পারবো না ৷
.
ওর চঞ্চলতা, দুষ্টুমি,আর মায়াবি মুখটা
আমাকে সত্যিই ওর রাজ্যের রাজা
হওয়ার স্বপ্নে বিভোর করে তোলে
প্রতিনিয়ত ৷
.
মেয়েটার হাসিতে মনে হয় মুক্তা
ঝরে, টোল পড়ায় হাসিটার সৌন্দর্য
আরো বেড়ে যায় ৷
.
আমি অনেক ভেবে একটা হিসেব
মেলাতে পারিনা.. কেন যে এই
মেয়েটা আমার মতো আবর্জনাটার
পেছনে পড়ে থাকে!
.
আমার সব বৈশিষ্ট্য তো ওর থেকে
একেবারেই আলাদা, তবুও যে কেন
আমায় নিজের সাথে একাত্মা করে
রেখেছে ৷
.
হঠাৎ এসব ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে
পড়লাম জানি না ৷ তবে ঘুম থেকে
উঠলাম তখনি, যখন মনে হল চারপাশে
ভুমিকম্পের মত কাপাকাপি অবস্থা ৷
আসলে ফোনটা ভাইব্রেট করছিল, ঘুম
থেকে উঠে বিষয়টা বুঝলাম ৷
.
স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখলাম আলোর কল
৷
.
এমনিতেই ঘুম জড়ানো কন্ঠ আর কবিতা
না লিখতে পারায় হাজারো শঙ্কা
গ্রাস করে রেখেছিল তাই কোনো
মতে কথা বের করে বললাম..
.
: তুমি চিন্তা করো না, আমি তোমার
জন্য কবিতা লিখছি
.
:আচ্ছা তুমি এত পাগল কেন বলোতো?!
.
: কেন কেন!
.
: তোমাকে আমি কবিতার কথা
বলেছি কি?
তুমি কিভাবে বুঝলে তোমাকে
কবিতার কথা বলবো??
.
: না,মানে কবিতা লিখতে যেহেতু
বলেছো, তাই জানতে চাইবে না যে,
লেখা শেষ হলো কি না?
তাই ভাবলাম এটাই জানার জন্য ফোন
দিয়েছো ৷
.
: আচ্ছা আমি তোমার কে?
.
: আমার স্বপ্ন,আমার কল্পনা,আমার
বাস্তবতা আমার ভালবাসা আর আমার
প্রেয়সী
৷
.
: তোমার প্রেয়সী যদি হয়েই থাকি
তাহলে তোমার প্রেয়সী তোমাকে
ভালবেসে তোমার কথা মনে করতে
পারে না!!!তোমার সাথে মধুময় কিছু
সময় কাটাতে পারে না?
.
: উমম পারে...অবশ্যই পারে..একশো বার
পারে
.
: তাহলে এটা বললে কেন?
.
: আমি আসলে সত্যিই অনেক সরি..বুঝতে
পারিনি
৷
.
: কবে বুঝতে পারবে আমার বরটা শুনি
?
.
: কবে বর হলাম তোমার!
.
: যেদিন থেকে তুমি আর আমি
একসাথে চলার শপথ নিয়েছি, তোমার
হাত আমার হাত মিলে, তোমার ছায়া
আমার ছায়া মিলে একটা ছায়ায় রুপ
দিয়েছি, তোমার বুকটা
সারাজীবনের জন্য আমার মাথা
রাখার জায়গা করে নিয়েছি, সেদিন
থেকে তুমি আমার বর
৷
.
: হুম.....একটা কথা বলবো
?
.
: বলো
৷
.
: আমি আসলে কবিতা লিখতে
পারিনি ৷
অনেক চেস্টা করলাম কিন্তু পারলাম
না ৷ একটু সময় দাও আর কিছু দিন, আমি
নিশ্চিত পারবো
৷
.
: তাই
?
.
: হুম.....আচ্ছা কবিতা লিখতে পারিনি
বলে কি তুমি ব্রেকআপ করবে? আমাকে
রেখে চলে যাবে?
.
: এই পাগল, তোমার কি ধারনা আমি
তোমার কাছ থেকে চলে যাওয়ার জন্য
তোমার কাছে এসেছি?! তোমাকে
ছেড়ে আমার অস্তিত্ব কল্পনাহীন এটা
জানোনা? তোমার সাথে মজা করে
বলেছিলাম কবিতা লিখতে ৷
আর আমার কবিতার প্রতিটা
শব্দ,কবিতার ছন্দ,কবিতার উপমা সব তুমি ৷
তোমাকে যেহেতু পেয়েছি, তাই
কবিতার প্রয়োজন নেই আমার ৷
.
: সত্যি বলছো?
যাক বাবা বাঁচা গেল! সত্যিই আমিও
তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না ৷
মনে হয় অনেক বেশি ভালবেসে
ফেলেছি তোমাকে
৷
.
: মনে হয় মানে ?
খুন করে ফেলবো 'মনে হয়' বললে ৷ মনে হয়
বললে চলবে না, ভালবাসতেই হবে-
অনেক.. অনেক.. অন্নেক ৷
.
: ok আমার আলো .. তোমাকে অনেক
বেশি ভালবাসি আমি
৷
.
: এই আস্তে বলো... না হলে আন্টি শুনে
ফেলবে তো
৷
.
: জানো? মাকে আমি তোমার কথা
বলেছি ৷ মা তোমাকে দেখতে
চেয়েছে ৷
.
: তাই নাকি! আমিও বাবা কে বলছি ৷
আমিও বলেছি যে, তোমাকে আমি
অনেক ভালবাসি ৷ বাবাও তোমাকে
দেখতে চেয়েছে ৷ আর পাপা আমার
পচ্ছন্দের বিরুদ্ধে কখোনো যাবে না ৷
.
: সত্যি বলছো? তাহলে তোমাকে আমি
forever এর জন্য পাচ্ছি ৷
কি মজা কি মজা...
.
: সত্যি তুমি পাগল একটা
!
.
: হুম...আমার পাগলিটার জন্য পাগল হতে
আমি রাজি ৷
.
: তাই বুঝি!
.
: হুমম...
.
আজ নাহয় এখানেই শেষ করলাম ৷ অন্যদিন
জানাবো শেষ টুকু ৷ শেষ ই বার কি হবে?
অসম্ভব ভালবাসায় জড়িয়ে থাকা
মানুষ দুটোর ভালবাসার পূর্ণতা পাবে
বিয়ের মাধ্যমে ৷
তারপর হয়তো দুজনের পাগলামি মাখা
ভালবাসা আরো বেড়ে যাবে ৷
এটাইতো শেষ পরিণতি ৷
হ্যা, ভালবাসায় দুজন মানুষ দুটি
আলাদা মোহনার হতে পারে ৷ কিন্তু
তাতে কি? মোহনা দুটো পরস্পরের
ভালবাসায় এক করা যায় তো তাইনা?
.
কিন্তু কীভাবে করবেন?
হ্যা, এটাই বলবো যে, আপনার প্রিয়
মানুষটার ভালবাসাটাকে শ্রদ্ধা
করতে শিখুন, তার ভালবাসার পূর্ণ
মর্যাদা দিন ৷
.
দুজন দুজনের ভালবাসাটাকে শ্রদ্ধা
করলে এমনিতেই বুঝতে পারবেন তার
অব্যক্ত কথাগুলো ৷
যাই হোক, যে যেখানেই থাকুন না
কেন জড়িয়ে থাকুন, আপনার ভালবাসা
বেঁচে থাকুক আপনার হৃদয়ে ৷
.
.
লেখা: নিঃশেষিত শুকতারা