-হাই!
-আমাকে বলছেন ভাইয়া?
-ফেসবুকে কি আপনাকে ছাড়া এখন
অন্য কাওকে নক দিয়েছি?
-না তা নয় মানে আপনি নক দিলেন
ভেবে অবাক হচ্ছি।
-কেন?
-আপনি কতো বড় একজন
সেলিব্রেটি তাই জন্যে ভাবলাম
আমাকে আবার কি দরকার
হলো আপনার।
-বাজে কথা ছাড়ুনতো।কেমন আছেন
বলুন!
-এইত চলে যাচ্ছে কোন রকম।
-আপনিতো আজব মানুষ।ঠিক মত উত্তর
দিতে পারেন না নাকি?
-আচ্ছা ভাল আছি।আপনি?
-এইত এবার হয়েছে।আমিও
ভালো আছি।
-শুনে খুশি হলাম।
-আচ্ছা তাই!
-হুম...
নিরা আর রিয়াদের পরিচয়
এইভাবে ফেসবুকের মাধ্যমেই শুরু।
রিয়াদের ফেসবুকে লিখালিখির
অভ্যেস আছে।নিরাকে সে নক
দিলে নিরা কিছুটা অবাক হয় তাই।
সে খুজে পায়না রিয়াদের এমন
হঠাত নক দেয়ার কারণ।
-এই সারা কই যাস?
-কিরে নিরা তোকেতো আজকাল
দেখি ই না।কোথায় থাকিস
বলতো!
-কেনো বাসায়।তুই বিজি মানুষ
তাই ফেসবুকেও নক টক আর দিস না।
-আরে তা না।খুব একটা আসিনারে।
-ছাড়!আচ্ছা শোন না কাল রিয়াদ
ভাইয়া আমাকে নক দিয়েছে।
-কোন রিয়াদ?
-আরে ফেস বুকের লেখক রিয়াদ।
-তাই নাকি!এই কেন নক দিলোরে?
-কি জানি জানিনারে।কিছু
বলেনি।
-অপেক্ষা কর আবার নক দিতে পার।
নইলে তুই দিস।
-যাহ্।আমার বুঝি বয়েই গেছে!
-হা হা হা।আচ্ছা চল বাই।আমি কিছু
বই কিন তেযাচ্ছি।পরে কথা হবে।
-আচ্ছারে।বাই।
বাড়ি ফেরে নিরা ফেসবুকে লগইন
করে।দেখে রিয়াদের টেক্সট
দেয়া আছে।
-এইযে কি খবর?
-ভালো।আপনার?
-চলে যাচ্ছে।
-আজ
আপনি কেনো ঘুরিয়ে কথা বলছেন।
-এমনি বললাম।কি করছেন?
-বাইরে থেকে আসলাম।আর আপনি?
-কোচিং করতে যাবো।
-আচ্ছা।
রিয়াদ চলে যয় কোচিং এ।
কোচিং এ রোজ এক মেয়ে তার
দিকে তাকিয়ে থাকে।রিয়াদ
কিছু বুঝতে পারে না।আজ
মেয়েটা কোচিং এ আসেনি।
রিয়াদ তা খেয়াল করেনি।পরদিন
কোচিং এ রিয়াদ ওই
মেয়েতাকে দেখে!
সে দাড়িয়ে আছে।রিয়াদ
ক্লাসে ঢুকতে গেলে মেয়েটা তাকে আটকায়
ও দাড়াতে বলে।
-একটু শুনবেন?
-জি বলুন!
-একটা কথা ছিল।
-আমারও
-আপনি আগে বলুন।
-আচ্ছা আপনি আমার দিকে রোজ
তাকিয়ে থাকেন কেনো?
-সেটা বলতেই
আপনাকে আটকিয়েছি।
-বলুন।
-
আমি আপনাকে আসলে ভালোবেসে ফেলেছি।
-কি বলছেন এসব আপনি?
-তাই থিক।
-আচ্ছা আপনার নামটা কি বলবেন?
-নিরা।
-নিরা?কোন নিরা?
-আপনি রোজ যাকে নক দেন।
-আপনিই সেই নিরা।
-হুম।।
-আমি একটা কথা বলি?
-বলুন।
-
আমি আপনাকে আগে দেখিনি কিন্তু
আপনাকে হয়তো আমিও
ভালোবাসি।
-হয়তো মানেটা কি?
সোজাসোজি বলেন।
-ভালোবাসি!
শুরু হয় নিরা রিয়াদের প্রেম।খুব
ভালবাসে নিরা রিয়াদকে।
রিয়াদও ভালোবাসে তাকে।
তাদের খুনসুটি ছিল তাদের
প্রেমের পরিচায়ক।নিরা খুব ভাল
মেয়ে।তারা এক সংগেই
পড়তো কিন্তু রিয়াদ
নিরাকে চিনতো না।এখন অবশ্য
রিয়াদই
নিরাকে সবচেয়ে বেশি চেনে।
দেখতে দেখতে কেটে যায়
একটি বছর।
-আজ আমাদের ১ বছর
পুরো হলো নিরা।
-হুম।
-কিছু বলবেনা।
-আমার কিছুই বলার নেই।
-কেন?
-তুমি সেলিব্রেটি মানুষ।আমার
কথা কি মনে থাকবে তোমায়।
-এগুল কি বলছো।আমায় বিশ্বাস
করোনা তুমি?
-বাই।
-নিরা?নি...।
নিরা চলে যায়।কিছুদিন
আগে রিয়াদের লিখা গল্পের বই
বের হয়।তার সূত্র ধরে রিয়াদের
সংগে কয়েকজন লেখিকার পরিচয়
হয় যারা রিয়াদের
স্টেটাসে কমেন্ট করে।
নিরা তা দেখে রিয়াদের কাছ
থেকে দূরে সরে যায়।
-নিরা আমার দোষ
টা কি বলো আমায়।
-No replay.
-নিরা?
-No replay.
-কিছু বলবেনা?
-No replay.
-বাই।আর বিরক্ত করবোনা।
ভালো থেকো।
রিয়াদের বুকটা জ্বলে যায়।
সে নিরাকে ছাড়া খুব অসহায় বোধ
করে।সারাদিন নিরাকেই
ভাবতে থাকে রিয়াদ।
নিরাকে পেতে সে একটি খেলা খেলে।
ফেসবুকে এক মেয়ের
সংগে দেখানো সম্পর্ক করে যেন
নিরা তা দেখে আর দেখার পর
যেনো সে ফিরে আসে।কিছুদিন
পর নিরা জানতে পারে সব।
-এমন করলে কেনো?
-কি করেছি আমি?
-ঠকিয়েছো আমাকে।
-কিভাবে?
-আমাকে ছেড়ে অন্যের
সংগে নিজেকে জড়িয়েছো।
-না।মিথ্যে!
-ঈমি জানি রিয়াদ।
-কিছুই জাননা।আমার এই মনের
ঠিকানা হাজারটা।কিন্তু
সেগুলো হলো সব তমার ঠিকানা।
তুমি যেখানে থাক সেখানেই
আমার মনের ঠিকানা লিখা হয়।
-মানে?
-মানে আমি তোমার মনের
কথা জানতে এমন করেছি নিরা।
ভালো আমি কেবল তোমাকেই
বাসি।আমি অন্যের
কাছে গিয়ে তোমার
অনুভূতি দেখতে চেয়েছিলাম।বুঝে
ছি আজ আমি।
-কি বুঝেছ?
-হয় তোমার!
-কি হয় আমার?
-তোমার কষ্ট হয়।
-আমাকে ছেরে যেয়োনা।
-তুমি ছেরে যেয়োনা আমায়।
আমাকে বিশ্বাস
করো তুমি দয়া করে।আমি শুধু
তোমাকেই ভালোবাসি।
-আমিও তোমাকেই চাই।
নিরাকে ফিরে পায় আবার
রিয়াদ।কিন্তু রিয়াদ
দেখানো সম্পর্কটা একেবারে ভেঙে দেয়
মন থেকে।কারণ সে নিরাকেই
ভালোবাসে।নিরার জন্য সে সব
করতে পারে।যার
সংগে মিথ্যে নাটক
করেছিলো তাকে বোঝায় সে।ওই
মেয়েটাও সরে যায়।আবার
চলতে থাকে নিরা আর রিয়াদের
খুনসুটিময় প্রেম।
কিন্তু কিছুদিন পর...
-নিরা?
-কি?
-কি করছো?
-কিছুনা।তুমি?
-তোমায় মেসেজ দেই।
-রিয়াদ?
-বলো।
-আমি তোমাকে ভালোবাসি না।
আমায় ভুলে যেও!
রিয়াদ কিছু বলার আগেই নিরার
নীল
আইডি লিঙ্কটা কালো হয়ে যায়!
রিয়াদ পাগলের
মতো খোজে নিরাকে।কিন্তু
পায়না তাকে!
পরিশেষে সে জানতে পারে যেই
মেয়েটীর সংগে রিয়াদ
নিরাকে পেতে সম্পর্ক করার নাটক
করেছিল
সে নিরাকে মিথ্যে বলেছে রিয়াদের
ব্যাপারে।রিয়াদের কাছে কোন
প্রমান ছিলনা তাই
নিরা রিয়াদের জীবন
থেকে চিরতরে হারিয়ে যায়!
দিয়ে যায় কেবল কিছু টুকরো স্মৃতি।
রিয়াদ আজ তার ছাদের ওপর
বসে সিগারেটের ধোয়া টান
দিচ্ছে।আর
বেরিয়ে যাওয়া ধোয়াকে বলছে-
"কি দোষ ছিলো আমার নিরা?
কেন চলে গেলে?
তোমাকে পেতে নিজেকেই
বিক্রি কিরে দিচ্ছিলাম কিন্তু
তুমি সেই চলেই গেলে।তোমার
যতো কালিমা ছিলো তা আমার
হতভাগ্য কপালে লেপন
করে আমি তোমাকে কলুষতা থেকে মুক্ত
করে দিয়েছিলাম।কিন্তু
তুমি কি দিলে?প্রথমে আমায়
অকারনে অবিশ্বাসের
দাড়িপাল্লায় মেপে নিলে।
তারপর দূরে ঠেলে দিলে।
পরে আবার কাছে এলে।অতঃপর
অভিশাপ দিয়ে চলে গেলে।
এতে কি খুশি হলে?আমায়
হয়তো চিনতেই পারোনি তুমি!ক্ষত
বিক্ষত ভেঙে যাওয়া মনটা আমার
আজও তোমায় খোঁজে।আজ
আমি শুণ্য।তোমার
দেয়া অজানা অভিশাপের জন্য
আমি আজ এক
ঝড়ে পরা পাতা যা বাতাসের
তাড়নায় কেবল
দিকে দিকে উড়ে চলেছে।
ভালোবেসেছিলে আমায় একদিন।
ভালোবাসার জন্যই
কি শাস্তি দিলে আমায়?তোমার
আমাকে দেয়া উপহারটা কি অতঃপর
অভিশাপ"