প্যাটার্ন লকটা খুলে সময় দেখলো । ৩টা ৫০
বাজে । অথচ মেঘের আসার নাম
গন্ধ পর্যন্ত নেই । নিহিনের মেজাজ
ক্রমেই খারাপ হচ্ছে ! মেজাজ
খারাপের প্রধান কারন হচ্ছে ওর পেটের
ভিতর বিড়ালের বাচ্চা দৌড়াদৌড়ি করছে সেই
কখন থেকে ! সকাল থেকে কিছুই
পেটে পড়ে নি । একটা ক্ল্যাস টেস্টের
পরেই একটানা তিন ঘন্টা ধরে প্রাকটিক্যাল ক্লাস
করতে হয়েছে ! কিছু মুখে নেওয়ার সুযোগ
হয় নাই ! এখন বসে আছে কিছু খাবে বলে !
.
ঝামেলা টা সেখানেই ! নিহিনের ইচ্ছা ছিল
ক্যাম্পাসের ক্যান্টিন থেকেই
খেয়ে বের হবে ! কিন্তু মেঘের কারনে সেটা হয় নাই ।
ক্লাস থেকে বের হয়ে যখন ক্যন্টিনের
দিকে যাবে তখনই মেঘ ওর সামনে এসে দাড়ালো !
.
-কোথায় যাচ্ছিস ?
-ক্ষুধা লেগেছে ।
-আমারও লেগেছে ।
-তাহলে চল ! এক সাথে খাই !
-উহু ! এখানে না । চল
তোকে জব্বার
মামার সেপ্শাল
বিরিয়ানী খাইয়ে নিয়ে আসি !
.
নিহিন একটু ভাবলো ! তারপর বলল
-না থাক ! এখন ভাল লাগছে না !
প্রচন্ড ক্ষুধা লেগেছে । এখন আর কোথাও
যেতে ভাল লাগছে না !
-আহা ! চল না ! পাঁচ মিনিটের পথ !
প্লিজ ! তুই গিয়ে কদম তলায় বস !
আমি গিয়ে নিয়ে আসবো ! চল না ! প্লিজ !
.
নিহিনের যদিও ইচ্ছা ছিল না ! তবুও মেঘের
কথা ফেলতে পারলো না !
নিহিন আবার ঘড়ি দেখলো ! ঠিক বাইশ মিনিট আগে মেঘ
ওকে এখানে বসিয়ে রেখে গেছে ! এখনও
ফেরার নাম নাই ! যতই সময়
যাচ্ছে নিহিনের মেজাজ ততই খারাপ হচ্ছে !
নিহিনেয় রাগ যখন বিরক্তির চরম
সীমায় পৌছে গেছে তখন মেঘের
দেখা পাওয়া গেল !
.
-এতো সময় লাগলো ?
মেঘ একটা হাসার চেষ্টা করলো ! নিহিনের
তবুও মেজাজটা ঠান্ডা হল না !
.
-আসলে তোর সাথে আমার আসাটাই ভুল
হয়েছে ! এতোক্ষনে খেয়ে- দেয়ে একটা ঘুম
দিতে পারতাম হলে গিয়ে ! তা না !
-আর এতো রাগছিস কেন ?
তোকে নিয়ে কি যে করবো না !
জানি না বিয়ের পরে আমার কপালে কি আছে !
-কি বললি ? বিয়ে ?
-কেন ? আমাকে বিয়ে করবি না ?
-মরে গেলেও না !
-আচ্ছা দেখা যাবে ।
-হুম । দেখা যাবে ।
.
নিহিনের গলার আওয়াজ একটু নমনীয়
হয়ে এল ! যদিও মুখে কিছু বলল না তবুও
একটু রাগ পরে এল মেঘের উপর থেকে !
-কোথায় তোর বিরিয়ানী !
.
মেঘ বিরিয়ানীর একটা প্যাকেট বের করে দিল !
নিহিন অবাক হয়ে বলল
-সেকিরে ! একটা কেন ? তোর টা কই ?
-তুই খা ! তোর খিদে লেগেছে না ! আমি পরে খাচ্ছি !
-পরে খাচ্ছি মানে কি ? এখনই বের কর !
-আহা ! আমি খাবো তো ! তুই শুরু কর !
-দেখ ঢং করবি না ! আমার সাথে লাঞ্চ
করবি বলে আমাকে নিয়ে এলি আর এখন
বলতেছিস পরে খাবি !
.
মেঘ চুপ করে রইলো !
-কথা বলছিস না কেন ?
-আসলে ?
-কি আসলে ?
.
মেঘ বলল
-আরে এভাবে কেন কথা বলছিস ? আমার
কাছে টাকা ছিল না ! দোকানে কিনতে গিয়ে দেখি টাকা নাই
দুইটা কেনার !
.
নিহিন কিছুক্ষন মেঘের দিকে তাকিয়ে রইলো ! মেঘ যেন
কিছু লুকাতে চাইছে ! আর মেঘের পকেটে টাকা নাই এটা কেমন
যেন শোনালো ! অন্তত নিহিন মেঘকে যতদিন
ধরে চেনে মেঘ রুম
থেকে বের হওয়ার আগে আর কিছু চেক
করুন না করুন নিজের
মানিব্যাগ আর মোবাইলটা ঠিকই চেক করে !
সুতরাং টাকা না নিয়ে বের হবে এটা ঠিক
বিশ্বাস যোগ্য না । তার উপর ওর
কাছে যদি টাকা না থাকতো তাহলে মেঘ
কোন দিনই নিহিনকে বিরিয়ানী খাওয়ানোর
জন্য এখানে নিয়ে আসতো না !
.
-মেঘ !
-হুম !
-আমার দিকে তাকা !
-বল !
-সত্যি করে বল ! কি হয়েছে !
.
মেঘ একটু ইত্স্তত করলো ! কিছু একটা বলবে কিন্তু বলতে পারছে না !
-বল বলতেছি !
-আসলে !
আমি বিরিয়ানী আনতে যাওয়ার সময়
রাস্তার পাশে একটা মাঝ বয়সী লোক
আমাকে ডাক দিলো !
-তারপর !
-লোকটার সাথে আর
একটা বুড়ি মত মহিলা ছিল ! মনে হয় লোকটার মা !
এছাড়া লোকটার স্ত্রীও ছিল !
সাথে দুটো বাচ্চা !
-তো ?
-লোকটা বলল
ওরা নাকি সকালে ঢাকায় এসেছে ।
খুলনা থেকে বাসে উঠেছিল !
তারপর ওদের পকেট নাকি মার হয়ে গেছে ! এখন আর
কারো কাছে কোন টাকা নাই ! সকাল
থেকে ওরা না খেয়ে আছে !
-ও বুঝেছি । আর আপনি ওমনি সব
টাকা ওদের কে দিয়ে দিয়েছেন ?
-সব দেই নি তো ! তোর
বিরিয়ানীর টাকাটা রেখে দিয়েছিলাম !
.
নিহিন খুব বিরক্ত হল !
-তোর
কি বুদ্ধি শুদ্ধি হবে না কোন দিন ?
-না দেখ । সত্যি মনে হচ্ছিল ওরা বিপদে পরেছে ।
-হয়েছে । বুঝলাম !
আমি বুঝতেছি না তোকে নিয়ে আমি কি করবো !
দেখা যাবে তুই চাকরীর বেতন
নিয়ে আসছিস ! কেউ তোর
কাছে হাত
পাতলো ! তখন পুরো টাকাটা তুই
দিয়ে দিবি !
.
মেঘ একটু হাসার চেষ্টা করলো !
-দাঁত বের করবি না খবরদার !
থাপড়িয়ে সবগুলা ফেলে দেব !
তখন আমি কি করবো ! পুরো মাস
আমি চালাবো কিভাবে ?
-চালাবি ! তুই চাকরী করবি না ?
-তাই না ? আমি চাকরী-
বাকরী করতে পারবো না !
আমাকে খাওয়ানোর দায়িত্ব
তোর ! আহা ! বিয়েও করবে আবার
বউকে দিয়ে চাকরীও করাবে !
-আচ্ছা ঠিক আছে । এখন আর রাগ
করিস না ! আমি এবার থেকে সাবধান
থাকবো ! কোন চিন্তা করিস না । এখন
একটু খেয়ে নে ! তোর
না খিদে লেগেছে !
.
নিহিন কিছু বলতে গিয়েও আর
বলল না ! প্যাকেট খুলল ! ওর আসলেই বেশ
ক্ষুধা লেগেছে ! মেঘ মোবাইল বের করে কি যেন
টেপাটেপি শুরু করলো !
.
-নে !
-আরে তুই খা !
-ঢং করতে হবে না !
-আরে বাবা ! আমার
ওতো খিদে লাগে নি তো ! তুই খা !
-বলেছি না ঢং করতে হবে না !
নে !
.
মেঘ নিহিনের হাতের খাবার
টুকু মুখে নিল ! একটু খেতে খেতে বলল
-বিয়ের পরেও
এভাবে খাইয়ে দিবিতো ?
-আগে বিয়ে করে নে, তারপর !
-চল ! এখনই তোকে বিয়ে করবো !
-হয়েছে ! নে !
.
এভাবেই দুজনের খুনসুঁটি গল্প
এগিয়ে চলতে থাকে ! হয় তো সামনে এমন
দিন আসেবে তখন নিহিন প্রতিদিন এই
ভাবেই মেঘকে নিজের খাবার থেকে খাইয়ে দিবে !
অথবা মেঘকে সামনের দিন গুলোতে একা একাই খেতে হবে !
কে জানে ভাগ্যে কি লেখা আছে !
..
..
Written By :: Såñðíp Ð
týpíçål ßøðmåísh (মেঘ)
-আহা ! আমি খাবো তো ! তুই শুরু কর !
-দেখ ঢং করবি না ! আমার সাথে লাঞ্চ
করবি বলে আমাকে নিয়ে এলি আর এখন
বলতেছিস পরে খাবি !
.
মেঘ চুপ করে রইলো !
-কথা বলছিস না কেন ?
-আসলে ?
-কি আসলে ?
.
মেঘ বলল
-আরে এভাবে কেন কথা বলছিস ? আমার
কাছে টাকা ছিল না ! দোকানে কিনতে গিয়ে দেখি টাকা নাই
দুইটা কেনার !
.
নিহিন কিছুক্ষন মেঘের দিকে তাকিয়ে রইলো ! মেঘ যেন
কিছু লুকাতে চাইছে ! আর মেঘের পকেটে টাকা নাই এটা কেমন
যেন শোনালো ! অন্তত নিহিন মেঘকে যতদিন
ধরে চেনে মেঘ রুম
থেকে বের হওয়ার আগে আর কিছু চেক
করুন না করুন নিজের
মানিব্যাগ আর মোবাইলটা ঠিকই চেক করে !
সুতরাং টাকা না নিয়ে বের হবে এটা ঠিক
বিশ্বাস যোগ্য না । তার উপর ওর
কাছে যদি টাকা না থাকতো তাহলে মেঘ
কোন দিনই নিহিনকে বিরিয়ানী খাওয়ানোর
জন্য এখানে নিয়ে আসতো না !
.
-মেঘ !
-হুম !
-আমার দিকে তাকা !
-বল !
-সত্যি করে বল ! কি হয়েছে !
.
মেঘ একটু ইত্স্তত করলো ! কিছু একটা বলবে কিন্তু বলতে পারছে না !
-বল বলতেছি !
-আসলে !
আমি বিরিয়ানী আনতে যাওয়ার সময়
রাস্তার পাশে একটা মাঝ বয়সী লোক
আমাকে ডাক দিলো !
-তারপর !
-লোকটার সাথে আর
একটা বুড়ি মত মহিলা ছিল ! মনে হয় লোকটার মা !
এছাড়া লোকটার স্ত্রীও ছিল !
সাথে দুটো বাচ্চা !
-তো ?
-লোকটা বলল
ওরা নাকি সকালে ঢাকায় এসেছে ।
খুলনা থেকে বাসে উঠেছিল !
তারপর ওদের পকেট নাকি মার হয়ে গেছে ! এখন আর
কারো কাছে কোন টাকা নাই ! সকাল
থেকে ওরা না খেয়ে আছে !
-ও বুঝেছি । আর আপনি ওমনি সব
টাকা ওদের কে দিয়ে দিয়েছেন ?
-সব দেই নি তো ! তোর
বিরিয়ানীর টাকাটা রেখে দিয়েছিলাম !
.
নিহিন খুব বিরক্ত হল !
-তোর
কি বুদ্ধি শুদ্ধি হবে না কোন দিন ?
-না দেখ । সত্যি মনে হচ্ছিল ওরা বিপদে পরেছে ।
-হয়েছে । বুঝলাম !
আমি বুঝতেছি না তোকে নিয়ে আমি কি করবো !
দেখা যাবে তুই চাকরীর বেতন
নিয়ে আসছিস ! কেউ তোর
কাছে হাত
পাতলো ! তখন পুরো টাকাটা তুই
দিয়ে দিবি !
.
মেঘ একটু হাসার চেষ্টা করলো !
-দাঁত বের করবি না খবরদার !
থাপড়িয়ে সবগুলা ফেলে দেব !
তখন আমি কি করবো ! পুরো মাস
আমি চালাবো কিভাবে ?
-চালাবি ! তুই চাকরী করবি না ?
-তাই না ? আমি চাকরী-
বাকরী করতে পারবো না !
আমাকে খাওয়ানোর দায়িত্ব
তোর ! আহা ! বিয়েও করবে আবার
বউকে দিয়ে চাকরীও করাবে !
-আচ্ছা ঠিক আছে । এখন আর রাগ
করিস না ! আমি এবার থেকে সাবধান
থাকবো ! কোন চিন্তা করিস না । এখন
একটু খেয়ে নে ! তোর
না খিদে লেগেছে !
.
নিহিন কিছু বলতে গিয়েও আর
বলল না ! প্যাকেট খুলল ! ওর আসলেই বেশ
ক্ষুধা লেগেছে ! মেঘ মোবাইল বের করে কি যেন
টেপাটেপি শুরু করলো !
.
-নে !
-আরে তুই খা !
-ঢং করতে হবে না !
-আরে বাবা ! আমার
ওতো খিদে লাগে নি তো ! তুই খা !
-বলেছি না ঢং করতে হবে না !
নে !
.
মেঘ নিহিনের হাতের খাবার
টুকু মুখে নিল ! একটু খেতে খেতে বলল
-বিয়ের পরেও
এভাবে খাইয়ে দিবিতো ?
-আগে বিয়ে করে নে, তারপর !
-চল ! এখনই তোকে বিয়ে করবো !
-হয়েছে ! নে !
.
এভাবেই দুজনের খুনসুঁটি গল্প
এগিয়ে চলতে থাকে ! হয় তো সামনে এমন
দিন আসেবে তখন নিহিন প্রতিদিন এই
ভাবেই মেঘকে নিজের খাবার থেকে খাইয়ে দিবে !
অথবা মেঘকে সামনের দিন গুলোতে একা একাই খেতে হবে !
কে জানে ভাগ্যে কি লেখা আছে !
..
..
Written By :: Såñðíp Ð
týpíçål ßøðmåísh (মেঘ)