আজ কামাল সাহেবের মনটা খুব
ফুরফুরে। নিমতলী বাজারে কামাল
সাহেবের একটা মাংসের দোকান
আছে। দোকানের উপর টিনের
গায়ে বড় হরফে লেখা- "কামাল
মিয়ার খাসির মাংসের দোকান।
ভেজাল প্রমাণে ১০০১
টাকা পুরস্কার।'"
নিমতলী বাজার থেকে চার
কিমি দূরে বসুয়াহাট। এটা মুলত গরু-
ছাগলের হাট। সপ্তাহের সাত দিনই
কেনাবেচা হয়। দূরদূরান্ত
থেকে সাধারণ মানুষ গরু, ছাগল, মহিষ
নিয়ে আসে। কামাল মিয়া প্রতিদিন
ফজরের আজানের ঘন্টা খানেক
আগে ঘুটঘুটে অন্ধকারে তার
সাইকেলটা নিয়ে বেরিয়ে পড়ে।
বসুয়াহাটের একটি বিশেষ জায়গায়
কামাল মিয়ার মত আরো কয়েকজন
এসে জমা হয়। হাটে আনার পর যেসব গরু
ছাগল মারা যায়
সেগুলো অতি গোপনীয়তার
সাথে কেনাবেচা হয়। কামাল
মিঁয়া ভোরের আলো ফোটার আগেই
মরা খাসি তার সাইকেলের
পিছনে বেধে দোকানে নিয়ে আসে l
এক ঘন্টার
মধ্যে কাটাকাটি করে বিক্রির জন্য
প্রস্তুত করে ফেলে।
কামাল
মিঁয়া দেখেছে একটা খাসি বিক্রি করে ২০০
থেকে ৫০০ টাকার বেশি লাভ হয়
না ,মরা খাসি বিক্রি করলে লাভ
অনেক বেশি হয়। গত রাতে ৫০০
টাকা দিয়ে যে খাসি কিনেছে সেটা চোখ
বন্ধ করে এক হাজার ৫০০ টাকা লাভ
দিবে। নিমতলীতে বাজার
করতে এসেছেন ডl. আফজাল করিম।
শহরে তার প্রাইভেট চেম্বার। ছোট্ট
একটা ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও আছে।
যদি ও তার ডাক্তারিতে সামান্য
ঝামেলা আছে। ছিলেন গ্রামের
হাতুড়ে ডাক্তার পরে......... সেই যাই
হোক। বাজার করার জন্য
তিনি মাঝে মধ্যেই
এখানে চলে আসেন।
বাসা থেকে বাজার খুব বেশি দূর না।
তার ধারনা হচ্ছে গ্রামের
বাজারে সাধারণত ভাল জিনিস
পাওয়া যায়। বাড়িতে শ্বশুর বাড়ির
লোক জন এসেছে। স্ত্রী খুব ভাল
ভাবে বলে দিয়েছে যে পাঁচ
কেজি খাসির মাংস ছাড়া যেন
বাসায় না ঢুকে। আফজাল সাহেব
কামাল দোকানের
দিকে এগিয়ে যান। দরদাম
করে কিনে নিলেন পাঁচ
কেজি খাসির মাংস। পকেট
থেকে একটা ৫০০ টাকার নোট বের
করতেই তার চোখ আটকে গেল কারণ
টাকার গায়ে গাঢ় লাল রঙের
লিপিস্টিক মাখা। কোন ফাজিল
যে এসব করে রাখে।
দুপুরের আগেই কামা(লর বিক্রি শেষ।
টাকা সব নেড়েচেড়ে দেখেই
পকেটে রাখে। তখনই তার বাবার
কথা মনে পড়ল। বাবা সবসময় বলতেন
"ব্যাটা কখনো মানুষ ঠকাবি না। মানুষ
ঠকানো হারাম। ঐ টাকায় বরকত হয় না।"
বাবার চিন্তা অনেকটা জোর করেই
মাথা থেকে নামাল কামাল ।
ঘুরে ফিরে কামাল দেখে তার ছোট
মেয়েটার শরীর খারাপ হয়েছে। দুদিন
থেকে জ্বর। কিছুই খেতে চাইছে না।
কামাল সিদ্ধান্ত নেয়
এক্ষুনি শহরে গিয়ে ডা দেখাতে হবে।
শহরে গিয়ে কামাল হাজির হয়
ওবায়েদ করিমের চেম্বারে। সকালেই
তার কাছে মরা খাসির মাংস
বিক্রি করেছে। কামাল
চিন্তে পারলে ও ডা ওবায়েদ কিন্তু
কামাল কে চিনতে পারে নাই।
গ্রামের রোগী দেখলেই ওবায়েদের
চোখ চকচক করে উঠে। এই রকম
একটা রোগী দিনে পেলে আর কোন
রোগীর দরকার নেই। কামালের
মেয়েকে ভাল করে দেখলেন তিনি।
সামান্য ভাইরাস জ্বর কিন্তু
মুখে বললেন যে "সিরিয়াস কিছু তাই
টেস্ট করা লাগবে। তাঁরপর
তিনি তিনটা টেস্ট দিলেন সাথে এক
গাদা ওষুধ সহ। কামাল চলে যাবার পর
হিসাব করতে বসলেন ওবায়েদ।
মেডিকেল টেস্টের কমিশন, রোগীর
ফি, ওষুদের দাম সব হিসাব
করে কামালের দেয়া ৫০০ টাকার
নোট টা পকেট থেকে বের করলেন।
হঠাৎ প্রচন্ড ভাবে টাকার
দিকে তাকিয়ে রইলেন কারণ এই নোট
টা দিয়েই তো সকালে খাসির মাংস
কিনেছে সে। এটা আবার তার
কাছে ফিরে এসেছে। খুব আশ্চর্যজনক।
ডা ওবায়েদ সেই লিপিস্টিক
মাখা ৫০০ টাকার নোট টার
দিকে চেয়েই রইলেন।
ফুরফুরে। নিমতলী বাজারে কামাল
সাহেবের একটা মাংসের দোকান
আছে। দোকানের উপর টিনের
গায়ে বড় হরফে লেখা- "কামাল
মিয়ার খাসির মাংসের দোকান।
ভেজাল প্রমাণে ১০০১
টাকা পুরস্কার।'"
নিমতলী বাজার থেকে চার
কিমি দূরে বসুয়াহাট। এটা মুলত গরু-
ছাগলের হাট। সপ্তাহের সাত দিনই
কেনাবেচা হয়। দূরদূরান্ত
থেকে সাধারণ মানুষ গরু, ছাগল, মহিষ
নিয়ে আসে। কামাল মিয়া প্রতিদিন
ফজরের আজানের ঘন্টা খানেক
আগে ঘুটঘুটে অন্ধকারে তার
সাইকেলটা নিয়ে বেরিয়ে পড়ে।
বসুয়াহাটের একটি বিশেষ জায়গায়
কামাল মিয়ার মত আরো কয়েকজন
এসে জমা হয়। হাটে আনার পর যেসব গরু
ছাগল মারা যায়
সেগুলো অতি গোপনীয়তার
সাথে কেনাবেচা হয়। কামাল
মিঁয়া ভোরের আলো ফোটার আগেই
মরা খাসি তার সাইকেলের
পিছনে বেধে দোকানে নিয়ে আসে l
এক ঘন্টার
মধ্যে কাটাকাটি করে বিক্রির জন্য
প্রস্তুত করে ফেলে।
কামাল
মিঁয়া দেখেছে একটা খাসি বিক্রি করে ২০০
থেকে ৫০০ টাকার বেশি লাভ হয়
না ,মরা খাসি বিক্রি করলে লাভ
অনেক বেশি হয়। গত রাতে ৫০০
টাকা দিয়ে যে খাসি কিনেছে সেটা চোখ
বন্ধ করে এক হাজার ৫০০ টাকা লাভ
দিবে। নিমতলীতে বাজার
করতে এসেছেন ডl. আফজাল করিম।
শহরে তার প্রাইভেট চেম্বার। ছোট্ট
একটা ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও আছে।
যদি ও তার ডাক্তারিতে সামান্য
ঝামেলা আছে। ছিলেন গ্রামের
হাতুড়ে ডাক্তার পরে......... সেই যাই
হোক। বাজার করার জন্য
তিনি মাঝে মধ্যেই
এখানে চলে আসেন।
বাসা থেকে বাজার খুব বেশি দূর না।
তার ধারনা হচ্ছে গ্রামের
বাজারে সাধারণত ভাল জিনিস
পাওয়া যায়। বাড়িতে শ্বশুর বাড়ির
লোক জন এসেছে। স্ত্রী খুব ভাল
ভাবে বলে দিয়েছে যে পাঁচ
কেজি খাসির মাংস ছাড়া যেন
বাসায় না ঢুকে। আফজাল সাহেব
কামাল দোকানের
দিকে এগিয়ে যান। দরদাম
করে কিনে নিলেন পাঁচ
কেজি খাসির মাংস। পকেট
থেকে একটা ৫০০ টাকার নোট বের
করতেই তার চোখ আটকে গেল কারণ
টাকার গায়ে গাঢ় লাল রঙের
লিপিস্টিক মাখা। কোন ফাজিল
যে এসব করে রাখে।
দুপুরের আগেই কামা(লর বিক্রি শেষ।
টাকা সব নেড়েচেড়ে দেখেই
পকেটে রাখে। তখনই তার বাবার
কথা মনে পড়ল। বাবা সবসময় বলতেন
"ব্যাটা কখনো মানুষ ঠকাবি না। মানুষ
ঠকানো হারাম। ঐ টাকায় বরকত হয় না।"
বাবার চিন্তা অনেকটা জোর করেই
মাথা থেকে নামাল কামাল ।
ঘুরে ফিরে কামাল দেখে তার ছোট
মেয়েটার শরীর খারাপ হয়েছে। দুদিন
থেকে জ্বর। কিছুই খেতে চাইছে না।
কামাল সিদ্ধান্ত নেয়
এক্ষুনি শহরে গিয়ে ডা দেখাতে হবে।
শহরে গিয়ে কামাল হাজির হয়
ওবায়েদ করিমের চেম্বারে। সকালেই
তার কাছে মরা খাসির মাংস
বিক্রি করেছে। কামাল
চিন্তে পারলে ও ডা ওবায়েদ কিন্তু
কামাল কে চিনতে পারে নাই।
গ্রামের রোগী দেখলেই ওবায়েদের
চোখ চকচক করে উঠে। এই রকম
একটা রোগী দিনে পেলে আর কোন
রোগীর দরকার নেই। কামালের
মেয়েকে ভাল করে দেখলেন তিনি।
সামান্য ভাইরাস জ্বর কিন্তু
মুখে বললেন যে "সিরিয়াস কিছু তাই
টেস্ট করা লাগবে। তাঁরপর
তিনি তিনটা টেস্ট দিলেন সাথে এক
গাদা ওষুধ সহ। কামাল চলে যাবার পর
হিসাব করতে বসলেন ওবায়েদ।
মেডিকেল টেস্টের কমিশন, রোগীর
ফি, ওষুদের দাম সব হিসাব
করে কামালের দেয়া ৫০০ টাকার
নোট টা পকেট থেকে বের করলেন।
হঠাৎ প্রচন্ড ভাবে টাকার
দিকে তাকিয়ে রইলেন কারণ এই নোট
টা দিয়েই তো সকালে খাসির মাংস
কিনেছে সে। এটা আবার তার
কাছে ফিরে এসেছে। খুব আশ্চর্যজনক।
ডা ওবায়েদ সেই লিপিস্টিক
মাখা ৫০০ টাকার নোট টার
দিকে চেয়েই রইলেন।