হয়ত একটু বড়।তাই ধৈর্য সহকারে পড়ুন।
কলেজ জীবনে সবচেয়ে কাছের একজন
বন্ধু নিলয়কে পেয়েছিলাম। কলেজ
জীবনে বন্ধু বলতে এই একজনই ছিল।কলেজের দ্বিতীয়
বর্ষে থাকাকালে নিলয় তার
বার্থডেতে আমাকে নিমন্ত্রণ করেছিল।
দিনটা ছিল বুধবার।অনুষ্ঠান ছিল রাতে।
আমি যাবার কিছুক্ষন আগেই অনুষ্ঠান শুরু
হয়ে গিয়েছিল।দেরী করে যাবার
কারনে নিলয়ের কাছে অবশ্য
বকা শুনতে হয়েছিল।কেক
কাটা পর্বটা শেষ করে শুরু হয়ে গেল নৃত্য
অনুষ্ঠান।অবশ্য বড়রা কেউ নয়।ছোট ছোট বাচ্চারা মিউজিকের
তালে তালে নাচতে শুরু করল।নিলয় সবার
সাথে কথা বলছিল।তাই আমি এক
কোনে বসে বাচ্চাদের নৃত্য দেখছিলাম।
হঠাৎ চোখ চলে গেল একটু
দূরে বসা দুইটি মেয়ের দিকে।দুইজনের
মধ্যে একজনকে আমি চিনতাম কারন
সেটা ছিল নিলয়ের ছোট বোন।কিন্তু
আমার নজড় কাড়ল অন্যজনকে।মেয়েটি
দেখতে আহামরি সুন্দর না।কিন্তু
ভাললাগার মত একটা সৌন্দর্য তার
মাঝে আছে।মেয়েটিকে প্রথম দেখাতেই
আমার ভিতর একটা ভাললাগা কাজ করে।
আগে কোন দিন কোন
মেয়েকে দেখে এতটা ভাললাগা কাজ
করেনি।এখন এই
মেয়েটাকে দেখে যতটা ভাললাগা কাজ
করছে।পুরোটা সময় সেই নাম
না জানা মেয়েটির
দিকে তাকিয়েছিলাম বিরতিহীন
ভাবে।
দেখতে দেখতে কখন
যে সময়টা কেটে গিয়েছিল
বুঝতে পারিনি।
,
পরের দিন কলেজে
দোস্ত তর সাথে কিছু কথা আছে (আমি)
--কি কথা বল।
--দোস্ত আমার একটা মেয়েকে পছন্দ
হইছে।
--কস কি।কোন মেয়ে নাম বল।
ঠিকানা দে।
আমি দুই দিনের ভিতর
তাকে রাজি করিয়ে তোর করে দিব।
--আচ্ছা তার আগে তুই বল।
কালকা রাতে বাচ্চাদের
নাচানাচির সময়
তোর ছোট বোনের
পাশে একটা মেয়ে বসা ছিল।
মেয়েটি কে।
--ও তুই মিথিলার কথা বলছিস।
ওতো আমার
কাজিন।
--দোস্ত তর কাজিন মিথিলাকেই আমার
পছন্দ হইছে।
--দেখ দোস্ত মাইর না খেতে চাইলে এই
মেয়ের পিছু ছাড়।এই মেয়ে যে রাগি।
প্রেমতো করতেই পারবি না।শুধু শুধু মাইর
গুলা খাবি।
--তুই বল সে কোথায় পড়ে।আর তার ফোন
নাম্বার দে।
--সে আমাদের কলেজেই পড়ে।আর ফোন
নাম্বার দিতে পারব না।পারিবারিক
প্রবলেম আছে।
--কি?সে আমাদের কলেজেই পড়ে।অথচ
তুই
আমাকে বলিসনি।
--দেখ দোস্ত।মিথিলাকে দেখলেই
আমার
ভয় করে।একবার আমি তাকে প্রপোজ
করেছিলাম।তারপর যে এক থাপ্পর
দিয়েছিল তা ভুলার মত না।
--আচ্ছা তুই আমাকে কলেজের ছুটির পর
দেখিয়ে দিবি।
,
কলেজের ছুটির পর নিলয়
আমাকে দেখিয়ে দিল।আমি নিজের
চিনতে পারতাম।কিন্তু হিজাব
পড়ে আসার কারনে চিনতে পারিনি।
তারপর থেকে সে যেখানে প্রাইভেট
পড়ত,কোচিং করত সেখানে আমিও
পড়তাম।এক সাথে প্রাইভেট পড়ার
খাতিরে এক সময় দুজনের
মাঝে একটা বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
সে হয়ত আমাকে বন্ধু ভাবত।কিন্তু আমি ত
তাকে প্রথম দিন থেকেই
ভালবেসে আসতেছি।এভাবে কিছু দিন
চলার পর আমি আমার ভালবাসার
দাবি নিয়ে একদিন তার
সামনে দাড়ালাম।একদিন প্রাইভেট
পড়া শেষে দুজন
--মিথিলা
--হুম বল
--আসলে অনেক দিন
ধরে ভাবছি তোকে একটা কথা বলব।
--কি বলবি বল।
--আসলে প্রথম দিন থেকেই
আমি তোকে ভালবাসি।কিন্তু
আমাদের
মাঝে বন্ধুত্বের একটা দেয়াল
এসে দাঁড়ানোর
কারনে তা বলতে পারি নি।
কথাটা বলতে না বলতেই
মিথিলা কষে আমার
গালে একটা থাপ্পর
বসিয়ে দিল।আর
পাশে থাকা মানুষগুলি আমাদের
দিকে তাকিয়ে আছে।
--আর কোন দিন তুই আমার
সামনে আসবি না।আর আমাদের
মাঝে যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল
সেটা আজ
থেকে ভুলে যা।
কথাগুলি বলেই মিথিলা হাটা শুরু করল।
আমি তার চলে যাবার পথের
দিকটা চেয়ে রইলাম।তারপর
থেকে আমি তার সাথে আর কোন দিন
যোগাযোগ করিনি।যেখানে তার
সাথে পড়তাম সেখান
থেকে চলে এসেছি।
,
আজ প্রায় একটি বছর কেটে গিয়েছে।এক
বছর পরের কথা।কলেজের চৌকাঠ
পেরিয়ে আজ ভার্সিটিরর দরজায়
পা রেখেছি।এই এক
বছরে মিথিলাকে ভুলেই গেছি প্রায়।
কোন
একদিন বিকেলে যখন
ভার্সিটি থেকে ক্লাস শেষে বাসায়
ফিরছিলাম।তখন পিছন
থেকে একটা মেয়েলি কন্ঠে
--কেমন আছ।
পিছনে ফিরেই দেখি সেই মিথিলা।
যা হাতে থাপ্পর খাবার পর আর দেখা ও
কথা হয়নি।
--এইত ভাল তুমি।
--আসলে সেদিন তোমাকে থাপ্পর
দেয়াটা উচিত হয়নি।আর আমার
আগে একজনের সাথে সম্পর্ক ছিল।তাই
হয়ত
ভুলে দিয়ে ফেলেছি।সরি।
--তা তোমার সেই বয়ফ্রেন্ডটা কই।
--আসলে আমি বুঝতে পারিনি।
আমি একটা শয়তানের সাথে রিলেশন
করেছি।যে কিনা আমার
সাথে ভালবাসার
অভিনয় করে আমার
সাথে নোংরামি করে অন্যের হাত
ধরে চলে গিয়েছে।
এই কথা গুলো বলেই মিথিলা হাটা শুরু
করল।সেদিন হয়ত ভুলে থাপ্পর দিয়েছিল
সবার সামনে আজ না হয় আবার খেলাম।
তাই দৌড়ে পিছন থেকে তার
হাতটা ধরে ফেললাম।
মিথিলা পিছনে তাকিয়ে আমাকে দেখেই
অবাক হয়ে গেল।
--হাত ধরলে কেন?
--কেন আজও কি থাপ্পর দিবে নাকি।আর
ভালবাসি বলেই হাত ধরেছি।
--এই
পাপী দেহটাকে ভালবেসে কি পাবে।
একজন ভালবাসার অভিনয়
করে নোংরামি করেছে।তুমিও কি তাই
করবে নাকি।
--আমি শুধু তোমার মনটা চাই দেহটা নয়।
--হাতটা ছেড়ে দিবে না ত।
--সারা জীবন ধরে রাখব।
যদি তুমি একটা সুযোগ দাও।
.
এভাবেই শুরু হয় আমাদের সেই
ভালবাসার
দিনগুলি।
.
.
বি.দ্র--লেখাটি কাল্পনিক।