মেনু

Drop Down MenusCSS Drop Down MenuPure CSS Dropdown Menu

সংকলন ২৬৫- ভালবাসার নীল আকাশ

বিকেল চারটা।পার্কের বেঞ্চের
এককোনে বসে আছি।বন্যার আসার
কথা কিন্তু অনেকক্ষন হল কিন্তু এখনও
আসছেনা।আজ আমাদের প্রথম দেখা।
.
আজ থেকে একবছর আগের কথা।
পড়ালেখা শেষ করে চাকরিতে জয়েন
করেছি মাত্র কয়েকদিন হল।ফেসবুক নামক
ভার্চুয়াল জগতটা তেমন ভাল লাগত না।
ভাল না লাগা সত্ত্বেও একটা একাউন্ট
ছিল।মাঝে মাঝে অল্প সময়ের জন্য
আসতাম। একটা সময় বন্যা নামের
একটা মেয়ের সাথে পরিচয় হয়।একটা সময়
দুজনের মাঝে বন্ধত্বের একটা সম্পর্ক
গড়ে ওঠে।একটা সময় আমাদের মোবাইল
নাম্বার আদান-প্রদান হয় কিন্তু
আমি তার কন্ঠটা এখনও
শুনতে পাইনি কারন বন্যা আমার
সাথে ফোনে কথা বলতে চায় নি।তাই
আমাদের মেসেজ এবং ফেসবুকে চ্যাট
হত।
.
আজ প্রায় একবছর পরে বন্যাকে দেখার
ইচ্ছা জাগে আমার কিন্তু প্রথম
দিকে বন্যা দেখা করতে রাজি হয়নি।
পরে আমার অনেক
রিকুয়েস্টে দেখা করতে রাজি হয়।আজ
বন্যার আসার কথা।কিন্তু নির্দিষ্ট সময়
পার হয়ে গেছে কিন্তু তার আসার কোন
নাম নেই।একটু পর দেখা যায় নীল
শাড়ি পরিহিতা একটা অপ্সরী আমার
দিকে এগিয়ে আসছে।প্রথম দেখাতেই
আমার চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়।
আগে কখনও
তাকে দেখতে পারিনি কারন
অনেকবার চাওয়ার পরও তার
ছবি আমাকে দেয়নি।সেই অপ্সরী আমার
সামনে এসে ব্যাগ থেকে একটা কাগজ
বের করে আমার হাতে দিল।
কাগজে লেখা ছিল:- তুমি নিশ্চই
জোবায়ের। আমি বন্যা।
.
তারপর আমরা অনেক ঘুরাঘুরি করি কিন্তু
বন্যা আমার সাথে এখনও মুখ
ফুটে কথা বলেনি।তার এই কথা না বলার
কারনে আমার মাথায় নানা ধরনের প্রশ্ন
উকি দিতেছে।কিন্তু কোন প্রশ্নের
সমাধান খুজে পাচ্ছি না।প্রশ্নগুলোর
সমাধান করার জন্য:-
--আচ্ছা বন্যা তুমি আমার সাথে গত
একবছর কথা বলনি ঠিক আছে।তাই
বলে আজও চুপ থাকবে।
.
কথাটি বলার পর বন্যার আকাশ যেন
কালো মেঘে ডেকে গেল।বন্যা একটু
দূরে গিয়ে কাগজে কি যেন
লিখে নিয়ে এসে কাগজটা আমার
হাতে দিয়ে চলে যাবার
পথে পা বাড়াল।
কাগজটিতে লেখাছিলঃ-
আসলে আমি পঞ্চম
শ্রেনী থাকা অবস্থায় এক
এক্সিডেন্টে আমার কথা বলার
শক্তি হারিয়ে ফেলি।আমি সেই
থেকে কথা বলতে পারি না।
.
লেখাটি পড়ার পর
দেখি বন্যা হেটে অনেক দূর
চলে গেছে।আজ
প্রস্তুতি নিয়ে এসেছি আমাদের এই
বন্ধুত্বের সম্পর্কটা আজ ভালবাসায়
রূপদান করব।কিন্তু কি করব
ভেবে পাচ্ছি না।দৌড়ে গিয়ে বন্যার
হাতটা ধরে ফেলি।
বন্যা পিছনে ফিরে দেখে আমি তার
হাতটা ধরেছি।ইশারা দিয়ে বুঝানোর
চেষ্টা করতেছে, "কেন আমি তার
হাতটা ধরেছি"।তখনি আকাশ
থেকে নেমে আসে মুষলধারে বৃষ্টি।সেই
বৃষ্টিকে সাক্ষী রেখে আমি আমার
ভালবাসার
কথা তাকে বলি এবং আমাদের
ভালবাসার শুভ
সূচনা করি বৃষ্টিতে ভিজার মাধ্যমে।
.
এভাবে চলতে থাকে আমাদের
ভালবাসার মধুর দিলগুলি।
মাঝে মাঝে আমাদের দেখা হত।আর
প্রায় সময়েই মেসেজ
এবং ফেসবুকে চ্যাট হত।একটা সময়
আমাকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়া হয়।তখন
আমার ও বন্যার সম্পর্কের কথা বাসায়
জানাই।তারা যখন যোগাযোগ
নিয়ে দেখে বন্যা কথা বলতে পারে না তখন
তারা কোন মতেই রাজি হয় না।
একটা পর্যায়ে আমার জেদের
কারনে তারা রাজি হয়।কিন্তু মন
থেকে কেউ সম্মতি প্রকাশ করে না।
সবার অসম্মতি থাকা সত্ত্বেও
বন্যাকে বিয়ে করে আমি ঘরে তুলে আনি।
.
বিবাহের দিন
রাতে বেলকনিতে দাড়িয়ে সিগারেট
টানছি আর সবার
অসম্মতিতে গিয়ে কতটুকু ঠিক
করেছি তা চিন্তা করছি।তখনি পিছন
থেকে নারী কন্ঠেঃ-
--আমাকে বিয়ে করে মনে হয়
তুমি ঠকে গেছ তাই না।
তখন
পিছনে ফিরে দেখি বন্যা দাড়িয়ে আছে।
তাহলে কথা বলল কে।
--কি হল উওর দিচ্ছ না যে।
আমিত অবাক হয়ে গেলাম।
বন্যা আগে কথা বলতে পারত না।
তাহলে আজ কথা বলছে কিভাবে।
.
--তুমি কথা বলতে পার।
--হ্যা পারি।
--তাহলে আগে আমার সাথে এমন
করলে কেন।
--দেখলাম তোমার ভালবাসা কতটুকু।
আমাকে সত্যিকারভাবে ভালবাস
কিনা।
--উওর কি পেলে
--সত্যিকারের একজন ভালবাসার পুরুষ।
.
এভাবেই শুরু হয় আমাদের ভালবাসা মধুময়
জীবন।