মেনু

Drop Down MenusCSS Drop Down MenuPure CSS Dropdown Menu

সংকলন ২৪১- একটি বেনামী গল্প

লিখা:ফরহাদ কাজী

-আনিতা এটা কি একটু
বেশি বেশি হয়ে যাচ্ছে না?
(কিছু না বলে আনিকা হেটে যাচ্ছে)
-তোমার সাথে কথা বলার
জন্যে এতোক্ষণ ধরে দাড়িয়ে আছি আর
তুমি দেখেও না দেখার ভান
করে চলে যাচ্ছ?
-হুম যাচ্ছি,কোনো সমস্যা?
-এভাবে কথা বলছো কেন?
-কিভাবে কথা বলবো?আর
তোমাকে কিছুই বলার নেই।
কথা গুলো বলেই
আনিতা চলে যাচ্ছে আর
রাফি দেখছে,আনিতার
চলে যাওয়া দেখছে।কেমন জানি চোখ
গুলো দিয়ে ঝাপসা দেখা যাচ্ছে।
মনে হয় চোখে কিছু
পরেছে চোখে রাফির।
রাফির সাথে আনিতার প্রেম
ভার্সিটি থেকে।তাদের প্রেম কাব্য
ভার্সিটির সকলের কাছেই জানা।
তবে আজকাল ঠিক প্রেমটা কেমন খাপ
ছাড়া হয়ে যাচ্ছে তাদের। প্রায় সময়ই
ঝগড়া,মনমালিন্য আর সাথে নাকো রাগ
তো লেগেই থাকে।
নাকো রাগটা আনিতার একটু বেশিই।
আনিতা যখন রাফিকে বিয়ে করার
কথা বলে তখনই ঝগড়ার প্রহর শুরু
হয়,সাথে আনিতার নাকো রাগ।
ভালোই
লাগে আনিতাকে দেখতে তখন।
নাকটা টনটসে টমেটো মনে হয়।
তবে বিয়ের কথা উঠলেই রাফি উধাও
হয়ে যায়।ঠিক দু তিনদিন রাফির
কোনো খবরই থাকে না।
ভার্সিটির গেইট পার হইয়েই আনিতার
চাকরি হয়ে যায় একটা প্রাইভেট
কোম্পানিতে।তবে রাফি এখনও
বেকার।দু
একটা টিউশিনি করে কোনো রকমে দিন
চলে তার।তাই আনিতা যখন বিয়ের
কথা বলে তখন এরিয়ে যেতে চায়।ঠিক
আনিতাকে সাম্লানোর সামর্থ্য এখনও
হয়নি বলে ভয়ে ভয়ে থাকে রাফি।
"আই ডোন্ট কেয়ার আম লাভিং"
ফোনের ঘন্টি বাজছে রাফির।ঘুম ঘুম ভাব
নিয়েই কানে দিলো ফোনটা।
ওপাশ
থেকে আনিতা বলছে রাফি দশটার সময়
লেকের পারে থাকবে কথা আছে।
রাফিকে কিছু বলতে দেওয়ার আগেই টুট
টুট টুট শব্দে ফোনটা কেটে গেলে।
অবাক
চোখে রাফি তাকিয়ে আছে ফোনটার
দিকে।একসময় আলো নিভে গেল।
আচ্ছা রাফি আর আনিতার সম্পর্কের ও
কি একই পরিনতি হতে যাচ্ছে?ভাবতেই
চোখ ভিজে ওঠছে রাফির।মনে হয়
চোখে কিছু একটা সমস্যা হয়েছে।
আজকাল প্রায়ই এই সমস্যা হচ্ছে রাফির।
হঠাৎ ঘড়ির দিকে চোখ যেতেই
আবছা আবছা দেখছে সাড়ে নয়টা বাজে।
কোনো রকম ফ্রেশ হইয়েই দৌড়
দিলো রাফি।দশটা কুড়ি বাজে।
ভয়ে ভয়ে এগুচ্ছে রাফি।সবুজ
শাড়ি পরে এসেছে আনিতা।কেমন
জানি ঘাস পরী ঘাস
পরী লাগছে আনিতাকে।
যেতে যেতেই দেখছে আনিতা হাত
থেকে ফুল গুলো ছুড়ে ফেলে দিলো।
আনিতার সামনে দাড়াতেই সে ব্যাগ
থেকে একটা কার্ড রাফির
হাতে দিয়ে বললো সামনে শনিবার
আমার বিয়ে,আশা করছি তুমি আসবে।
কথাটা শেষ করে আনিতা চলে গেল।
রাফি দাড়িয়ে দেখছে,নিষ্পলক
দৃষ্টিতে দেখছে।মনে হচ্ছে তার
চোখটা সুই সুতার বাধনে কেউ
বেধে দিয়েছে।তবে মনে হচ্ছে তার
চোখের সমস্যা খুব গাড় হয়ে গেছে।চোখ
আবারও ঝাপসা হয়ে গেছে।রাফি ফুল
গুলো কুড়িয়ে নিয়ে চলে যাচ্ছে।
মনে হয় এখন শুধুই শনিবারের অপেক্ষা।
রাফির চাকরি হয়ে গেছে।
অনেকটা দেড়ি হয়ে গেছে মনে।
আনিতাকে বলতে ইচ্ছে হচ্ছে,তবে ইচ্ছা পূরণ
হবার নয়।আনিতাতো আর এখন তার না।
শনিবার সকাল থেকেই চোখের
সমস্যাটা খুব বেড়েছে।একটু পরপরই চোখ
ভিজে যাচ্ছে তার।
সাদা একটা পাঞ্জাবি পরে আনিতার
মুখটা শেষ বারেব মতো করে আপন
ভাবতে গেছে রাফি।কিন্তু আনিতার
হাসি মাখা মুখ দেখে খুব
বেশি একটা সময়
দাড়াতে পারলো না রাফি।
রাফি হাটছে,একটু একটু করে সোডিয়াম
আলো গুলো জ্বলে ওঠছে আর তার
পাঞ্জাবির রঙটাও
হারিয়ে যাচ্ছে অনেকটা আনিতার
মতোই।রাফি হেটে যাচ্ছে,আপন
মনে হেটে যাচ্ছে।
ক্লান্ত শরীরে ঘরে ডুকেই রাফির মুখ
হা হয়ে গেলো।কোমড় বাকিয়ে এক
হাত কোমড়ে আর এক হাত
তুলে আনিতা বলছে,
এই যে মিস্টার রাত কটা বাজে ঠিক
খেয়াল আছে?সেই
সন্ধ্যাে থেকে আমি একা সে দিকে কোনো খেয়াল
আছে আপনার, আর এটা কি পরে ঘুরছেন
আপনি হুম ...
রাফির চোখ দিয়ে মনে হয় বন্যা হচ্ছে।
আচ্ছা চোখের সমস্যাটা শেষ
পর্যায়ে চলে যায়নি তো।