বাইরে ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে l বারান্দায়
দাঁড়িয়ে আছে নীলা l বৃষ্টির ছোট
ছোট
ফোটা এসে ভিজিয়ে দিয়ে যাচ্ছে তাকে l
এই নীলা , ওখানে কি করিস ?
পুরো ভিজে যাচ্ছিস তো রে মা l
ভেতরে আয় l
মায়ের ডাকেও সে নির্বাক-নিশ্চল l
তার কানে এসব কিছুই ঢুকছে না l মাথায়
শুধু একটা কথাই ঘুরছে l নিলয় l
ছেলেটা বড্ড পাগল l
আনমনে হেসে ওঠে নীলা l
এদিকে রুখসানা বেগম
এসে দাঁড়িয়েছেন নীলার পেছনে l
সে দিকে তার কোনো খেয়াল নেই l
হঠাৎ করেই মাকে দেখে চমকে উঠলো l
- মা , তুমি এখানে ?
- আচ্ছা তোকে একটা কথা বলব
ভাবছিলাম l না থাক .....
- কি বলবে বল না মা
- নাহ , কিছু না l এই নে তোর চা
কিছু একটা বলতে গিয়েও বললেন
না নীলার মা l মেয়েটা আজকাল
কেমন অন্যরকম খুশী মনে হচ্ছে l কিন্তু
এতো খুশীর কারণটা ঠিক ধরতে পারছেন
না l যতক্ষণ ঘরে থাকে ততক্ষণই দেখি ওর
মুখে হাসি লেগেই আছে l ও
যে হাসে না , এমন না l কিন্তু আজকাল
ওর আচরনের মধ্যেও একটা পরিবর্তন লক্ষ্য
করছেন রুখসানা বেগম l সেদিন রাতের
বেলা দুধের গ্লাস হাতে মেয়ের
সামনে ঠায় দাঁড়িয়ে আছেন l কিন্তু
মেয়ের সেদিকে কোনো খেয়ালই নেই
l আনমনা হয়ে কি যেন ভাবছে আর মৃদু
ভাবে হাসছে l
- কি হল মা , কি ভাবছো ?
- হুম , না , কিছু না l
এখানে দাঁড়িয়ে থাকিস না l
ভিজে যাচ্ছিস পুরোটা l
-একটু থাকি না মা l ভাল লাগছে খুব l
রুখসানা বেগম কথা বাড়ালেন না l হন
হন করে ঘরের ভেতর চলে গেলেন l
নীলা আগের জায়গাতেই বহাল আছে l
হাতে চায়ের চাপ নিয়ে আবার
ভাবনার সাগরে ডুব দিল l কিন্তু
বেশিক্ষন ডুব দিয়ে থাকতে পারল না l
তার সাগর স্নানে ব্যাঘাত
ঘটিয়ে মোবাইল
ফোনটা বেজে উঠলো .....
আজি ঝরো ঝরো মুখর বাদল দিনে
জানি নে , জানি নে
কিছুতে কেন যে মন লাগে না ,
লাগে না
- হ্যালো , কে বলছেন ?
- আমি
- আমিটা কে ? নাম নেই ?
- না মানে ..... আমি নিলয়
- ওহ , তুমি . তা আগে বলবে তো ....
- কি ভাবলে ?
- কোন ব্যাপারে ?
- যাহ বাবা l ভুলে গেলে !
- না , ভুলব কেন ? মনে আছে
- আমার উত্তর ....
- উত্তর মানে ! আমি তো এখন পর্যন্ত কিছুই
ভাবি নাই , উত্তর দেব কোত্থেকে ....
- আজ নিয়ে তো দুদিন হল l আর কত সময়
নেবে ? আমি কি মানষ না ? আমার
জীবন নিয়া তো টানাটানি চলছে l
- আরো কিছুদিন টানাটানি করো l
বাআআই .....
কথাটা বলেই নিলয়কে কিছু বলার সুযোগ
না দিয়ে লাইন কেটে দেয় নীলা l
.............................
সেদিন ছিল ঘন বর্ষা l হঠাৎ করেই আকাশ
ভেঙ্গে বৃষ্টি নেমেছিল l
ছাতা আনতে ভুলে যাওয়ায়
ভিজে যাচ্ছিল নীলা l হঠাৎ
কোত্থেকে যেন
ছাতা হাতে ছুটে এসে বৃষ্টি থেকে আড়াল
করলও নিলয় l কিন্তু সেদিনের
নিলয়টা ছিল একেবারে অন্যরকম l মুখের
মধ্যে কিছুটা ভয় আর দ্বিধার ছাপ ছিল
তার l হঠাৎ করেই
ছাতা ফেলে দিয়ে মাটিতে হাঁটু
গেঁড়ে বসে পড়লো নিলয় .....
- আরে আরে এসব কি করছো ?
ছাতাটা ফেলে দিলে কেন ?
পেছন থেকে ছোট্টো একটা রক্ত
রাঙ্গা লাল গোলাপ
এগিয়ে ধরলো নীলার সামনে .....
- তুমি আমার নীলাঞ্জনা হবে ?
তোমাকে যেদিন প্রথম দেখেছিলাম
সেদিনই
তোমাকে ভালবেসে ফেলেছিলাম l
এই অবুঝ মনটা বারে বারে শুধু তোমার
কথাই ভাবত l এই চোখ জোড়া শুধু
তোমাকে খোঁজতো l
এই হৃদয়টার প্রতিটা স্পন্দন চিৎকার
করে বলত '' তোমাকে আমার চাই '' l
আমার প্রার্থনা ঈশ্বর ঠিক শুনেছিলেন l
তাইতো আবার তোমার দেখা পেলাম
আমারই ভার্সিটিতে l
ক্লাসে ঢুকে তো আমার
আনন্দে আত্মহারা হবার পালা l যখন
দেখলাম তুমি আর আমি একই
ডিপার্টমেন্টে l
আমি তোমার খোলা আকাশ হতে চাই l
যে আকাশে তুমি মেলবে ইচ্ছে ডানা l
আমি তোমার শুভ্র শাড়ির আঁচল হতে চাই
l যে আঁচল তুমি আগলে রাখবে সারাক্ষণ
l
পূবাল হাওয়ার ঝাপটায় তোমার মুখের
উপর এসে পড়া অবাধ্য এলোচুল হতে চাই l
হতে চাই তোমার মনের ঘরটার
স্থায়ী বাসিন্দা l
আমকে ভাড়াটে ভেবে তাড়িয়ে দিও
না l
আমি যে আশ্রয়হীন হয়ে পড়বো l মরে যাব
আমি l আমি যে আর আমার মাঝে নেই l
তোমাকে ছাড়া যে আমি অসম্পূর্ণ l এই
অসম্পূর্ণ মানুষটা আজ পূর্ণতা চায় l
তুমি দেবে আমায় পূর্ণতা ?
নিলয়ের
মুকে কথাগুলো শুনে আমি হতভম্বের
মতো দাঁড়িয়ে ছিলাম l এত সুন্দর
করে কেউ ভালবাসার প্রকাশ
করতে পারে আমার জানা ছিল না l
ওকে ফিরিয়ে দেবার সাহস আমার ছিল
না l কিন্তু এই সমাজের হীনমন্যতার
কারণে হ্যা-ও বলতে পারছিলাম না l
তাই সেদিন কিছু না বলেই সেখান
থেকে ছুটে আসি বাসায় l কিন্তু আর
পারছি না দূরে সরে থাকতে l নিলয়ের
কথাগুলো আমায় আকর্ষণ করছে ভীষণ রকম l
এখনো আমার কানে বাজছে .....
'' তোমার মনের ঘরটার
স্থায়ী বাসিন্দা হতে চাঁই l
আমাকে ভাড়াটে ভেবে তাড়িয়ে দিয়
না l''
অবশেষে আর
নিজেকে ধরে রাখতে পারল
না নীলা l নিলয়কে ফোন
করে জানিয়ে দিল মনের কথাটা l
..................................
নিলয় তৈরী হচ্ছে l নীলাও
তৈরী হচ্ছে l গায়ে তার নীল
রঙ্গা শাড়ি , কপালে নীল টিপ ,
কানে দুল , গলায় হালকা গহনা আর
চোখে গাঢ় করে কাজল দেওয়া l
মনে বইছে আনন্দের জোয়ার l আজ
তারা দেখা করবে l দুই থেকে এক হবে l
বন্ধুত্বের সম্পর্কটাকে এক নতুন সম্পর্কের
নাম দেবে l নীলা আজ নিলয়ের
নীলাঞ্জনা হবে l নিলয় হবে তার
নীলাঞ্জনার খোলা আকাশ ,
ভাড়াটে নয় , মনের ঘরের
স্থায়ী বাসিন্দা l আজ নিলয়
পূর্ণতা পাবে l অসম্পূর্ণ মানুষের
তালিকা থেকে নিজের
নামটা কেটে দিবে l গুঁজে দেবে তার
প্রিয়তমার চুলের খোঁপায় বাদল দিনের
প্রথম কদম ফুলটা l
দাঁড়িয়ে আছে নীলা l বৃষ্টির ছোট
ছোট
ফোটা এসে ভিজিয়ে দিয়ে যাচ্ছে তাকে l
এই নীলা , ওখানে কি করিস ?
পুরো ভিজে যাচ্ছিস তো রে মা l
ভেতরে আয় l
মায়ের ডাকেও সে নির্বাক-নিশ্চল l
তার কানে এসব কিছুই ঢুকছে না l মাথায়
শুধু একটা কথাই ঘুরছে l নিলয় l
ছেলেটা বড্ড পাগল l
আনমনে হেসে ওঠে নীলা l
এদিকে রুখসানা বেগম
এসে দাঁড়িয়েছেন নীলার পেছনে l
সে দিকে তার কোনো খেয়াল নেই l
হঠাৎ করেই মাকে দেখে চমকে উঠলো l
- মা , তুমি এখানে ?
- আচ্ছা তোকে একটা কথা বলব
ভাবছিলাম l না থাক .....
- কি বলবে বল না মা
- নাহ , কিছু না l এই নে তোর চা
কিছু একটা বলতে গিয়েও বললেন
না নীলার মা l মেয়েটা আজকাল
কেমন অন্যরকম খুশী মনে হচ্ছে l কিন্তু
এতো খুশীর কারণটা ঠিক ধরতে পারছেন
না l যতক্ষণ ঘরে থাকে ততক্ষণই দেখি ওর
মুখে হাসি লেগেই আছে l ও
যে হাসে না , এমন না l কিন্তু আজকাল
ওর আচরনের মধ্যেও একটা পরিবর্তন লক্ষ্য
করছেন রুখসানা বেগম l সেদিন রাতের
বেলা দুধের গ্লাস হাতে মেয়ের
সামনে ঠায় দাঁড়িয়ে আছেন l কিন্তু
মেয়ের সেদিকে কোনো খেয়ালই নেই
l আনমনা হয়ে কি যেন ভাবছে আর মৃদু
ভাবে হাসছে l
- কি হল মা , কি ভাবছো ?
- হুম , না , কিছু না l
এখানে দাঁড়িয়ে থাকিস না l
ভিজে যাচ্ছিস পুরোটা l
-একটু থাকি না মা l ভাল লাগছে খুব l
রুখসানা বেগম কথা বাড়ালেন না l হন
হন করে ঘরের ভেতর চলে গেলেন l
নীলা আগের জায়গাতেই বহাল আছে l
হাতে চায়ের চাপ নিয়ে আবার
ভাবনার সাগরে ডুব দিল l কিন্তু
বেশিক্ষন ডুব দিয়ে থাকতে পারল না l
তার সাগর স্নানে ব্যাঘাত
ঘটিয়ে মোবাইল
ফোনটা বেজে উঠলো .....
আজি ঝরো ঝরো মুখর বাদল দিনে
জানি নে , জানি নে
কিছুতে কেন যে মন লাগে না ,
লাগে না
- হ্যালো , কে বলছেন ?
- আমি
- আমিটা কে ? নাম নেই ?
- না মানে ..... আমি নিলয়
- ওহ , তুমি . তা আগে বলবে তো ....
- কি ভাবলে ?
- কোন ব্যাপারে ?
- যাহ বাবা l ভুলে গেলে !
- না , ভুলব কেন ? মনে আছে
- আমার উত্তর ....
- উত্তর মানে ! আমি তো এখন পর্যন্ত কিছুই
ভাবি নাই , উত্তর দেব কোত্থেকে ....
- আজ নিয়ে তো দুদিন হল l আর কত সময়
নেবে ? আমি কি মানষ না ? আমার
জীবন নিয়া তো টানাটানি চলছে l
- আরো কিছুদিন টানাটানি করো l
বাআআই .....
কথাটা বলেই নিলয়কে কিছু বলার সুযোগ
না দিয়ে লাইন কেটে দেয় নীলা l
.............................
সেদিন ছিল ঘন বর্ষা l হঠাৎ করেই আকাশ
ভেঙ্গে বৃষ্টি নেমেছিল l
ছাতা আনতে ভুলে যাওয়ায়
ভিজে যাচ্ছিল নীলা l হঠাৎ
কোত্থেকে যেন
ছাতা হাতে ছুটে এসে বৃষ্টি থেকে আড়াল
করলও নিলয় l কিন্তু সেদিনের
নিলয়টা ছিল একেবারে অন্যরকম l মুখের
মধ্যে কিছুটা ভয় আর দ্বিধার ছাপ ছিল
তার l হঠাৎ করেই
ছাতা ফেলে দিয়ে মাটিতে হাঁটু
গেঁড়ে বসে পড়লো নিলয় .....
- আরে আরে এসব কি করছো ?
ছাতাটা ফেলে দিলে কেন ?
পেছন থেকে ছোট্টো একটা রক্ত
রাঙ্গা লাল গোলাপ
এগিয়ে ধরলো নীলার সামনে .....
- তুমি আমার নীলাঞ্জনা হবে ?
তোমাকে যেদিন প্রথম দেখেছিলাম
সেদিনই
তোমাকে ভালবেসে ফেলেছিলাম l
এই অবুঝ মনটা বারে বারে শুধু তোমার
কথাই ভাবত l এই চোখ জোড়া শুধু
তোমাকে খোঁজতো l
এই হৃদয়টার প্রতিটা স্পন্দন চিৎকার
করে বলত '' তোমাকে আমার চাই '' l
আমার প্রার্থনা ঈশ্বর ঠিক শুনেছিলেন l
তাইতো আবার তোমার দেখা পেলাম
আমারই ভার্সিটিতে l
ক্লাসে ঢুকে তো আমার
আনন্দে আত্মহারা হবার পালা l যখন
দেখলাম তুমি আর আমি একই
ডিপার্টমেন্টে l
আমি তোমার খোলা আকাশ হতে চাই l
যে আকাশে তুমি মেলবে ইচ্ছে ডানা l
আমি তোমার শুভ্র শাড়ির আঁচল হতে চাই
l যে আঁচল তুমি আগলে রাখবে সারাক্ষণ
l
পূবাল হাওয়ার ঝাপটায় তোমার মুখের
উপর এসে পড়া অবাধ্য এলোচুল হতে চাই l
হতে চাই তোমার মনের ঘরটার
স্থায়ী বাসিন্দা l
আমকে ভাড়াটে ভেবে তাড়িয়ে দিও
না l
আমি যে আশ্রয়হীন হয়ে পড়বো l মরে যাব
আমি l আমি যে আর আমার মাঝে নেই l
তোমাকে ছাড়া যে আমি অসম্পূর্ণ l এই
অসম্পূর্ণ মানুষটা আজ পূর্ণতা চায় l
তুমি দেবে আমায় পূর্ণতা ?
নিলয়ের
মুকে কথাগুলো শুনে আমি হতভম্বের
মতো দাঁড়িয়ে ছিলাম l এত সুন্দর
করে কেউ ভালবাসার প্রকাশ
করতে পারে আমার জানা ছিল না l
ওকে ফিরিয়ে দেবার সাহস আমার ছিল
না l কিন্তু এই সমাজের হীনমন্যতার
কারণে হ্যা-ও বলতে পারছিলাম না l
তাই সেদিন কিছু না বলেই সেখান
থেকে ছুটে আসি বাসায় l কিন্তু আর
পারছি না দূরে সরে থাকতে l নিলয়ের
কথাগুলো আমায় আকর্ষণ করছে ভীষণ রকম l
এখনো আমার কানে বাজছে .....
'' তোমার মনের ঘরটার
স্থায়ী বাসিন্দা হতে চাঁই l
আমাকে ভাড়াটে ভেবে তাড়িয়ে দিয়
না l''
অবশেষে আর
নিজেকে ধরে রাখতে পারল
না নীলা l নিলয়কে ফোন
করে জানিয়ে দিল মনের কথাটা l
..................................
নিলয় তৈরী হচ্ছে l নীলাও
তৈরী হচ্ছে l গায়ে তার নীল
রঙ্গা শাড়ি , কপালে নীল টিপ ,
কানে দুল , গলায় হালকা গহনা আর
চোখে গাঢ় করে কাজল দেওয়া l
মনে বইছে আনন্দের জোয়ার l আজ
তারা দেখা করবে l দুই থেকে এক হবে l
বন্ধুত্বের সম্পর্কটাকে এক নতুন সম্পর্কের
নাম দেবে l নীলা আজ নিলয়ের
নীলাঞ্জনা হবে l নিলয় হবে তার
নীলাঞ্জনার খোলা আকাশ ,
ভাড়াটে নয় , মনের ঘরের
স্থায়ী বাসিন্দা l আজ নিলয়
পূর্ণতা পাবে l অসম্পূর্ণ মানুষের
তালিকা থেকে নিজের
নামটা কেটে দিবে l গুঁজে দেবে তার
প্রিয়তমার চুলের খোঁপায় বাদল দিনের
প্রথম কদম ফুলটা l
