আজও খাবার টেবিলে বসে আছে শিপা, সাগরের
অপেক্ষায়।অপেক্ষা করতে করতে এক সময় টেবিলেই ঘুমিয়ে পড়ে।
রাত দুইটাতে দরজায় করাঘাতে ঘুম ভাংগে শিপার।দরজা খুলতেই
শিপাকে পাশকাটিয়ে ঘরে প্রবেশ করে বিছানায় শুয়ে পরে সাগর।খাবার
ঢেকে, দরজাটা লাগিয়ে, মশারিটা টাংগিয়ে আস্তে করে শিপা ও
শুয়ে পরে সাগরের পাশে। আবার ফজরের নামায পড়েই সাগরের
জন্য তার নাস্তা তৈরী করতে হবে কিন্তু সাগর
তা না খেয়েই অফিসে চলে যাবে। আবার দুপুরবেলা শিপা খাবার
নিয়ে বসে থাকবে, সাগর ইচ্ছে হলে আসে নয়ত রাত দুইটায় ফেরে।
আবার অনেক দিন ফেরে না। তার পথ চেয়ে সারা রাত
জেগে থাকে শিপা নামের অভাগিনীটা। এরকম করেই এই মানব-
মানবীর দীর্ঘ ছয় মাসের সংসার চলছে।
----
সাগর কিন্তু এরকম ছিল না।এক সময় খুব লাভ করত শিপাকে,এক পলক দেখার জন্য
কুয়াশা ভেদ করে দাড়িয়ে থাকত সারা সকাল।শিপাকে প্রপোজ করার
প্লান করতে করতে কাটিয়ে দিত সারা দিন।আর এতেই বিরক্ত হত শিপা।
ভালবাসা দিবস, ঘটনা ঘটে সে দিন, যে দিন
শিপা ভাবে আজ ছেলেটাকে শাসাতেই হবে।আর সেই
দিন ই সাগরের বন্ধুরা তাকে বলে দোস্ত অনেক
হইছে আজ তকে সবার সামনে কলেজ মাঠে শিপাকে প্রপোজ করতে হবে।এক
প্রকার আটকা পরেই তাতে রাজি হই ভিতুর ডিম সাগর।
সাগর সহ ওর জানের দোস্তরা অপেক্ষায়
শিপার জন্য।সময় ৯:৪৫ কিছুক্ষণ পরেই ক্লাস শুরু হবে।তাই সবাই
মাঠে দাড়িয়ে টুকটাক কথা বলছে। শিপা আসছে, হ্যা আসছে। আর
এদিকে সাগর পালনোর চেষ্টা করছে। কিন্তু দুস্তমহিন একটা গোলাপ দিয়ে বলল
যা দুস্ত,ভালবাসা দিবসে তর ভালবাসাকে বরণ করেনে, আজকেই
ফাইনাল।
-যামু?
-আবার জিগায়! যা সাগর শিপার সামনে গিয়ে দাড়াল,
-কি হয়েছে?আপনি আমার পথ আটকালেন যে
-হাটুগেরে গোলাপ টা বাড়িয়ে দেই সাগর। Love you
-ঠাস...স...স...
এক মুহূর্তের জন্য নিস্তব্ধ হয়ে যায় পুরো কলেজ -.........
সাগর যেমন ভিতু আবার জেদি আর একগুঁয়েমি টাইপ ও আছে ওর মাঝে। তাই
অপমানটা একটু বেশি ই আঘাত করে সাগরকে।তাই কিছু না ভেবেই
শিপার চুলের মুঠি ধরে লিপ কিস করতে থাকে।জানপ্রণ চেষ্টা করেও
শিপা নিজেকে ছাড়াতে পারেনি
-আজ থেকে আমাকে ছাড়া আর
কাউকে কল্পনা করতে পারবে না।সরি
-শিপা কাঁদতে থাকে
পর দিন ভিডিও ছড়িয়ে পরে ইন্টারনেটে।এদিক
ে কলেজ থেকে বের করে দেওয়া হয় সাগর আর শিপাকে।আর সাগরকে দেড়
লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়। এদিকে শিপার বাবাকে সাগরদের
বিরুদ্ধ মামলা করতে বাধা দেয় শিপা। শিপা চাই যার কারণে সে কলঙ্কীত
তাকে দিয়েই তা মুছন করতে।আর তাই তার বাবাকে দিয়ে সাগরের
বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব পাঠায়। সেদিন সাগর বিয়েতে রাজি হয়েছিল
ঠিকি কিন্তু মন থেকে গ্রহাণ করতে পারেনি শিপাকে।অই
যে একগুঁয়েমি স্বভাবটা ছিল তার মাঝে,তাই আজ অবদি শিপার
ব্যবহারটা মেনে নিতে পারেনি।
---
আজ দুই দিন হল সাগর বাসাই ফেরে না। শিপা তেমন একটা ভাপছে না,কারণ ও ত
এরকমি।কিন্তু হঠাৎ করেই একটা কল আসে। যা শুনে কাঁদতে কাঁদাতে হাসপাতালে যায়
শিপা। যা দেখে তাতে মুটেও প্রস্তুত ছিল
না সে।বাইক এক্সিডেন্ট এ সাগরের ডান হাত,বাম পা, মাথায় বেন্ডিস। ডাক্তার বলেছে এক সপ্তাহ হাসপাতালেই থাকতে হবে। সকাল বেলা খাইয়ে দিচ্ছিল শিপা সাগরকে,আর কাঁদছিল।সাগর কিছু বলল না।দুপুরবেলা গোসল করানোর জন্য সাগরকে নিজের
কাঁধে করে বাথরুমে নিয়ে গেল শিপা,সেখানে ও কান্না
-আরে বাবা কি এমন হইছে সকাল
থেকে এই পর্যন্ত কান্নাকাটি থামছেই না।আরে দু দিন পরেই তু ঠিক হয়ে যাবো। নিজের কাপড়টা ও পড়তে পারছে না সাগর।
শিপা এগিয়ে গিয়ে পড়িয়ে দিচ্ছিল,সাগরের ভেথাগুলো দেখে আবারো কান্না শুরু
করে শিপা।
-একে নিয়ে আর পারা গেল না।এই
কান্না থামাবা। এভাবে কান্না করলে কিন্তু আমি নার্স
ডাকবো,আর তোমাকে বাসায় পাঠিয়ে দেব! -না না আমি আর কাঁদব
না।তার পরেও তোমাকে রেখে বাসায় যেতে বলো না প্লিজ
পরদিন খুব ভোরে সাগর ঘুম থেকে জেগে উঠে, দেখতে পাই
শিপা সারা রাত ক্লন্তির পর বেন্সে বসে তার বুকে মাথা রেখেই
ঘুমিয়ে আছে।মূখে তার ক্লন্তির ছাপ। সামনের কিছু চুল চোখ বেয়ে নাকের
ডগা হয়ে ঠোটে স্পর্শ করেছে,শিপার চেহারাটাকে আরো মায়াবী করে তুলছিল
ঠোটের নিচের ছোট্ট তিলাটা।সাগর নতুন করে শিপার প্রেমে পরে যাই।
নিজের অজান্তেই ফু দিয়ে চুলগুলু সরিয়ে দেয় শিপার মূখ থেকে।
আলতো করে ছোঁয়ে দেয় সে শিপার ঠোট জোড়া।খুব ইচ্ছে করছে সেই
গোলাপি ঠোট জোড়ায় তার ঠোট জোড়া জড়াতে।
ঠোটে কারো স্পর্শ পেয়ে ঘুম থেকে চমকিয়ে উঠে শিপা, সাগর-
শিপা দুজনেই লজ্জা পেয়ে যাই। কেননা এই প্রথম তাদের এতটুকু
কাছে আসা। শিপা তড়িগড়ি করে চলে যাচ্ছে
-এই শুনো
-কাছে আসো
-আরো কাছে
-আরো কাছে
-আরো
-আরে এত ভয় কিসের? আমি তু তোমার স্বামীই নাকি।
কাছে আসতেই শিপাকে, বেডে শুয়ে থাকা সাগর এক ঝাটকায় তার বুকের মাঝে নিয়ে নেয়। আরো কাছে নিয়ে ঠোটের সেই ইচ্ছাটা পূরণ করে নেয়।আর ভালবাসার চুমুই চুমুই ভরিয়ে দেয় শিপাকে। এই অবহেলিত মেয়ে অবেলায় এত
ভালবাসা পেয়ে আঁতকে উঠে। অকারণেই কান্না শুরু করে দেয়
মেয়েটা।
-আবার কান্না! আরে বাবা কাঁদছ কেন?
-ভয়ে
-কিসের ভয়?
-ভালবাসা হারানোর
-না এ ভালবাসা আর হারানোর নয়।এই সাত দিনে আমার প্রতি তোমার
যে ভালবাসা দেখেছি তাতে তোমাকে আবার নতুন করে ভালবেসে ফেলেছি।
তোমাকে এত কস্ট দেওয়ার জন্য আমাকে ক্ষমা কর।
আর প্লিজ আর কেঁদো না। আমি চাই ভালবাসা দিয়ে তোমার সব
কষ্ট গুলো ভুলিয়ে দিতে। যে ভালবাসায় দুঃখের কোন জল
থাকবে না। শিপা আরো বেশি করে কান্না শুরু করে দিল
-সত্যি ত
-হ্যারে বাবা সত্যি নাহ! শিপার কান্না আর থামানো গেল
না।কাঁদুক, এ কান্না দুঃখ অবসান হওয়ার কান্না।তাই এতে বাধা দেয়া ঠিক
হবে না।
-ভয়ে
-কিসের ভয়?
-ভালবাসা হারানোর
-না এ ভালবাসা আর হারানোর নয়।এই সাত দিনে আমার প্রতি তোমার
যে ভালবাসা দেখেছি তাতে তোমাকে আবার নতুন করে ভালবেসে ফেলেছি।
তোমাকে এত কস্ট দেওয়ার জন্য আমাকে ক্ষমা কর।
আর প্লিজ আর কেঁদো না। আমি চাই ভালবাসা দিয়ে তোমার সব
কষ্ট গুলো ভুলিয়ে দিতে। যে ভালবাসায় দুঃখের কোন জল
থাকবে না। শিপা আরো বেশি করে কান্না শুরু করে দিল
-সত্যি ত
-হ্যারে বাবা সত্যি নাহ! শিপার কান্না আর থামানো গেল
না।কাঁদুক, এ কান্না দুঃখ অবসান হওয়ার কান্না।তাই এতে বাধা দেয়া ঠিক
হবে না।
[বিঃ দ্রঃ -মেয়েদের বলছি ভেতর থেকে শিক্ষাটা উপলব্ধি করুন।
আসছে ভালবাসা দিবস,এই দিনে অনেকেই প্রেমের প্রস্তাব
পেতে পারেন।প্রেম করতেই হবে সেটা বলছি না, এক্সেপ্ট করার
ইচ্ছে না হলে ছেলেটাকে ভালভাবে বুঝিয়ে দিন। আশা করি শিপার মত ভুল করবেন না]