মেনু

Drop Down MenusCSS Drop Down MenuPure CSS Dropdown Menu

সংকলন ২২৩- শেষ স্মৃতি

লিখাঃ অনিক হাসান 

আজ অনিকের মন
খারাপ ,ছাদে একা একা দাড়িয়ে সিগারেট
খাচ্ছে ।মন খারাপ থাকলে অনিক
মাঝে মাঝে সিগারেট খায় ।
এটা খাওয়া বলতে কিছু না শুধু
ধোয়া টা বাতাসে ছেড়ে দেওয়া আর
মনের কষ্ট টা কে?আজকের দিন টা অনিক
কিছুতেই ভুলতে পারবে নাহ,কারন আজ অনিকের
জীবনে একজন এসেছিলো ।তার
জীবনে সুখ দুঃখ কে অনুভব করতে । সিগারেট একটা শেষ
করে আর একটা সিগারেট ধরায় সে । আজ প্রায়
দেড় বছর হয়ে গেলো নাবিলার সাথে অনিকের
কোনো খোঁজ খবর নাই ।হয়ত বা সে তার
স্বামীর সংসার নিয়ে অনেক সুখেই আছে ।
সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে কখন যে সিগারেটটা শেষ হয়ে গেল তা অনিক বুঝতেই
পারে নি ।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে রাত ২
টা প্রায় বেঁজে গেছে । অনিক আজ অনেক
সিগারেট খেয়ে ফেলছে ,কোনো দিন সে এক
সাথে এতোগুলো সিগারেট খায় না ।
কিন্তু বন্ধু বান্ধবের পাল্লায়
পরে মাঝে মাঝে ড্রিংক ও
করতো ।রাত আছতে আছতে অনেক
হয়ে যাচ্ছে এখন ঘুমানো দরকার কাল
অফিস এ
যেতে হবে ।
.
.
হ্যালোঃতুমি কোথায় ।__
ক্যানো রুমে শুয়ে আছি।__
জরুরী দেখা করতে পারবা এখন ।__এখন
তো পারবো নাহ,তবে বিকালে দেখা করতে পারবো।
__আচ্ছা তাহলে বিকাল ৪ টায়
লেকে দেখা করতে আসবা ।
__ওকে আসবো,কিন্তু
জরুরী দেখা করার জন্য বলতেছো ?
কোনো সমস্যা।__তুমি আসো তার
পরে বলবো।__
ক্যানো ফোনে বলতে কোনো প্রবলেম
।__
এতো কথা ফোনে বলা যাবে নাহ।__
আচ্ছা তুমি ৪ টার আগে আমায় ফোন
দিয়ো আমি চলে আসবো ।
__আচ্ছা . . . .।হঠাৎ
জরুরী ডাকলো ক্যানো নাবিলা ,বাসায়
তো প্রবলেম হয় নি ।
.
.
কয়েক ঘন্টা পরেই নাবিলার
ফোন .হ্যালো তুমি কোথায় ।__এই
তো ময়না আসছি একটু অপেক্ষা করো ।
__
জলদি আসো ,এখন কোথায় আছো ।__এই
তো রাস্তায় আছি ।__ওও জলদি আসো ।
__
আচ্ছা তুমি একটু ওয়েট করো . . . ।
কিছুক্ষন পর
কথাকপোন । তোমার
সাথে জরুরী কথা আছে বসো ।__
জরুরী কথা শোনার জন্যই তো সাত
সমুদ্র তের
নদী পার হয়ে তোমার
সাথে দেখা করতে আসলাম ।__
মজা নিয়ো নাহ ,যা বলছি মন
দিয়ে শুনে রাখ ।__
আচ্ছা বলো তোমার কথা ,কি বলার
জন্য
এতো জরুরী তলব ।__অনিক
জানো কালকে আমাকে দেখতে আসবে ।
__
তুমি কি বলিউড এর
নায়িকা ক্যাটরিনা নাকি,যে সবাই
তোমাকে দেখতে আসবে ।__দেখ অনিক
তোমাকে আগেই
বলছি মজা করো নাহ,যে কথা গুলো বলছি শোনো তার
পর সিদ্ধান্ত নাও ।
__আচ্চা মজা করবো নাহ বলো ।
__বাবা মা আমার বিয়ের জন্য পাত্র
দেখছে ,ছেলে আমেরিকা থাকে,আগামিকাল
আমাকে পাত্রের বাড়ির লোকজন
দেখতে আসবে ।
__তুমি কি রাজী আছো এই
ব্যাপারে ।
__নাহ,আমি তোমাকে ছাড়া অন্য
কারো সাথে বিয়া করতে পারবো নাহ
।__
তুমি এই বিয়া না করে দাও ।
__না করার
মতো কোনো উপায় নেই,বাবা মা পছন্দ
করছে তার পরেও
ছেলে আমেরিকা তে থাকে ।
__
আমেরিকা থাকে তো কি হয়ছে ,তুমি বলে দাও
আমি এই
বিয়া তে রাজি নাহ ,আমি একজন
কে পছন্দ করি আর তাকেই
বিয়ে করবো ।__
বলেছি কিন্তু কোনো কাজ হয় নি ।__
তাহলে কি আর
করা ,বিয়ে করে ফেলো ,ছেলে আমেরিকাতে থাকে ,অনেক
টাকা পয়সাওয়ালা লোক ।__
টাকা পয়সাওয়ালা লোক
তো কি হয়ছে ,টাকা পয়সা দিয়ে কি হবে ।
__
আমি তো কিছু
করতে পারবো নাহ ,আমি তো বেকার
এখন ও
একটা চাকরি জোগাড় করতে পারলাম
নাহ ।__
তুমি যা করবা জলদি করো ,চাকরি টাকরি বুঝি নাহ
।__আমার কিছু করার নেই ,যদি কিছু
করার
থাকতো তাহলে করতাম ।__তোমার
বাবা মার
পছন্দের ছেলে কেই বিয়ে করো ।
__তুমি এই
কথা বলতে পারলে ,তোমার মুখ
থেকে এই
কথা শোনার আশা করছিলাম নাহ ।__
কি করবো বলো ,আমি তো বেকার ,আর
বিয়া করতে টাকা পয়সা লাগে ।
__আমার
কাছে কিছু টাকা আছে এতে দিয়েই
চলবে ,এর
মাঝে তুমি চাকরি পেলে আমাদের
ভালোই
চলবে ।__নাবিলা তুমি আমাকে সাহস
যোগাতে দিতে পারলেও
আমি পারছি নাহ ।__
আহ ,চলো কাজী অফিস এ বিয়ে করি ।
__তোমার
কি মাথা খারাপ ,পালিয়ে বিয়ে করলে তোমার
বাবা মা অনেক কষ্ট পাবে ,আর আমার
পরিবার
মেনে নেবে নাহ ।__তার
মানে তুমি আমাকে বিয়ে করবে নাহ
।__উপায়
থাকলে তো করতাম ই ,আর তোমার
সাথে তো অনেক দিন ই প্রেম
করছি ,প্রেম
করে বিয়ে না করলে সেই
ভালোবাসার সার্থক
কোথায় ।__তাহলে থাকো ,বাবার
মায়ের পছন্দ
করা ছেলে কেই বিয়ে করতে হবে ।
.
.
নাবিলা চলে যাচ্ছে চোখ
ভেঁজা চোখে ।
মেয়েটি এসেছিলো অনেক
আশা নিয়ে ,ভালোবাসার মানুষের
সাথে ঘর
বাধার জন্য কিন্তু তা আর হলো নাহ
।চোখে জল
নিয়ে যেতে হচ্ছে তাকে ।
মেয়েটি অনিক
কে সাহস দিতে পারলেও অনিক সেই
সাহস গ্রহন
করতে পারে নি ।কারন অনিক
জানতো মা বাবার মনে কষ্ট
দিয়ে,পালিয়ে বিয়ে করলে জীবনে সুখ
লাভ
করা যায় নাহ । তাই বাধ্য হয়ে তার
সাথী কে ফিরিয়ে দিয়েছে ।আর
ফিরিয়ে না দিয়েই কি করবে ,তার তখন
ছিলো না কোনো চাকরি ,ছিলো না কোনো টাকা পয়সা ।
শুধু
ছিলো ভালোবাসা দেওয়া নেওয়ার
জন্য
ছোট্ট্র একটা মন ।আজ অনিক অনেক
টাকা পয়সার
মালিক ।এখন সে বড়
একটা কোম্পানিতে চাকরি করে ,মাসে অনেক
টাকা বেতন পায় । আজ সেই পুরান
কথা গুলো মনে পড়ছে অনিকের ।
নাবিলা কে ফিরিয়ে দেওয়া সেই
কথা ।
অনিক ভাবছে যে টাকার জন্য
আমি আমার প্রিয়
মানুষের সাথে ঘর বাধতে পারলাম
নাহ ।আজ
তো আমার অনেক
টাকা নাবিলা কি এখন
ফিরে আসবে আমার জীবনে ।হয়ত
বা তার
স্বামী কে নিয়ে সুখের সংসার
করছে ,কেমন
আছে ও তা জানতেও পারলাম নাহ ।
চলে গেলে আমার জীবন থেকে শুধু
রেখে গেলে কিছু
স্মৃতি যা কোনো দিন ও
ভুলতে পারবো নাহ . . . .