লিখাঃ Rahadul Hasan Tamim
ক্রিং ক্রিং ক্রিং
দেখলাম প্রিয়ন্তির ফোন। খুব বড়লোক বাবার একমাত্র
মেয়ে। কেন যে অামায় এতটা ভালবাসে অাল্লাহ জানে। বড়লোক
বাবার মেয়ে হলেও মনে কোন হিংসা নেই।
খাটি দুধের মতো সাদা তার মন। যাই হোক
ফোনটা রিসিভ করলাম। অার ঐ দিক থেকে রাগান্বিত
কন্ঠে শুনাগেল, এতক্ষণ লাগে ফোন ধরতে?
অামি একটি কথা বললাম তার রাগ একেবারেই
চলেগেল। যাই হোক তার সাথে কথা বলছি এমন
সময় অারেকটা ফোন অাসল। স্কিনে চেয়ে দেখি মায়ের ফোন।
অামি প্রিয়ন্তিকে বললাম, মা ফোন করেছে পরে কথা বলছি। প্রিয়ন্তি কিছুই
বললনা, শুধু বললো ঠিক অাছে।
.
মায়ের ফোনটা রিসিভ করেই সালাম দিলাম।
মা অামার সালাম নিলেন। মাকে বললাম,মা কেমন অাছো?
মা বললো ভালো। তখন অামাকেও
জিঙ্গেস করলো। অামিও ভালো বললাম।
মা অামাকে বলছে সোহল অাজকে কি বার? অামি বললাম রবিবার।
মা অামাকে বললো অাজকে কত তারিখ?
অামি বললাম(,,,,,) তারিখ। অাজকের দিনটির
কথা ভুলেগেলি? অামি বললাম কিসের
দিন মা,? তখন মা বললো অাজকে না তর জন্মদিন! তখন
অামি বললাম না মা,ভুলি নাই।
(অাজকে অামার জন্মদিন সেটা প্রিয়ন্তি জানেনা)
তাহলে অাজকের এইদিনে তুইতো বাড়িতে থাকিস!
হ্যা মা থাকতাম কিন্তু কি করবো বলো পড়ার
ভিষন চাপ। কিছু দিন পর ফাইনাল পরীক্ষা তাই পড়তে হয়। তাই
বলে কি অাজকের দিনে অন্তত বাড়ি থাকতে পারলিনা।
অামি বললাম না মা,,অাল্লাহর রহমতে অারেক
বার। তখন মা অামাকে বললো কিছু খেয়েছিস?
অামি বললাম না মা! মা বললো কেনো! তখন
অামি বললাম, তুমি কি ভুলেগেলে মা অাজকের
দিনে সর্বপ্রথম অামি তোমার হাতে খাবার খাই।তোমার
হাতের খাবার খেয়ে অামি অামার নতুন জীবন
শুরু করি। অার অাজ তোমার কাছে অামি নেই,তোমার হাতের খাবার
খেতে পারলাম না।অার তাই অাজকে সারাদিন
কিছুই খাবোনা। তখন মা বলছে বুঝলাম, কিন্তু
শরীর খারাপ করবে খেয়ে নিস।মা অাবার বললো সোহল তকে একটা কথা বললো?
আমি বললাম কি কথা মা?তখন মা বললো তুইতো অামাকে ভালবাসিস
তাইনা? অামি বললাম হ্যা মা!কিন্তু হঠাৎ এই
কথা বলছো কেনো? না এমনি! অাচ্ছা তুই অামাকে মিস করিস? অামি রিতীমত অবাক
হলাম। মা অাজকে ফোন করে এইসব কথা কেনো বলছে? তখন অামি বললাম
না মা,অামি তোমাকে মিস করি না! মা অামার
কথায় অবাক হয়েছে জানি! অামি মোবাইলের ঐ পাশ
থেকে ভেসে অাসছে মায়ের কাঁন্না। তখন
বললাম কাঁদছো কেনো তুমি মা? অামি তোমায়
মিস করিনা কেন জানো, কারণ তুমি অামার প্রাণে মিশে অাছো। অামার
সারাগায়ে তোমার স্পর্শ লেগে অাছে। এই
গুলোকে কেমনে দূরে সরিয়ে দেই বলো! মা তোমাকে অামি অনেক
বেশী ভালবাসি, অামার জীবনের চেয়েও বেশী!
তোমার প্রতি অামার ভালবাসার গভীরতা মাপার যন্ত্র কোন বিঞ্জানী অাবিষ্কার করেনি এখনও। তোমাকে অামি অনেক
ভালবাসি যা অামি বলে বোঝাতে পারবোনা। এতবেশী ভালবাসি বলেই
তোমাকে অামি মিস করিনা। অামি জানি তোমার
দোয়া,তোমার ভালবাসা সবসময় অামার সাথে অাছে।
যদি তোমায় মিস করি, তাহলে তোমার
ভালবাসা, তোমার দোয়া অামি পাবনা। অার তাই
তোমাকে অামি মিস করিনা। অামি ভাবি সবসময় তুমি অামার
পাশে অাছো। মা তুমি শুনে রাখ, যেদিন তুমি এই পৃথিবীর
বুকে থাকবেনা, সেই দিন অামিও থাকবনা। মা যেদিন তুমি এই পৃথিবী থেকে বিদায়
নেবে, সেদিন কেও বিদায় নেবেকিনা জানিনা, কিন্তু
অামি ঠিকেই নিবো। তোমার কবরের পাশে সেদিন কোন কবর
হবেকিনা জানিনা , কিন্তু অামার কবর ঠিকেই হবে।
কথাগুলো মাকে একসাথে বলে ফেললাম। অামি শুনতে পেলাম মা অার জুরে কাঁদছে।
অামি অার কাঁদতে মানা করলাম না। কাঁদোক
একটু, অামি জানি এটা মায়ের দুঃখের কাঁন্না না,অানন্দের কাঁন্না। বেশী অানন্দ
হলেও মানুষ কাঁদে। মাকে শেষ বার অাবার বললাম অনেক ভালবাসি তোমায় 'মা'এই
বলে ফোনটা রেখে দিলাম। জানি মা এখনও কাঁদছে।
ফোনটা রেখে দিয়ে অামিও এখন কাঁদছি। জানিনা মা অামাকে কেনোই বা এই
কথাগুলো বলেছে হঠাৎ। তবুও বলছি মা অনেক
বেশী ভালবাসি তোমায়। অামার জীবনের চেয়েও বেশী,,,!