অনেকদিন ধরে ফাহিমের
বাবা মামা টিউশনি টাকাটা নিয়ে অনেক ঘুরাচ্ছে.......
আজ মাসের প্রথম দিন.... গত মাসের
টাকাটা সহ এই মাসেরটা দেওয়ার
কথা..
রাকিবের ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন
ছিল বড়
হয়ে একটা ভালো চাকরি করা এবং একটা ভালো মানুষ
হওয়া। অনেক কষ্টে বাবা মায়ের
অভাবী সংসারে থেকে সে মাস্টারস
পাশ করে। কিন্তু হায়...
বাংলাদেশে চাকরি করার জন্য
যোগ্যতার চেয়ে মামা চাচা আর
অর্থ জরুরি। রাকিবের কোন
মামা চাচা নেই.. অর্থ ও নেই। তাই
তার ভাগ্যে কোনো চাকরিও নেই।
টিউশনির সামান্য
কটা টাকা দিয়েই
কোনোরকমে সংসার চালায়।
.
.
.
আজও ফাহিমের
বাবা মা টাকাটা দিলো না। আজ
ভালোবাসা দিবস।
আদিবা মেয়েটা ওকে অনেক
ভালোবাসে। দুই বছর ধরে ওদের
রিলেশন। এই দুই বছরে ও
আদিবাকে ভালো কিছু গিফট
দিতে পারে নি। ভেবেছিলো আজ
টিউশনির
টাকাটা হাতে পেলে আদিবার
জন্য ভালো কিছু একটা উপহার
দিবে। কিন্তু না, তাও হলো না।
রাকিবের পকেটে এখন মাত্র বিশ
টাকা আছে।
ভাবছে কি কিনা যায়। সামনের কদম
আলির দোকান
থেকে একটা গোলাপ
কিনে নিলো রাকিব।
গিফট নিয়ে আদিবা কখনো ওর
কাছে কোনো অভিযোগ করে নি।
ওই
তো বেঞ্চে মেয়েটা বসে আছে।
.
.
.
-হাই
-এতো লেট করলে কেনো।
-রিক্সা পাচ্ছিলাম না তো তাই।
- তোমাকে না কতোবার
বলেছি ভালো দেখে এক
জোড়া জুতা কিনে নিবে।
-ওকে বাবা.. কিনে নিবো।
হটাৎ করে আদিবা সিরিয়াস
হয়ে গেলো।
-রাকিব শোনো,আমার
বাসা থেকে বিয়ের জন্য চাপ
দিচ্ছে।
-রাজি হয়ে যাও
-কিহ!!!
- বলেছি রাজি হতে।
-রাকিব আমি কিন্তু সিরিয়াস।
-আমিও সিরিয়াসই।
-এইটা তোমার শেষ কথা??
-হুম.....
কাঁদতে কাঁদতে আদিবা চলে গেলো।
রাকিব ও
আড়ালে একফোঁটা চোখের জল
ফেললো। আদিবাকে ও ওর নিজের জীবনের চাইতেও বেশী ভালোবাসে।
রাকিবকে বিয়ে করলে আদিবাকে দারিদ্রকে বরণ
করে নিতে হবে। দারিদ্রের কষাঘাত যে কতটা নিষ্ঠুর
হতে পারে তা ওর চেয়ে বেশী কেউ
জানতে পারে না। পরিবারের পছন্দ
করা ছেলের সাথে ওর বিয়ে হলে ও
সুখী হতে পারবে। অন্তত দারিদ্রের
কঠিন আঘাতটা সইতে হবে না।
.
এই এক আদিবাকে ঘিরেই ওর
বাকি জীবনটা কাটানোর
ইচ্ছা ছিলো। আজ সেও চলে গেল।
আজ জীবনের এই স্বপ্ন যুদ্ধে রাকিব
একজন পরাজিত যোদ্ধা।