Writing :Rahadul Hasan Tamim
13 February
রাত প্রায় ১১টাই ফেসবুক logout করে ঘুমিয়ে পরলাম।
পরের দিন খুব সকালে না,,অনেক পরেই
ঘুম ভাঙ্গলো,ঘড়িতে চেয়ে দেখি ৮
বাজে। হায় হায় অামার হিসাববিঞ্জানের
প্রাইভেটের সময় চলে যাচ্ছে।
৮:৩০ হিসাববিঞ্জান প্রাইভেট, দেরিতে ঘুমানোর
জন্যই এমন হয়েছে।ফজরের নামাজটাও পরতে পাললাম
নাহ্। খুব খারাপ লাগছে! যাই হোক কোন মতে হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ
হয়ে, হিসাববিঞ্জান বইটা, স্কেল অার
ক্যালকুলেটর হাতে নিয়ে বাহির হলাম।
মা ডাকছে নাস্তা করে যা,অামি বললাম সময় নাই
প্রাইভেটের দেরি হয়ে যাচ্ছে।
তখন শুনছি মা বলছে, কত করে বলেছি রাত একটু
তারাতারি ঘুমাতে, কে শুনে কার কথা।
খুব মধ্যবিত্ত ফ্যামিলি অামাদের,
বাবা একটা ছোট খাটো চাকরি করে। মাস
শেষে টানা হিচরা লেগে যায়। তবুও খুব সুখেই
অাছি অামরা। বাড়িতে থেকে বেশী দূর নই, তাই
পায়ে হেঁটেই প্রাইভেটে যাই।
প্রাইভেটে গেলাম গিয়ে দেখি স্যারের রুম বন্ধ।
অামার বন্ধু শাকিলকে একটা ফোন করলাম।
কিরে শাকিল স্যারের রুম বন্ধ কেন? স্যার অাজকে পড়াবেনা!
অামি বললাম
কেনো পড়াবেনা? তখন শাকিল বললো অাজকে কি বার? অামি বললাম
কেন? শনিবার! কত তারিখ? ১৪ তারিখ! কেন ১৪
তারিখে কি পড়াতে নিষেধ করছে সরকারে,
নাকি কোন সরকারি ছুটি?
শাকিল বললো কেন তুই জানিস নাহ্ অাজকে ১৪ই
ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালবাসা দিবস! ঐ অাজকে বিশ্ব ভালবাসা দিবস
তাতে অামার কি? তাই বলে কি প্রাইভেট বন্ধ রাখতে হবে?
তখন শাকিল বললো অারে গাধা এই
দিনে তকে কে পড়াবে? অাজকে সকল প্রেমিক
প্রেমিকারা একসাথে ঘুরে বেড়ায়। কারও পড়ার
ধান্দা থাকেনা। তাতে কি অামি পড়বো!
দেখ ভাই বিজি অাছি তর সাথে বগবগ করতে পারবনা। তুই স্যারকে ফোন
দিয়ে একলা পড়! স্যারকে ফোন দিলাম স্যার
বললো অাজকে প্রাইভেট বন্ধ! তখন অাবার শাকিলকে ফোন
দিলাম! কিরে শাকিল অামি কি করবো এখন? তখন শাকিল
বললো ঘুরে বেড়া। নাহ্ হয় বাড়ি চলে যাহ। অামি অামার
গার্ল ফ্রেন্ডেকে গ্রীফ্ট
দিতে মার্কেটে অাসছি। ভারবাসার মানুষকে এই গ্রীফ্ট
দিলে খুশি হয়। তুইও যা তর ভালবাসার
মানুষকে একটা গ্রীফ্ট দে। কথাগুলো শাকিল বলার পর
লাইনটা কেটে দিলো। তারপর এক মিনিটের জন্যেও
সেখানে দাঁড়ায়নি। দৌরে বাড়িতে অাসলাম, অামার
বিছানার তলে হাত দিলাম কিছু টাকা রেখে ছিলাম!
বাবার দেওয়া হাত খরচ এগুলো। টাকা গুলো বাহির করে দেখলাম প্রায়
২০০০ টাকার মতো। তারপর মার্কেটে গেলাম
কি কিনবো ভেবে পাচ্ছি নাহ্। অবশেষে একটা চশমা কিনলাম,
একটা ভালো হাত ঘড়ি কিনলাম, অার একটি গোলাপ
ফুলের ইষ্টিক কিনলাম। মনে মনে ভাবলাম অনেক
হবে অাজকে! এগুলো নিয়ে বাড়িতে গেলিম,
মাকে খুজছি! মা দেখি রান্না ঘরে কি জেনো করছে!।
মাকে বললাম নাদিয়া অার বাবা কই? মা বললো কেনো? অামি বললাম
ধরকার অাছে! তর বাবা কোথায় জেনো,অার
নাদিয়া কিছুক্ষণ অাগে বাহিরে গেলো!
অামি বললাম মা তুমি কি করছো? তখন মার উত্তর তর প্রিয় পায়েস
রান্না করছি। কথা গুলো বলার সাথে সাথে বাবা চলে অাসলো।
বাবার সামনে গিয়ে বাবার চোখের
চশমাটা খুললাম, অনেক পুরনো হয়েগেছে চশমার
পাওয়াটাও কম।তাতে বাবার কাজ করতে একটু কষ্ট
হয়। তখন বাবাকে বললাম এটা ফেলে দাও,তাহলে অামি কাজ
করবো কেমনে? তখন বাবাকে অামার
কেনা চশমাটা পরিয়ে দিলাম! বাবা অামার ফিল
হা করে তাকিয়ে বলছে! এই চশমা তুই কোথায় পেলি। অামি বললাম
তোমার দেওয়া হাত খরচ বাচিয়ে!
একটু পরেই নাদিয়া অাসলো, তার হাতেও অামার
কেনা হাত ঘড়িটা পরিয়ে দিলাম। ঠিক
মতো স্কুলে যেতে পারেনা, তাই অনেক ধরে বলছিলো।
অাজকে দিয়ে দিলাম। অামার দিকে হা করে সবাই
তাকিয়ে অাছে। তারপর অামি মাকে অামার
কিনে অানা গোলাপটা দিয়ে বললাম
এটা তোমার উপহার বিশ্বভালবাসা দিবসে।
মা গোলাপটা হল পবিত্র ভালবাসার প্রতিক, অার
তুমি অামার মা পবিত্র ভালবাসা। তখন
দেখি মায়ের চোখ দিয়ে পানি পরছে। তখন মায়ের
সাথে অামার চোখ দিয়েও পানি পরছে।
একটু পরেই নাদিয়া একটি র্টিশার্ট অামার
দিকে বারিয়ে দিয়ে বললো ভাইয়া এই নে তর
ভালবাসার উপহার। দুইটা পুরাতন শার্ট পরিস।
একটু পরেই বাবা একটি ব্যাগ থেকে কি জেনো বাহির করছে।
অামি দেখলাম একটি মোবাইলের বক্স। তখন
বাবা বললো তুই না কদিন যাবৎ তর মায়ের কাছে বলছিলি একটি ভালো মোবাইলের
জন্য। তাই তর জন্যই কিনলাম। এটাই তর অাজকের
দিনের উপহার! তখন
অামি বাবাকে জরিয়ে কেঁদে দিলাম তখন
অামার সাথে সাথে মা বাবা অার নাদিয়া ও
কেঁদে দিলো, ওরা সবাই
অামাকে জরিয়ে ধরে কাঁদছে। কেও
কাওকে থামায় নাহ্, থামানোর চেষ্টাও করে নাহ্। সবাই একসাথেই
কাঁদছি! এ জেনো এক সুখের কাঁন্না। কষ্টে নাহ, মানুষ
বেশী অানন্দেও কাঁদে।তাই অামরাও
কাঁদছি!