মেনু

Drop Down MenusCSS Drop Down MenuPure CSS Dropdown Menu

সংকলন ১৯৯- ডায়রী অফ ১৪ই ফেব্রুয়ারী

লিখা :- Jubo Raj

পিচ ঢালা সোজা রাস্তাটায়
মাঝে মাঝে চলছে একটা বা দুইটা গাড়ি।
ঠিক পাশেই লম্বা তাল গাছের মত
মাথা উচু করে দাড়িয়ে আছে ল্যাম্প
পোষ্টটা।মাথায় টিম টিম
করে জ্বলছে সাদা একটা আলো।
তাকে ঘিরে ভোঁ ভোঁ করে ঘুরছে অনেক
গুলা পোকা।মনে হচ্ছে এখনই জোড়
করে খেয়ে ফেলবে আলোর উত্স
বাল্বটাকে।
রাস্তার ল্যামপোষ্টটার ঠিক পাশের
একটা বাড়ির
বেলকোণীতে দাড়িয়ে আছে একজন।
হ্যাঁ একজনই তো!একটা মেয়ে।
মেয়েটার নাম রেখা।
সে তাকিয়ে আছে ল্যাম্প পোষ্টটার
আলোর দিকে,কিন্তু ও
কে দেখে মনে হচ্ছে অন্য কোন
একটা কিছু গভীর ভাবে চিন্তা করছে।
তার মাথার মাঝেও অনেক কিছু
চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে,ঠিক ল্যাম্প
পোষ্টের পোকা গুলোর মত বা একটু বেশী।
ঠিক নিচের ঘরটাতেও টিম টিম
করে জ্বলছে একটা বাতি।তার
পাশে মাথায় হাত দিয় বসে থেকে কি যেন
চিন্তা করছে শিহাব সাহেব! মানে রেখার বাবা।
পাশেই অচেতন হয়ে পরে আছে রজীনা বেগম।অর্থাত্
রেখার মা।ভাইটা পাশের
ঘরে বেভোরে ঘুমোচ্ছে।ছেলেটা
আজ বোধহয় খুব বেশী নেশা করেছে।
এমনিতেই কোন নেশা করে না,কিন্তু আজ করেছে।।
রেখার চিন্তার ছেদ পরল খুব
জোরে দেওয়া একটা ট্রাকের হর্ণের
মাধ্যমে।আবার পরক্ষনেই
সে মিলিয়ে গেল কিছুদিন
আগে বলা রফিকের কথাগুলোর
চিন্তায়।কত ভালোই না চলছিল
মাসখানেক আগের দিনগুলো!আপন মনেই
কথাটা ভাবল রেখা।পরক্ষনেই আবার
ভাবলো একটা ঠকবাজের কথা ওর বার
বার কেন মনে হচ্ছে?
রফিকের চাইতে ওর বলা কথাগুলোকেই
কেন জানি রেখা খুব মিস করছে!
বেশী মনে পরছে সেই দিনের
কথা,যেদিনের কারনে সে ওই অভিশপ্ত
দিনে বের হয়েছিল।।।
-এই রেখা,আসছে ভালোবাসা দিবসে কই
যাচ্ছি বেরাতে আমরা?
-কোথাও না।আমি বাড়ি থেকে বের
হতে পারবো না।
-এমন করছো কেন সোনা?
আমি না তোমাকে ভালোবাসি।
(কাঁদো কাঁদো স্বরে)
-এই এই,তুমি কাঁদছো কেন?
কেঁদো না প্লিজ।
-তুমি আমার সাথে বের হবে না?
-হব তো।তবে এই রাস্তা দিয়ে একটু
ঘুরবো।
-আমি ভাবলাম তোমাকে একটু
আমাদের বাড়িটাতে নিয়ে যাবো।
মায়ের শরীরটাও ভালো না,সেদিন
না হয় একটু দেখে আসলে?
-এমনভাবে কথা বলছ কেন?তোমাদের
বাড়িতে যাওয়ার কথা বললেই
তো আমি রাজী হয়ে যেতাম।
-তার মানে তুমি যাচ্ছো আমার সাথে?
-হ্যাঁ বাবু।
-ই য়া হু.......
এভাবেই রাজি হয়ে গিয়েছিল ১৪ই
ফেব্রুয়ারী বাইরে বের হওয়ার জন্য।
কিন্তু তখন কি জানতো,এই
রাজি হওয়াটাই রেখার জীবনের
সবচেয়ে বড় ভুল ছিল।
শুক্রবার রাতে অর্থাত্ ১৩ই
ফেব্রুয়ারী রাতেও ওর কেমন
জানি অসস্তি লাগছিল।কিন্তু
কেন,তা ও বুঝতেও পারছিল না।
পরদিন খুব সকালে রফিকের
করা ফোনে ঘুম ভাঙ্গে রেখার।
হালকা মেকআপ
মেরে একটা আকাশী রংয়ের
শাড়ি পড়ে বের হয়েছিল সে।কিন্তু
আসার সময় ফেরত এসেছে,অর্ধভঙ্গ শরীর আর
কামড়ানো মোচড়ানো শাড়ি পড়ে।
যা ছিল কোন মতে পড়া।
সেদিন রেখা আর রফিক
একসাথে রিকশা করে ঘুরাঘুরি করে রফিকের
কেনা একটা পানির বোতল
থেকে পানি খেয়ে রওনা দেয়
রফিকদের বাড়ির উদ্দেশ্যে।
বাড়ি গিয়ে দরজা খুলে ভিতরে যেতেই
রেখার মাথাটা একটু ঘুরে ওঠে,আর
সাথে সাথেই অজ্ঞান!যথন জ্ঞান
ফিরে তখন ও নিজেকে আবিষ্কার
করে একটা সোফার সাথে বাঁধা। আর
চারদিকে গোল
হয়ে দাড়িয়ে আছে রফিকে চার
পাঁচটা বন্ধু।।একজনের হাতে আবার
আছে একটা বড় মাপের ক্যামেরা।
তার পরের ঘটনা আর
রেখা মনে করতে চায় না।আবার
আমারও বোদহয় বলার দরকার নেই।
সন্ধ্যার পরপরই রেখাদের বাসার
সামনে অজ্ঞান করে ফেলে রেখে যায় লুইচ্চারা।
সাথে রেখে যায় একটা সিডির
ফিতা আর চিঠি।
................
পরদিন সকালে অর্থাত্ গতকাল
সকালে সয়ংক্রিয়ভাবে পাওয়া যায়
রেখার ও রেখার বাবার লাশ।রেখার
টা বাসার নিচে,আর ওর
বাবারটা সেলিং ফ্যানের সাথে।
, পরদিন সকালে অর্থাত্ গতকাল
সকালে সয়ংক্রিয়ভাবে পাওয়া যায়
রেখার ও রেখার বাবার লাশ।রেখার
টা বাসার নিচে,আর ওর
বাবারটা সেলিং ফ্যানের সাথে।
যা বড় ভাইয়ের ডাইরীর পাতায়
রক্তের মত করে লেখা থাকবে।
সাথে প্রতি বছর এই দিন উত্যাপিত
হবে ভালোবাসা দিবসের
পরিবর্তে শোক দিবস হিসেবে।