তারাতারি বাড়ি যাওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু একটা জরুই মিটিং থাকার
কারনে তার যাওয়া হল না। এই
মিটিং এ একটা কোম্পানির
সাথে তাদের কোম্পানির চুক্তি হবে।
এটা হলে হাসানের প্রোমশন হবে।কিন্তু
বাড়ি যাওয়া হাসানের জন্য খুব জরুরি।
কারন আজ আয়েশার জন্মদিন।
চেয়ারে বসে একবছর আগের
কথা ভাবতে তহথাকলো হাসান।
.
হাসান একদিন ফেসবুকে খুজে পায়
আয়েশা নামের মেয়েটাকে।ফ্রেন্ড
রিকোয়েস্ট দেয় আয়েশাকে।আয়েশার
ফ্রেন্ড লিস্ট এ অপরিচিত
কাউকে রাখে না। কিন্তু হাসান
আয়েশার ফ্রেন্ড লিস্ট এ কিভাবে এল
সেটা ভেবে আয়েশা অবাক হয়।
আয়েশা ভেবেছিল হাসান কে ফ্রেন্ড
লিস্ট থেকে বাদ দিবে। কিন্তু পরে আর
বাদ দিতে পারে না। তাদের
মধ্যে চ্যাটিং শুরু হয়। আর হাসানের
সাথে চ্যাট করতে আয়েশার ভালই লাগে।
একদিন হাসান আয়েশাকে এস এম এস দিল
.
-আমি একজনের প্রেমে পরেছি।
-সত্যি। সেইজন্যই তো কবি কবি ভাব।
-কবি কবি ভাব কোথায় দেখলে?
-মনে হচ্ছে।
-ফেসবুকের মেসেজ
দেখে কিভাবে বুঝবে কবির ভাব।
তুমি কি এই সময়ে আমাকে দেখছো?
-না দেখলেও
বুঝতে পারছি যদি এটা বুঝতে না পারি তাহলে এতদিন
তোমার সাথে কি এমনি এমনি চ্যাট করছি।
-তা ঠিক। তুমি আমার মনের খবর
তো জানো না।
-তোমার মনের খবর ও কিছুটা জানি।
-মনের কি খবর জানো?
-তোমার মনটা আজ ভাল।
-প্রেমে পরলে এমন ই হয়।
-তাকে কি ভালবাসার কথা বলেছ?
-না। আজকেই প্রেমে পরেছি। তাই বলি নি।
-তাহলে বলে দাও।
-বলবো। সময় হলেই।
-আচ্ছা বলো
.
আয়েশা রাতে ফেসবুকে গিয়ে হাসানকে মেসেজ দেয়।
-কার প্রেমে তুমি পরেছ?
-বলতেই হবে?
-হ্যা। তাকে ভালবাসার কথা বলবে কবে?
-বলবো সময় হলেই।
-কেন। সামনে গিয়ে সাহস পাচ্ছ না? নাকি থাপ্পড় খাওয়ার ভয়?
-আরে নাহ। এসব কিছু না।
-তাহলে বলে দাও।
-বলে দিব?
-হ্যা।
-I Am In Love With You Ayesha.
আয়েশা মেসেজটা সিন করে রিপ্লাই
না দিয়ে ফেসবুক বন্ধ করে দেয়।
আয়েশার চোখ দিয়ে শুধু পানি ঝড়তে থাকে।
সে কি করবে ভেবে পায় না।
পরেরদিন ফেসবুকে গিয়ে হাসান
কে খোজে। কিন্তু পায় না। দুইদিন
পরে ফেসবুকে খুজে পায় হাসানকে। মেসেজ দেয়
-কি বেপার? আগে সবসময়
ফেসবুকে দেখতাম। কিন্তু ফেসবুকে পাওয়া যায় না। কি বেপার?
-বেপার কিছু না।এমনি মনটা ভাল ছিল না।তাই ফেসবুকে আসি নি।
-প্রেমে পরে মনটা ভাল।আর প্রেমের কথা বলেই মনটা খারাপ হয়ে গেল?
-এমনি মন খারাপ।
-শুধু প্রেমের কথা বললে। উত্তরটা জানবে না?
-উত্তর টা বলো।
-আমি।
-আরে এটা ফেসবুক। সামনা সামনি তো না। যা বলার সারাসরি বলো।
-আমিও তোমাকে ভালবাসি। তোমার
সাথে চ্যাট করতে।স্কাইপ এ ভিডিও কল
করতে তোমার আমিও প্রেমে পরে গেছি।আর প্রেমের
কথাটা তুমি বললে তাই আমি প্রথমেই
রাজি হয়ে গেলাম।কিন্তু তখন ই উত্তর দিলাম না।তোমাকে উত্তর
জানাতে চাইলাম। কিন্তু ফেসবুকে পেলাম না।
-সরাসরি বলতে বলেছি আর বলেই যাচ্ছ।
-হ্যা। সব বলে দিলাম। এখন বলছি I Love You Hasan.
.
তারপরে শুরু হয় তাদের চ্যাটিং। তবে এবারে প্রেমের চ্যাটিং।তাদের
দুইজনের কাছে দুইজনের ফোন নাম্বার ছিল। কিন্তু তারা ফোন এ খুব কম
কথা বলতো। তারা সবসময় ফেসবুকে কথা বলতো। আর
একে অপরকে দেখতে স্কাইপ এ চলে যেত।
.
একদিন চ্যাটিং করতে করতে হাসান
ঘুমিয়ে পরে। তাই আয়েশার মেসেজ রিপ্লাই দিতে পারে না।সকালে ঘুম
থেজে জেগে দেখে আয়েশার অনেকগুলো মেসেজ।সে জানে তার ভালবাসার মানুষটি তার উপরে অনেল অভিমান করে আছে। তাই তাকে ফোন
করে অভিমান ভাঙাতে হবে। তাই কল দেয় আয়েশার নাম্বারে।অনেক ফোন
দেয়ার পরে ফোন ধরে।
-তুমি আমার উপরে রাগ করে আছো?
-তোমার সাথে আমি কথা বলবো না।
-প্লিজ রাগ করো না।
-আগে বলো রাতে আমার মেসেজের উত্তর দিলে না কেন?
-আরে বাবা ঘুমিয়ে গেছিলাম। তাই রিপ্লাই দিতে পারি নি।
-তুমি জানো না।তুমি আমাকে গুড নাইট না বললে আমার ঘুম আসে না।
-এখন থেকে আর এমন হবে না।
-মনে থাকে যেন।
.
এভাবেই চলে তাদের। কিছুদিন পরে তার বাবা মা এক ছেলের
সাথে আয়েশার বিয়ে ঠিক করে।এই কথা আয়েশা হাসানকে জানায়।কিন্তু হাসান কি করবে ভেবে পায় না। পরে সিদ্ধান্ত নেয়
আয়েশাকে নিয়ে হাসান পালাবে। তাই করে।বিয়ে করে কিছুদিন হাসান
টিউশানি করে সংসার চালাতে থাকে।
.
বিয়ের দুইদিন পরে আয়েশার বাড়ি থেকে হাসান আর আয়েশার
ঘটনা জানতে পারে। জানতে পেরে আয়েশার
বাড়ি থেকে তাদের সম্পর্ক মেনে নেয়। জানতে পারে আয়েশার বাবা মায়ের
ঠিক করা পাত্র একজন খারাপ লোক ছিল। সেই ছেলের চেয়ে হাসান অনেক ভাল।
তাই আয়েশার বাড়ি থেকে মেনে নেয়।
.
কিন্তু সমস্যা হল হাসানের বাড়ি থেকে। হাসানের
বাড়ি থেকে এখন এই ঘটনা জানে না। একদিন হাসানের বাবা হাসানকে কল
দেয়।হাসান ফোন ধরে
-আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছো আব্বু।
-ওয়ালাইকুম আসসালাম।আমি ভাল আছি। তুই কোথায় এখন?
-আমি তো মেসে।
-ওই মিথ্যা কথা বলিস কেন? তুই নাকি বিয়ে করেছিস?বিয়ে করে কেউ মেসে থাকে?
-না মানে আব্বু।
-তুই বিয়ে করলি কারো কাছে শুনেছিস?
-না মানে।
-কিসের না মানে করছিস? বিয়ে করে বাড়ির বাইরে থাকবি কেন?
-আব্বু আমি ভুল করে ফেলেছি।বিয়ের
আগে তোমাদের জানানো উচিত ছিল।
-বিয়ে করে বাড়ির বাইরে থাকবি? তুই বাইরে থাকলে সমস্যা নাই।কিন্তু আমার
বউ মা বাড়ির বাইরে থাকবে কেন?
-আব্বু আমি।
-আর একটা কথা বললে তোর খবর আছে।এখন ই বউ মা কে নিয়ে বাড়ি আয়।
.
হাসান আয়েশাকে নিয়ে বাড়িতে রওনা দেয়।
তার সবচেয়ে ভয় ছিল তার বাবাকে। সেই বাবা যতক্ষণ মেনে নিয়েছে।
তাহলে হাসানের আর কোন ভয় নেই।
.
তারপরে ভালই চলছে হাসান আর আয়েশার বিবাহিত জিবন।কিন্তু
হাসান কিছুদিন অফিসের কাজে আয়েশাকে সময়
দিতে পারছে না।তাই হাসানের উপরে আয়েশার একটু অভিমান।কিন্তু
আজকে বাড়িতে গেলে হাসানের খবর আছে।আয়েশা হাসানের
বাবা মাকে এত আপন করেছে যে হাসানের কথা বিশ্বাস
না করলেও আয়েশার কথা বিশ্বাস করে। তাই মাঝে বাবা মায়ের
কাছে ঝাড়ি খেতে হয় হাসানের।
.
অফিস শেষে বাড়ি ফিরতে রাত হয়ে গেল। বাড়ি এসে ঘরে ঢুকলো।
প্রতিদিন দরজা খোলে আয়েশা কিন্তু আজ হাসানের মা দরজা খুলল। হাসান
মায়ের কাছে জিজ্ঞেস করলো
-মা কি হয়েছে। আজ তুমি দরজা খুলছো কেন?
-তোর আজ তারাতারি বাসায় ফেরার কথা ছিল। কিন্তু তুই এখন ফিরছিস কেন? আয়েশা রাগ করে ঘরে গিয়ে শুয়ে আছে।
-অফিসে দেরি হয়ে গেল।
-মেয়েটা অনেক কেদেছে। যা এখন গিয়ে অভিমান ভাঙা।
-আচ্ছা। আয়েশার সত্যি অভিমান করে আছে। হাসান আয়েশার কাছে গিয়ে বলে
-তুমি আমার উপরে রাগ করেছ?
-চুপ।
-কথা বলো।
-চুপ।
-সরি বলছি তো।
-চুপ।
-কথা বলবে না। আচ্ছা আমি চলে যাচ্ছি।তুমি থাকো।
-এই দাড়াও।
-যাক রাগ ভেঙেছে। শুভ জন্মদিন (একটা ফুলের তোরা দিয়ে)
-তুমি দেরি করে বাসায় ফিরলে কেন?
-অফিস থেকে ছুটি দিল না।আজ একটা মিটিং ছিল।মিটিং টা সফল
হয়েছে। আর তাই আমাকে প্রোমোশন+এক মাসের ছুটি দিছে। এই এক মাস শুধু
তুমি আর আমি ঘুরবো। আমরা অনেক জায়গায় বেড়াতে যাবো।
-সত্যি?
-হ্যা সত্যি। একটু পরে সবাই মিলে জন্মদিনের কেক
কাটলো।আয়েশার মন এখন ও খারাপ দেখে হাসানের বাবা হাসানকে বলল
-তুই কান ধরে দারিয়ে থাক।
-কেন?
-বউমা তো উপরে রেগে আছে। যতক্ষণ রাগ না ভাঙবে ততক্ষণ তুই কান
ধরে দারিয়ে থাকবি।
-আমি পারবো না।
-তাহলে আজকে কেউ তোকে খেতে দিবে না। পাশ থেকে আয়েশা বলল
-না আব্বু। আমি ওর উপরে রেগে নেই।
-তাহলে মন খারাপ করে আছো কেন? একটু হাসো।
-বাবা হাসানের প্রোমোশন হয়েছে। আরো এক মাসের ছুটি পেয়েছে।
-এ তো ভাল খবর। তোমাদের জন্য
সুইজারল্যান্ড এর টিকিট কাটা আছে। গিয়ে ঘুরে আসো।
-হাসান কি যাবে?
-না গেলে ওর খবর আছে।
হাসান বলল
-সুইজারল্যান্ড।
-তুই কয়েকদিনের মধ্যে সুইজারল্যান্ড
থেকে ঘুরে আসবি। তুই বউমা গেলে তোদের ভাল লাগবে।
-আচ্ছা।
পরিবারে এখন হাসানের চেয়ে আয়েশার দামটাই বেশি।
হাসানের কোন বোন নেই। তাই হাসানের
বাবা মা আয়েশাকে মেয়ের মত ভালবাসে। আদর করে। আর আয়েশাও
তার বাবা মায়ের মত আপন করে নিয়েছে সবাইকে।
এভাবেই চলতে থাকুক হাসান আর
আয়েশার ভালবাসার জিবন...................
-সুইজারল্যান্ড।
-তুই কয়েকদিনের মধ্যে সুইজারল্যান্ড
থেকে ঘুরে আসবি। তুই বউমা গেলে তোদের ভাল লাগবে।
-আচ্ছা।
পরিবারে এখন হাসানের চেয়ে আয়েশার দামটাই বেশি।
হাসানের কোন বোন নেই। তাই হাসানের
বাবা মা আয়েশাকে মেয়ের মত ভালবাসে। আদর করে। আর আয়েশাও
তার বাবা মায়ের মত আপন করে নিয়েছে সবাইকে।
এভাবেই চলতে থাকুক হাসান আর
আয়েশার ভালবাসার জিবন...................