মেনু

Drop Down MenusCSS Drop Down MenuPure CSS Dropdown Menu

সংকলন ১৯৬- আমার বউ দ্যা গ্রেট

By: Millat Rahman (হাই ভোল্টেজ মিল্লাত)
-----------------------------------------

আমি আমার বাপের একমাত্র আদরের
বিচ্চু পোলা।সারাদিন
টৈ টৈ কইরা ঘুইরা বেড়াই,বন্ধুগো লগে আড্ডা দেই
আর রাইতে বাপের বিচ্চু
আশ্রমে আইসা ঘুমাই।অনার্স কমপ্লিট
করনের পরেও অকর্মা আছি,কোন কাজ-
কাম করতে মুঞ্চায় না আমার।
আব্বা আমারে ডেইলি দুই
টাইমে হেতের বয়ান
শুনায়,সকালে নাস্তার টেবিলে আর
রাইতে ডিনার করনের সময়।কিন্তু কোনও
ফায়দা হয় না,আমি হেতের বিজনেস এ
বসুম না এইডাই ফিনাল। আমার মানসিক
অত্যাচারে দিনে দিনে আম্মা-
আব্বা আমার প্রতি অতিষ্ঠ হইয়া সিদ্ধান্ত নিলেন
আমারে ইউ.কে পাঠায়া দিবেন মামার ধারে।
.
আমি তো আরো খুশি।এতোদিন দেশের
হাওয়া-বাতাস
গিলছি,ওলিতে গলিতে ঘুরছি এহন
বাইরের দেশে যাইয়া মাস্তি করুম।
উলা...লা...উলা...লা!
একমাসের মধ্যে পাসপোর্ট ভিসা সব
রেডি হইয়া গেলো।
মামা নিজে আমার স্পন্সর করলেন ছয়
মাসের জন্য।অতঃপর ইউ.কে এর
উদ্দেশ্যে আমি রওনা দিলাম.....
লন্ডন হিথ্রো এয়ারপোর্ট থাইকা মামা-
মামী আমারে রিসিভ করলেন।
তাগো মার্সিটিজ
গাড়িতে কইরা সোজা বাসায়
গেলাম।হেতেগো হোম কিন্তু মেইন
লন্ডন সিটির মধ্যেই।
.
বাসায় ঢুকা মাত্রই
পিচ্চি মামাতো ভাই আইসা লাফ
দিয়া আমার কাঁদে উইঠা গেলো।
আমারে স্বাগতম জানালো!
হাত-মুখ ধুইয়া ফ্রেশ হইয়া রুমে গিয়ে ঢুকুম
তখনি দেখি আমার সামনে এক
সুন্দরি ললনা দাড়িয়ে পথ
আটকে রাখছে।মুখে মুচকি হাসি আর
হাতে এক গুচ্ছ লাল গোলাপ।গোলাপ
গুলো আমারে দিয়া কইলো,ওয়েলকাম টু
আওয়ার কান্ট্রি!!
আমি তো কিছুই বুঝলাম না।শুধু
হা কইরা হাবলার মতোন হেতির
দিকে তাকাইয়া রইলাম।হঠাত্
পাশে মামা আইসা কইলেন
চিনতে পারতাছো না ভাগ্না? 'সি ইজ
হালিমা,ইউর কাজিন'।
.
এইবার আমার
মাইন্ডে আইলো হেতি তো মামার
সোহাগি মাইয়া,যার গুনকীর্তন
দেশে আম্মার মুখে শুনতে শুনতে আমার
কান টাস্কি লাইগা গেছে।
ভদ্র পোলার মতো হেতির
লগে হ্যান্ডচিপ কইরা আমি বিছানায়
যাইয়া রেস্ট নিলাম।
পরদিন মামা কইলেন
হালিমারে নিয়া ঘুরতে যাইতে,হেতি আমারে লন্ডন
সিটি ঘুইরা দেখাইবো।আমরা তিনজন
বাইর হলাম আমি,হালিমা আর ঐ পিচকু
মামাতো ভাই।যেহেতু আমি এই
দেশে নতুন,রাস্তাঘাট অচেনা তাই
স্টিয়ারিং আমারে না দিয়া হালিমা নিজে ড্রাইভ
করলো (ওয়েস্টার্ন মাইয়া ভালোই
ড্রাইভিং)।
.
সারাদিন আমরা ঘুরলাম।অনেক জায়গায়
গেলাম,হালিমা তার অনেক বান্ধবির
লগে আমার মিট করিয়ে দিলো।
একদিনেই সে আমাকে অনেক কিছু
চিনিয়ে আনলো।ভিক্টোরিয়া
পার্ক,রিচমন্ড পার্ক,গ্রীন পার্ক,লন্ডন
জু,ব্রিটিশ মিউজিয়াম,দ্যা ব্রিটিশ
লাইব্রেরি ব্লা ব্লা ব্লা....
আরো কতো কি!
সপ্তাহখানেক এর মাঝে আমার ও
হালিমার মধ্যে বেশ ভালো ফ্রেন্ডশীপ
হলো।তখন অবদি আমি হেতির
সম্পর্কে তেমন কোনকিছুই জানতাম
না,ভাবতাম ওয়েস্টার্ন কালচারাল
মাইয়া আর কি হইবো সবাই যেইরাম হয়
সেইরাম ই তো হইবো।
কিন্তু না,আস্তে আস্তে আমার সব ভুল
ধারনাই দূর হলো।যতদিন
গেলো আমি তাকে দেখে ততই অবাক
হইতে লাগলাম!
সত্যি কথাডা হইলো হেতিরে আমার
ব্যাপক ভালো লাগে।
কয়েক মাস যাওনের পর.........
হঠাত্ কইরা আম্মা দেশ থাইকা ফোন
দিয়া জানাইলেন হালিমার
লগে আমার এঙ্গেজমেন্ট হইবো।
আমি তো এক পায়ে খাড়া তবুও একটু ভাব
নিলাম।
তারপর পুরো ব্যাপারটা জানবার
পারলাম।ছোটবেলা থাইকাই
নাকি হালিমার লগে আমার বিয়ার
কথা পাকাপাকি করা আছিলো।
কথাটা আমার অজানা থাকলেও
হালিমা ঠিকই জানতো আর তাই
হেতি আজ পর্যন্ত অন্য কোন পোলার
লগে সম্পর্ক করে নাই।ভাবতেও অবাক
লাগে! একটা বিদেশি মাইয়া আমার
মতো একটা অকর্মার
লাইগা অপেক্ষা কইরা আছে।এরপর
হালিমার প্রতি আমি আরো দূর্বল
হইয়া গেলাম।
.
এমনকি আমারে ইউ.কে পাঠানোর মূল
উদ্দেশ্য হইলো আমার গলায়
হালিমারে ঝুলানো ওহ থুক্কু,হালিমার
গলায় আমারে ঝুলানো।
আম্মা-আব্বার মাথায় যে এই প্ল্যান
আছিলো আমি একটুও টের পাইলাম না।
জাউঙ্গা ভালোই হইলো খারাপ না।
এঙ্গেজমেন্টের কিছুদিন
পরে নানা আয়োজনের মধ্যে আমার আর
হালিমার বিয়া সম্পন্ন হইলো।এখন
হালিমা আমার বউ।বিয়ার
পরে যে ব্যাপার গুলো আমায় অবাক
করলো,হালিমা পাঁচ ওয়াক্ত
নামাজি,কোরাআন তেলায়াত ও
করে,আমার ফেসবুক আইডিতে আমার যত
গুলান পিক আছে সব হেতি ডাউনলোড
করছে,কয়েকটা প্রিন্ট আউট কইরা ও
রাখছে।এসবকিছু কিন্তু
আমি আগে জানতাম না!
সত্যিই মাইয়াডা খুব ভালো কিন্তু
কপাল খারাপ,কারন আমারে হেতির
গলায় গিট্টু দিছে।
আমার ভিসার মেয়াদ
আরো বাড়ানো হইলো।তয়
আমি তো বেকার,অকর্মা।কোন কাজ
করতে আমার মন বসে না।একদিন
রাইতে বউ
আমারে বুঝাইয়া কইলো তারপর দিন
থাইকা আমি মামার
অফিসে নিজে থাইকা জয়েন করলাম।
এখন আর আমি অকর্মা না,আমিও
রোজগারি পোলা।
আমার বউটা ব্যাপক
ভালো,হেতি আমারে তাবিজ
কইরালছে।হেতির কোন কথাই
আমি না মাইনা পারিনা।
.
আমার
মতো একটা অকর্মা পোলারে হেতি মানুষ
করছে,সত্যিই হেতি জাদু পারে।বউ
আমার অনেক কেয়ার করে,সব কিছুতেই
আমায় হেল্প করে।
.
অফিসে যাওনের সময় আমি কোন শার্ট
গায়ে দিবো,কোন কোর্ট পড়বো,কোন
জুতা পায়ে দিবো,কোন পারফিউম
মাখবো সব হেতি নিজেই আমায়
মেইনটেইন কইরা দেয়।
হেতির কথা হইলো,কেউ
যাতে হেতিরে না কয় যে তোর
জামাই চীপ মাইন্ডের।
.
অফিসে থাকলে দুপুরে কল
দিয়ে জিগাইবো লাঞ্চ
করেছি কিনা,যতক্ষন পর্যন্ত আমি লাঞ্চ
করি নাই ততক্ষন হেতিও করবো না।এর
লাইগা আমি হেতিরে পাগলি বউ ও কই।
.
রাইতে ঘুমানোর সময় ঘুমের
দোয়া পইড়া আমার বুকে ফুঁ দিয়া তারপর
আমায় ঘুম পাড়াইবো।
এমন একটা বউ পাইয়া আমি খুব
লাকি ফিল করি নিজেরে।সত্যিই
সে অন্য মাইয়াগো থাইকা পুরাই
আলাদা, সর্বগুনে গুনবতী।আম্মার কথাই
ঠিক।আমার
এলোমেলো অগোছালো জীবনটা সে কত্তো সুন্দর
কইরা গুছাইয়া দিলো,আমারে মিঃপারফেক্ট
বানাই ফেললো।সি ইজ দ্যা গ্রেট বউ.....!
আই লাভ ইউ সো মাচ লক্ষী বউ।