মেনু

Drop Down MenusCSS Drop Down MenuPure CSS Dropdown Menu

সংকলন ১৬৭- ফেরাতে কি পারবে?

লিখাঃ নভেরা আলম

স্বভাবসুলভ ভাবে আজও পৃথিবীর সবচেয়ে ব্যস্ত মানুষের মত নির্ধারিত সময়ের ৫০ মিনিট পর ইরার কাছে পোঁছাল মিহান। এটা নিয়ে অবশ্য তার মধ্যে কোন অপরাধবোধ নেই। সে জানে যতই দেরী হোকনা কেন ইরা তার জন্য অপেক্ষা করবে।

-সব সময়ই তো দেরী করিস আজ কি একটু টাইমলি আসা যেত না? জানিসই তো সন্ধ্যার পর বাইরে থাকা বাবা পছন্দ করেন না।
-আচ্ছা ভুল হইসে...কি বলবি বল। এখনও সময় আছে তো ।
-তেমন কিছুনা। আমার বিয়ে। কাল এঙ্গেজমেনট । কিন্তু আমি জানি আর্থ ও হবে এবং আমাকে কালই চিটাগাং নিয়ে যাবে ওদের বাড়িতে । তাই তোর সাথে দেখা করতে এসেছি ...
-তাই...? কংগ্র্যাচুলেশন। কিন্তু কালই নিয়ে যাবে মানে কি? তুই গেলে আমার পড়াশোনার কি হবে? এসাইনমেনট গুলা করবে কে? আর তোর নিজের পড়ারই বা কি হবে?
-এত কিছু আপাতত ভাবছিনা। শুধু জানি বিয়েটা করে সবাইকে মুক্তি দিতে হবে।তুই ভাল থাকিস রে। আর এবার অন্তত সবকিছুতে একটু সিরিয়াস হ । আর কত এমন থাকবি। আমি যাই।
-কবে ফিরবি আবার?
-জানিনা... আমাকে বাসায় যেতে এখনি । ভাল থাকিস।

একটু পর আবার ফিরে এসে হাত থেকে একটা চুড়ি খুলে মিহানের হাতে দিল ইরা। "নে... যতদিন ভাল্লাগে সবগুলো একসাথে তোর কাছে রাখিস ।জানিনা এরপর আবার কবে দেখা হচ্ছে । গেলাম"...
সবগুলো ? ইরা সবসময়ই তার ওড়নার সাথে রঙ মিলিয়ে হাতে চার পাঁচটা কাঁচের চুড়ি পরে। দেড় বছর থেকেই দেখছে মিহান। আর গত চার মাস থেকেই যত বারই দেখা হয়েছে যাওয়ার সময় খুলে একটা চুড়ি মিহানের হাতে দিয়ে যেত । সে হিসাবে অনেক গুলোই হওয়ার কথা। কিন্তু মিহান তো এগুলো রাখেনি। কখনও রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতেই বেখেয়ালে ফেলে দিয়েছে। কখনো বা পকেটের মধ্যেই টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছে। আর সব ধকল সহ্য করে বাসায় যাওয়া পর্যন্ত যেগুলো টিকেছে ওগুলা হয়ত তার রুমের কোন এক কোনায় অযত্নে পড়ে আছে।

বাসায় যেয়েই হন্য হয়ে চুড়িগুলো খুঁজতে লাগলো মিহান ।না...আজকের টা ছাড়া আর একটাও নেই। মনটা প্রচণ্ড খারাপ হয়ে গেল মিহানের।
পাগলিটা কি আসলেই আর ভার্সিটিতে আসবেনা ... হুটহাট তাকে কল দিবেনা? মিহান কি শুধু চুড়ি গুলোই হারাল?নাকি অন্য কিছু? পাশের ঘরে উচ্চ স্বরে গান বাজছে..
"তুমি আমার পাশে বন্ধু হে বসিয়া থাক... একটু বসিয়া থাক..."
মিহানের মনে পড়ল এটা তার ইরা পাগলির প্রিয় গান। সবচেয়ে বেশী পছন্দ করে মিহানের কণ্ঠেই । অনেক কিছুই মনে পড়তে লাগল মিহানের ।অনেক কিছুই বুঝতে শুরু করল তার মন। নাহ... এবার ইরার কাছে যেতে দেরী করবেনা সে। মাত্র একটা রাত বাকি । এখনি যেতে হবে তাকে। কিছুতেই দেরী করা যাবেনা এবার...