মেনু

Drop Down MenusCSS Drop Down MenuPure CSS Dropdown Menu

সংকলন ১৫০- অদ্ভুত ভালবাসা

লেখক : - রুধির ধারা

বাসে উঠেই তানহা ফেসবুক লগ ই করল। দেখলো সৌরভ অনলাইন এ আছে
বরাবরের মতই ওর মুখে এক চিলতে হাসি খেলা করে গেল।
— ভাইয়া আজকে আবার শহরে যাচ্ছি
— কেন? তুমি না সেদিন শহরে গেলে? আজ আবার কি কাজ??
তানহার মাথায় একটু দুষ্টুমি খেলা করলো...
— নদী দেখতে যাই আমার তার সংগে আপনি তো আর নিয়ে গেলেন না?
— ও আচ্ছা ভালো তো।যাও ঘুরে এসো ভাল লাগবে।
তানহা জানতো সৌরভ ঠিকএই রিপ্লাই টাই দেবে।কোন ব্যাপারেই যেন ওর কোন
আগ্রহ নেই।প্রায় ১ বছর হতে চললো ওদের
পরিচয়,বন্ধুত্ত। ওদের পরিচয় টা ফেসবুকেই।তার পর
আস্তে আস্তে ওদের ভেতর খুব ভাল ১ টা বন্ধুত্ত গড়ে ওঠে।
তানহা এখনকার মেয়ে হলেও এখনো অনেক
টাই কনজারভেটিভ। ওর চেনা জানার গন্ডী খুব ই সীমিত।ছেলেদের
সংগে প্রয়োজন ছাড়া কথা বলেনা বললেই
চলে। সেই তানহার জীবনের মোড়টাই
ঘুরিয়ে দিল ফেসবুক।ফেসবুকেও যে ও সবার
সাথে ফ্রীলি মেশে এমন নয়।আর তাই এত
ফেসবুক ফ্রেন্ডের ভীরে অদভুত স্বভাবের
সৌরভের সাথেই ওর বন্ধুত্ত গড়ে ওঠে।
ছেলেটা আর সব ছেলেদের মত নয়।একটু
আলাদা।কেমন জানি একটু রোবটিক
স্বভাবের।ওর যখন যা ইচ্ছা হয় তাই ই করে।
কারো কথার ধার ধারেনা।আবার
মনটা একদম বাচ্চাদের মত নরম।কেমন জানি ১ টা মায়া লাগে।
অদভুত ছেলেটা চ্যাট করতে করতেই রোজ
ঘুমিয়ে যেত।আর তানহার তো রুটিন ই
হয়ে গেছে যতই ঘুম পাক শৌরভ
ঘুমালে তারপর ঘুমাতে যাওয়া। সব কিছু ঠিক ই ছিলো কিন্তু তানহাই
ধীরে ধীরে শৌরভের প্রতি উইক হয়ে পড়ে।
প্রথম দিকে ও নিজের এই ফিলিংসকে পাত্তা দেয়নি।কিন্তু
ধীরে ধীরে বুঝতে পারে সে সত্যিই
শৌরভ কে ভালবেসে ফেলেছে।তার
পুরো সত্তাটা জুড়ে শুধু ওই অদভুত ছেলেটা।
অথচ ওদের কারোরি নিজের প্রোফাইল
পিকচার না দেওয়া থাকাই তখন অবধি ও
শৌরভ কে দেখেওনি। তখন অবধি ফেসবুকের বাইরে কোন যোগাযোগ ও ছিলনা।
তানহা কখনো ওর ভালবাসার কথা শৌরভ
কে বলতে চায়নি।ও জানতো শৌরভ কোন
সম্পর্কে জড়াতে চায়না।ও চায় খুব
সুন্দরী ১ টা মেয়েকে বিয়ে করতে ।আর
ওকে একজন ভাল ফ্রেন্ড হিসেবেই দেখে।
আর তানহাও চায়নি ওদের ফ্রেন্ডশীপের ভেতরে অন্য কিছু এনে সম্পর্ক টা খারাপ
করতে।ও শুধু চায় যেকোন মূল্যে শৌরভ
কে হ্যাপি দেখতে তাতে করে নিজের যত
কষ্ট ই হোকনা কেন? তানহা নিজের লাইফেও
কখনো ভাবেনি বিয়ের আগে ও কাউকে ভালবাসবে।কিন্তু মানূষ
ভাবে এক আর হয় আরেক।ওর ক্ষেত্রেও তাই হলো
ও নিজেই এটা ঠীক মেনে নিতে পারতোনা।ও
তো সারাজীবন শুধু ১ জনকেই
ভালবাসতে চেয়েছে।আর ওর সেই
ভালবাসা নিজের অজান্তেই ও শৌরভ
কে দিয়ে বসে আছে।এখন
কিভাবে ভবিষ্যতে আর কাউকে ভালবাসবে।এসব ভেবে ও
নিজেকেই সবসময় অপরাধী ভেবে কষ্ট পেত।
কিন্তু একদিন ওর ই ভুলের কারণে ব্যাপারটা শৌরভ জানতে পারে।
শৌরভ ব্যাপারটা স্বাভাবিক ভাবেই
নিয়েছিলো।বলেছিলো এমন হতেই পারে। ব্যাপারনা।
আমরা তো আজীবন ফ্রেন্ড থাকবো।
কিন্তু শৌরভ জেনে যাবার পর থেকেই
তানহা মাঝে মাঝে খুব ইমোশোনাল
হয়ে যেত।ও শৌরভের প্রতি এত
বেশি weak হয়ে গেছিলো যে।
মাঝে মাঝে খুব পাগলামী করতো। শৌরভ
তানহার পাগলামী গুলা প্রথম দিকে চুপচাপ মেনে নিত।কিন্তু
পরে নানা কারণে মাঝে কিছুদিন
শৌরভের সাথে তানহার সম্পর্ক টা খারাপ হয়ে যায়।
শৌরভ তানহার সংগে আর আগের মত
কথা বলতোনা।মাঝে মাঝে রাগ
হইলে যা নয় তাই বলতো।শৌরভের অনেক
ফ্রেন্ড তাই তানহার মত ১ টা ফ্রেন্ড
না থাকলেও শৌরভের কিছু যায় আসেনা।
কিন্তু তানহার পুরোটা পৃথবী ই যেন শৌরভ।
তাই শৌরভের সব কথা সব
অবহেলা তানহা চুপচাপ সহ্য করতো খুব কষ্ট
পেলে চোখের জল ফেলতো।আবার নিজেই আগ বাড়িয়ে শৌরভের সাথে কথা বলতো।
বহুবার চেস্টা করেছে শৌরভের থেকে দুরে সরার কিন্তু পারেনি।যত
দুরে যেতে চেয়েছে ততই কি অদৃশ্য
টানে আরো কাছে টানতো তাকে ওই অদভুত ছেলেটা।
শৌরভ ও যত যাই হোক তানহার ওপরে বেশিক্ষন রাগ
করে থাকতে পারতোনা।হয়তো ওর ও পাগলী মেয়েটার
ওপরে মায়া পরে গেছিলো।এভাবেই কখনো রোদ কখনো বৃষ্টির মতো ওদের
মিষ্টি বন্ধুত্ত টা এখনো টিকে আছে। বাসে বসে শৌরভের সংগে চ্যাট
করতে করতে তানহা পুরোনো দিনের এসব
কথাই ভাবছিল। সামনের ৪ তারিখে শৌরভের সাথে ওর
ফ্রেন্ডশীপের ১ বছর পূর্ণ হবে। মাত্র ১ বছর অথচ মনে হয় যেন যুগ যুগ ধরে ওর
শৌরভের সংগে পরিচয়। মাথাটা হঠাৎ ই ঘুরে উঠলো আজ এক্সাম
ছিল তাই কাল প্রায় সারারাত ই জেগে ছিল তার ওপর টানা ৪
ঘন্টা পরিক্ষা দিয়েই আবার
জার্নি শহরের উদ্দেশে শরীর টা আর
চলছেনা তানহার। তারপরো যেতে হবে।এখন পর্যন্ত ও
সেভাবে একা একা চলাফেরা বা কেনাকাটা
করা শিখে উঠতে পারেনি।আজ ওর রুমমেট
আপু শহরে যাবে তাই আপুর সাথে আজ
না গেলে আর যাওয়াই হবেনা।যত কষ্ট ই
হোক আজ তাকে যেতেই হবে।ওদের
ফ্রেন্ডশিপের ১ বছর উপলক্ষে ও চায়
শৌরভের জন্য স্পেশাল কিছু করতে।
জীবনে প্রথম কোন ছেলের জন্য কিছু
করবে তাই খুব এক্সাইটেড।
ওর ইচ্ছা খুব ছোট কিন্তু খুব সুন্দর একটা গিফট দিবে।গিফট কোন
ব্যাপারনা কিন্তু ওটার ভেতরে তানহার
সব ভালবাসা জমা থাকবে।
যেইটা শৌরভের কাছে সারা জীবন থাকবে।
তানহাহয়তো হারিয়ে যাবে কিন্তু তানহার
স্রীতি হিসেবে ওটা থেকে যাবে শৌরভের কাছে।
তানহা খুবি সাধারণ একটা মেয়ে তাই
চাইলেও শৌরভের জন্য সে নিজের
ইচ্ছা মতো যা খুশি তাই করতে পারবেনা।
তাই ও চায় ওর সাধ্যমতো যতটুকু সম্ভব করতে।
তানহা নিজের জন্য প্রয়োজনের
বাইরে কখনো কিছু কেনেনা বললেই চলে।
ওর চাহিদাও খুব কম।তাই মার্কেটে গেলে খুব ১
টা ঘোরাঘোরি বা বাছা বাছি করেনা।
যেটা দরকার সেটা খুব সহজেই পছন্দ করতে পারে।
কিন্তু আজকের ব্যাপারটা পুরাই আলাদা।
তার জীবনের সবচাইতে স্পেশাল মানুষ
টার জন্য কিছু কিনবে।আজকে ওর কিছুই
যেন পছন্দ হচ্ছিলোনা।অনেক দোকান
ঘুরে ঘুরে অবশেষে খুব ছোট্ট কিন্তু খুব সুন্দর
১ টা গিফট পছন্দ করলো। ওখানে কাচের ভেতরে ছোট্ট সুন্দর ২
টা পুতুল সাজানো ছিলো।১ টা ছেলে পুতুল
আর ১ টা মেয়ে পুতুল।ওরা যেন পুতুল নয় স্বয়ং তানহা আর শৌরভ।
তারপর অনেক বেছে বেছে খুব সুন্দর ১ টা কার্ড কিনলো। ওখানে খুব সুন্দর কিছু
কথা লিখে দেবে। ওদিকে মাথাটা ব্যাথাটা ক্রমে বেড়েই
চলেছে। আরো কাজ বাকি। একি ক্যাম্পাসে পড়ার
কারনে আর দুজনেই হলে থাকে বিধায়
ইতিমধ্যে ওদের দুবার দেখা হয়েছে। কিন্তু
সেগুলার কথা ছিলো পুরোই আলাদা।
তখন সংগে আরো অনেকেই ছিল আর তখন
তানহার ভালবাসার ব্যপারে শৌরভ
কিছুই জানতোনা। তারপর থেকে তো তানহা লজ্জায় আর
শৌরভের সামনে পরতে চাইতোনা। ক্যাম্প
াসে গেলে মনে মনে শৌরভ কে খুজতো শুধু
মাত্র এক পলক দেখার জন্য।
কিন্তু কখনো ওর সামনা সামনি পরতে চাইতোনা।
তাই এবারের দেখা হওয়াটা তানহার
কাছে একটু অন্যরকম আবার খুব স্পেশাল ও।
জীবনে কোনদিন কোন ছেলের সংগে আর
এভাবে দেখা করেনি।তাই শৌরভ হঠাৎ করে সেদিন
দেখা করতে চাওয়ায় তানহা প্রথমে রাজি হয়নি।
পরে চিন্তা ভাবনা করে নিজেই শৌরভ কে বলে ১৫ দিন পর ওদের ফ্রেন্ডশীপের

বছর পূর্তি হবে সে দিন ই দেখা করবে।
আর এর মাঝে ওর এক্সাম ও শেষ হয়ে যাবে।
শৌরভ ও রাজি হয়ে যায়। গিফট কেনা শেষ এখন আরেকটা কাজ
বাকি।শৌরভের পছন্দের রং সবুজ তাই
তানহার খুব ইচ্ছা এবার ও সবুজ ড্রেস পরে গিয়ে সৌরভ কে সারপ্রাইজ
দিবে। তাই ড্রেসের সাথে ম্যাচিং করে এখনো ওড়না কেনা বাকি।
এক্সাম থাকায় ড্রেসটাও এখনো তইরি করতে দেওয়া হয়নি সামনে আরেকটা
এক্সাম আছে এসব চিন্তায় মাথাটা আবার
ঘুরে উঠলো। কেনাকাটা শেষে ক্যাম্পাস বাসে উঠে দেখে পা ফেলার মত
যায়গা নাই।এত ভীর।এদিকে দুদিনের পরিশ্রম আর ঘুমের অভাবে মাথা আর
চোখ দুটো যেন অবশ হয়ে আসছে।পা টা ও টলছে।
ও কোন রকমে ১ টা সীট ধরে দাড়িয়ে থাকলো।
বহু কষ্টে সে হলে পৌছে নিজের রুমে ঢুকেই বিছানায় শুয়ে পড়লো।
মাথাটা ততক্ষনে যেন ছিড়ে যাচ্ছে। গা গুলাচ্ছে আর চোখ দুটো যেন
পুরো অবশ হয়ে গেছে।পুরো ১ ঘন্টা তানহা বিছানায় পরে থাকলো।ওর পুরোনো মাথার
সমস্যাটাই আবার দেখা দিয়েছে। একবারে নিজের ওপরে এতটা প্রেশার
দেওয়া বোধহয় ঠিক হয়নি। তারপরো তানহার মনে একরাশ
প্রশান্তি। ও আজ শত কষ্ট সয়েও তার ভালবাসার
মানুষটার জন্য কিছু কিনেছে সে এক অন্যরকম অনুভুতি।
সেই সুখের কাছে তো হাজারো কষ্ট হার
মেনে যায়।সেদিন সারাটা রাত তানহা মাথা যন্ত্রনায়
ঘুমাতে পারলোনা।ভোরের দিকে নামায
পড়ে একটু ঘুমালো। তারপর দুদিন এটা সেটা নানা ব্যস্ততাই
কাটলো আর মাঝে মাঝেই তানহা গিফট
গুলো বের করে করে দেখে।আপুকে বার বার
জিজ্ঞেস করে আর কি করা যায়।ওর কান্ড
দেখে আপু শুধু মিটি মিটি হাসে।ও
নিজেও সারাদিন ভাবে আর কি করা যায়? শেষে ঠিক করে ওদিন
বাগান থেকে ফুল তুলে খুব সুন্দর ১ টা ফুলের
তোড়া বানাবে আর শৌরভ পুলি পিঠা খেতে খুব পছন্দ করে তাই ওর
জন্য এবার আলুর পুলি বানাবে। রুমে যখন
কেঊ থাকেনা তখন ও চুপি চুপি নতুন
কেনা সবুজ ওড়নাটা পড়ে ঘুরে ফিরে আয়নায়
নিজেকে দেখে আর এসব ই ভাবতে থাকে।
আর দুদিন বাদেই ৪ তারিখ।দুপুরে শৌরভ কে অনলাইন এ পেলো
—ভাইয়া....
—হুম বলো..
— ৪ তারিখের জন্য রেডি থেকেন কিন্তু।
—ক্যান?? ওদিন কি?? তানহা ভাবলো শৌরভ বুঝি ওর সাথে আবার' ফান করছে।
—ওদিন কি মানে? ওদিন আপনি আসবেন
আমার সংগে দেখা করতে।
—নাহ। আমি আসবনা।
—কেন?
—৪ তারিখ বলে কোন কথা নাই তাই। আমি আর আসবোনা।
—ভাইয়া আপনি কি ফান করছেন? আপনি কি সিরিয়াসলি আসবেন না?
— নাহ। আসবোনা। ওদিন টাকেই এত গুরত্ব দেবার তো কিছু নাই।
—আপনার কাছে না থাকতে পারে কিন্তু আমার কাছে আছে।
—সে জণ্যই তো আসবোনা।
তানহা নিজের কানকে যেন বিশ্বাস
করতে পারছিলোনা।
—ভাইয়া। আপনি এসব কি বলছেন?
—ভাইয়া, আমি আপনাকে শুধু এক বার
রিকুয়েস্ট করবো।শুধু ৫ মিনিটের জন্য আপনি একবার শুধু আসবেন ভাইয়া প্লীজ।
আমি আর কিচছু চাইনা।
—আচ্ছা। তুমি এটা নিয়ে এত সিরিয়াস
কেন বলোতো? ইচ্ছা করলে তো রোজ ই দেখা হতে পারে।
— আমি কিচ্ছু শুনতে চাইনা।আপনি শুধু
আসবেন" কিনা বলেন?
—নাহ।আসবোনা। তানহার মাথায় যেন
আকাশটা ভেংগে পড়লো।এ কয়দিনের সব
আশা কষ্ট গুলো এক নিমিশেই ধুলোয় মিশে গেলো।'
কেউ যেন একটা ধারালো ছুড়ি দিয়ে ওর ৃদয়টা ক্ষত
বিক্ষত করে দিলো।
—আছা ঠিক আছে। আপনার যা ইচ্ছা।
আমি আর আপনাকে কিচ্ছু বলবোনা।
—হুম।থ্যাংকস। দ্যাটস লাইক এ গুড গার্ল।
—আচ্ছা থাকেন।বাই
—কই যাও।রাগ করলা নাকি?
তানহার চোখ দিয়ে তখন অবিরাম অশ্রু
ধারা বয়ে যাচ্ছে।শৌরভ কে সে তার কিছুই বুঝতে দিলোনা।
—নাহ।রাগ করিনি।খেয়েছেন দুপুরে?
বলেই তানহা একটা স্মাইল ইমো দিল।
—হুম। তুমি?
তানহার বুকের ভেতরটা তখন ফেটে যাচ্ছিলো।আর স্বাভাবিক
ভাবে কথা বলা ওর পক্ষে সম্ভব ছিলোনা।
কাজ আছে বলে ও শৌরভ কে বাই দিয়ে দিলো।
তারপর বিছানায় লুটিয়ে পড়লো। পাশেই ওর কেনা সবুজ ওড়না,জোড়া পুতুল,আর সেই
কার্ড।সব পরে আছে। ইচ্ছা হলো সব ছুড়ে ফেলে দেয়।
ছিড়ে টুকরোটুকরো করে ফেলে।কিন্তু পারলোনা।ও
তো জানে কতটা ভালবাসা,কতটা কষ্ট আর পরিশ্রম মিশে আছে ওই জিনিষ
গুলোর মাঝে।কারো গ্রহণ করা বা না করার
সাথে তো ওর ভালবাসার কোন সম্পর্ক নাই।
রুমে আপু আর নীতু ঘুমাচ্ছে।ভাগ্যিস ও
কাদলে কোন শব্দ হয়না।তাই কেউ
তানহার নীরব আর্তনাদের কিছুই টের পেলোনা।
কিন্তু তানহার ইচ্ছা হচ্ছিলো চিতকার করে কান্না করতে।তাহলে বোধহয় একটু
শান্তি পেত। কাপা কাপা হাতে ফোনটা হাতে নিয়ে ও
শৌরভের ছবি বের করলো।ছেলেটার চেহারার ভেতর এমন কিছু
একটা আছে যা দেখলে তানহা সব কষ্ট ভুলে যায়।
কিন্তু তানহার চোখের জল আর আজ কিছুতেই বাধা মানেনা।
ফোটা ফোটা চোখের জলে পড়ে ফোনের
স্ক্রীনে শৌরভের মুখটা ঝাপসা হয়ে আসে।
অতি যত্নে সে জল টা সে মুছে দেয়। এত কষ্ট এত অবহেলায় ও শৌরভের ওপর ওর
সামাণ্য তম রাগ ক্ষোভ বা ঘৃণা নাই। কখনোই হয়না।বড়জোর একটু অভিমান হয়।
কিন্তু ওর সেই অভিমান ও কেউ কখনো ভাঙাতে আসেনা ।
তানহা যখন আশাভঙের তীব্র যন্ত্রনায় কাতর তখন কখন জানি আপু
এসে ওকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো। এবার তানহার সব বাধ ভেংগে গেলো।
বাচ্চা শিশুর মত আপুর বুকে মুখটা গুজে ডুকরে কেদে ঊঠলো। মনের
মাঝে হাজারো প্রশ্ন ঝড় তুলেছে কিন্তু মুখে কোন ভাষা নেই। শুধু একটা কথাই বললো....
—আপু
—কেন ভালবাসলাম???
—কেন???