মা অামার কালো রঙের
শাড়িটা কোথায় রেখেছে ? দেরি হয়ে যাচ্ছে যে,জানোনা অাজ
অামার বান্ধবির জন্মদিন।সুমাইয়ার
অাজ তার এক বান্ধবির জন্মদিনের
পার্টিতে যাবে। তাই একটু তারাতারি রেডি হচ্ছে। অনেক
খুজা খুজির পর শাড়িটা পেল।
সুমাইয়া তার বান্ধুবির বাসায় অাসার পর
থেকে দেখছে একটি ছেলে তাকে ফলো করছে,
মানে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছে।
সুমাইয়ার প্রথম বিরক্তিকর হলেও
পরে ভালো লেগে যায়।
অবশ্যই এই ভালো লাগার পেছনেও
একটা কারণ অাছে, অার সেটা হল ছেলেটার
অাভাগুভা টাইপের মুখের
মিষ্টি হাসিটা।। অারও ভালো লাগছে ছেলেটা হাসলে দুগালে মেয়েদের
মত টুল পরে। টুল পরলে ছেলেদের অনেক
সুন্দর দেখায়,ঠিক মেয়েদের মতো।
সুমাইয়া কর্ণারে দাড়িয়ে অাছে অার
ভাবছে ছেলেটিনি তার
সাথে এসে কথা বলবে।কিন্তু
না পুরো পার্টি শেষ তবুও ছেলেটা দূর
থেকেই দেখছে কাছে এলনা।
কি করবে এক প্রকার ক্রোধ
নিয়ে পার্টি থেকে চলে অাসলো।
তারপর প্রতিনিয়ত দেখছে ছেলেটা তাকে ফলো করে।
কখনো দেখছে শপিং করতে গিয়ে।
কখনো সিডি শপে সিডি কিনতে গিয়ে।
কখনো বা তার পিছু পিছু হাটতে।
তবুও কিছুই বলেনা সুমাইয়া।কারণ তার
বিরক্তি হয় না বরং ভালোই লাগছে।
কিন্তু একটু খারাপও লাগমগে,
কেননা ছেলেটি কিছুই বলেনা।
এবাবেই চলবে কি বুঝতে পারেনা সুমাইয়া।
.
এরপর কয়েকদিন ছেলেটা অাসলো না।
একটু খারাপ লাগছে সুমাইয়ার।সুমাইয়
া মিস করে ছেলেটিকে।
হঠাৎ কয়েকদিন পর
দেখলো বাসস্টপে দারিয়ে অাছে ছেলেটি। সুমাইয়া কিছুটা খুশি হল (মনে মনে)।
অসম্ভব একমায়া অাছে ছেলেটির মুখে।
সুমাইয়া লক্ষ করলো ছেলেটি অাড় চোখে দেখছে সুমাইয়াকে।ছেলেট
ি এখন প্রত্যেকদিন এখানেই এসে দাঁড়ায়।
কেননা প্রতিদিন এখান থেকেই ভার্সিটিতে যাই সুমাইয়া।
এভাবে অনেকদিন কেটেগেল তবুও ছেলেটা কিছুই বলছেনা।
সুমাইয়া মাঝে মাঝে ভাবে নিজেই
বলে দিবে। কিন্তু
না সে বলতে পারবেনা। কারণ ঐ
কথাটা ছেলেরাই
অাগে বলে মেয়েরা না। হঠাৎ একদিন সুমাইয়া দেখলো ছেলেটা তার
দিকেই অাসছে, একটু খুশি হল।
তখন ছেলেটা সুমাইয়ার দিকে একটা ডায়েরি বারিয়ে দিল। অার সুমাইয়ার চিনতে কষ্ট
হলোনা যে এটা তারেই ডায়েরী। যেটা গতকাল হারিয়েছিল।
সুমাইয়া একটা ধন্যবাদ
দিলো ছেলেটিকে ।তখন ছেলেটি বললো এটা অাপনি প্রতিদিনেই
দেখেন। সুমাইয়া বললো হ্যা, এটাতে অামার গুরুত্বপূর্ণ নোট লেখা অাছে।
তখন ছেলেটি সুমাইয়াকে বললো হ্যা দেখবেন। অনেক গুরুত্বপূর্ণ নোট থাকতেই পারে।
এই কথা বলে চলেগেল ছেলেটি,
সুমাইয়া ছেলেটি যাওয়ার দিকেই তাকিয়ে রইলো।
.
তার পরদিন ছেলেটিকে অার দেখতে পেলনা সুমাইয়া। সুমাইয়া ভাবলো হয়তো ছেলেটা কোন কাজে অাটকে গেছে তাই অাসে নাই।
কিন্তু এভাবে অনেকদিন চলেগেল ছেলেটি অাসেনা।
এদিকে সুমাইয়া ছেলেটাকে খুব মিস করছে।
সুমাইয়ার খুব কষ্ট হচ্ছে। এভাবে একমাস চলেগেল
ছেলেটি অাসেনা। অার এদিকে সুমাইয়া প্রতিদিনেই
অপেক্ষা করে ছেলেটির জন্য। কিন্তু ছেলেটা অার অাসেনা।
সুমাইয়া প্রতিদিনেই ছেলেটার জন্য কাঁদে কারণ
ছেলেটাকে যে অনেক বেশী ভালবাসে। সুমাইয়া ছেলেটার
নাম জানেনা এমনকি কোন মোবাইল নাম্বার নেই। তাই
সুমাইয়া অপেক্ষা করছে ছেলেটার জন্য কোনদিন ছেলেটা অাসবে।অার
যতদিন না অাসে ছেলেটি, ততদিন অপেক্ষায় থাকবে সুমাইয়া
.
৬মাস পর
.
প্রতিদিনের মতো অাজকেও সুমাইয়া বাসস্টপে যাচ্ছে।
যদি ছেলেটা অাসে। সুমাইয়া দূর থেকে দেখতে পাচ্ছে,
সেই ছেলেটার মতো কে যেন দাড়িয়ে অাছে বাসস্টপে এবং সুমাইয়ার
দিকে অপলকে থাকিয়ে অাছে। সুমাইয়া যতই সামনে এগোচ্ছে ততই
বেসে উঠছে সেই চিরচেনা ছেলের মুখটি।সুমাইয়ার চিনতে ভুল
হলোনা যে এটাই সেই ছেলে। যার জন্য
সুমাইয়া অপেক্ষ করছে । সুমাইয়া ছেলেটার
সামনে গিয়ে দাড়ালো এবং ঠাসিয়ে একটা থাপ্পড় মারলো।
অার বলছে এতদিন কই ছিলে। তুমি যানো
প্রতিদিনেই এই বাসস্টপে দাড়িয়ে থাকি সেই তিন
মাস যাবৎ । তোমার কথা প্রতিটা দিনেই ভেবেছি। অনেক
কেঁদেছি। তখন ছেলেটা কিছু একটা বলতে চাইলো। কিন্তু তখনি সুমাইয়া বলছে,,
হ্যা অামি জানি তুমি অামার ডায়রিতে একটি চিঠি দিয়েছিলে,,
কিন্তু তুমি জাননা মেয়েরা বই,ডায়রির লাস্ট পিস্টা খুলেনা।
অামি ১সপ্তাহ পর তোমার চিঠি পায়। যেখানে লেখা ছিলো তুমি অামার
জন্য পার্কে অপেক্ষা করবে। অামি তারপর অনেক দিনেই পার্কে গিয়েছি। তখন ছেলেটা বলছে, সেই দিন তোমার ডায়রিটা দিয়ে যাওয়ার পর অামি রাস্তায় এক্সিডেন্ট করি। যার
কারণে অামি ৬ মাস হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম।
গত কালেই ছারা পেলাম। তুমি যদি সেই দিন নাও অাসতে,
তাহলে তবুও তোমাকে ভালবাসে যেতাম দূর থেকে।
তখন সুমাইয়া অারেকটি থাপ্পড় মারলো ছেলেটার গালে,, অার
বলে ঐই তুমি জানোনা মেয়েরা ভালবাসি কথা অাগে কখনোই
বলেনা। অামিও তোমাকে সেই প্রথম থেকেই
ভালবাসতাস। তখন ছেলেটি বলে, তুমি কি অামায়
অাজও ভালবাসো। তখন সুমাইয়া ছেলেটাকে জরিয়ে ধরলো।
অার কাঁদতে কাঁদতে বললো, হ্যা অামি তোমাকে অাজও
ভালবাসি। তখন ছেলেটাও কেঁদে দিলো,, বাসস্টপের সবাই দেখছে তাদের। তাদের কোন এদিকে খেয়াল নেই।এ যেন সুখের কাঁন্না দেখুক না সবাই। তাদের কিছুই যাই অাসেনা,,,,!
.
বিঃদ্র :-সত্যিকার ভালবাসা হারিয়ে যায় না।অপেক্ষার পরেও, অঅপেক্ষা করতে জানে।