মেনু

Drop Down MenusCSS Drop Down MenuPure CSS Dropdown Menu

সংকলন ৩২- ভয়ংকর সেই কালা পোল

এই ঘটনাটি আমার মেঝো ফুফুর কাছ
থেকে শোনা। ফেনী থেকে পরশুরাম গামী যে রেল
লাইনটি আছে একসময় ভোর ৫টা থেকে রাত
৯টা পর্যন্ত একটি ট্রেন এই পথে নিয়মিত যাতায়াত
করতো।বৃটিশ আমলে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ত্রিপুরা রাজ্যে মালামাল নেয়ার
জন্য এই লাইনটি তৈরি করা হয়।বর্তমানে অবশ্যই
এই লাইনে সব ধরনের ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে
আজ থেকে ত্রিশ বছর আগের কথা।আনন্দপুর
ইউনিয়নের কালিহাট নামক স্থানে কালা পোল নামের একটি জায়গা আছে।আর সেই
কালা পোলের পাশে ছিল ছোট্ট একটি গ্রাম নাম তার ধোঁয়াছরি।ছবির
মতই দেখতে সুন্দর ছিল সেই গ্রাম খানি।
চারদিকে ছিল তার সবুজে ভরা। দেখলে যে কার চোখ জুড়িয়ে যেত। এই এলাকায় তখন বিদ্যুত্ আসেনি তাই রাত একটু গভীর হলে চারপাশে সুনসান
নীরবতা নেমে আসতো।আর সেই নীরবতার মাঝে ঝিঁঝিঁ পোকার শব্দ আর মাঝে মাঝে খেঁক শেয়ালের ডাক ছাড়া কিছু শুনা যেতনা। একদিন এই গ্রামের এক মেয়ের বিয়ের আসর
থেকে যৌতুকের দাবীতে বর চলে যায়।
এভাবে বিয়ে আসর থেকে বর চলে যাওয়ার
কারনে সেদিন সারা রাত মেয়েটি এবং তার মা বিলাপ করতে করতে কান্নাকাটি করে।
পরে ফজরের আযান দেয়ার একটু আগে মেয়েটি লজ্জা শরমের
ভয়ে ঐ কালা পোলের পাশে রেল গাড়ির
নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে।
আত্মহত্যা পরে তার দেহটি পাওয়া গেলে ও মাথাটি কোথাও
খুঁজে পাওয়া যায়নি। গ্রাম বাসি অনেক খুঁজাখুঁজি করেও
মাথাটি না পেয়ে পরে শুধু দেহটি দাফন
করে। এই ঘটনার কয়েক দিন পরের কথা। একদিন
গভীর রাতে বিকট এক কান্নার আওয়াজ শুনের
গ্রামের সব মানুষের ঘুম ভেঙ্গে গেলো।তারা লক্ষ্য
করলো বিলাপের সুরের মত
একটি কান্নার আওয়াজ তাদের কানে ভেসে আসছে।আর কান্নার
আওয়াজটি আসছিলো ঠিক কালা পোলের ঐ দিক থেকে।সবার কাছে কান্নার
আওয়াজটি অতি পরিচিত মনে হলে ও কেউ
সাহস করে ঘর থেকে বের হয়নি।পরদিন
সকালে গ্রামের মানুষ ঐ স্থানে গিয়ে দেখে কে যেন রেল লাইনের
পাশে ছোট্ট একটা গর্ত খুঁড়ে গেছে।তার পর
থেকে প্রায় সময় গভীর রাতে বিলাপের
সুরের মত সে কান্নার আওয়াজ শুনা যেত।
একদি চাঁদনী প্রসার গভীর রাতে গ্রামের
কিছু যুবক যাত্রাপালে দেখে বাড়িতে ফিরছিল।
গ্রামে ঢুকার পথে হঠাত্ করে তাদের চোখ গেল
কালা পোলে ঐ দিকে। তারা লক্ষ্য করল রেল লাইনের উপর
সাদা পোশাক
পরা একটি মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
কিন্তু তার দেহের সাথে মাথাটি ছিলনা।
ঠিক সে সময় মেয়েটি বিলাপের সুরের মত কান্না শুরু
করে দিল। মাথা বিহীন মেয়েটি কিভাবে শব্দ করছে তা ভেবে যুবকরা সবাই অবাক
হয়ে গেল। এই দৃশ্য দেখে যুবকেরা তখন ভয়ে গ্রামের
দিকে দৌঁড়
দিল।পরদিন সকালে এই
ঘটনা তারা মসজিদের ইমাম সাহেব
কে জানালো।
সব শুনে ইমাম সাহেব গ্রাম
বাসিকে রাত্রি বেলা ঐ
কালা পোলের দিকে যেতে নিষেধ করেন।
সেদিন রাতে কে যেন মসজিদের ইমাম
সাহেব কে স্বপ্ন দেখালো মেয়েটির
মাথা খুঁজে বের করতে। আর সে মাথা কবরে দাফন করতে। স্বপ্ন দেখার পরদিন
ইমাম সাহেব গ্রাম বাসিকে নিয়ে কালা পোলের
আশেপাশে মাথাটি খুঁজতে বের হলেন।এক সময় কালা পোল থেকে আধা কি:মি:
দূরে একটি ধান ক্ষেত থেকে মাংশ পচা মাথাটি উদ্ধার করে।
পরে সেখান থেকে মাথাটি এনে কবরে দাফন করে।
সেদিনের পর থেকে গ্রামের মানুষ আর কখনো সেই
বিকট শব্দের কান্নার আওয়াজ শুনে পায়নি।