মেনু

Drop Down MenusCSS Drop Down MenuPure CSS Dropdown Menu

সংকলন ৬৬- রিতা ও মা - মোঃ বদরুদ্দোজা বদর

মা। ছোট একটি শব্দ। এই একটি শব্দের মাঝে লুকিয়ে আছে অনেক ভক্তি, ভালোবাসা, আদর, মমতা। অনেক ত্যাগের বিচিত্র অভিব্যক্তি।
মাকে ভালোবাসে না এমন হতভাগা ও পাষাণ হৃদয় এই পৃথিবীতে খুব কমই আছে। মাকে সবাই ভালোবাসে মনে প্রাণে। রিতাও মাকে ভালোবাসতো। বয়স ৮ বছর। ঢাকা বছিলা বস্তির আদরের মেয়ে। বাবা নেই, দুঃখের সংসার। কোনমতে ছোট ভাই ও মাকে নিয়ে দিন কাটায়।
আজ ৫ই এপ্রিল।
পনের দিন থেকে একটি ঘোষণা শোনা যাচ্ছে। সরকারী দলের পক্ষ থেকে কিছু রিলিফ দেওয়া হবে। তাই বস্তির সবাই ভোর থেকেই লাইন ধরেছে। ৮ টা পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পর শুনা যায় রিলিফ আগামীকাল দেওয়া হবে। এদিকে রিতার মা ক’দিন থেকে ভীষণ অসুস্থ।
ঔষধের প্রয়োজন। টাকা নেই ! কী করার!
আজ আবার সেই রিলিফ দেওয়ার কথা। রিতা রিলিফ আনতে যাবে। মা বাধা দিল।
মা তুমি বাধা দিও না, রিলিফের চাউল বিক্রয় করে তোমার জন্য ঔষধ, ভাল খাবার ও ভাইয়ার জন্য নতুন জামা নিয়ে আসব … বলেই দৌঁড়ে চলে যায় রিতা। দুপুর গড়িয়ে বিকেল। রিতা ফিরছে না। মার মন অস্থির হয়ে ওঠে। বস্তির অন্যান্য লোকদের জিজ্ঞাসা করে কোনসদুত্তর পেল না। একটুপর! দূর থেকে মানুষের শোরগোলের আওয়াজটি বস্তির কাছে চলে এলো। কে যেন গভীর ভাবে বলছিল-
‘রিতা রিলিফের চাউল পেয়ে মহা খুশী। হন্তদন্ত ছুটতে গিয়ে হোচট খেয়ে পড়ে গেল রাস্তার পাশে। হাত থেকে পড়ে গেল চাউলের ব্যাগ। মা!
ওমা ! তোমাকে সুস্থ… বলতেই!! হঠাৎ সামনে থেকে আসা ট্রাক ব্রেক কন্ট্রোল হারিয়ে আঘাত করে রিতার মাথায় ! লুটে পড়ে মাটিতে। হারিয়ে যায় প্রভুর ডাকে।
কথাগুলো কানে আসতেই জ্ঞান হারালো রিতার মা। শত চেষ্টা করেও জ্ঞান ফিরাতে পারল না কেউ। সেই জ্ঞান হারানোটাই নিয়ে গেল মৃত্যুর পথে। দুজনই চির শায়িত হয়ে রইল পাশাপাশি দু কবরে। আজও সেই কবরের নেম প্লেটে লিখা রয়েছে “ রিতা ও মা”