এ অবস্থা থেকে উত্তরণের কোন উপায় আল্লাহ্ অবশ্যই বের করে দিবেন.........।।
৬১৯ খৃস্টাব্দ, নবুয়তের দশম বর্ষ। মে মাসের শেষ অথবা জুন মাসের প্রথম দিকে রাসুল (সাঃ) আল্লাহ্মনোনীত একমাত্র দ্বীন ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে তায়েফে গমন করেন। তিনি তায়েফে প্রায় দশ দিনঅবস্থান করেন, সঙ্গে ছিলেন রাসুল(সাঃ) এর মুক্ত করা ক্রীতদাস যায়দ বিন হারিসা(রাঃ)। এ সময়কালেতিনি তায়েফের প্রায় সকল নেতৃস্থানীয় লোকের কাছে দ্বীন ইসলামের দাওয়াত নিয়ে যান। তায়েফেরলোকেরা ইসলামের দাওয়াত তো গ্রহন করেইনি, বরঞ্চ রাসুল(সাঃ) এর উপর নেমে আসে সীমাহীনঅপমান ও নির্যাতনের খড়গ। তারা তায়েফের দুর্বৃত্ত যুবকদের রাসুল(সাঃ) এর বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেন। ঐদুর্বৃত্তরা রাসুল(সাঃ) কে পাথরের আঘাতে রক্তাক্ত ও জর্জরিত করতে থাকে। এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে যায়দবিন হারিসা(রাঃ) মানবঢাল হিসেবে রাসুল(সাঃ) কে পাথরের আঘাত হতে রক্ষা করার চেষ্টা করতে থাকে।এক পর্যায়ে নবীজি তায়েফ থেকে বের হয়ে নিকটবর্তী একটি আঙ্গুরের বাগানে আশ্রয় নিয়ে নিজেকে রক্ষাকরেন এবং আল্লাহর নিকট দু'আ করেন। কিছু সময় অবস্থানের পর রাসুল(সাঃ) বাগান থেকে বের হয়েমক্কার পথে রওয়ানা হন। দুঃখ দুশ্চিন্তায় তিনি মানসিকভাবে ছিলেন চরম বিপর্যস্ত।
পথিমধ্যে আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য এবং বিজয়ের সুসংবাদ নিয়ে পবিত্র কুরআনের আয়াত নাযিল হয়। এসাহায্য এবং বিজয়ের সুসংবাদে রাসুল(সাঃ) এর মন থেকে তায়েফের দুঃখ, কষ্ট ও নির্যাতনজনিত হতাশারকালো মেঘ কেটে যায়। রাসুল(সাঃ) দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হন যে, উনি পুনরায় মক্কায় ফিরে যাবেন এবং মানুষকে দ্বীনইসলামের দিকে আহবান করবেন।
এ সময় যায়দ বিন হারিসা(রাঃ) অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন এবং রাসুল(সাঃ) কে জিজ্ঞাসা করেন, "আপনিকি করে মক্কায় যাবেন? মক্কার অধিবাসীরা তো আপনাকে সেখান থেকে বের করে দিয়েছে।" জবাবেরাসুল(সাঃ) বলেন, "হে যায়দ! তুমি যে অবস্থা দেখছ, এ অবস্থা থেকে উত্তরণের কোন উপায় আল্লাহ্অবশ্যই বের করে দিবেন। আল্লাহ্ অবশ্যই তাঁর দ্বীনকে সাহায্য করবেন এবং তাঁর নবীকে জয়যুক্তকরবেন।"
প্রিয় সহযোদ্ধারা, বর্তমান সময়ে এই জনপদের মুসলমানরা অত্যন্ত গভীর সঙ্কটে আপতিত মনে হচ্ছে।সরকার কর্তৃক নির্বিচারে আলেম হত্যা, ইসলামিক সংস্কৃতি ও বিশ্বাসের উপর চরম আঘাত,বায়বীয় ওকল্পিত সাজানো প্রহসনের মাধ্যমে শীর্ষ মুসলিম নেতৃবৃন্দকে নির্মূলের প্রচেষ্টা, ইসলাম বিদ্বেষী ব্লগার ওসুশীলচক্রের চরম উল্লাস ও উল্লম্ফন, কিছু শ্বাপদসম মানুষ কর্তৃক গণহত্যার পক্ষে সাফাই মুসলিমদেরনিদারুণ মানসিক যাতনার মধ্যে ফেলেছে। কিন্তু, এই অবস্থায় ও আমাদের হতাশ হবার উপায় নেই। যুগযুগ ধরে আমাদের প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে রাসুল(সাঃ) এর সেই অমর বাণী, "এ অবস্থা থেকেউত্তরণের কোন উপায় আল্লাহ্ অবশ্যই বের করে দিবেন।"