এর পরের আয়াতে আল্লাহ ﷻ আমাদেরকে মুত্তাকী (আল্লাহর ﷻ প্রতি পূর্ণ সচেতন) হওয়ার জন্য শর্তগুলো সম্পর্কে বলছেন—
"যারা মানুষের চিন্তার ক্ষমতার বাইরে এমন বিষয়ে বিশ্বাস করে, নামায প্রতিষ্ঠা করে এবং তাদেরকে আমি যা দিয়েছি তা থেকে খরচ করে;"(সূরা বাকারাহ-৩)
يُؤْمِنُونَ অর্থ যারা পূর্ণ বিশ্বাস করে। ঈমান একটি বড় ব্যাপার। শুধু ধর্মীয় ব্যাপারে জ্ঞান থাকলেই ঈমান আনা যায় না। ঈমান অর্থ পূর্ণ নিশ্চয়তার সাথে বিশ্বাস করা।[৪] ইবলিসের বিশাল জ্ঞান ছিল। সে তার জ্ঞান, তার ইবাদাত দিয়ে এতই উপরে উঠে গিয়েছিল যে, সে স্বয়ং আল্লাহর ﷻ সাথে সরাসরি কথা পর্যন্ত বলতে পারতো। কিন্তু এতো কিছুর পড়েও তার ঈমান ছিল না, সে আল্লাহর ﷻ প্রতি পুরোপুরি অনুগত হতে পারেনি।
الغيب (আল-গাইব) অর্থ এমন কিছু যেটা মানুষের পক্ষে পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপলব্ধি করা সম্ভব নয়, কোনো পদার্থ বিজ্ঞানের সুত্র দিয়ে ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়, অদেখা, অজানা, মানুষের চিন্তার ক্ষমতার বাইরে এমন সব ব্যাপার।[৪] এই অদেখা বিষয় নিয়েই হচ্ছে আজকের যুগের ‘আধুনিক’ মানুষের যত সমস্যা। আধুনিক মানুষ কোনোভাবেই আত্মা, ফেরেশতা, জ্বিন, জান্নাত, জাহান্নাম, পূর্বনির্ধারিত ভাগ্য —এই সব অদেখা জিনিসের উপর বিশ্বাস করতে পারছে না। তারা অনেকে হয়তো মুখে বলে যে, তারা মুসলমান। জান্নাত, জাহান্নাম, কিয়ামত —এইসব ব্যাপারে তারা ঠিকই বিশ্বাস করে, কিন্তু আসলে সেটা শুধুই মুখের কথা। মুসলিম নাম নিয়ে থাকতে হলে যেহেতু এইসব ব্যাপারে সবার সামনে উল্টোপাল্টা কিছু বলা যায় না, সেহেতু তাদেরকে সাধারণত এই সব অদেখা, অজানা জিনিসের বিরুদ্ধে মুখ খুলে কিছু বলতে দেখা যায় না। কিন্তু তাদের মনের ভেতরে মোটেও এই সবের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস নেই।
এর কারণ হলো, বিংশ শতাব্দীর বিজ্ঞান এবং মিডিয়া মানুষের মধ্যে একটা ধারণা বদ্ধমূল করে দিয়েছে যে, যেটা মানুষের পঞ্চ ইন্দ্রিয় দিয়ে উপলব্ধি করা যায়, কোনো যন্ত্র দিয়ে পরিমাপ করা যায়, শুধু সেটাই বাস্তবতা, বাকি সব অবাস্তব। যেহেতু আত্মাকে কোনো যন্ত্র দিয়ে সনাক্ত করা যায় না, তাই আত্মা বলে কিছু নেই। যেহেতু ফেরেশতাদেরকে কোনো রাডার দিয়ে ধরা যায় না, ফেরেশতা বলে কিছু নেই, এগুলো সব ‘গাঁজাখুরি’ কথা বার্তা। এই মহাবিশ্ব একদিন পুরোটা ধ্বংস হয়ে যাবে, মানুষের শরীরের প্রতিটা অণু পরমাণু নষ্ট হয়ে যাবে, কিন্তু তারপর ঠিকই সব মানুষ আবার একদম আগের অবস্থায় ফেরত যাবে এবং তাদেরকে তাদের পুরো জীবনটা রিপ্লে করে দেখানো হবে —এই সব ‘অবাস্তব’ কথাবার্তা তারা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারে না। মানুষের প্রত্যেকটা চিন্তা, কথা, কাজ কোনো অদৃশ্য পদ্ধতিতে রেকর্ড হচ্ছে, যেটা একদিন তাদেরকে দেখানো হবে তাদের বিচার করার জন্য, প্রযুক্তিগত দিক থেকে এই অসম্ভব ব্যাপারটিতে তারা কোনো ভাবেই মনে প্রাণে বিশ্বাস করতে পারে না। তাদের মনের ভেতরে সবসময় একটা প্রশ্ন থেকে যায় যে, বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি দিয়ে যেটা কোনোভাবেই সম্ভব না, সেটা নিশ্চয়ই সৃষ্টিকর্তার পক্ষেও অসম্ভব।
অথচ মানুষ ডার্ক ম্যাটার দেখেনি বা কোনো ধরণের যন্ত্রে তাদের উপস্থিতি সনাক্ত করতে পারেনি, কিন্তু ডার্ক ম্যাটার নিয়ে তার ‘তাকওয়ার’ কোনো অভাব নেই। স্থূল বিবর্তনের (macroevolution) পক্ষে কোনোই প্রমাণ এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি, কিন্তু বিজ্ঞানিদের বিবর্তন নিয়ে এতই দৃঢ় ঈমান যে, ডারউইনের বিবর্তনবাদ ‘থিওরি’কে তারা স্কুলের কারিকুলামের অন্তর্ভুক্ত করে দিয়েছে। কোটি কোটি ছেলে মেয়ে স্কুলে শিখছে যে, ডারউইনের বিবর্তনবাদ একটি ফ্যাক্ট — প্রতিষ্ঠিত সত্য, এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। পৃথিবীতে হাজার হাজার শিক্ষিত উচ্চ ডিগ্রিধারী বিজ্ঞানীদের ‘গাইবে’ এতই বিশ্বাস যে, তারা প্রতি বছর ৭ মিলিয়ন ডলার খরচ করে মহাবিশ্বে কোনো বুদ্ধিমান প্রাণীর রেডিও সিগন্যাল খুঁজে পাওয়া যায় কি না, তার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। এই সব বিজ্ঞানীরা মনে প্রাণে বিশ্বাস করে যে মহাবিশ্বে এলিয়েন আছেই, থাকতে বাধ্য। অথচ গত পঞ্চাশ বছরে তারা কোনো ধরণের ইংগিত খুঁজে পায়নি।[১০১] অনেকে তাদের পুরো জীবন ব্যায় করেছে তাদের এইসব ‘গাইবের’ উপর বিশ্বাস রেখে। তারা এগুলো সবই পারে, কিন্তু মহান আল্লাহর ﷻ অসীম ক্ষমতার উপর, তাঁর অদৃশ্য সৃষ্টির উপর, তাঁর বিচার দিনের উপর কোনোভাবেই বিশ্বাস করতে পারে না। ডাবল স্ট্যান্ডার্ড কাকে বলে!
আজকাল মিডিয়াগুলোতে ব্যাপকভাবে নতুন এক ‘গাইবের’ প্রচারণা শুরু হয়েছে: মাল্টিভার্স থিওরি। বিজ্ঞানীরা দাবি করছে এই মহাবিশ্বের কোনো সৃষ্টিকর্তা নেই। আমাদের মহাবিশ্বটি এক মহা-মহা-মহাবিশ্বের বা মাল্টিভার্স-এর মধ্যে থাকা ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন মহাবিশ্বের মধ্যে একটি। বিজ্ঞানীরা কোনো ভাবেই ব্যাখ্যা করতে পারছে না: কীভাবে আমাদের এই মহাবিশ্বটি এত নিখুঁত ভাবে, এত পরিকল্পিত ভাবে প্রাণের সৃষ্টির জন্য অত্যন্ত সূক্ষ্ম ভারসাম্য রক্ষা করে তৈরি করা হয়েছে। ইলেকট্রনের ভর, পরমাণুর মধ্যে ইলেক্ট্রো উইক ফোর্স, ম্যাটার এবং এন্টি ম্যাটার-এর পরিমাণের মধ্যে থাকা অচিন্তনীয় সূক্ষ্ম পার্থক্য, পদার্থ বিজ্ঞানের ধ্রুবকগুলোর মানের মধ্যে কল্পনাতীত সূক্ষ্ম ভারসাম্য —এরকম শত শত ভারসাম্য কীভাবে কাকতালীয় ভাবে মিলে গেলো, কীভাবে এগুলো সব অত্যন্ত নিখুঁতভাবে নির্ধারণ করা হলো, যাতে করে নক্ষত্র, গ্রহ, পানি, ভারী মৌলিক পদার্থ সৃষ্টি হয়ে একদিন প্রাণের সৃষ্টি হয়, যেই প্রাণ বিশেষভাবে বিবর্তিত হয়ে একদিন মানুষের মতো বুদ্ধিমান প্রাণীর জন্য প্রকৃতিকে উপযুক্ত করে দেবে —এর পক্ষে তারা কোনোই ব্যাখ্যা দিতে পারছে না।
যেমন: অভিকর্ষ বল যদি ১ বিলিয়ন ভাগের এক ভাগ বেশি বা কম হতো, তাহলে কোনো গ্রহ সৃষ্টি হতো না, প্রাণের সৃষ্টির কোনো সম্ভাবনাই থাকতো না। বিগ ব্যাংগের সময় যে শক্তির প্রয়োজন ছিল সেটা যদি ১০৬০ ভাগের এক ভাগ এদিক ওদিক হতো, তাহলে অভিকর্ষ বলের সাথে অসামঞ্জস্য এত বেশি হতো যে, এই মহাবিশ্ব সৃষ্টি হয়ে বেশিক্ষণ টিকে থাকতে পারতো না। ১০৬০ হচ্ছে ১ এর পরে ৬০টি শূন্য বসালে যে বিশাল সংখ্যা হয়, সেটি। বিগ ব্যাংগের মুহূর্তে প্ল্যাঙ্ক সময়ের পর মোট পদার্থের যে ঘনত্ব ছিল, সেটা যদি ১০৫০ ভাগের এক ভাগও এদিক ওদিক হতো, তাহলে মহাবিশ্ব সৃষ্টি হতো না, যাতে আজকের মতো নক্ষত্র, গ্রহ এবং প্রাণ সৃষ্টি হতো।
এত গুলো সূক্ষ্ম ভারসাম্য এক সাথে মিলে যাওয়া যে, কোনো ভাবেই গাণিতিক সম্ভাবনার মধ্যে পড়ে না, এটা তারা বুঝে গেছে। তারা এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে এক নতুন থিওরি নিয়ে এসেছে —আমাদের মহাবিশ্ব আসলে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন মহাবিশ্বের মধ্যে একটি। একেক মহাবিশ্বে পদার্থ বিজ্ঞানের ধ্রুবকগুলোর একেক মান রয়েছে। কিছু মহাবিশ্ব বেশিদিন টিকে থাকতে পারে না, কারণ সেই মহাবিশ্বে পদার্থ বিজ্ঞানের ধ্রুবকগুলোর মানগুলো এমন হয় যে, তা মহাবিশ্ব ধ্বংস করে দেয়। আর কিছু মহাবিশ্বে পদার্থ বিজ্ঞানের ধ্রুবকগুলোর মান এমন হয় যে, সেখানে কোনোদিন সূর্যের মতো একটি তারা এবং পৃথিবীর মতো একটি গ্রহ তৈরি হতে পারে না। যার ফলে সেই সব মহাবিশ্বে কোনো প্রাণ সৃষ্টি হয় না। পদার্থ বিজ্ঞানের সুত্রগুলোর যতগুলো সম্ভাব্য সম্ভাবনা হওয়া সম্ভব, সেটা যতই কল্পনাতীত, অবাস্তব একটা ব্যাপার হোক না কেন, যা কিছু হওয়া সম্ভব তার সবকিছুই সেই মাল্টিভারসের ল্যান্ডস্কেপে কোথাও না কোথাও হয়েছে এবং হয়ে যাচ্ছে। আমরা মানুষেরা, সেই অসীম সংখ্যক সম্ভাবনাগুলোর একটি, যেখানে পদার্থ বিজ্ঞানের হাজার হাজার নিয়ম কাকতালীয়ভাবে, কল্পনাতীত সূক্ষ্ম ভারসাম্য রক্ষা করে কোনোভাবে মিলে গেছে এবং যার কারণে আজকে আমরা এই মহাবিশ্বে দাঁড়িয়ে নিজেদেরকে উপলব্ধি করতে পারছি।
তাদের দাবিটা হচ্ছে এরকম— ধরুন, কোনো এক সমুদ্রের তীরে বালুতে আপনি একটি মোবাইল ফোন পড়ে থাকতে দেখে তাদেরকে জিগ্যেস করলেন, এই মোবাইল ফোনটা নিশ্চয়ই কোনো বুদ্ধিমান সত্ত্বা বানিয়েছে। তারা বলবে, “না, কোটি কোটি বছর ধরে সমুদ্রের পানি বালুতে আছড়িয়ে পড়তে পড়তে এবং ঝড়, বৃষ্টি, বজ্রপাতের ফলে বালুতে রায়ায়নিক বিক্রিয়া হয়ে একসময় এই মোবাইল ফোনটি তৈরি হয়েছে। এটি কোনো বুদ্ধিমান সত্ত্বা বানায় নি, এটি পদার্থ বিজ্ঞানের সুত্রগুলোর অসীম সব সম্ভাবনাগুলোর একটি। এরকম কোটি কোটি সমুদ্রের তীর আছে যেগুলোর একটিতে হয়তো শুধুই একটা প্লাস্টিকের বাক্স তৈরি হয়েছে, পুরো মোবাইল ফোন তৈরি হতে পারেনি। কিছু তীর আছে যেখানে হয়তো একটা ডিসপ্লে পর্যন্ত তৈরি হয়েছে, কিন্তু কোনো বাটন তৈরি হয়নি। আপনি, আমি আসলে সেই অসীম সব সমুদ্রের তীরগুলোর বিশেষ একটিতে দাঁড়িয়ে আছি, যেখানে পদার্থ বিজ্ঞানের সব সম্ভাবনা কাকতালীয় ভাবে মিলে গেছে, যে কারণে এই তীরে একটি সম্পূর্ণ মোবাইল ফোন সৃষ্টি হয়েছে।” এই হচ্ছে মাল্টিভার্স থিওরি!
মাল্টিভার্স থিওরির পক্ষে বিন্দুমাত্র প্রমাণ নেই। কিন্তু এনিয়ে শত শত বই, ডিসকভারি চ্যানেলে শত শত প্রোগ্রাম, হাজার হাজার লেকচার এমন ভাবে দেওয়া হচ্ছে যে, এটা বিগ ব্যাং এর মতই একটা ফ্যাক্ট। বিজ্ঞানীদের এক বিশেষ দল, যাদের মধ্যে সবাই নাস্তিক, এবং শুধু নাস্তিকই নয়, এদেরকে বিশেষ ভাবে Militant Atheist বলা হয়, এরা উঠে পড়ে লেগেছে ডারউইনের বিবর্তনবাদের মতো মাল্টিভার্স থিওরিকেও মানুষের মধ্যে গলার জোরে ফ্যাক্ট বলে চালিয়ে দেওয়ার। কারণ একমাত্র মাল্টিভার্স থিওরিই পারে “মহাবিশ্বের কোনো সৃষ্টিকর্তা নেই” সেটার পক্ষে কোনো ধরণের ‘বিশ্বাসযোগ্য’ চমকপ্রদ ব্যাখ্যা দিতে, যেটা পড়ে সাধারণ মানুষ, যাদের কসমোলজি নিয়ে ভালো জ্ঞান নেই, অবাক হয়ে ভাবে – ‘আরে! এতো দেখি চমৎকার এক ব্যাখ্যা! মহাবিশ্বের দেখি সত্যিই কোনো সৃষ্টিকর্তার দরকার নেই!’
একারণেই আল্লাহ ﷻ আমাদেরকে মু’মিন হবার জন্য প্রথম শর্ত দিয়েছেন: “যারা মানুষের চিন্তার ক্ষমতার বাইরে এমন সব বিষয়ে বিশ্বাস করে।” আমাদেরকে মানতে হবে যে, আমরা কোনোদিন প্রমাণ করতে পারবো না কীভাবে, কী কারণে এই মহাবিশ্ব সৃষ্টি হয়েছে। আমরা কোনোদিন কোনো রেডিও এন্টেনা দিয়ে জান্নাত, জাহান্নাম খুঁজে পাবো না। আমরা কোনোদিন এক্সরে করে ফেরেশতাদেরকে দেখতে পারবো না। আমরা কোনোদিন পদার্থ বিজ্ঞানের কোনো সুত্র দিয়ে ব্যাখ্যা করতে পারবো না: কিভাবে আমরা মরে, ধ্বংস হয়ে, মহাবিশ্বে ছড়িয়ে যাওয়া আমাদের দেহের অণু পরমাণুগুলো থেকে একদিন আমাদেরকে আবার একই অবস্থায় ফেরত আনা হবে। আমাদেরকে এই সব কিছু বিশ্বাস করতে হবে, কোনোই বৈজ্ঞানিক প্রমাণ ছাড়া, শুধুই কু’রআনের প্রমানের উপর ভিত্তি করে, এই শর্তে যে কু’রআন সন্দেহাতীত ভাবে আল্লাহর ﷻ বাণী। যদি কোনো প্রমাণ না থাকার পরেও বিবর্তনবাদ, ডার্ক ম্যাটার, ডার্ক এনার্জি, স্ট্রিং থিওরিতে ঠিকই বিশ্বাস করতে পারি, তাহলে কু’রআনের বাণীর উপর বিশ্বাস না করার পেছনে কোনো যুক্তি থাকতে পারে না, যেখানে কি না কু’রআন যে মানুষের পক্ষে তৈরি করা সম্ভব না, এর পক্ষে শত শত প্রমাণ আছে। একারণে আমরা যদি অদেখায় বিশ্বাস করতে না পারি, তাহলে আমরা কোনোদিন মু’মিন হতে পারবো না।