মফিজ রাস্তা দিয়ে হাঁটছে। হঠাৎ তার চোখ পড়ল
রিকশায় বসা সুন্দরী অপরূপার উপর্। মেয়েটা মফিজদের
পাড়ায় নতুন এসেছে। মফিজ তো জায়গায় দাড়ায়াই
ক্রাশ। এই মেয়েকে তার চাই ই চাই!
তো পরদিন , বাবুলের ফুলের দোকান
থেকে তাজা দেখে সাতটি গোলাপ কিনলো মফিজ।
আজ "টুনটুনি" কে তার হৃদয় মোড়ানো অসম্ভব
ভালোবাসার কথা বলতেই হবে যে!
বিকেল বেলা টুনটুনি বাসা থেকে শপিং এ বের হয়।
মফিজ ফুলগুলো কোনভাবে পিছনে লুকিয়ে টুনটুনিদের
বাসার সামনে দাড়িয়ে আছে, পাছে কেউ দেখে ফেলে!
কিছুক্ষণ পর টুনটুনি বেড়িয়ে এলো ,মফিজ বাবুলের
দোকান থেকে কেনা গোলাপ নিয়ে রাস্তায় হাঁটু
গেড়ে বসে বললো ,'আই লাবু টুনটুনি!' টুনটুনিও.
চওড়া হাসি দিয়ে বললো , "আই লাবু টুউউউ'
ব্যস , হয়ে গেল ভালোবাসা! সেদিন রাতেই
ফেসবুকে রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস চেইঞ্জ হয়ে হলো ,
"পক্কা মফিজ In a relationship with মফিজের
রাজকুমারী" ! লাইক কমেন্টের বন্যায় ভেসে গেল
সেদিনের রাত। ভালোবাসা আছড়ে পড়লো দুজনার
বুকে। কঠিন সে ভালোবাসা।
এক মাস পর্।
মফিজের স্ট্যাটাস ,
" Ami otokicu bugi na, tuntuni tumi firey aso
amar buke. tumake cara ami bacbo na. plij
tuntuni.
tumake jadin ami valobasi boli, sadin bugini
atota balobese faleci. amaka ar kosto dio na,
plij tuntuni plij."
ব্যাস! হয়ে গেল ব্রেক আপ। টুনটুনি এবার
বাবুলকে নিয়ে নতুন আইডিতে নতুন রিলেশনশিপ
স্ট্যাটাস দিলো। আর মফিজও টুনটুনি কে এক্স-
গার্লফ্রেন্ড মেনে নিয়ে , মর্জিনার পিছনে ঘোরে।
এতোগুলো ঘটনার অবতারণার একটাই কারণ , নতুন
পৃথিবীর নতুন ভালোবাসার মোড়ক উন্মোচন করা।
একদিনের দেখা, রাস্তাঘাটে প্রোপোজ করলেই
সাথে সাথে হ্যা বলে দেয়া , ভালোবাসা গুলো আজকাল
এমনই , সস্তা দ্রব্য এটা।
আর গার্লফ্রেন্ড বয়ফ্রেন্ড থাকাটা নাকি ইজ্জতের
ব্যাপার আজকাল। সেজন্যেই , এতো সহজেই
পাওয়া যায় এটা। কারণ , সবাই ইজ্জত বাড়াতে চায়।
মূল্যবোধ শিকেয় তুলি, ক্ষতি কি? কারো কোন
মাথাব্যথা নেই। তবে বলি কি , সস্তা দ্রব্যের মূল্যমান
কম হয়।
কমদামী ভালোবাসাগুলো বড়ই ঠুনকো , ভাংলেও ঠনঠন
শব্দ হয় না। প্রেমিকার চোখে চোখ রেখে যদি অজানায়
হারিয়ে যাওয়া না যায়্,কিসের সে ভালোবাসা?
আমি এক ইংরেজ
দম্পতিকে চিনি যারা ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন ২১
বছর বয়সে , তারপর তাদের বিবাহিত জীবনের ৪৩
টি বছর কেটে যাওয়ার পরও ভালোবাসায় ছেদ
পড়েনি একটুও। ৬৪ বছর বয়সে যেদিন
বুড়ো মারা যান ,সেদিন ছিলো তার স্ত্রীর জন্মদিন।
ঠিক পরদিনই সেই মহিলা মারা যান। বুড়োর পাশেই
তাকে সমাহিত করা হয়। ভালোবাসারই টান হয়তো এটা।
তাই , ভালোবেসে ভালোবাসুন, সত্যিকার ভাবে,
কাউকে দেখানোর জন্যে নয়। মাঝরাতের
ফিসফিসানি গুলো সত্যি হয়ে উড়ে বেড়াক কল্পনায়।
ভালো ভালো ভালোবাসাগুলো বেঁচে থাকুক আজীবন।
লিখা: ধূসরাভ শুভ