মেনু

Drop Down MenusCSS Drop Down MenuPure CSS Dropdown Menu

সংকলন ৬৮- ময়মনসিংহ-ঢাকা রোড

আমাদের বাড়ির পাশে দিয়েই ময়মনসিংহ-ঢাকা রোড। এই রোডকে ঘিরে অনেকরকমের কথা চালু আছে আমাদের এখানে । আমাদের বাসার পাশেই একটা বাঁক আছে যেখানে রয়েছে একটি পুরানো কবর । কবরটি কার তা কেউ জানে না । শোনা যায়, এখানে বসতি স্থাপনের অনেক আগে থেকেই নাকি এই কবরটি ছিল । আমার দাদার বাবা কাদের
আলী তালুকদার অনেক আগে এই এলাকায় বাড়িঘর স্থাপন করেন । তখন নাকি আশেপাশে গভীর জঙ্গল ছিল এবং মানুষ সন্ধ্যার পর দরজায় মোটা লোহা বা
কাঠের খিল দিয়ে রাখতো যেন বন্য পশুরা রাতের আঁধারে আক্রমণ না করতে পারে । তিনি নিজেও বলে গেছেন এই কবর সম্পর্কে । এই কবরে নাকি রাতের
বেলা আলো জ্বলে (তবে ইধানিং কখনো দেখা গেছে বলে শুনি নি । আমি নিজেও দেখি নি কখনো ।) । তিনি আরো বলেছেন অনেকেই নাকি ঐ কবরের পাশে মাঝে মাঝে একজন বৃদ্ধকে বসে থাকতে দেখত । তবে কেউ কোনোদিন সামনে গিয়ে কিছু জিজ্ঞেস
করার সাহস পেত না । বৃদ্ধকে যখন দেখা যেতো তখন হয় বিকেলের শেষভাগ অথবা সন্ধ্যা হয়ে গেছে । অর্থাৎ একটু আঁধার পড়ে পড়ে অবস্থা । কবরটি এরপরে একবার
ব্রিটিশ আমলে বাঁধিয়ে দেয়া হয় । কবরটি বাঁধার সময় নাকি এক আশ্চর্য ব্যাপার ঘটেছিলো । যারা বাঁধাইয়ের কাজে ছিল তারা প্রত্যেকে নাকি ক্রমান্বয়ে একজন
বৃদ্ধকে স্বপ্নে দেখে । সেই লোক তাদের নির্দেশ দেয় শ্বেত পাথরে কবর বাঁধাই
করতে না হলে নাকি ক্ষতি হবে । পরিকল্পনা করা হয় । কিন্তু বিধিবাম । কবর বাঁধাইয়ের
কাজ শুরু করার পরপরই নাকি দুজন লোক দিনের বেলা হটাত মারা যায় । তারা দুজনেই কবর বাঁধাইয়ের কাজে জড়িত ছিল । এরপর প্রায় ১০ বছরের মতো কাজ
বন্ধ রাখা হয় । শেষে গ্রামের একই সাথে কয়েকজন স্বপ্নে দেখে যে একটা বৃদ্ধমতন লোক তাদের আদেশ করছে সেই কবরটি শ্বেত পাথরে বাঁধাই করতে । গ্রামের
মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে । প্রতিদিনই শোনা যায় নতুন কেউ না কেউ সেই বৃদ্ধকে দেখেছে । অবশেষে গ্রামের মানুষ টাকা জোগাড় করে কবরটি বাঁধিয়ে দেয় ।
সেই কবরের পাশের রাস্তায় এখনো মাঝে মাঝে এক্সিডেন্ট হয় । অনেক ড্রাইভারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, হটাত গাড়ি চলার সময় এক বৃদ্ধ নাকি রাস্তার মাঝে চলে আসে । সেই সময়ে যারাই লক্ষ্য করেছে তারাই নাকি দেখেছে যে বৃদ্ধের পা বলতে কিছু নেই এবং সে বাতাসে ভাসমান । 
(আমি নিজে কখনো প্রত্যক্ষ করি নি এবং করতে চাইও না, শুধুমাত্র যেমন শুনেছি তেমন বললাম ।)