পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় দুর্গম পাহাড়ি এলাকা ঘেরা শহর মিরানশাহ। তালেবান অধ্যুষিত উত্তর ওয়াজিরিস্তানের রাজধানী শহর মিরানশাহ এখন ভূতের শহরে পরিণত হয়েছে। শহরটিতে এখন সেনা সদস্যরা ছাড়া রয়েছে কিছু বানর। এ ছাড়া আর কোন মানুষের টিকিটিও নেই। তালেবানের দখল থেকে দখলে নেয়ার পর থেকে এই অব্স্থা হয়েছে মিরানশাহের। খবর আলজাজিরার।
তালেবানদের দখল থেকে শহরটিকে মুক্ত করার জন্য সেখানে সম্প্রতি শক্তিশালী অভিযান চালায় সেনাবাহিনী। অভিযানের ফলে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় তালেবান যোদ্ধারা এবং একইসাথে পালিয়ে যায় শহরটির সাধারণ অধিবাসীরাও। সেনাবাহিনীর তল্লাশি, আটক ও নির্যাতনের ভয়েই সাধারণ মানুষজনও বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছেন।
সেনাবাহিনীর নির্দেশ ছিল, অভিযানের সময় স্থানীয়রা যেন ঘর থেকে বের না হয়। কিন্তু তাদের মধ্যে অনেকেই শহর ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। এমনকি অনেকে ঘরে টেবিলে খাবার সাজানো অবস্থায় রেখেই পালিয়ে গেছেন।
জনমানবহীন শহরে ভারী সব অস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে সেনা সদস্যরা। কিন্তু কোথাও কেউ নেই। মসজিদগুলো খালি পড়ে আছে; কার্পেট বিছানো আছে, কিন্তু কেউ নেই।
বিমান থেকে বোমা হামলায় বিধ্বস্ত হয়ে গেছে তালেবানদের গোলাবারুদের সরঞ্জাম। এখন সেসব বিস্ফোরণের বিচ্ছিন্ন-বিধ্বস্ত পরিবেশ বিরাজমান শহরটিতে।
শহরটিতে সেনাবাহিনী এমন সব দুর্গম টানেল খুঁজে পেয়েছে যা তালেবান যোদ্ধারা ব্যবহার করতো। এসব টানেল মার্কিন ড্রোন বিমানের আওতার বাইরে। টানেলগুলোতে অস্ত্রসম্ভারও পাওয়া গেছে।
মিরানশাহকে তালেবানরা তাদের রাজধানী হিসেবে ব্যবহার করে আসছিল। কিন্তু প্রায় মাসখানেক ধরে চালানো বিমান হামলা, ট্যাঙ্ক ও ভারী অস্ত্র সজ্জিত সেনাবাহিনীর স্থল হামলায় কাবু হয়ে পড়ে তালেবান যোদ্ধারা। মাসখানেকের অভিযানে শহরটির প্রায় ৮০ শতাংশ দখলে নিয়ে নেয় সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনী মিরানশাহ'র প্রতিটি বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে।
সেনাবাহিনী দাবি করেছে একমাসের অভিযানে অন্তত ৪০০ তালেবান যোদ্ধা নিহত হয়েছে। তবে, নিহতের প্রকৃত সংখ্যা কত তা যাচাই করা সম্ভব নয়।