একটি সত্য ঘটনা ঘটনাটা শুনেছি আমাদের মসজিদের মুয়াজ্জিন এর কাছ থেকে!তার নাম হানিফ!বয়স ৪০এর মত হবে! সে চাকুরি সূত্রে খুলনায় থাকতেন! তার বাড়ি বাগেরহাট জেলার চিলমারি থানার কালকিনী গ্রামে!প্রতি বৃহাস্পতিবার আছরের নামাজ শেষে গ্রামের বাড়িতে যান এবং শনিবার জোহরের নামাজ আমাদের মসজিদে পড়েন!
মূল ঘটনাটা বলি| তার ভাষায় , দিনটা ছিল বৃহাস্পতিবার ! আমি খুলনা থেকে রওনা দিলাম বিকাল ৬টায়! আমাদের সদর থানায় পৌছাতে পৌছাতে রাত
৯টা বেজে যায়! সদর থেকে আমার বাড়ি আরো ২০কিঃমিঃপথ! কোন গাড়ি না পেয়ে একটা মটরসাইকেল ভাড়া করি! মটরসাইকেলে করে বাজার পর্যন্ত আসি!এর পরের রাস্তা ভাঙ্গা ও কাঁদা থাকায় গাড়ি আর যেতে পারবে না বলে তাকে ছেড়ে দেই! বাজারে যখন পৌছাই সময় তখন রাত৯.৫০! বাজার থেকে আরো ৩কিঃমিঃদূরে আমার বাড়ি!বাজারের কোন দোকান খোলা নেই!আকাশ একটু মেঘলা থাকায় বেশ অন্ধকার লাগছে! আমার কাছে একটা ২ব্যাটারির টর্চ !আমি হাটতে লাগলাম! যে রাস্তা দিয়ে আমি হাঁটছিলাম তা ছিল মাটির রাস্তা!রাস্তার বামপাশেই ছিল খাল! ডানপাশে পাট হ্মেত! কিছু দূর হাঁটার পড়ে একটা পূজা মন্ডব! মন্ডবটার গেটের উপর একটা মহাদেবের মূর্তি ২৫ফুট উঁচু হবে ও তার পাশে শ্বশ্মান! মহাদেবের মূর্তিটার গায়ে শেওলা পড়ায় ঐ টাকে ভয়ংকর দেখাচ্ছিল! শ্বশ্মানটার দিকে যখন তাকালাম মনে হল কিছু একটা যেন ওখান থেকে দৌড়ে আসবে আমাকে ধরতে! কিছুই দেখিনা কিন্তু মনে হচ্ছে কেউ বুঝি আমাকে দেখছে! আমাকে অনুসরন করছে!আমার পেছনে বুঝি কেউ
আছে!দোয়া পড়তে থাকি মনে মনে!প্রথমে কিছু মনে থাকলেও পরেরগুলো ভুল হতে থাকে!কিছু দূর যাওয়ার পর পাশের খালে একটা নৌকা দেখে একটু সাহস পাই! নৌকায় লাইট মারি কিন্তু কোন সাড়াশব্দ নাই !আমি জিঞ্জেস করি কেউ কি আছেন ! তবুও কোন সাড়া না পেয়ে আমি নৌকার কাছে যাই ! নৌকার পাটাতনের ভিতরে লাইট মারি! ভিতরে যাকে দেখলাম তাকে আমি চিনি!নাম গফুর! গফুরকে বললাম কিরে তুই এত রাতে এখানে কি করিস! গফুর বললো আমি না থাকলে আপনারে এতরাতে পার করতো কেডা? এত রাতে কথাটা শুনে আমি ঘড়িটা দেখলাম!ঘড়িতে তখন সময় ১.৫৫!আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম! এত সময়তো হতে পারে না!আমি কি ৩ ঘন্টা ধরে হাটছি? মোটের পরে ৩০থেকে ৪০ মিনিটের রাস্তা! আমি গফুরকে কিছু বুঝতে দিলাম না! গফুরকে বললাম গফুর আমারে একটু পাড় করে দে!এই বলে আমি গফুরের নৌকায় উঠলাম! নৌকা পাড়ে ভিড়ার পর আমি গফুরকে বললাম গফুর আমারে একটু বাসা পর্যন্ত পৌছে দিবি? গফুর একটু ভেবে বললো ভয় পাইছেন?চলেন! আমরা দুজন একসাথে হাটছি!কিছু দুর আসার পর আমি খেয়াল করলাম গফুর আমার পেছন পেছন হাটে'! সামনে একটা কবরস্থান এবং কবরস্হান থেকে ধোয়া বের হচ্ছে!একটু যখন কাছে এসে লাইট মারলাম কবরের দিকে! দেখি একটি মেয়ে সাদা কাপড় পড়া , চুলগুলো ছেড়ে দেওয়া কবরস্থানের ভিতরে দাডিয়ে আছে এবং হাত ইশারায় আমাদের ডাকছে! মেয়েটিকে দেখে আমি চিনেছি!ওর নাম ময়না! আমি গফুরকে বলি ও ময়না না? হঠাত্ বুকের ভিতরটা কেমন যেন করে উঠলো!শরীর কেপে গেল! আমার পাশে গফুর নেই!আমি একটা চিত্কার দিয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে একটা বাড়ির
সামনে গিয়ে অঞ্জান হয়ে পড়ি!বাড়ির লোকজন আমাকে তুলে নিয়ে মাথায় পানি দেয়! কিছুহ্মন পর আমার জ্ঞান ফিরলে আমি তাদের সবকিছু খুলে বলি ! আমার কথা শুনে তারা একে অপরের দিকে এমন ভাবে মুখ চাওয়াচায়ি করে যেন আমি তাদের মিথ্যা বলছি ! পরে জানতে পারি গফুর ও ময়নার মধ্যে একটা সম্পর্ক ছিল! গফুর মাঝির কাজ করে ও ময়নার বাবা একটু প্রভাবশালি!তাদের সম্পর্ক মেয়েটির পরিবার মেনে নেয়নি! তাই মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে এবং গফুরের খোঁজ কেউ জানেনা !