মেনু

Drop Down MenusCSS Drop Down MenuPure CSS Dropdown Menu

সংকলন ১- প্রতিবন্ধি শান

ড:রুজানের মনটা আজ অনেক ফুরফুরে। তার এতো দিনের গবেষনা আজ সফল হতে চলেছে। গবেষনাটা একবার সফল হলে সেটা যে কেমন
ব্যাপক সাড়া ফেলবে চোখ বন্ধ করে সেটা একবার ভাবতেই তার মুখে হাসি ফুটে উঠলো।
রুজান একজন বিখ্যাত বৈজ্ঞানিক। এতদিন তিনি অনেক কিছুই আবিষ্কার করেছেন,কিন্তু
এবারেরটা সম্পূরনই অন্যরকম। তার গবেষনা রোবব নিয়ে। রোবট+মানব এর
সমন্বয়ে রোবব। রোবট নিয়ে এতদিন অনেক গবেষনা হয়েছে,চেহারা দেখে এখন আর রোবট ও মানুষকে আলাদা করা যায়না। কিন্তু রুজানের গবেষনা একটু আলাদা। রোবট এর মাঝে মানবীয় গুন গুলো প্রতিস্থাপন করা যায় নাকি,তারই পরীক্ষা চালাচ্ছেন তিনি,যা আজকেই শেষ হবার কথা।
রুজানের মেজাজ খারাপ হয়ে গেছে,আগের ফুরফুরে ভাবটা আর নেই। এতদিনের অক্লান্ত
পরিশ্রমের পর তিনি দেখছেন রোবটের মাঝে মানবীয় গুন
দিতে চাইলে,জীবন্ত মানুষের মস্তিষ্কের অংশ লাগবে। আর
তা হলে যে মানুষটির মস্তিষ্ক নেয়া হবে সে হবে জীবিত থেকেউ মৃত।
পুরো মস্তিষ্ক না থাকলে সে বেঁচে তো থাকবে,কিন্ত
সে হবে বাচ্চার থেকেউ অসহায়।।।।। ড:রুজান আর
ভাবতে পারছেননা,ঘেমে তার পুরো শরীর ভিজে গেছে।এমন সময় ঘরে ঢুকলো তার দশ
বছরের প্রতিবন্ধী ছেলে শান। বিজ্ঞানের এই যুগে এখন কেউ বাচ্চা জন্ম দেয়ার মত কষ্টের
মধ্য দিয়ে যায়না,ভ্রূণ জন্মানোর পরেই সেটা ইনজেকশনের মাধ্যমে কালেক্ট
করে টেস্টটিউব এর মাধ্যমে ভ্রুণটি বড় করা হয়।
কিন্তু রুজানের বৈজ্ঞানিক কাজের সুবিধার জন্যই তার স্ত্রীকে এই কষ্টের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিলো। বাচ্চা জন্ম দিতে গিয়ে তার স্ত্রী মারা গিয়েছিল,আর জন্ম হয়েছিল বিকলাঙ্গ ছেলেটির।
বিকলাঙ্গ হয়ে জন্ম নেয়ায়,তিনি শান কে খুব ঘৃণা করেন। শানকে ধমক
দিতে যাবেন এমন সময় হঠাত থেমে গেলেন। তার মাথায়
একটা বুদ্ধি এসেছে। এটাই সুযোগ শানকে কাজে লাগানোর,শানের মস্তিষ্ক
ব্যবহার করেই রোবব বানাবেন তিনি। রুজানের গবেষনা শেষ হয়েছে,রোবট এর
মধ্যে মানবীয় গুন গুলো তিনি প্রতিস্থাপন করেছেন ২০ ঘন্টা পরিশ্রম
করে।।। শান এক কোনায় জুবুথুবু হয়ে বসে আছে,আর তার
সামনে রয়েছে রোববটি,যার নাম তিনি দিয়েছেন মুজি। এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা,কালকেই
সবাইকে জানানো হবে ।।।।
রুজান সব পরীক্ষা করে দেখলো,তার গবেষনা ১০০% সফল হয়েছে। যে জায়গায়
যে রকম প্রতিক্রিয়া দেখানোর কথা মুজি তাই দেখাচ্ছে। যদিউ তার
বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ছেলে শানের মস্তিষ্ক থেকে তৈরী,মুজির মধ্যে বুদ্ধির কোনো অভাব নেই।।।
রাতে একবার কথা বলবেন বলে,মুজিকে তার শোবার ঘরে ডাকলেন রুজান। রুজান শুরু করলেন
-কেমন লাগছে?
-ভালো
-আমার বাসা তোমার পছন্দ হয়েছে? -
আমি তো এখানে ছোটা থেকেই থাকি,পছন্দ কেন
হবেনা!
জবাব শুনে প্রথমে থতমত খেলেউ
পরে সামলে নিলেন,শান এর স্মৃতিগুলো মুজির
মাঝে চলে এসেছে,এমনটাই
তো হওয়ার
কথা ছিলো।।।।।
কি ভেবে প্রশ্ন করলেন
-তুমি কাউকে ঘৃণা করো?
-হ্যঁা
-কাকে?
-পরে সব বুঝতে পারবে।
রুজান আর কিছু না জিজ্ঞেস
করে রোববটিকে ঘরে পাঠিয়ে দিয়ে শুয়ে পরলেন।
রাতে হঠাত করেই রুজানের ঘুম
ভেংগে গেল,কিসের জেনো শব্দ শুনলেন।
ভালো করে তাকিয়ে
ঘরে আসা চঁাদের
আলোতে দেখলেন
মুজি দাড়িয়ে আছে।
-কিছু লাগবে তোমার মুজি? -হ্যঁা,রুজান,
তোমাকে।
-মা-ম্মানে!!!
কথার জবাব না দিয়ে মুজি রুজানের
দিকে এগিয়ে আসতে লাগলো,কাছে আসতেই তিনি
দেখলেন মুজির
হাতে ধারালো একটি ছুরি,চাঁদের আলোতে চকচক
করছে। রুজান ভয়ার্ত কন্ঠে চিতকার করে উঠে
-মুজি তোমার হাতে কি এটা?
কী চাও?
-বলেছিলামনা পরে সব বুঝবে।।।।।।
এই একটি কথায় রুজানের কাছে সব পরিষ্কার
হয়ে গেল। তিনি যেমন শান
কে ঘৃণা করতেন,তেমনি সবসময় অবহেলার জন্য
শান-ও তাকে ঘৃণা করত,যার ফলে মুজি- ও এখন
রুজানকে ঘৃণা করে। তফাত শান এর সামর্থ্য
ছিলোনা প্রতিশোধ নেয়ার কিন্তু মুজির আছে।
।কিন্তু রুজান যখন বুঝল,ততখনে অনেক
দেরী হয়ে গেছে।
......আস্তে আস্তে ছুরিটা নেমে আসছে তার
দিকে!!!!!!!
রুজান শধু বোকার মত
চেয়ে দেখলো মুজির
মুখে একটা ক্রুর হাসি।


সোর্স- https://www.facebook.com/sciencfiction/posts/696618720435199:0